পাহাড়ী সান্যাল
পাহাড়ী সান্যাল (ইংরেজি: Pahari Sanyal), (২২ ফেব্রুয়ারি ১৯০৬ – ১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪) হচ্ছেন একজন বাঙালি চলচ্চিত্র অভিনেতা যিনি ছবি বিশ্বাস এবং কমল মিত্রের ন্যায় খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।[১]
পাহাড়ী সান্যাল Pahari Sanyal | |
---|---|
![]() পাহাড়ী সান্যাল | |
জন্ম | নগেন্দ্র নাথ সান্যাল ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯০৬ |
মৃত্যু | ফেব্রুয়ারি ১০, ১৯৭৪ | (বয়স ৬৭)
পেশা | অভিনেতা |
কর্মজীবন | ১৯৩৩-১৯৭৪ (আমৃত্যু) |
দাম্পত্য সঙ্গী | মীরা দেবী |
জন্ম ও শৈশবসম্পাদনা
পাহাড়ী সান্যাল জন্মেছিলেন দার্জিলিং-এ। যদিও তাঁর জন্মস্থান নিয়ে বিতর্ক আছে। একটি মতে সিমলার কাছে কসৌলি শহরে ওঁর জন্ম।[২] শৈশব ও যৌবনের প্রথম পর্ব লখনৌতে কাটান। দেড় বছর বয়সে মা মারা যায়। পিতা ছিলেন একজন সঙ্গীতজ্ঞ এবং সেনা বিভাগের হিসাব পরীক্ষক। বাল্যকালে পিতার কাছে সংগীতে অনুপ্রেরণা লাভ করেন। দশ বছর বয়সে ঘটে পিতৃবিয়োগ। পিতৃস্নেহে মানুষ করে তোলেন জ্যৈষ্ঠ ভ্রাতা।[৩]
কর্মজীবনসম্পাদনা
পাহাড়ী সান্যালের সংগীতের প্রতি অনুরাগ তাকে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল পাঠ ত্যাগ করায় এবং তিনি লক্ষ্ণৌ এসে সঙ্গীতচর্চায় আত্মনিয়োগ করেন। লক্ষ্ণৌ সঙ্গীত কলেজ থেকে "উপাধি" পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। একুশ বছর বয়সে মোরাদাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভাইস-প্রিন্সিপ্যালের সঙ্গে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। রেওয়ার কুমারের গৃহ শিক্ষকতায় নিযুক্ত হন। ১৯৩১-এ ভূমিষ্ঠ হওয়ার ৩-৪ দিন পর একমাত্র পুত্র সন্তান ও স্ত্রীর পরলোকগমন। রেওয়ার কুমার সাহেবের একান্ত সচিব হিসেবে নিযুক্তি লাভ।[৩]
চলচ্চিত্র ও মঞ্চে অভিনয়সম্পাদনা
১৯৩৩ সনে তিনি কলকাতায় আসেন এবং নিউ থিয়েটার্সে অভিনেতা হিসেবে যোগ দেন। ছায়াছবিতে আত্মপ্রকাশ মীরাবাঈ চিত্রে। কলকাতা ও বোম্বাইর চিত্রপুরীতে বাংলা ও হিন্দি মিলিয়ে প্রায় দেড়শত ছায়াছবিতে অভিনয় করেন। বড়দিদি ছবিতে সুরেন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য ছবিতে নিত্যানন্দ এবং বিদ্যাপতি, বিদ্যাসাগর, মহাকবি গিরীশচন্দ্র ও কেদার রাজা ছবিতে নামভূমিকায় অসাধারণ অভিনয় করেন। নিউ থিয়েটার্সে অভিনয়কালে মীনা দেবীকে দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেন। শেষ বয়সে ১৯৭৩ সনে বিশ্বরূপা রঙ্গমঞ্চে আসামী হাজির নাটকে অপূর্ব অভিনয় করে মঞ্চানুরাগীদের মন জয় করেন।[৩] বাংলা ও হিন্দি মিলিয়ে চার দশকে প্রায় ১৯৭ টি ছবিতে অভিনয় করেছেন পাহাড়ী সান্যাল।[২]
বহুভাষা পারদর্শীসম্পাদনা
বাংলা, হিন্দি, উর্দু প্রভৃতি ভারতীয় ভাষা ছাড়াও ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায় পাণ্ডিত্য অর্জন করেছিলেন।[৩]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ Sunil K. Datta (২০০২)। The raj & the Bengali people। Firma KLM। পৃষ্ঠা 137। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ ক খ "দিগভ্রান্ত এক বিরহী পথিক পাহাড়ী সান্যাল"। www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-০২।
- ↑ ক খ গ ঘ সেলিনা হোসেন ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত; বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান, বাংলা একাডেমী, ঢাকা, প্রথম পুনর্মুদ্রণ এপ্রিল, ২০০৩, পৃষ্ঠা- ২২২-২২৩।