পাহাড়পুর প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর
পাহাড়পুর প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর বা পাহাড়পুর জাদুঘর নওগাঁ হলো বাংলাদেশের নওগাঁয় অবস্থিত একটি জাদুঘর। এখানে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ও এর সংলগ্ন অঞ্চল হতে সংগৃহীত প্রত্ননিদর্শন উপস্থাপন করা হয়। জাদুঘরটি নওগাঁ জেলা হতে প্রায় ৩৫ কি.মি উত্তরে ও জয়পুরহাট জেলা হতে প্রায় ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে পাহাড়পুর ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামে অবস্থিত। জাদুঘরটিতে সাধারণ কার্যদিবসে ৭০০ থেকে ১০০ মানুষের সমাগম হয়।[১] এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এর অধীনে পরিচালিত ২১টি জাদুঘরের একটি।[২]
স্থাপিত | ১৯৯৪ |
---|---|
অবস্থান | পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার, পাহাড়পুর, নওগাঁ, বাংলাদেশ |
স্থানাঙ্ক | ২৫°০১′৫২″ উত্তর ৮৮°৫৮′৩৭″ পূর্ব / ২৫.০৩১° উত্তর ৮৮.৯৭৭° পূর্ব |
ধরন | প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর |
সংগ্রহ |
|
তত্ত্বাবধায়ক | মুহাম্মদ ফজলুল করিম |
মালিক | বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর |
ইতিহাস
সম্পাদনাষাটের দশকে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বৌদ্ধ বিহারে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করে।[২] ১৯৮৫ সালে বিহারটি বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইউনেস্কোর সহায়তায় একটি প্রকল্পের অধীনে ১৯৯৪ সালে পুরাতন জাদুঘর ভেঙ্গে চার গ্যালারী বিশিষ্ট একটি নতুন জাদুঘর ভবন তৈরি হয়।[৩]
সময়সূচী
সম্পাদনা১ এপ্রিল থেকে ৩০শে সেপ্টেম্বর জাদুঘরটি সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। ১ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ জাদুঘরটি সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। প্রতিদিন এর মাঝে দুপুর ১টা থেকে ১.৩০ পর্যন্ত আধ ঘণ্টার জন্যে বন্ধ থাকে। শুক্রবারে জুম্মার নামাযের জন্যে ১২.৩০ থেকে ৩.০০ পর্যন্ত বন্ধ থাকে। রবিবার সাধারণ ছুটি এবং সোমবার দুপুর ২.০০ থেকে জাদুঘর খোলা থাকে।[৪]
৩০ টাকা প্রবেশ মূল্য পরিশোধ করে জাদুঘরে রক্ষিত এসব দর্শনীয় জিনিস দেখা যায়। তবে বিশেষ বিশেষ দিনে বিনা মূল্যেই পর্যটকরা জাদুঘর পরিদর্শন করতে পারেন।[১]
সংগ্রহ
সম্পাদনাপাহাড়পুর জাদুঘরে সংরক্ষিত নিদর্শনগুলোর মধ্যে রয়েছে একটি মাঝারি আকারের ব্রোঞ্চের তৈরি বৌদ্ধের আবক্ষ অংশ, পোড়ামাটির ফলক, অলংকৃত ইট, পাথরের মূর্তি, পোড়ামাটির তৈজসপত্র ইত্যাদি।[২]
এখানে বিহার থেকে সংগ্রহীত ধাতব মূর্তি সংরক্ষিত আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল অলঙ্কৃত হরগৌরী, নগ্ন জৈন মূর্তি, ব্রোঞ্জের বুদ্ধের আবক্ষমূর্তি ইত্যাদি।
এছাড়াও সংরক্ষিত আছে অষ্টম শতক থেকে ১৬শতকের সময়কার পুরনো তাম্র ও রৌপ্য মুদ্রা। অন্যান্য সংগ্রহের মধ্যে আছে কিছু পোড়ামাটির নারীমূর্তি, জীবজন্তুর প্রতিকৃতি, মন্দির চূড়ার ভগ্নাংশ, অগ্রভাগ ছাটা মোচাকৃতি ড্যাগার, চ্যাপ্টা চাকতি, সিলমোহর ও নলাকার গুটিকা। এছাড়া ধাপকৃত পিরামিড, পদ্ম-পাপড়ি, দাবার ছক, অর্ধপ্রস্ফুটিতপদ্মসহ আয়তাকার পদকও সংগৃহীত হয়েছে।[৩]
সংরক্ষিত মূর্তি
সম্পাদনাপাহাড়পুর জাদুঘরে সংরক্ষিত মূর্তিগুলোর মধ্যে নিম্নের মূর্তিগুলো উল্লেখযোগ্য[৫]:
- বেলে পাথরের চামুণ্ডা মূর্তি
- লাল পাথরের দণ্ডায়মান শীতলা মূর্তি
- কৃষ্ণ পাথরের বিষ্ণুর খণ্ডাংশ
- কৃষ্ণ পাথরের দণ্ডায়মান গণেশ
- বেলে পাথরের কীর্তি মূর্তি
- দুবলহাটির মহারাণীর তৈলচিত্র
- হরগৌরীর ক্ষতিগ্রস্ত মূর্তি
- কৃষ্ণ পাথরের লক্ষ্মী নারায়ণের ভগ্ন মূর্তি
- কৃষ্ণ পাথরের উমা মূর্তি
- বেলে পাথরের গৌরী মূর্তি
- বেলে পাথরের বিষ্ণু মূর্তি
- নন্দী মূর্তি
- কৃষ্ণ পাথরের বিষ্ণু মূর্তি
- সূর্য মূর্তি
- কৃষ্ণ পাথরের শিবলিঙ্গ
- বেলে পাথরের মনসা মূর্তি
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "বিনা টিকিটে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার ও জাদুঘর দর্শন"। ঢাকাপ্রকাশ। ১৫ ডিসেম্বর ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-১৯।
- ↑ ক খ গ "পাহাড়পুর জাদুঘর"। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। ১ জুলাই ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মে ২০২৪।
- ↑ ক খ "পাহাড়পুর"। বাংলাপিডিয়া। ১৭ মে ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-১৯।
- ↑ "পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষ"। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। ৬ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মে ২০২৪।
- ↑ "ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বিহার"। যুগান্তর। ১৬ অক্টোবর ২০১৮।