পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কল্যাণমূলক প্রকল্প

মৌলিক পরিষেবার সুযোগ রাজ্যের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থান ও আর্থিক উন্নয়নের জন্যও নানাবিধ প্রকল্প চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। এইসব সরকারি প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে রাজ্যের সাধারণ মানুষ তাঁদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটাতে পারছেন। রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নে এই ঘটনা বিশেষ মাত্রা যোগ করছে।

বর্তমান রাজ্য সরকারের গত সাত বছরে রাজ্যে চালু হওয়া ও চালু থাকা গুরুত্বপূর্ণ পথিকৃৎ প্রকল্পগুলির মাধ্যমে যেসব সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে ও যাবে সেই সম্পর্কে সংক্ষেপে প্রয়োজনীয় তথ্য-সহ এই পুস্তিকা প্রকাশ করা হল।

আনন্দধারা সম্পাদনা

দপ্তর:- পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: গ্রামীণ মহিলাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করে পরিবারের দারিদ্র্য হ্রাস করা। এটি মূলত দারিদ্র হ্রাসের জন্য জীবিকাভিত্তিক প্রকল্প। মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ৩০ শতাংশ ভরতুকি দিয়ে উৎপাদন এবং অন্যান্য কাজে উৎসাহিত ও সক্রিয় করে তোলার জন্য এই প্রকল্প।

নারীর আর্থিক স্বাবলম্বনের ক্ষেত্রটিকে মজবুত করে গড়ে তুলতে পারলে দেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল ও সম্ভাবনাময় হয়ে উঠবে। দেশ ও জনসাধারণের কল্যাণের জন্য গ্রামীণ মহিলাদের ভূমিকাকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।

২০১২-র ১৭মে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রাজ্যে আনন্দধারা প্রকল্পের সূচনা করেন। দরিদ্র গ্রামীণ পরিবারের অন্তত একজন মহিলাও যদি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য হতে পারেন, তাহলে সেই পরিবারটি নানা সুযোগ-সুবিধা পেতে পারে। এই বিষয়টিকে সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যেই আনন্দধারা প্রকল্প।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে তৃণমূল স্তরে শক্তিশালী সংগঠন তৈরি করে লাভজনক স্বনিযুক্তি এন দক্ষতার ভিত্তিতে মজুরি ১৩ প্রাপ্তির সুযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে তাঁদের জীবিকার মজবুত ভিত্তি এবং জীবনধারায় প্রশংনীয় উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়াস নেওয়া হচ্ছে।[১]

এই প্রকল্পের মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্য সহজে বাজারজাত করার ব্যাপারেও সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়।

কারা আবেদন করতে পারবেন: গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র পরিবারের মহিলারা।

যোগাযোগ: স্থানীয় পঞ্চায়েত কার্যালয়।

আমার ফসল, আমার গাড়ি সম্পাদনা

দপ্তর: কৃষিজ বিপণন দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: উৎপাদিত ফসল খেত থেকে তোলার পর ক্ষতি রোধ করা এবং উৎপাদিত ফসল দ্রুত বাজারজাত করার জন্য কৃষিজ বিপণন অধিকারের পক্ষ থেকে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি, কৃষক গোষ্ঠী সমূহ, স্বনির্ভর গোষ্ঠী ইত্যাদির মধ্য থেকে নির্বাচিত উপভোক্তাদের ৬টি প্লাস্টিক ক্রেট-সহ ভ্যান রিকশা/মনুষ্যচালিত সবজি বহনকারী গাড়ি দেওয়া হয়ে থাকে।

কারা আবেদন করতে পারবেন: প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষক, কৃষক গোষ্ঠী, স্বনির্ভর গোষ্ঠী।

যোগাযোগ: এক্ষেত্রে নির্বাচিত উপভোক্তা একটি ভ্যান রিকশা ক্রয় করার জন্য কৃষিজ বিপণন অধিকারের তরফ থেকে ১০,০০০ টাকা ভরতুকি হিসাবে অনুদান পেয়ে থাকেন। তবে অনেক ক্ষেত্রে জেলা কৃষিজ আধিকারিক দরপত্রের মাধ্যমে ভ্যান গাড়ি ক্রয় করে নির্বাচিত উপভোক্তাদের মধ্যে বণ্টন করতে পারেন।

আমার ফসল, আমার গোলা সম্পাদনা

দপ্তর: কৃষিজ বিপণন দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: উৎপাদন পরবর্তী স্তরে ফসলের অপচয় রোধে এবং গুণগত মান বজায় রেখে যথাযথভাবে মজুত করার উদ্দেশ্যে কৃষিজ বিপণন অধিকার এই প্রকল্পে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকদের গোলা নির্মাণের জন্য আবেদন-পত্র সাপেক্ষে ভরতুকি হিসাবে অনুদান দিয়ে থাকে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে চিরাচরিত গোলা নির্মাণের জন্য ৫০০০ টাকা, উন্নত মানের গোলা নির্মাণের জন্য ১৭.৩২৯ টাকা এবং পেঁয়াজের গোলা নির্মাণের জন্য ৩২,৮৩৯ টাকা দেওয়া হয়ে থাকে।

কারা আবেদন করতে পারবেন: প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষক, কৃষক গোষ্ঠী, স্বনির্ভর গোষ্ঠী।

যোগাযোগ: কৃষককে তাঁর পরিচয় পত্র ও প্রাসঙ্গিক কিছু তথ্যাদি-সহ ব্লক স্তরে আবেদনের মাধ্যমে জেলা কৃষিজ বিপণন আধিকারিকের অনুমোদন পেতে হয়।

আমার ধান, আমার চাতাল সম্পাদনা

দপ্তর: কৃষিজ বিপণন দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: ধান ও অন্যান্য কৃষি পণ্য রোদে শুকানোর জন্য চাতাল এবং তা সংরক্ষণের জন্য চিরাচরিত গোলা নির্মাণের উদ্দেশ্যে এই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। রাজ্যের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি, কৃষক গোষ্ঠী সমূহ, স্বনির্ভর গোষ্ঠী মধ্য থেকে নির্বাচিত উপভোক্তাদের চাতাল ও চিরাচরিত গোলা নির্মাণের জন্য কৃষিজ বিপণন অধিকারের পক্ষ থেকে যথাক্রমে ১৭,৯৭৫ টাকা ও ৫০০০ টাকা ভরতুকি হিসাবে অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে।

কারা আবেদন করতে পারবেন: প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষক, কৃষক গোষ্ঠী, স্বনির্ভর গোষ্ঠী।

যোগাযোগ: এই প্রকল্পে কৃষককে তাঁর পরিচয় পত্র ও প্রাসঙ্গিক কিছু তথ্যাদি-সহ ব্লক স্তরে আবেদনের মাধ্যমে জেলা কৃষিজ বিপণন আধিকারিকের অনুমোদন পেতে হয়। প্রকল্পটি অর্থবহ করে তোলার জন্য একজন উপভোক্তা একটি সুবিধা আবার সম্বলিতভাবে একসঙ্গে দুটি সুবিধাও পেতে পারেন।

আলোশ্রী সম্পাদনা

দপ্তর: বিদ্যুৎ ও অচিরাচরিত শক্তি উৎস দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: সৌর বিদ্যুতের ব্যাপক ব্যবহার ও প্রয়োগ। এই সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ এসইডিসিএল, পশ্চিমবঙ্গ এসইটিসিএল এবং অন্যন্য সরকারি বাড়ি ও অফিসে ১৫০ কোটি ব্যয়ে ২১.৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন গ্রিড কানেকটেড রুফ টপ সোলার পিভি পাওয়ার প্ল্যান্ট (জিআরটিএসপিভি) তৈরি হয়েছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই প্রকল্পে প্রতি ক্ষেত্রে ১০ কেডব্লিউপি সৌর বিদ্যুৎ উৎপন্ন করার ব্যবস্থা করা হয়। WBSEDCL ও WBREDA যথাক্রমে আলোশ্রী প্রকল্পের অধীনে WBSEDCL ও WBSETCL- এর নিজস্ব অফিস বাড়িগুলিতে ৭৩.৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০.৫ মেগাওয়াট ও ১২.৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২.৪৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার রুফটপ পিভি প্ল্যান্ট তৈরি করেছে।

কারা আবেদন করতে পারবেন: এর জন্য আলাদা করে কোনও আবেদনপত্র জমা করার প্রয়োজন নেই। • যোগাযোগ: চিফ ইঞ্জিনিয়ার, সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন বিভাগ, বিদ্যুৎ ভবন, পঞ্চম তল, ব্লক-বি, সল্টলেক, কলকাতা-৭০০০৯১ বা ফি ইঞ্জিনিয়ার, WBREDA ১/১০, ইপি এবং জিপি ব্লক, বিকল্প শক্তি ভবন, সেক্টর-৫, সল্টলেক, কলকাতা-৭০০০৯১

উৎকর্ষ বাংলা সম্পাদনা

দপ্তর: কারিগরি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬-তে এই জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের প্রচলন করেছে। এই প্রকল্পের আওতায় সমস্ত রাজ্যে ২০১৮-১৯ আর্থিক বর্ষে ৬ লক্ষ ছাত্রছাত্রীকে বিভিন্ন আইটিআই, পলিটেকনিক, ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার ও স্বল্পমেয়াদি দক্ষতা বিকাশ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে টেলারিং ফিটিং, ইলেকট্রিশিয়ান, রিটেল, বিউটি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে। দক্ষতা বিকাশ কেন্দ্রগুলিতে সম্পর বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে প্রতিটি সফল ছাত্রছাত্রীকে শংসাপত্র দেওয়া হবে। এই প্রকল্পের আওতায় সফল ছাত্রছাত্রীদের প্লেসমেন্টের সুযোগ করে দেওয়া হবে। স্যামসাং, রেমন্ডস, আইএলএফএস, মারুতি সুজুকি-র মতো প্রতিষ্ঠানগুলি বিভিয় ছাত্রছাত্রীদের প্লেসমেন্টের সুযোগ করে দিচ্ছে। বারবিকিউ নেশন, বন্ধন ব্যাঙ্ক, স্পেনসারস্, ফরচুন, আইটিসি ইত্যাদি সংস্থায় ছাত্রছাত্রীদের প্লেসমেন্ট দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে এই প্রকল্পের আওতায় ২৫০টি আইটিআই, ১৫২টি পলিটেকনিক ও ৩৩৯০টি ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার চালু আছে। স্বল্পমেয়াদি দক্ষতা বিকাশের জন্য রাজাব্যাপী ১৬০০ দক্ষতা বিকাশ কেন্দ্র বর্তমানে চালু আছে।

কারা আবেদন করতে পারবেন: আবেদনকারীকে এই রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। পরিচয়পত্র, বাসস্থানের প্রমাণ পত্র, জাতিগত শংসাপত্র, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর ইত্যাদি-সহ অনলাইনে আবেদন করতে হবে www.pbssd.gov.in-এ। ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন ফর্ম যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় নথিপত্র আপলোড করতে হবে।

যোগাযোগ: প্রয়োজনে যোগাযোগ করা যেতে পারে নিম্নলিখিত ঠিকানায়- পশ্চিমবঙ্গ সোসাইটি ফর স্কিল ডেভেলপমেন্ট, কারিগরি ভবন, প্লট-B/7, অ্যাকশন এরিয়া-।।।. রাজারহাট, নিউটাউন, কলকাতা-৭০০১৬০। দূরভাষ: +৯১-৮৬৯৭৪৭৬৪৯৬।

কন্যাশ্রী সম্পাদনা

 
কন্যাশ্রী

দপ্তর: নারী ও শিশু উন্নয়ন রএবং সমাজকল্যাণ দপ্তর, উচ্চশিক্ষা দপ্তর প্রকল্পের

উদ্দেশ্য: কন্যাশ্রী একটি আর্থিক উৎসাহদান প্রকল্প। ১৮ বছর পর্যন্ত মেয়েদের শারীরিক ও মানসিক গঠন চলতে থাকে। ভবিষ্যতে যাতে তারা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারে তাই তাদের উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে এই সময়ই উপযুক্ত। 'কন্যাশ্রী'-র মেয়েদের নানা প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং তাদের তৈরি পণ্য বিক্রিরও ব্যবস্থা হচ্ছে। বিভিন্ন ক্রীড়া ও আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ চলছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা জুড়ে। 'কন্যাশ্রী ফুটবল প্রতিযোগিতা'-ও আয়োজিত হচ্ছে।

বিস্তারিত দেখুন কন্যাশ্রী প্রকল্প

খাদ্যসাথী সম্পাদনা

দপ্তর: খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তর

উদ্দেশ্য: সুলভ মূল্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করে খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তা দেওয়াই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ উদ্যোগ ও অনুপ্রেরণায় পশ্চিমবঙ্গের ৮ কোটি ৬২ লক্ষ মানুষ অর্থাৎ রাজ্যের ৯৪ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তার আওতায় এসেছেন।

জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন এবং রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনার মাধ্যমে অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা, অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত পরিবার, বিশেষ অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত পরিবার ও রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনা-১ এর তালিকাভুক্ত পরিবারের সমস্ত মানুষের কাছে রাজ্য সরকার দুটাকা কেজি দরে খাদ্যশস্য পৌঁছে দিচ্ছে।

খাদ্য সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর অনুপ্রেরণায় ৪০ লক্ষের বেশি মানুষের জন্য বিশেষ প্যাকেজের মাধ্যমে স্বাভাবিক বরাদ্দের অতিরিক্ত খাদ্যশস্য সরবরাহ করা হচ্ছে। জঙ্গলমহল, আয়লায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার, চা-বাগানের সমস্ত পরিবার, দার্জিলিং-এর পাহাড়বাসী, সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক কৃষক পরিবার, টোটোপাড়ার আদিম জনজাতিভুক্ত পরিবার এই বিশেষ প্যাকেজের আওতায় আছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পুষ্টি-পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন শিশু, মা ও তাদের পরিবারের জন্য মাসে ৫ কিলোগ্রাম চাল, ২.৫ কিলোগ্রাম গম, ১ কিলোগ্রাম মুসুর ডাল ও ১ কিলোগ্রাম ছোলা বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে 'বিশেষ কুপন' চালু করে।

গণবণ্টন ব্যবস্থা স্বচ্ছ ও গতিশীল করার জন্য ডিজিটাল রেশন কার্ডের প্রচলন ও সার্বিক কম্পিউটার ব্যবস্থাপনার সফল প্রয়োগ গত পাঁচ বছরে সম্ভব হয়েছে। বর্তমান খরিফ মরশুমে খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তর প্রায় ৪ কোটি ৩৫ লক্ষ জুট ব্যাগ ক্রয় করেছে যার মূল্য প্রায় ২১১ কোটি টাকা।

বর্তমান খরিফ মরশুমে (২০১৭-১৮) সরকার প্রায় ৪ লক্ষ ৬০ হাজার কৃষকের কাছ থেকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ৩৩ লক্ষ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করেছে। বর্তমানে রাজ্যে ধানের অভাবী বিক্রি বন্ধ হয়েছে। খাদ্য মজুতের ক্ষমতাও গত সাত বছরে ১৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৮ লক্ষ ৫৭ হাজার মেট্রিক টন।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় পশ্চিমবঙ্গে খাদ্য নিরাপত্তা প্রদানের সফল পদক্ষেপ হল খাদ্যসাথী।

যোগাযোগ: খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরের শুল্কমুক্ত ফোন নং: ১৯৬৭ এবং ১৮০০-৩৪৫-৫৫০৫ প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা।

খেলাশ্রী সম্পাদনা

দপ্তর: যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: রাজ্যে খেলাধুলার মানোন্নয়নের পাশাপাশি প্রতিটি স্তরে ও প্রান্তিক অঞ্চলেও খেলাধুলার বিকাশ ঘটানো। এটি একটি বহুমুখী প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় ক্রীড়া উন্নয়নের বিভিন্ন কর্মসূচিগুলিকে একত্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। মূলত পাঁচটি প্রান্তভার বিকাশের জন্য রাজ্য জুড়ে উন্নতমানের ক্রীড়া পরিকাঠামো গড়ে তোলার কর্মসূচিকে এই প্রকল্পে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।[২]

  • নবীনদের কাজকে আরও গতিশীল করার জন্য ক্রীড়া-সংশ্লিষ্ট ক্লাবকে আর্থিক অনুদান।
  • রাজ্যস্তরের বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠনকে আর্থিক সহায়তা। • বাংলার বিখ্যাত ও সফল ক্রীড়াব্যক্তিত্ব ও ক্রীড়া-প্রতিভাকে সম্মানিত ও পুরস্কৃত করা।
  • বিভিন্ন স্তরে ফুটবল বিতরণের মাধ্যমে বাংলার জনপ্রিয় খেলা ফুটবল-এর চর্চাকে আরও ছড়িয়ে দেওয়া।
  • বিভিন্ন ক্রীড়ার ক্ষেত্রে স্থায়ী প্রশিক্ষণ শিবিরগুলিকে বছরে এক লাখ টাকা প্রদান।

২০১১-১২ আর্থিক বছর থেকে চালু হওয়া এক কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন ক্লাবকে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন, খেলাধূলার প্রশিক্ষণ এবং সরঞ্জাম ক্রয় বা কক্ষ নির্মাণ-সহ নানা কাজের জন্য প্রথম বছর ২ লক্ষ টাকা এবং পরের ৩ বছর ১ লক্ষ টাকা হারে আর্থিক অনুদান প্রদান করছে রাজ্য সরকার।

গতিধারা সম্পাদনা

দপ্তর: পরিবহণ দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: কর্মহীন এবং এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংকে নথিভুক্ত যুবক, যুবতীদের স্বনিযুক্তির একটি প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। বিশেষ করে, পরিবহণ ক্ষেত্রে যাঁরা স্বাবলম্বী হতে চান, তাঁদের কাছে আজ দারুণ সুযোগ। বাণিজ্যিক গাড়ি কেনার অর্থের বেশ কিছুটা জোগান দিচ্ছে রাজ্য সরকার। এই প্রকল্পের আওতায় গাড়ি কিনলে পরিবহণ দপ্তরের সহায়তায় পারমিট পেতেও অগ্রাধিকার দেওয়া হাক্করে মূল উদ্দেশ্য, রাজ্যের গ্রামীণ এবং শহর এলাকায় পরিবহণ দপ্তরের 'গতিধারা' প্রকল্প প্রসারিয় হচ্ছে। মূল উযুবক যুবতীদের স্বনির্ভর করে তোলা। পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ কাঠামো উন্নয়ন নিগম, এই প্রকল্পের কার্যকরী এজেন্সি হিসেবে কাজ করছে। শারীরিকভাবে পিছিয়ে থাকা যুবক-যুবতীরাও এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।

যে কোনও বাণিজ্যিক গাড়ি কিনলেই রাজ্য সরকার গাড়ির মোট দামের ৩০ শতাংশ অথবা সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকা অনুদান বা ভরতুকি হিসেবে দেবে এবং এই অর্থ ফেরত দিতে হবে না। ওই উদ্যোগীকে নিজেকে কিছু অর্থের জোগান দিতে হবে। সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, গ্রামীণ ব্যাংক এবং সমবায় ব্যাংক ছাড়াও প্রকল্পের তালিকাভুক্ত ১৩টি নন ব্যাংকিং ফিনান্স কর্পোরেশন (NBFC) থেকে গতিধারা প্রকল্পের জন্য আর্থিক সাহায্য পাওয়া যাবে। বর্তমানে 'গতিধারা' প্রকল্প রাজ্যের অন্যতম জনপ্রিয় এবং কার্যকরী প্রকল্প। এর লোগো কর্মহীন যুবক/যুবতীদের মধ্যে এই প্রকল্পের সুবিধা নেওয়ার জন্য আরও বেশি উদ্দীপনা জোগাচ্ছে। ২৮ হাজারের বেশি যুবক/যুবতী ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। চলতি আর্থিক বছরের লক্ষ্য আরও ১১ হাজার যুবক-যুবতীকে এই প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া।

কারা আবেদনের যোগ্য: যে কোনও বছরের ১ এপ্রিলের হিসেবে ওই যুবক/যুবতীর বয়স ২০ বছরের বেশি, কিন্তু ৪৫ বছরের কম হতে হবে। তবে তপশিলি জাতি ও আদিবাসী এবং ওবিসি-দের ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমায় যথাক্রমে ৫ বছর ও ৩ বছরের ছাড় থাকবে। ওই যুবক/যুবতীকে কর্মহীন হিসেবে এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংকে নথিভুক্ত হতে হবে। পারিবারিক মাসিক আয় ২৫ হাজার টাকার বেশি হবে না। 'যুবশ্রী' প্রকল্পে যাঁরা সরকারি সুযোগ-সুবিধে পেয়েছেন, তাঁরাও আবেদনের যোগ্য। গতিধারা-র আর্থিক সাহায্য পাওয়ার পরই যুবশ্রী প্রকল্পে প্রাপ্ত ভাতা বন্ধ হয়ে যাবে। গতিধারার সুবিধা রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তিক মানুষের মধ্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বর্তমানে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে- আবেদনপত্রের সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সুপারিশ কাঙ্ক্ষিত।

যোগাযোগ: জেলার ক্ষেত্রে আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক (RTO)-এর অফিস এবং রাজ্য স্তরে পারমিটের জন্য স্টেট ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (STA)-র বিভিন্ন আঞ্চলিক (কলকাতা, শিলিগুড়ি ও দুর্গাপুর) অফিসে আবেদন বা যাবতীয় প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে হবে।

গীতাঞ্জলি সম্পাদনা

দপ্তর: আবাসন দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: প্রত্যেকের সুনিশ্চিত আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা।

রাজ্য সরকার, এই প্রকল্পে, প্রতিটি আবাস নির্মাণে সমতলের জন্য ১.২ লক্ষ টাকা এবং সুন্দরবন, পার্বত্য অঞ্চল ও দুর্গম এলাকার জন্য ১.৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। জেলাশাসকের মাধ্যমে প্রথমে ৭০ শতাংশ এবং পরে ৩০ শতাংশ অর্থ সুবিধাপ্রাপকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি জমা পড়ে যায়। ইতিমধ্যে ৩.৮ লক্ষেরও বেশি পরিবার তাদের গৃহ নির্মাণের জন্য এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছে।

কারা আবেদন করতে পারবেন: গৃহহীন অথচ জমি আছে এমন ব্যক্তি যাঁর মাসিক আয় ৬০০০ টাকা বা তার কম তিনি যোগাযোগ করতে পারেন। এককথায়, রাজ্যের প্রত্যেক দরিদ্র মানুষ, বিশেষ করে বন্যা বা নদী ভাঙনে যাঁদের ছাদ ভেসে গিয়েছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে তাঁদের পুনর্বাসন দেওয়া হচ্ছে।

যোগাযোগ: জেলাস্তরে প্রত্যেক মহকুমা শাসক (এসডিও) এবং ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক (বিডিও)-এর অফিস

জলতীর্থ সম্পাদনা

দপ্তর: জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: রাজ্যের খরাপ্রবণ জেলাগুলিতে বৃষ্টির জল ধরে রাখা ও সেচের কাজে লাগানো।[৩] রাজ্যের অর্থনীতির মেরুদণ্ড কৃষি যা প্রধানত বৃষ্টিনির্ভর। নদী-নালা-পুকুর-দিঘি-পাল, মোনাকোর ও অঞ্চলে সারা বছরই চায় এমো বেশিলাগুলিতে যেমন পশ্চিম মেদিনহজে করা যায় কিসব অঞ্চলে। কিন্তু রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে যেমন পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামবাঁকুড়া, পুরুলিয়াবীরভূমে ভূ-প্রাকৃতিক কারণে জলের অপ্রতুলতার পাশাপাশি বৃষ্টির জঙ্গল ধরে রাখার ক্ষমতা কম। ফলে মূল্যবান বৃষ্টির জল সংরক্ষণের প্রয়োজন অত্যন্ত বেশি। বৃষ্টির জবল সঞ্চয় করে নানা সেচ পদ্ধতির মাধ্যমে সেই জল যথাযথভাবে ব্যবহার করে জেলাগুলিয়ে অথনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানো হয়। পশুপালন ও অন্যান্য কৃষিভিত্তিক শিল্পের কাজে ব্যবহার করা যায়। এই উদ্দেশ্যে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় এবং সুন্দরবনের লবণাক্ত জমিতে এই প্রকল্প প্রচারের

কারা আবেদন করতে পারবেন: ইচ্ছুক ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকেরা সমষ্টিগতভাবে এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ জন্য তাদের জল-ব্যবহারকারী সমিতি গঠনের সম্মতিপত্র প্রদান করতে হবে। প্রকল্প রূপায়ণের পূর্বে ঐ জেলার জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন দপ্তরের স্থানীয় সহকারী/নির্বাহী বাস্তুকারের সাহায্যে ঐ সমিতিটিকে সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট-এর মাধ্যমে নিবন্ধীকরণের ব্যবস্থা করতে হবে।

যোগাযোগ:

  1. প্রশাসনিক ভবন, জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন দপ্তর, প্রণবানন্দ সরণি, আইলাকান্দি, পোস্ট-কেন্দুয়াডিহি, জেলা-বাঁকুড়া।
  2. প্রশাসনিক ভবন, জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন দপ্তর, শরৎপল্লি, ডাকবাংলো রোড, পোস্ট অফিস ও জেলা-পশ্চিম মেদিনীপুর।
  3. প্রশাসনিক ভবন, জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন দপ্তর, পোস্ট বড়বাগান, সিউড়ি, বীরভূম। ৪) প্রশাসনিক ভবন, জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন দপ্তর, শিবমন্দির (মাটিগাড়া বিডিও অফিসের বিপরীতে) পোস্ট-কদমতলা, জেলা-দার্জিলিং।
  4. প্রশাসনিক ভবন, জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন দপ্তর। ৪৯/২ গড়িয়াহাট রোড (দ্বিতীয় তল) গড়িয়াহাট, কলকাতা-১৯।

জল ধরো জল ভরো সম্পাদনা

দপ্তর: জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতি মূলত কৃষিভিত্তিক এবং কৃষিও মূলত বৃষ্টিনির্ভর। এই রাজ্যে বৃষ্টির জলকে ধরে রেখে চাষের কাজে ব্যবহার করতে এই প্রকল্প। ভূগর্ভস্থ এবং ভূপৃষ্ঠের জলের পরিমাণ বাড়াতে ২০১১-১২ সালে এই প্রকল্পের সূচনা করা হয় এ রাজ্যে। একদিকে বৃষ্টির জল ধরে রাখা এবং অন্যদিকে ভূপৃষ্ঠের উপর দিয়ে বয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়া জলকে আটকে রাখা- এই দুই পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রকল্পে সাফল্য পেয়েছে এই দপ্তর। এইভাবে জল ধরে রেখে, সারা বছর এমনকি খরা মরশুমেও কৃষিজমিতে জল সরবরাহ সুনিশ্চিত করা যায় এই প্রকল্পের মাধ্যমে।

এই প্রকল্পের আর একটি লক্ষ্য হল বৃষ্টির জল সংরক্ষণ এবং সেচের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে জলের ব্যবহার সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।

কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এই নিয়ে জন-সচেতনতামূলক প্রচার কার্য চলছে। জল সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা, সেচের জলের যথাযথ ব্যবহার এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ করে জলের গুণমান বজায় রাখা-সাধারণ মানুষের কাছে এই বার্তাগুলি পৌঁছে দেওয়াই প্রচারের উদ্দেশ্য। এই প্রকল্পে ২ লক্ষ জলাশয়কে সংস্কার করা এবং নতুন করে খননের কাজ শেষ হয়েছে। ছোটো ছোটো সেচ বাঁধ নির্মাণ ছাড়াও ছোটো-বড়ো নানা আকারের পুকুর, দিঘি, নয়ানজুলি এবং অন্যান্য জলাধারের পুনঃখনন। ও সংস্কার কার্য চলছে। এতে জলাশয়গুলির জলধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে এইসব জলাশয়ে মাছ চাষেরও কাজ পুরো মাত্রায় চলছে। ফলে রাজ্যে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি মৎস্যচাষের মাধ্যমে গ্রামীণ মানুষের জীবিকার্জনের সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও সরকারের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগের সহায়তায় কাজির কাগ্রিম ভাবে রাজ্যে সেচের ক্ষমতা বাড়ানোর কাজ চলছে। তৈরি হচ্ছে চেক ড্যাম, উল ছাদ থেকে বৃষ্টির জল সংগ্রহ সংক্ষণের জন্য কৃত্রিম জলাধার।

প্রকল্পের সুযোগ কারা পাবেন: এককথায়, এটি একটি বহুমুখী প্রকল্প। শুখা মরশুমে সেচের সুযোগবৃদ্ধি, দরিদ্র মৎসজীবীদের এই জলাধারগুলিতে মাছ চাষের মাধ্যমে আয়ের নতুন সুযোগ করে দেওয়া, বছরভর স্থানীয় মানুষদের ঘরের কাজকর্মের পাশাপাশি পশুপালনের জয় পাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া এই প্রকল্পের মুখ্য উদ্দেশ্য।

যোগাযোগ: এই প্রকল্পের জন্য জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন দপ্তরের অধীন বিভিন্ন জেলায় কর্মরত পদস্থ নির্বাহী বাস্তুকার (কৃষি-সেচ)/(কৃষি-যান্ত্রিক)-এর কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে হবে।

নিজ গৃহ নিজ ভূমি সম্পাদনা

দপ্তর: ভূমি ও ভূমিসংস্কার এবং উদ্বাস্তু ত্রাণ ও পুর্নবাসন দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: রাজ্যের ভূমিহীন দরিদ্র মানুষদের স্থায়ী আশ্রয় এবং আশ্রয়কে কেন্দ্র করে জীবন-জীবিকার মানোন্নয়ন। এটি একধরনের পুনর্বাসন প্রকল্প।

সরকারের খাস জমি ভূমিহীন মানুষদের মধ্যে ৫ শতক করে চাষ ও বাসের জন্য দান করা হচ্ছে। ওই জমিতে অন্যান্য সরকারি দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে বাড়ি তৈরি, রাস্তা তৈরি, জল-আলো-নিকাশির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বাড়ি সংলগ্ন জমিতে চাষবাস, প্রাণীপালন, কুটিরশিল্প, হস্তশিল্প, সংলগ্ন অঞ্চলে পুকুর কেটে মাছ চাষ করানো, স্থানীয়ভাবে সুলভ কাঁচামাল ব্যবহার করে নানা পণ্য তৈরির প্রশিক্ষণ ও বিক্রির ব্যবস্থা-এইসব নানা কাজের মধ্যে দিয়ে এই 'ভূমি-দান' প্রকল্প একটি বহুমুখী প্রকল্প হিসেবে সার্থক হয়ে উঠছে।

২০১১-র ১৮ অক্টোবর এই প্রকল্পটি চালু করা হয়। বহুসংখ্যক মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে তাঁদের জীবনযাপনের মান উন্নত করে চলেছেন। ৩ লক্ষ বাস্তুজমির পাট্টা দেওয়া হয়েছে। ১২৭৪.৮৯ একর কৃষিজমি বিলি করা সম্ভব হয়েছে। ২০১৮-র মার্চ পর্যন্ত ২ লক্ষ ১৯ হাজার ৫৫০ জন এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। ২১ হাজারেরও বেশি NGNB প্রকল্পের জমিতে জীবিকার উন্নতির জন্য বিভিন্ন প্রকল্প সংযুক্ত হয়েছে।

কারা আবেদন করতে পারবেন: কৃষি-কাজ, প্রাণীপালন, মৎস্য চাষ, হস্ত ও কুটিরশিল্প প্রভৃতি চিরাচরিত পেশার সঙ্গে আবহমান কাল ধরে যুক্ত থাকা সত্ত্বেও আজও যাঁরা একটুকরো জমির মালিক হতে পারেননি এবং বসতজমি কেনার ক্ষমতাও নেই তাঁরাই এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন। বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রান্তিক মানুষজনও এই সুবিধা পাবেন।

যোগাযোগ: সংশ্লিষ্ট বিএল অ্যান্ড এলআর অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।

মিশন নির্মল বাংলা সম্পাদনা

দপ্তর: পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তর, নগরোন্নয়ন ও পৌর বিষয়ক দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি জেলাকে মুক্ত শৌচবিহীন হিসাবে ঘোষণা করা। দেশের মধ্যে প্রথম এই রাজ্যেই 'নদিয়া' জেলা এই শিরোপা পায়।

যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগের ফলে রাজ্যের জনস্বাস্থ্য নানা ভাবে বিঘ্নিত হয়। বিভিন্নভাবে জনসচেতনতা শিবির, আলোচনাচক্র ও প্রচারের ফলে এই রাজ্যের একের পর এক জেলাকে 'মুক্ত শৌচবিহীন' ঘোষণা করা হয়েছে।

ইতিমধ্যে উত্তর ২৪ পরগনা, কোচবিহার, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান ও হুগলি জেলা এই স্বীকৃতি অর্জন করেছে। মালদা ও হাওড়া জেলার পর দক্ষিণ দিনাজপুর, বীরভূম, ও মুর্শিদাবাদ জেলাও এই স্বীকৃতির অপেক্ষায়।

কারা আবেদন করবেন: গ্রামাঞ্চলে বা শহরাঞ্চলে বসবাসকারী যাঁদের বাড়িতে শৌচালয় নেই তাঁরা শৌচালয় নির্মাণে টাকা পাবেন।

যোগাযোগ: পঞ্চায়েত অথবা পৌরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

পশ্চিমবঙ্গ স্বনির্ভর সহায়ক প্রকল্প সম্পাদনা

দপ্তর: স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং স্বনিযুক্তি দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত ঋণের সুদে ভরতুকি দিয়ে ঋণের বোঝা কমানো। স্বনির্ভর দলগুলো বাণিজ্যিক ব্যাংক, আঞ্চলিক গ্রামীণ এবং সমবায় ব্যাংক থেকে ঋণ নেয় বার্ষিক ১১ শতাংশ হারে। সরকার এই সুদের ৯ শতাংশ ভরতুকি হিসেবে দেয়। বাকি ২ শতাংশ স্বনির্ভর দলগুলিকে দিতে হবে।

ঋণ-ভরতুকির সুবিধাপ্রাপ্ত স্বনির্ভর দলগুলিকে ঋণদানকারী ব্যাংকগুলি বৈদ্যুতিন মাধ্যমে এই ভরতুকি দাবি করতে পারে পশ্চিমবঙ্গ স্বরোজগার কর্পোরেশন লিমিটেডের কাছে। এই দাবি সঠিক বিবেচিত হলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অ্যাকাউন্টে ওই ভরতুকির টাকা সরাসরি জমা হয়। এ পর্যন্ত এই প্রকল্পের অধীনে ২,৭৮,৭৮৬ সংখ্যক স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে সুদের ভরতুকি বাবদ ৫৮.৮১ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

কারা আবেদন করতে পারবেন: রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি।

যোগাযোগ: ম্যানেজিং ডিরেক্টর, পশ্চিমবঙ্গ স্বরোজগার কর্পোরেশন লিমিটেড (West Bengal Swarojgar Corporation Ltd.-WBSCL) স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি দপ্তর, ইস্ট ইন্ডিয়া হাউস (প্রথম তল), ২০বি আব্দুল হামিদ স্ট্রিট, কলকাতা-৬৯, email: wbscl@yahoo.com

বাংলার বাড়ি সম্পাদনা

দপ্তর: নগরোন্নয়ন ও পৌর বিষয়ক দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: শহর অঞ্চলের দরিদ্র মানুষের পুনর্বাসনের জন্য নিজস্ব নিরাপদ আশ্রয় দেওয়া। গ্রামাঞ্চল থেকে শহরাঞ্চলের দিকে প্রতিনিয়তই মানুষের চলে আসার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শহরে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিতে মানুসের ভিড় ক্রমশ বাড়ছে। অথচ জমির অভাব। ঠাঁই মেলার সমস্যা। কোনওরকমে অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় দিনগুজরান করে জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন শহরের দরিদ্র মানুষেরা।

জমির অপ্রতুলতার কথা ভেবে এই সমস্যা সমাধানে বহুতল যৌথআবাস তৈরির প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এখানে নিজস্ব ফ্ল্যাটে তাঁদের আশ্রয় হবে। পূর্ণ হবে জীবনের মানোন্নয়নের অন্যতম মূল চাহিদা। সুস্থ ও স্বাস্থ্যকরভাবে বাঁচার পরিবেশ প্রদান করে 'সুনাগরিক' হিসেবে সকলে যাতে জীবনযাপন করতে পারে সেই প্রচেষ্টায় অন্যতম পদক্ষেপ এই প্রকল্প। জি-৩ এই আবাসনগুলিতে ২৮৫ বর্গফুট কার্পেট এরিয়ার ফ্ল্যাট দেওয়া হচ্ছে। ১৬টি করে ফ্ল্যাট থাকবে। প্রতিটি ফ্ল্যাটের মূল্য ৪ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা। উপভোক্তাকে এই বাবদ বহন করতে হচ্ছে ২৫,০০০ টাকা মাত্র।

কারা আবেদন করতে পারবেন: যে পরিবারের কর্ত্রী মহিলা অথবা অন্যভাবে সক্ষম (প্রতিবন্ধী) ব্যক্তি এবং যাঁরা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল ও মাসে ১০ হাজার টাকার মধ্যে আয়, তাঁরা এই নতুন প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। তপশিলি জাতি ও উপজাতি এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষও মোট জনসংখ্যার আনুপাতিক ভাগহারে এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।

যোগাযোগ: স্থানীয় পৌরসভায় যোগাযোগ করতে হবে।

মানবিক সম্পাদনা

দপ্তর: নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবন্ধী বা বিশেষভাবে সক্ষম মানুষ যাঁদের প্রতিবন্ধকতা ৫০% অথবা অধিক, তাঁদের এই পেনশন প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা। মানবিক প্রকল্পের আওতায় উপভোক্তা প্রতি মাসে ১,০০০ (এক হাজার) টাকা করে ভাতা পাবেন।

কারা প্রকল্পের সুবিধা পাবেন: প্রতিবন্ধী বা বিশেষভাবে সক্ষম মানুষ এই পেনশন প্রকল্পের আওতায় আসবেন যদি নিম্নলিখিত শর্তগুলি পূরণ করেন-

  1. আবেদনকারীর প্রতিবন্ধকতা ৫০% বা তার অধিক হতে হবে।
  2. আবেদনকারীর পারিবারিক আয় বার্ষিক ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকার কম হতে হবে।
  3. আবেদনকারীকে ভারতীয় নাগরিক হতে হবে এবং কমপক্ষে দশ বছর পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করতে হবে (পেনশনের আবেদনের তারিখ ভিত্তি ধরে)
  4. আবেদনকারীর বয়স দশ বছরের কম হলে বসবাসের সময় নির্ধারিত হবে আবেদনকারীর জন্ম তারিখ এবং আবেদনের তারিখের ব্যবধান সময়ানুযায়ী।
  5. আবেদনকারী রাজ্য অথবা কেন্দ্রীয় সরকার অথবা অন্য কোনও সূত্র থেকে বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা, কৃষি ভাতা, পারিবারিক পেনশন প্রকল্পের আওতায় আর্থিক সহায়তা পেলে, মানবিক প্রকল্পের আওতায় ভাতা পাবেন না

যোগাযোগ: উপভোক্তারা স্থানীয় ব্লক অফিস অথবা গ্রামীণ এলাকায় পঞ্চায়েত সমিতিতে এবং শহর এলাকায় পৌরসভায় যোগাযোগ করতে পারেন।

মাভৈঃ (ওয়েস্ট বেঙ্গল হেল্থ স্কিম ফর দ্য জার্নালিস্ট-২০১৬) সম্পাদনা

দপ্তর: তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: সরকারি অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড-প্রাপ্ত বিভিন্ন মাধ্যমের সাংবাদিকদের জন্য স্বাস্থ্য বিমা চালু করা হয়েছে এই প্রকল্পে। সংবাদমাধ্যম গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে স্বীকৃত ও সম্মানিত। এই মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা তাঁদের কর্মক্ষেত্রের গুরুত্ব সম্পর্কে সর্বদা সজাগ ও শ্রদ্ধাশীল। বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়ন এই পেশাকে ক্রমশ চ্যালেঞ্জবহুল করে তুলেছে। এই পেশার কর্মপরিধি ক্রমশ বিস্তৃত হচ্ছে ও কর্ম পদ্ধতিতেও হয়ে চলেছে ব্যাপক পরিবর্তন। কর্ম বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও সংবাদমাধ্যম হয়ে উঠেছে উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্র। পশ্চিমবঙ্গে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড-প্রাপকদের সংখ্যাও ক্রমবর্ধমান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার গঠনের প্রথম দিন থেকে রাজ্যে সাংবাদিকদের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে তাঁদের বিশেষ সুবিধা দিতে মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছায় চালু হয়েছে এই স্বাস্থ্য বিমা। রাজ্য সরকারি কর্মীদের মতো সরকার স্বীকৃত এবং তালিকাভুক্ত, রাজ্যের সমস্ত সাংবাদিক এবং চিত্র-সাংবাদিকদের জন্য এই নতুন স্বাস্থ্য বিমা চালু করা হয়েছে। এই বিমার আওতায় নির্দিষ্ট সাংবাদিক এবং তাঁর উপর নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যরা প্রতিটি সরকারি এবং তালিকাভুক্ত নির্দিষ্ট কিছু বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারবেন।

পরিবারের নির্ভরশীল সদস্য বলতে স্ত্রী (যিনি নিজে মেডিক্যাল অ্যালাওয়েন্স পান না), বাবা-মা যাঁদের মাসিক আয় ৫ হাজার টাকার কম, ছেলেমেয়ে, অবিবাহিত/বিধবা/ডিভোর্সি বোন এবং নাবালক ভাইবোন এই স্বাস্থ্য বিমার আওতায় আসবেন।

কারা আবেদনের যোগ্য: জেলা হোক বা কলকাতা, সরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সাংবাদিকরা (Govt. Accredited Journalist) রাজ্য সরকারি কর্মীদের মতো এই স্বাস্থ্য প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন। ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত আবেদন করা যায়।

যোগাযোগ: জেলার ক্ষেত্রে জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক এবং কলকাতার ক্ষেত্রে কলকাতা তথা কেন্দ্রে, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের হেল্প ডেস্কে নির্দিষ্ট ফর্মেই আবেদন করতে হবে। এই আবেদন, সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত, সেখানকার সম্পাদক বা সমমর্যাদা সম্পন্ন কোনও বক্তি সই করে দিলে তবে সেটি জমা করা যাবে।

মুক্তির আলো সম্পাদনা

দপ্তর: নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: এই প্রথম সরকারি উদ্যোগে ও সম্পূর্ণ আর্থিক অনুদানে স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যৌনকর্মীদের এবং বিভিন্ন জায়গায় পাচার হয়ে যাওয়া নারী ও বালিকাদের পুনরুদ্ধারের পর কাউন্সেলিং এবং বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে মুক্তির আলো প্রকল্পে।

প্রশিক্ষণ চলাকালীন তাদের থাকা-খাওয়া, কাউন্সেলিং-এর সঙ্গে মাসিক ভাতারও বন্দোবস্ত করেছে সরকার। প্রশিক্ষণ শেষে ইচ্ছুক শিক্ষানবিশদের স্বাবলম্বনের জন্য এই প্রকল্প থেকে এককালীন মূলধনও দেওয়া হয়।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্পের নামকরণ ও শুভ সূচনা করেন গত ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫।

মুক্তির আলো প্রকল্পে ব্লক প্রিন্টিং ও স্পাইস গ্রাইন্ডিং-এর উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং আাফেটেরিয়া ম্যানেজমেন্ট' ও 'টায়ার টিউবের পুনর্ব্যবহার'-এর উপর প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। এরা প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন: পাচারের শিকার হওয়া মহিলা ও বালিকারা, যৌনকর্মী এবং তাঁদের ন্যাসন্তানগণ।

কারা আবেদন করতে পারবেন: যৌন এলাকায় কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন স্বেচ্ছাসেবী তিষ্ঠান যারা এই পরিষেবা দিতে আগ্রহী।

যোগাযোগ: নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তর-এর অধীনস্থ সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ নারী নয়ন নিগম। নির্মাণ ভবন, লবণ হ্রদ, কলকাতা-৯১

মুক্তিধারা সম্পাদনা

দপ্তর: স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: দারিদ্র্য থেকে মুক্তি, উন্নয়নের ডানায় ভর করে বাঁচার স্বপ্ন দেখা, দলগতভাবে দারিদ্র্যের মোকাবিলা করা এবং স্থায়ী উন্নয়নের পথে হাঁটা-এইভাবেই 'মুক্তিধারা' বাংলার প্রান্তিক জীবনে পরিবর্তন আনছে।

রাজ্য সরকার এবং নাবার্ডের আর্থিক সহায়তা ও প্রশিক্ষণে 'মুক্তিধারা' পুরুলিয়াতে শুরু হয়েছিল। বর্তমানে রাজ্য সরকার সম্পূর্ণভাবে প্রকল্পটি রূপায়ণ করছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠন করে বহুমুখী পরিকল্পনায় উন্নয়নের কাজ চলছে। গ্রামবাংলার চিরাচরিত পেশাগুলিতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের প্রশিক্ষিত করে তাঁদের জীবন-জীবিকার দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের চেষ্টা চলছে। ২০১৩-র ৭ মার্চ স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং স্বনিযুক্তি দপ্তরের মাধ্যমে 'মুক্তিধারা' প্রকল্পটি পরীক্ষামূলকভাবে পুরুলিয়ায় শুরু হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে বলরামপুর এবং পুরুলিয়া-১-এর ১৩৯টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের এই প্রকল্পে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। রাজ্যের নানা জেলায় 'পুরুলিয়া মডেল' চালু করা হয়েছে। পুরুলিয়াতে এই প্রকল্প সফল হওয়ায় প্রথমে পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রকল্পটি চালু হয় এবং বর্তমানে হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪-পরগনা, দক্ষিণ ২৪-পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ ও বর্ধমানেও 'মুক্তিধারা' চালু হতে চলেছে।

কারা আবেদন করবেন: রাজ্যের যে জেলাগুলিতে এই প্রকল্প চলছে সেইসব জেলার দরিদ্র মানুষজন স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠন করে এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন। পূর্বে গঠিত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য যাঁরা কোনও সরকারি প্রশিক্ষণ পাননি, তাঁরাও এই প্রকল্পের আওতায় আসতে পারেন।

যোগাযোগ: এই প্রকল্পের জন্য জেলাস্তরে জেলা প্রশাসনিক টিম তৈরি করা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন পদাধিকারীর সঙ্গে উন্নয়নের সঙ্গে মূল ধারায় যুক্ত সরকারি বিভাগগুলি, যেগুলিকে লাইন ডিপার্টমেন্ট বলে, সেগুলিকেও যুক্ত করা হয়েছে। জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি আধিকারিক, ব্লকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সুপার ভাইজার-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে। পশ্চিমবঙ্গ স্বরোজগার নিগম লিমিটেড (WBSCL) এই প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে। ঠিকানা- ইস্ট ইন্ডিয়া হাউস (প্রথম তল), ২০বি আব্দুল হামিদ স্ট্রিট, কলকাতা-৬৯

যুবশ্রী সম্পাদনা

দপ্তর: শ্রম দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: 'যুবশ্রী' প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের শ্রম দপ্তরের অধীন এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংক-এ নথিবদ্ধ অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সী যুবক- যুবতীরা মাসে ১৫০০ টাকা হারে ভাতা পান।

২০১৩ সালের ৩ অক্টোবর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যুবশ্রী প্রকল্পের সূচনা করেন। এই প্রকল্পে মোট উপভোক্তার সংখ্যা ২.৬৬ লক্ষ ও মাসিক উপভোক্তার সংখ্যা সর্বোচ্চ ১ লক্ষ। নথিভুক্ত যুবক-যুবতীরা যাতে নানা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজেদের দক্ষতা বাড়াতে পারেন বা তাঁদের শিক্ষা চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেন সেই উদ্দেশ্যেই এই আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পের অধীন ভাতা-প্রাপকদের প্রতি ৬ মাস অন্তর প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত তথ্য এবং তিনি এখনও প্রকল্পের

সমস্ত যোগ্যতাবলির অধিকারী কিনা সেই সংক্রান্ত একটি স্ব-ঘোষণা জমা করতে হয়। এই প্রকল্পের সহায়তা নিয়ে যাঁরা চাকরি পাবেন বা স্বনির্ভর হবেন তাঁরা আর এই আর্থিক সহায়তা পাবেন না। পরিবর্তে নতুন চাকরিপ্রার্থীরা পর্যায়ক্রমিকভাবে এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।

কারা আবেদনের যোগ্য: চাকরিপ্রার্থী' হিসেবে রাজ্যের শ্রম দপ্তরের এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংক-এ নাম নথিভুক্ত করানো এই রাজ্যে বসবাসকারী বেকার যুবক-যুবতীরা এই সুযোগ পাবেন। ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ হতে হবে। এর বেশি শিক্ষাগত যোগ্যতাও থাকতে পারে। যে বছর প্রার্থী এই প্রকল্পের আওতায় আসবেন সেই বছরের ১ এপ্রিল তাঁর বয়স ১৮ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে থাকতে হবে। রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের (স্পনসর্ড) কোনও স্বনিযুক্তি প্রকল্পের অধীন কোনও আর্থিক সহায়তা বা ঋণ গ্রহণ করেননি এমন যুবক-যুবতীরাই আবেদন করতে পারবেন। পরিবারে মাত্র একজন সদস্যই এই প্রকল্পের আওতায় আর্থিক সহায়তার সুবিধা পেতে পারেন।

যোগাযোগ: স্থানীয় এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংকে নাম নথিভুক্ত করা যাবে। বর্তমানে অন-লাইনে প্রার্থীরা নিজেরাই ফর্ম পূরণ করতে পারবেন। এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংকের ওয়েবসাইট- https://employmentbankwb.gov.in/

রূপশ্রী সম্পাদনা

দপ্তর: নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজকল্যাণ দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্যে: পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী যে সব দরিদ্র পরিবার বিবাহযোগ্যা কন্যার বিবাহ অনুষ্ঠানের আনুষঙ্গিক খরচ বহন করতে পারে না অথবা অসুবিধার সম্মুখীন হয়, সেই সব দুঃস্থ পরিবারকে রূপশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে এককালীন ২৫,০০০ টাকা অনুদান রূপে দেওয়া হয়।[৪]

কারা আবেদন করতে পারবেন:

  • এই প্রকল্প সারা রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ১ এপ্রিল, ২০১৮ থেকে শুরু হয়েছে। এই তারিখে অথবা তার পরে অনুষ্ঠিত সব বিবাহের ক্ষেত্রে এই প্রকল্প প্রযোজ্য।
  • আবেদনকারীর বয়স অন্তত ১৮ বছর হতে হবে।
  • আবেদনকারীকে অবিবাহিত হতে হবে এবং একমাত্র প্রথম বিবাহের জন্য এই সুবিধা পাওয়া যাবে।
  • এই রাজ্যেই জন্ম হয়েছে এমন হতে হবে অথবা মাতা-পিতা বিগত ৫ বছর যাবৎ এই রাজ্যে স্থায়ী বসবাসকারী এমন হতে হবে।
  • পরিবারের বার্ষিক আয় অনধিক ১,৫০,০০০/- টাকা হতে হবে।
  • পাত্রের বয়স অন্তত ২১ বছর হতে হবে।
  • যে কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে শুধুমাত্র আবেদনকারীর নামে সেভিংস অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।

যোগাযোগ: আবেদনপত্র যথাযথভাবে পূরণ করে উপযুক্ত প্রমাণপত্র-সহ স্থানীয় বিডিও অফিসে বা মিউনিসিপ্যালিটিতে জমা দিতে হবে। মেয়ের অবিবাহিত থাকার প্রমাণপত্র বা স্ব-ঘোষণাপত্র অভিভাবক বা পরিবারের বার্ষিক আয়, বয়সের প্রমাণপত্র, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট ইত্যাদি প্রমাণপত্র জমা করতে হবে।

লোকপ্রসার সম্পাদনা

দপ্তর: তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: পশ্চিমবঙ্গের বৈচিত্র্যপূর্ণ ও বর্ণময় লোকসংস্কৃতির বিভিন্ন লোক-আঙ্গিকের বা ধারার সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ এবং সমৃদ্ধির পাশাপাশি লোকশিল্পীদের জীবনের মানোন্নয়ন ঘটানো, তাঁদের যথাযথ মর্যাদাদান এবং আর্থিক সহায়তা করাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। এ ছাড়া, লোকসংস্কৃতির শক্তিশালী মাধ্যমটিকে জনসচেতনতা ও উন্নয়নমূলক কাজের প্রচারে ব্যবহার করাও এই প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ দিক।

বিভিন্ন ধারার শিল্প ও শিল্পীকে সম্মান ও মর্যাদাদানের মধ্য দিয়ে বাংলার নিজস্ব সংস্কৃতিকে পুষ্ট করে তোলার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। ঘটানো হয়েছে মূলধারার সংস্কৃতির সঙ্গে লোকসংস্কৃতির মেলবন্ধন।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে লোকশিল্পীদের শিল্পী-পরিচয়পত্র প্রদান করা, শিল্পীদের বহাল ভাতার ব্যবস্থা করা ও উন্নয়নমূলক সরকারি প্রকল্পের প্রচারের কাজে লাগানো হচ্ছে। দুস্থ ও বয়স্ক লোকশিল্পীদের মাসিক পেনশনেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সারা রাজ্যে ইতিমধ্যে প্রায় ১.৯৫ লক্ষ লোকশিল্পীকে পরিচয়পত্র প্রদান করা হয়েছে। ৬০ বছরের বেশি বয়সের লোকশিল্পীরা প্রতি মাসে ১০০০ টাকা করে পেনশন পাচ্ছেন। ৬০ বছরের কম বয়সের লোকশিল্পীরা সরকারের নানা প্রচারের কাজে অংশ নিচ্ছেন এবং সাংস্কৃতিক উৎসব-অনুষ্ঠানে তাঁদের অসাধারণ শিল্পনৈপুণ্য প্রদর্শনের সুযোগ পাচ্ছেন। মাসে ১০০০ টাকা করে বহাল ভাতা পাচ্ছেন তাঁরা। কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, শিক্ষাশ্রী, খাদ্যসাথী, সবুজশ্রী, সবুজসাথী, সমব্যথী ইত্যাদি প্রকল্পগুলির প্রচারে বিশ্বখ্যাত লোকশিল্পীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ভূমিকা পালন করছেন এবং সরকারি প্রচারে অংশ নিয়ে তাঁরা অনুষ্ঠান-পিছু ১ হাজার টাকা সম্মান দক্ষিণা পাচ্ছেন।

পেনশন ও বহাল ভাতার টাকা শিল্পীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি জমা পড়ে যায়। সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলোকে সফল করে তুলতে লোকশিল্পীরা তাঁদের আকর্ষণীয়, বর্ণময়, সহজবোধ্য আঙ্গিক ব্যবহার করছেন। সাধারণ মানুষের কাছে এইভাবে তাঁরা প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণের তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছেন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই লোকপ্রসার প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক পরম্পরা ও ঐতিহ্যের বিকাশের কাজকে অপ্রতিহত করে তুলেছেন। প্রত্যেক জনগোষ্ঠীই আজ নিজেদের হারানো ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এগিয়ে এসেছে। বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর নিজস্ব 'বোর্ড' গঠনের মাধ্যমে এই কাজ আরও গতি পাচ্ছে। লুপ্তপ্রায় লোক-সংস্কৃতির নানা ধারা পুনরুজ্জীবিত হওয়ায় বাংলার সাংস্কৃতিক সম্পদের গুণমান ও পরিমাণ-দুটোই বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরাও নিজস্ব সাংস্কৃতিক ধারাকে বাঁচিয়ে রাখা ও উন্নত করার প্রয়াস নিচ্ছেন। তাঁদের কাছেও শিল্পীর পরিচয়পত্র এবং বহাল ভাতা দুটিই খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

শিক্ষাশ্রী সম্পাদনা

দপ্তর: অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দপ্তর এবং আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: অতি দরিদ্র প্রতিটি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার। একদিকে খাদ্যের ব্যবস্থা, অন্যদিকে পড়াশোনা। পিছিয়ে-থাকা-পরিবারের পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য বার্ষিক বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে এই প্রকল্পে। ফলে শিক্ষাশ্রী, আজ রাজ্যের প্রতিটি তপশিলি জাতি ও তপশিলি আদিবাসী পরিবারের কাছে মুক্তির আলো এনে দিয়েছে। সরকারের অর্থে নিজের ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করে দাঁড়াবে, সমাজের মূল স্রোতে মিশবে-একজন তপশিলি জাতি বা তপশিলি আদিবাসী বাবা-মায়ের কাছে এটা অনেক বড়ো পাওয়া। আর তাঁদের এই ইচ্ছে পূরণ করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। তপশিলি জাতির ক্ষেত্রে পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণির জন্য বার্ষিক ৭৫০ টাকা হারে ও অষ্টম শ্রেণির জন্য বার্ষিক ৮০০ টাকা হারে এবং তপশিলি আদিবাসীর ক্ষেত্রে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির জন্য বার্ষিক ৮০০ টাকা হারে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।[৫]

কারা আবেদন করবেন: পরিবারের সারা বছরের আয় ২.৫ লক্ষ টাকা বা তার কম হতে হবে। ছেলে বা মেয়েকে তপশিলি জাতি বা তপশিলি আদিবাসী হতে হবে এবং কোনও সরকারস্বীকৃত স্কুলে পড়াশোনা করতে হবে। আবেদন করতে হবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে। টাকা পাওয়ার জন্য ব্যাংকে ছাত্রছাত্রীদের নিজস্ব অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। ওই অ্যাকাউন্ট খোলবার ব্যবস্থাও রাজ্য সরকার করে দিয়েছে।

সাংসদ, বিধায়ক, পুরপিতা, পঞ্চায়েত প্রধান, জেলা পরিষদ সদস্য, সভাপতি অথবা সরকারি আধিকারিককে দিয়ে বার্ষিক আয়ের প্রমাণপত্র-সহ আবেদনপত্র বিদ্যালয়ে জমা করতে হবে।

যোগাযোগ: বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদনপত্রগুলি খতিয়ে দেখে ছাত্রছাত্রীদের সামগ্রিক তথ্য একসঙ্গে নিয়ে তা ব্লক/মহকুমা শাসকের অফিসের মাধ্যমে জেলায় প্রকল্প আধিকারিকের কাছে পাঠাবেন অর্থ বরাদ্দ করার জন্য। শিক্ষাশ্রীর অর্থ সরাসরি ছাত্রছাত্রীদের নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়।

বিশদ বিবরণের জন্য- www.anagrasarkalyan.gov.in https://adibasikalyan.gov.in/

শিশুসাথী সম্পাদনা

দপ্তর: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই রাজ্যের শিশুস্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে চিন্তাশীল। এরই ফলশ্রুতিতে কমেছে শিশুমৃত্যু হার। রাজ্যের প্রতিটি শিশুর সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য তিনি একাধিক উদ্যোগ নিয়েছেন। এই উদ্যোগেই নতুন সংযোজন শিশুসাথী প্রকল্প। এই প্রকল্পের নামও দিয়েছেন নিজে। ২০১৩ সালের আগস্ট মাসে পথ চলতে শুরু করেছে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের এই প্রকল্প।

জন্মের পর কি শিশুর হার্টের সমস্যা ধরা পড়েছে? হার্টে ফুটো, কোনও ভালভ ঠিকমতো তৈরি না হওয়া, হার্টে রক্ত চলাচলে সমস্যা ইত্যাদি যে কোনও রোগ অর্থাৎ চিকিৎসক কি কনজেনিটাল কার্ডিয়াক ডিফেক্ট (Congenital Cardiac Defect) জাতীয় কিছু বলেছেন? একদম চিন্তা না করে চলে আসা যাবে কলকাতার ২টি সরকারি এবং ৬টি বেসরকারি হাসপাতালের যে কোনওটিতে। তবে সেটি অবশ্যই জেলার বা ব্লকস্তরে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের মাধ্যমে, সরাসরি নয়।

১৮ বছর বয়স পর্যন্ত ওই শিশুর হার্টের চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব রাজ্য সরকারের।

শুধু তাই নয়, শিশু-সহ বাড়ির একজনের থাকা, সমস্ত ধরনের জটিল অস্ত্রোপচারের সব দায়িত্বই রাজ্য সরকারের। হার্টের বিভিন্ন জটিল সমস্যার চিকিৎসা বিনামূল্যে করিয়ে বাবা-মা, শিশুকে বাড়ি নিয়ে যেতে পারছেন।

সরকারি হাসপাতাল এসএসকেএম এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ছাড়াও বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই পরিষেবা পাওয়া যায়।

কারা এই সুযোগ পাবেন: এককথায় ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত রাজ্যের যে কোনও শিশু। এক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী, শিশুর পরিবারের আয়ের কথা মাথায় রাখতে নিষেধ করেছেন। অর্থাৎ, পরিবারের যত কম বা যত বেশি আয়-ই হোক, এপিএল বা বিপিএল-তা হিসেবের মধ্যে ধরা হবে না। শিশুটি রাজ্যের, এটাই শেষ কথা।

যোগাযোগ: কলকাতার এসএসকেএম (পিজি হাসপাতাল) এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, জেলায় মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অর্থাৎ CMOH এবং ব্লকস্তরে BMOH-এর কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে হবে।

সবলা সম্পাদনা

দপ্তর: নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: কিশোরীদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জীবনশৈলী ও কর্মসংস্থানগত উন্নতি ঘটিয়ে তাদের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করা হচ্ছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। পরিপূরক পুষ্টির ব্যবস্থা করা হচ্ছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি খাবার অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রের মাধ্যমে কিশোরীদের সরবরাহ করে। এইভাবে অপুষ্টি দূর করার পাশাপাশি স্বাস্থ্য, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, কৈশোর-জনিত প্রজনন ও যৌন স্বাস্থ্য, পরিবার ও শিশুর সুরক্ষা এবং যত্নের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে কিশোরীদের মধ্যে। রাজ্যের ৭টি জেলায় 'কন্যাশ্রী' প্রকল্পের সঙ্গে সমন্বয় তৈরি করে এই প্রকল্প চলছে।

গৃহকর্মে ও জীবনের নানা ক্ষেত্রে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বৃত্তিমুখী প্রশিক্ষণ এবং বিদ্যালয়- বহির্ভূত কিশোরীদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করার কাজ চলছে এই প্রকল্পে। তাদের 'কিশোরী কার্ড' নামে একটি কার্ড দেওয়া হচ্ছে যেখানে তাদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য দেওয়া থাকবে।

কারা আবেদন করতে পারবেন: ১১ থেকে ১৮ বছর বয়সি অবিবাহিতা কিশোরী কন্যারা। বর্তমানে কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, নদিয়া, পুরুলিয়া, কলকাতা, মালদা এবং আলিপুরদুয়ার এই ৭টি জেলায় এই প্রকল্প চলছে।

যোগাযোগ: গ্রামের অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রে এবং ব্লকের সিডিপিও-র সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। বর্তমানে এই প্রকল্পের নাম- "কিশোরীদের জন্য প্রকল্প" (Scheme for Adolescent Girls) হয়েছে এবং এই প্রকল্পের আওতায় ১১-১৮ বছর বয়সি এবং বিদ্যালয় বহির্ভূত কিশোরী মেয়েদের জন্য 'সবলা' প্রকল্পের সমস্ত পরিসেবা সারা রাজ্য জুড়ে সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে দেওয়া হবে।

কিশোরী শক্তি যোজনা সম্পাদনা

যে সমস্ত জেলায় সবলা প্রকল্প কার্যকরী নয়, সেই সমস্ত জেলার জন্য- কিশোরী শক্তি যোজনা।

দপ্তর বা বিভাগের নাম: নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: 'সবলা' প্রকল্পের অধীন ৭টি জেলার বাইরে যে জেলাগুলি আছে সেখানে ১১ থেকে ১৮ বছর বয়সি কিশোরী কন্যাদের পুষ্টি, স্বাস্থ্য এবং উন্নয়নগত অবস্থানের উন্নতির জন্য চালু আছে সবলার অনুরূপ এই প্রকল্প। কিশোরী মেয়েদের আত্ম-নির্ভরতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। ওইসব জেলার ১১ থেকে ১৮ বছর বয়সি কিশোরী কন্যারা এই সুযোগ পাবে। ব্লকস্তরে ও গ্রামস্তরে যোগাযোগ করতে হবে। বর্তমানে এই প্রকল্প বন্ধ করে ভারত সরকার "কিশোরীদের জন্য প্রকল্প" নামক একক প্রকল্প চালু করেছে।[৬]

সবার ঘরে আলো সম্পাদনা

দপ্তর: বিদ্যুৎ ও অচিরাচরিত শক্তি উৎস দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: আধুনিক জীবনযাপনে বিদ্যুতের অপরিসীম গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে রাজ্যের বিদ্যুৎবিহীন অঞ্চলে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য এই প্রকল্পের সূচনা করা হয়। প্রধানত উত্তরবঙ্গ, পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রান্তিক গ্রামগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোজনের ফলে রাজ্যের উন্নয়নে অন্যান্য প্রকল্পগুলির সার্থক রূপায়ণ সম্ভব হচ্ছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সুবিধা সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হলে বিদ্যুৎ পরিষেবার প্রসার অপরিহার্য। সকলেই যাতে উন্নয়নের সুফল ভোগ করাতে পারে, সেই উদ্দেশ্যে এই প্রকল্প। আয়সৃজনের জন্যও এই প্রকল্পের বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা অনস্বীকার্য। 'সবার ঘরে আলো' প্রকল্পের অধীনে ১৬.৪০ লক্ষ গৃহে নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কাজ প্রায় সম্পূর্ণ।

কারা আবেদন করতে পারবেন: গ্রামীণ অঞ্চলের প্রত্যেক গৃহস্থই এই প্রকল্পের সুযোগ পাবেন।

যোগাযোগ: স্থানীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে হবে।

সবুজশ্রী সম্পাদনা

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিটি শিশুকে জন্মগ্রহণের পরপরই একটি মূল্যবান গাছের চারা দেওয়া হচ্ছে।

ওই চারাটি শিশুর নামে লাগাতে হবে এবং শিশুর সঙ্গে সঙ্গে চারাটি বড়ো হবে। শিশুর পরিবার চারাটিকে ও শিশুকে সযত্নে লালনপালন করবে। শিশু বড়ো হলে শিশুর প্রয়োজনে ওই চারা থেকে বেড়ে ওঠা বৃক্ষটিকে আর্থিক কারণে বা প্রয়োজনে ব্যবহার করা যাবে।[৭] এর ফলে শিশুটির ভবিষ্যতের আর্থিক সুরাহার পাশাপাশি গাছটি 'জীবজগৎ'-কেও এতগুলো বছর ধরে অনেক কিছুই দেবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৬-র ১৯ ডিসেম্বর এই প্রকল্পের সূচনা করেন।[৮][৯]

প্রকল্পের সুবিধাভোগী প্রত্যক্ষভাবে রাজ্যের প্রতিটি নবজাতক এবং পরোক্ষভাবে প্রতিটি রাজ্যবাসী। এটি একটি বহুমুখী পরিকল্পনা।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে 'সবুজ বাংলা' গড়ে তোলা হচ্ছে। অন্যদিকে প্রকৃতি ও মানবসন্তান-এর মধ্যে যে অচ্ছেদ্য সম্পর্ক ও অনুভূতি গড়ে তোলার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে নিঃসন্দেহে তা অভিনব। ইতিমধ্যে ১৫ লক্ষেরও বেশি চারাগাছ এই প্রকল্পে লাগানো হয়েছে।

প্রকল্পের সুযোগ কারা পাবেন: রাজ্যের নবজাতকেরা।

যোগাযোগ: প্রতিটি শিশু জন্মানোর পর বনদপ্তর থেকে তার বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই চারা তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।

সবুজসাথী সম্পাদনা

দপ্তর: অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: ছাত্রছাত্রীদের সাইকেল বিতরণের একটি প্রকল্প 'সবুজসাথী'। ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষের বাজেট বিবৃতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, রাজ্যের সরকারি, সরকার পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসার নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীকে সাইকেল দেওয়া হবে। এই প্রকল্পই এখন 'সবুজসাথী' নামে পরিচিত। নামকরণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। এই প্রকল্পে ৭০ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীকে সাইকেল দেওয়া হচ্ছে।

ছাত্রছাত্রীরা যেন ভবিষ্যতে নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর ক্ষমতা অর্জন করতে পারে সেই উচ্চাশা নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর এই স্বপ্নের প্রকল্প। প্রকল্পের লোগোটিও তিনিই এঁকেছেন। সাইকেলের সামনের ঝুড়ির সঙ্গে লোগোটি সংযুক্ত করা হয়েছে। ২০১৫ সালে সেপ্টেম্বর মাসে পশ্চিম মেদিনীপুরের এক অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী নিজের হাতে এই প্রকল্পের মাধ্যমে সাইকেল বিতরণ শুরু করেন। ছাত্রছাত্রীদের, প্রধানত ছাত্রীদের ক্ষমতা বৃদ্ধি, এবং উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে স্কুল-ছুট (Drop outs)-এর হার কমানোই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।

অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দপ্তর এই প্রকল্প রূপায়ণের মূল দপ্তর। এই দপ্তরের অন্তর্গত পশ্চিমবঙ্গ তপশিলি জাতি ও আদিবাসী উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম, নোডাল এজেন্সি হিসাবে কাজ করে। বিভিন্ন দপ্তরের বরিষ্ঠ সচিব ও আধিকারিকদের নিয়ে গঠিত স্টিয়ারিং কমিটি এই প্রকল্পের সাইকেল সংগ্রহ এবং বিতরণের বিষয়টি নজরদারি এবং পরিচালনা করে।

জেলাস্তরে এই প্রকল্প রূপায়ণের জন্য নোডাল আধিকারিকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এসডিও, বিডিও এবং পৌরসভার এক্সিকিউটিভ আধিকারিকেরা নির্দিষ্ট সময়ভিত্তিক এই প্রকল্প রূপায়ণের সঙ্গে যুক্ত। এই প্রকল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল- বিশাল সংখ্যক সাইকেল সংগ্রহ করা। এই উদ্দেশ্যে আন্তর্বিভাগীয় টেন্ডার কমিটি গঠন করা হয়েছে।

প্রকল্প রূপায়ণের কাজ ই-গভর্ন্যান্স-এর মাধ্যমে হচ্ছে। এই প্রকল্পের প্রতিটি পর্যায় সম্পর্কে সুচারুভাবে তথ্য জানার জন্য এবং এই বিশাল প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সকলের কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য পৌঁছে দিতে NIC-র সহযোগিতায় একটি ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে- http://www.wbsaboojsathi.gov[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]. in

কারা প্রকল্পের সুবিধা পাবে: রাজ্যের সরকারি, সরকার পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রী।

যোগাযোগ: বিদ্যালয়ের প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

সমর্থন সম্পাদনা

দপ্তর: শ্রম দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: ২০১৬ সালের নভেম্বরে নোটবন্দিকরণের ফলে কাজ হারিয়ে রাজ্যে ফিরে আসা শ্রমিকদের সহায়তা করার লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই প্রকল্প চালু করা হয়।

কাজ হারানো এইসব শ্রমিকদের এই প্রকল্পে এককালীন ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এই টাকা নিয়ে নিজস্ব উদ্যোগে তাঁরা যাতে আবার নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারেন সেই লক্ষ্যেই এই প্রকল্প। রাজ্যের বেকার সমস্যার উপর 'নোটবন্দি'-র ফলে সৃষ্ট অতিরিক্ত বোঝার মোকাবিলায় সময়োপযোগী এই প্রকল্প অতি দ্রুততার সঙ্গে চালু করা হয়। ২০১৮-র মার্চ পর্যন্ত ১৮,৮৪০ জন এই ধরনের শ্রমিককে এই প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে ৯৪.২০ কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়।

কারা আবেদন করতে পারবেন: নোটবন্দিকরণের ফলে রাজ্যের বাইরে কাজ হারানো যে শ্রমিকরা রাজ্যে ফিরে এসেছেন। প্রাথমিকভাবে কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বর্ধমান (পূর্বতন), নদিয়া, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুর এই দশটি জেলায় সমর্থন প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে।

যোগাযোগ: উপরে উল্লিখিত ১০টি জেলার সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বা ব্লক অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।

সমব্যথী সম্পাদনা

দপ্তর: পুরসভা ও পুরনিগম এলাকায় নগরোন্নয়ন ও পৌর বিষয়ক দপ্তর এবং ব্লক এলাকায় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তর।

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: পরিবারের অতি আপনজন, নিকটাত্মীয় কিংবা পাড়ায় দীর্ঘদিনের পরিচিত প্রতিবেশীর মৃত্যু ঘটেছে। শোকাতুর পরিবার। পাড়ায়, গ্রামে, মহল্লায় শোকের ছায়া। একই সঙ্গে আরও একটি চিন্তা পারলৌকিক ক্রিয়াকর্ম বা কবর দেওয়ার খরচ কী করে জোগাড় হবে। পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার।

এই প্রকল্পের দ্বারা দুস্থ পরিবারের কোনও ব্যক্তির মৃত্যুর পর পারলৌকিক ক্রিয়াকর্ম, মৃতদেহের সৎকার, কবরস্থ বা অন্যান্য প্রচলিত রীতিনীতি পালন করার জন্য মৃতের খুব কাছের কোনও আত্মীয়কে এককালীন ২ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়া হচ্ছে।

অর্থাৎ, দুস্থ মানুষের মৃত্যুতেও সমব্যথী রাজ্য সরকার।

কারা আবেদন করতে পারবেন: মৃতের পরিবারকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা এবং আর্থিকভাবে দুর্বল বা দুস্থ হতে হবে। মৃত ব্যক্তির শেষকৃত্য অর্থাৎ দাহ বা কবরের কাজ পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে করতে হবে। মৃতের পরিবারের সদস্য বা নিকট প্রতিবেশীকে মৃত্যুর প্রমাণের সমস্ত কাগজপত্র দাখিল করতে হবে।

যোগাযোগ: পঞ্চায়েত এলাকায় গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস আর পৌর এলাকায় পৌরসভার অফিসের মাধ্যমে এই সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। শ্মশান/কবরস্থানে পরিষ্কার সাদা কাগজে মৃত্যুর প্রমাণপত্র-সহ আবেদন করলে এই অনুদান নগদে পাওয়া যাচ্ছে। নিকটাত্মীয় না থাকলে নিকট প্রতিবেশীও আবেদন করতে পারবেন।

সমাজ সাথী সম্পাদনা

দপ্তর: স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য/সদস্যাদের ব্যক্তিগত দুর্ঘটনা বিমার আওতায় নিরাপত্তা দেওয়াই (১৮-৬০ বছর বয়স পর্যন্ত) এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। দুর্ঘটনার সময় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আচমকা যে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়, তার মোকাবিলা করতেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য ও তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার।

কারা প্রকল্পের সুবিধা পাবে: এই প্রকল্পে প্রতিটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য বা সদস্যা বিনামূল্যে বছরে সর্বাধিক ২ লক্ষ টাকার দুর্ঘটনা বিমা পরিষেবা পাবেন। প্রকল্পের আওতায় দুর্ঘটনাজনিত চিকিৎসার খরচ, হাসপাতালে ভর্তির খরচ ছাড়াও চিকিৎসার সময় আরও কিছু সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। কাজে অনুপস্থিত থাকার দরুণ দৈনিক পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত হন সেই ব্যক্তি। এর ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয় সমাজসাথী প্রকল্পে। এছাড়া বিমা সংস্থা সংশ্লিষ্ট সুবিধাভোগী ব্যক্তিকে নানাভাবে সাহায্য করবে-তথ্য, শিক্ষা, যোগাযোগ, নাম নথিভুক্ত করানো, স্মার্ট কার্ড সরবরাহ করা ইত্যাদি। বিমা প্রকল্পটি রাজ্যের সবক'টি জেলাতেই কাজ করবে।

২০১৭ সাল থেকে এই প্রকল্পের সুযোগসুবিধা আরও কিছু বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে প্রাপ্ত সুবিধাগুলি নিম্নরূপ-

  1. সুবিধাভোগীর মৃত্যুতে ২ লক্ষ টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।[১০]
  2. দুর্ঘটনায় স্থায়ী অক্ষমতার শিকার হলেও তিনি ২ লক্ষ টাকার আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাবেন।
  3. দুর্ঘটনার ফলে আংশিক অক্ষমতা দেখা দিলে, অক্ষমতার মাত্রা অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
  4. বিমাকৃত ব্যক্তির মৃত্যুতে তাঁর ছেলেমেয়ের জন্য শিক্ষার খরচ হিসেবে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দেওয়া হবে।
  5. দুর্ঘটনার পরে চিকিৎসার জন্য বিমাকৃত ব্যক্তি পাবেন ৬০ হাজার টাকা।
  6. দুর্ঘটনাজনিত কারণে ডে কেয়ার বিভাগে চিকিৎসায় ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া যাবে।
  7. হাসপাতালে ভর্তিকালীন অবস্থায় দৈনিক ১০০ টাকা করে (সর্বাধিক ৩০ দিনের) সাহায্য পাওয়া যাবে।
  8. দুর্ঘটনায় বিমাকৃত ব্যক্তির মৃত্যু হলে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য ২৫০০ টাকা অতিরিক্ত সাহায্য দেওয়া হবে তাঁর পরিবারকে।

ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে আঘাত করা, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় দুর্ঘটনা, অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থেকে দুর্ঘটনা ঘটলে এই বিমার আওতায় কোনও সুবিধা পাওয়া যাবে না।

স্মার্টকার্ড ব্যবহারের পদ্ধতি- স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কোনও সদস্য দুর্ঘটনায় আহত হলে তাঁকে নথিভুক্ত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কার্ড যাচাই করে প্যাকেজ রেট অনুযায়ী চিকিৎসার খরচ কার্ড থেকে কেটে নেবেন। চিকিৎসার খরচ কার্ডের প্রাপ্য টাকার বেশি হলে তা উপভোক্তা বা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দিতে হবে। কার্ড হারিয়ে গেলে ৩০ টাকা বিমা সংস্থার জেলা কার্যালয়ে জমা দিলে মিলবে নতুন কার্ড।

সুফল বাংলা সম্পাদনা

দপ্তর: কৃষিজ বিপণন দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সালে এই প্রকল্প শুরু হয়। চাষিদের থেকে লাভজনক দামে সরাসরি কৃষিপণ্য সংগ্রহ করে, যুক্তিযুক্ত দামে, তা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় চলমান অথবা স্থায়ী বিপণন কেন্দ্রের মাধ্যমে। এইসব 'সুফল বাংলা' বিপণিতে এক ছাদের তলায় সবজি, ফল, মাংস, দুধ এবং দুগ্ধজাত দ্রব্য, চাল, ডাল, সবধরনের সুগন্ধী চাল পাওয়া যায়।[১১] সমগ্র রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৭৭টি বিপণি খোলা হয়েছে। সিঙ্গুর তাপসী মালিক কৃষক বাজার এই প্রকল্পের মুখ্যকেন্দ্র। প্রকল্পের ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিদিন কৃষিপণ্য ক্রয় ও বিক্রয় মূল্য প্রচার করা হয়।[১২]

কারা আবেদন করতে পারবেন: ফসল বিক্রির জন্য ব্যক্তি কৃষক ও কৃষক দল নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন এবং নিবন্ধীকৃত ফার্মার্স প্রোডিউসার্স কোম্পানি লিমিটেডগুলি বিপণি পরিচালনার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

যোগাযোগ: কৃষিজ বিপণন বিভাগের পশ্চিমবঙ্গ এগ্রি মার্কেটিং কর্পোরেশন লিমিটেডের অধীন প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ইউনিট (PMU) এই প্রকল্প পরিচালনা করে। উল্টোডাঙ্গার উত্তরাপণে প্রধান কার্যালয়ে অথবা জেলা ও মহকুমার সংশ্লিষ্ট কৃষিজ বিপণন আধিকারিকের দপ্তরে যোগাযোগ করতে পারেন।

প্রতিদিনের মূল্য জানার জন্য দেখুন- ওয়েবসাইট: www.sufalbangla.in এবং ডাউনলোড করুন মোবাইল অ্যাপ: Sufal Bangla App[১৩]

সামাজিক সুরক্ষা যোজনা-২০১৭ সম্পাদনা

দপ্তর: শ্রম দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: রাজ্যের অসংগঠিত শ্রমিকদের বার্ধক্যজনিত দুর্দশা, কঠোর জীবন সংগ্রাম, শারীরিক।[১৪] অক্ষমতা ও অসমর্থতা, সন্তান প্রতিপালনে অসুবিধা, রোগ নিরাময় এবং আরোগ্যলাভের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবা-এইসব সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি তাঁদের আয় সুনিশ্চিত করা এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।

সকল অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক বা কর্মীকে সমান সুবিধা দিতে এবং সুবিধা পাওয়ার পদ্ধতিকে সহজতর করতে পূর্বে প্রচলিত পাঁচটি প্রকল্প বা স্কিমকে একত্রিত করে 'সামাজিক সুরক্ষা যোজনা ২০১৭' (এসএসওয়াই ২০১৭) নামে একটি সম্পূর্ণ নতুন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প বা যোজনা চালু করা হল। এই পাঁচটির মধ্যে বর্তমানে অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ভবিষ্যনির্দি পরিকল্প, পশ্চিমবঙ্গ অসংগঠিত ক্ষেত্রে শ্রমিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রকল্প এবং পশ্চিমবঙ্গ বিড়ি শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্প সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়েছে। নির্মাণ ও পরিবহণ শ্রমিকদের জন্য চালু থাকা সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প দুটি সংশোধন করে নতুন যোজনায় প্রাপ্ত সুবিধাগুলি পুরোনো প্রকল্পগুলি থেকে বাতিল করা হয়েছে। অন্যান্য সুবিধাগুলি চলতে থাকবে।

এই যোজনাটি শ্রম দপ্তর দ্বারা অসংগঠিত শিল্প ও স্বনিযুক্ত পেশার অনুমোদিত তালিকার প্রত্যেক যোগ্য অসংগঠিত শ্রমিকের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র প্রযোজ্য। উপরোক্ত প্রকল্পগুলিতে ৩১.৩.১৭ পর্যন্ত নথিভুক্ত সমস্ত শ্রমিককেই এই নতুন যোজনায় ইতিমধ্যেই নথিভুক্ত করা হয়েছে। ২০১৭-র ১ এপ্রিল থেকে এটি কার্যকর হচ্ছে।

এই প্রকল্প থেকে প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রগুলি হল- ভবিষ্যনিধি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ • মৃত্যু ও শারীরিক অসমর্থতা শিক্ষা প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা বিকাশ।

ভবিষ্যনিধি: সম্পাদনা

প্রতি মাসে শ্রমিক/কর্মীরা ২৫ টাকা করে জমালে, রাজ্য সরকার ৩০ টাকা করে তাঁদের তহবিলে জমা করবে এবং সাধারণ প্রভিডেন্ট ফান্ড-এর হারে বার্ষিক সুদ দেবে রাজ্য সরকার। ৬০ বছর হয়ে গেলে অথবা কোনও কারণে শ্রমিক/কর্মী এই সঞ্চয় প্রকল্প না চালাতে চাইলে বা মৃত্যুর কারণে অ্যাকাউন্ট চালু না থাকলে সুদ-সহ সঞ্চিত টাকা তুলে নিতে পারেন, মৃত্যুর ক্ষেত্রে তাঁর মনোনীত ব্যক্তিকে বা বৈধ উত্তরাধিকারিকে ওই আমানত ফেরত দেওয়া হবে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ: সম্পাদনা

অসংগঠিত শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার অধীনে এই প্রকল্পের কোনও সুবিধাভোগী গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালের অন্তর্বিভাগ ও বহির্বিভাগে চিকিৎসার সুবিধা। নিতে চাইলে বছরে সর্বাধিক ২০ হাজার টাকার চিকিৎসা-সংক্রান্ত আর্থিক সহায়তা করা হবে। রোগ পরীক্ষা ও ওষুধের দাম এবং হাসপাতালে ভর্তির খরচ সম্পূর্ণটাই পাওয়া যাবে। সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হলে কর্মদিবস নষ্ট হওয়ার কারণে প্রথম ৫ দিনের জন্য ১ হাজার টাকা এবং পরবর্তী দিনগুলোতে ১০০ টাকা হারে আর্থিক সহায়তা পাবেন কিন্তু একবারে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। সুবিধাপ্রাপকরা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবেন কিন্তু এই সংক্রান্ত ব্যয় বছরে ২০ হাজার টাকার বেশি দেওয়া হবে না। উপভোক্তার বা তাঁর পরিবারের সদস্যদের অপারেশনের ক্ষেত্রে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাবে।

মৃত্যু ও শারীরিক অসমর্থতা: সম্পাদনা

দুর্ঘটনার কারণে উপভোক্তার মৃত্যু হলে ২ লক্ষ টাকা এবং সাধারণ মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা উপভোক্তার মনোনীত ব্যক্তিকে দেওয়া হবে। উপভোক্তার ন্যূনতম ৪০% শারীরিক অসমর্থতা থাকলে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। দুর্ঘটনার কারণে ২টি চোখ, ২টি হাত ও ২টি পায়ের কর্মক্ষমতা নষ্ট হলে যথাক্রমে ২ লক্ষ টাকা এবং ১টি চোখ, ১টি হাত, ১টি পায়ের কর্মক্ষমতা নষ্ট হলে ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া হবে।

শিক্ষা: সম্পাদনা

শ্রমিক কর্মীদের সন্তানদের শিক্ষাগত উন্নয়নের জন্য আর্থিক সহায়তা করা হয়। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে যথাক্রমে ৪ ও ৫ হাজার টাকা, আইআইটি ও স্নাতক স্তরে ৬ হাজার টাকা, পলিটেকনিক ও স্নাতকোত্তর স্তরে ১০ হাজার টাকা, মেডিক্যাল বা ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ৩০ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। দুটি কন্যাসন্তান পর্যন্ত স্নাতকস্তর শেষ করা অবধি অবিবাহিত থাকলে প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। 'স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট-কাম-মিনস স্কলারশিপ স্কিম'-এর সুবিধা যারা পাবে তারা এই সুবিধা পাবে না। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদিত এবং সংবিধিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে যারা পড়াশুনা করবে এবং সরকারের অন্য কোনও বৃত্তি বা প্রকল্পের সুবিধা নিচ্ছে না তারাই এই সুবিধা নিতে পারবে।

প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা বিকাশ: সম্পাদনা

শিল্পে কর্মসংস্থান ও স্বনিযুক্তির পথ দেখাতে প্রকল্পের সুবিধাপ্রাপক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিখরচায় বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পশ্চিমবঙ্গ সোসাইটি ফর স্কিল ডেভেলপমেন্ট উৎপাদনভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেবে।

কারা আবেদন করতে পারবেন: অসংঠিত শ্রমিক এবং পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হতে হবে। বয়স হতে হবে ১৮-৬০ বছরের মধ্যে। পারিবারিক মাসিক আয় ৬৫০০ টাকার বেশি হবে না।

সেচবন্ধু সম্পাদনা

দপ্তর: বিদ্যুৎ এবং অচিরাচরিত শক্তি উৎস দপ্তর।

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: 'সেচবন্ধু/REPS' একটি কৃষক-বন্ধু প্রকল্প যা ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আজ পর্যন্ত ৫৮৯৮৯টি নতুন সেচপ্রকল্পে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন সেচ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা যাবে, অন্যদিকে খাদ্যের জোগান যথেষ্ট বৃদ্ধি পাবে এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতির ক্ষেত্রে বিপুল পরিবর্তন ঘটবে।

কারা আবেদন করতে পারবেন: দরিদ্র কৃষকেরাই এই প্রকল্পের সুযোগ পাবেন।

যোগাযোগ: স্থানীয় গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে।

স্বাস্থ্য সাথী সম্পাদনা

দপ্তর: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর

উদ্দেশ্য: উন্নতমানের আধুনিক স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রত্যেক প্রান্তিক মানুষের দরজায় পৌঁছে দেওয়া। এবং সেটি স্বচ্ছতা ও আধুনিকতার পাশাপাশি অত্যাধুনিক ই-প্রযুক্তি ব্যবহার করে। রাজ্যের কয়েক লাখ আইসিডিএস কর্মী, আশা কর্মী, সিভিক ভলান্টিয়ার, স্বনির্ভর গোষ্ঠী, হোমগার্ড, গ্রিন পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা কর্মী, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সকল সদস্য, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আংশিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী, অর্থ দপ্তরের অনুমতিক্রমে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের মুখে আজ হাসির ঝিলিক।

অন্যান্য স্মার্ট কার্ডের মতো এই কার্ড নিয়ে সমস্ত সরকারি হাসপাতাল-সহ ৭০০-র বেশি বেসরকারি হাসপাতালে যেতে হবে। ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ওই কার্ডধারীর পরিবারের যে কেউ, বছরে চিকিৎসা পাবেন, ক্যাশলেস হিসেবে। বিশেষ জটিল রোগের ক্ষেত্রে ৩.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিমার আওতায় থেকে চিকিৎসা করা যাবে।

এই স্বাস্থ্য বিমার আওতায় ১৯০০-র বেশি ধরনের রোগের চিকিৎসার সুবিধা দিচ্ছে সরকার। হাসপাতালে থাকাকালীন সমস্ত চিকিৎসা, পরীক্ষা- নিরীক্ষা, ওষুধ, খাবার দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে। এছাড়া যাতায়াত ভাড়া বাবদ ২০০ টাকা এবং ভর্তির একদিন আগে ও ছাড়া পাওয়ার পরের ৫ দিনের ওষুধও বিনামূল্যে পাওয়া যাচ্ছে।

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, স্বাস্থ্য সাথী নিয়ে চালু হয়ে গিয়েছে মোবাইল অ্যাপস। রয়েছে ফেসবুক, ট্যুইটার এবং টোল-ফ্রি নম্বরে (১৮০০-৩৪৫-৫৩৮৪) সমস্ত তথ্য জানা এবং অভিযোগ জানানোর সুবিধা। এছাড়াও ওয়েব পেজ: www.swasthasathi.gov. in-এ সমস্ত তথ্য জানা যাবে। একদম প্রান্তিক এলাকাতেও কোন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত, চিকিৎসকের নাম, কাছাকাছি কোথায় কোন ধরনের সুপার স্পেশালিটি রয়েছে, কোন হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স-আইসিইউ রয়েছে ইত্যাদি নানা খুঁটিনাটি তথ্য হাতের মুঠোয় পৌঁছে দিতেই এই উদ্যোগ। ইতিমধ্যে ৪৮ লক্ষেরও বেশি মানুষকে এই প্রকল্পের আওতায় পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। ৩১-০৭-১৮ পর্যন্ত ২.৮৬ লক্ষ রোগী ২৭৮ কোটি টাকার ক্যাশলেস পরিষেবা গ্রহণ করেছেন।

কারা আবেদন করবেন: সিভিক ভলান্টিয়ার্স, গ্রিন ভলান্টিয়ার্স, ভিলেজ ভলান্টিয়ার্স, সিভিল ডিফেন্স ভলান্টিয়ার্স, বিপর্যয় মোকাবিলা কর্মী, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবী বল (এনভিএফ), হোমগার্ড, আইসিডিএস কর্মী ও সহকারী, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের স্বনির্ভর গোষ্ঠী, পঞ্চায়েতিরাজ ইনস্টিটিউটের চুক্তিভিত্তিক ও ঠিকা-শ্রমিক, পুর এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠী, আশা কর্মী, অনারারি হেলথ ওয়ার্কার্স, অর্থ দপ্তরের অধীনে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে চুক্তিভিত্তিক ও ঠিকা-শ্রমিকেরা আবেদন করবেন। স্বামী/স্ত্রী, তাঁদের ওপর নির্ভরশীল পিতামাতা ও শ্বশুর-শাশুড়ি এবং ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত ছেলেমেয়ে প্রত্যেকে এই স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা পাবেন। এছাড়াও ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সকল সদস্য ও তাঁদের পরিবার এবং কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আংশিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

যোগাযোগ: প্রতি জেলায় ব্লকস্তরে বিডিও অফিস, শহর ও শহরতলির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পুরসভা এবং অবশ্যই ২৪ ঘণ্টা চালু থাকা টোল-ফ্রি নম্বর- ১৮০০- ৩৪৫-৫৩৮৪।

স্বাবলম্বন স্পেশাল সম্পাদনা

দপ্তর: নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: এই প্রকল্পের মাধ্যমে পেশাদার যৌনকর্মীদের এবং তাদের অসুরক্ষিত কন্যাসন্তানদের সমাজে সুস্থ ও সম্মানযোগ্য জীবনযাপনের লক্ষ্যে বিভিন্ন বিকল্প পেশায় নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যে এই প্রথম সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

সাফল্য: ইতিমধ্যে, প্রথাগত প্রশিক্ষণের বাইরে গিয়ে টেলিভিশন সিরিয়ালে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় এবং সেই সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজের জন্য বিশিষ্ট চলচ্চিত্র শিল্পী ও কলাকুশলীগণের দ্বারা প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হয়েছে। বর্তমানে প্রশিক্ষিত যৌনকর্মী এবং তাদের কন্যাসন্তানগণ বিকল্প এবং সম্মানযোগ্য পেশায় নিজের দক্ষতায় নিয়োজিত হয়েছেন এবং সমাজে সম্মানের সঙ্গে জীবনযাপন। করছেন।

কারা প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন: যৌনকর্মী এবং তাদের কন্যাসন্তানগণ।

কারা আবেদন করবেন: যৌন এলাকায় কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান যারা এই পরিষেবা দিতে আগ্রহী।

যোগাযোগ: পশ্চিমবঙ্গ নারী উন্নয়ন নিগম, পশ্চিমবঙ্গ নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজকল্যাণ দপ্তরের অধীনস্থ সংস্থা। নির্মাণ ভবন, লবণ হ্রদ, কলকাতা-৯১

স্বামী বিবেকানন্দ স্বনির্ভর কর্মসংস্থান প্রকল্প (SVSKP) সম্পাদনা

দপ্তর: স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং স্বনিযুক্তি দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: রাজ্য জুড়ে সফল উদ্যোগী গড়ে তোলা। শহর ও গ্রাম-দু জায়গাতেই বেকার যুবক-যুবতীদের স্ব-নিযুক্তির উদ্দেশ্যে এটি একটি পথিকৃৎ প্রকল্প। প্রকল্পটি রূপায়িত হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ স্বরোজগার নিগম লিমিটেড (WBSCL)-এর মাধ্যমে। যাঁরা নিজের উদ্যোগে কোনও ব্যবসা বা কর্মসংস্থানের কাজ করবেন এবং একই অঞ্চলের ৫ বা ততোধিক ব্যক্তি মিলে দল তৈরি করে কোনও আর্থিক উদ্যোগ শুরু করবেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে তাঁদের সরকারি ভরতুকি দেওয়া হবে। ছোটো ছোটো উৎপাদন ক্ষেত্র, নির্মাণশিল্প, ব্যবসা, পরিষেবা, কৃষি-ভিত্তিক শিল্প, ফুলচাষ, উদ্যানপালন, প্রাণীপালন ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রকল্প ব্যয়ের ৩০ শতাংশ ভরতুকি বাবদ পাওয়া যাবে অর্থাৎ ব্যক্তিগত উদ্যোগের ক্ষেত্রে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং দলগত উদ্যোগের ক্ষেত্রে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা।[১৫] কমপক্ষে ৫ জনের দল হতে হবে। একটি পরিবারের শুধু একজন সদস্যই দলে থাকবেন।

ব্যক্তিগত উদ্যোগের ক্ষেত্রে এর নাম 'আত্মমর্যাদা' এবং প্রকল্প ব্যয় ১০ লাখ টাকা। দলগত উদ্যোগের ক্ষেত্রে এর নাম 'আত্মসম্মান' এবং প্রকল্প ব্যয় ২৫ লাখ টাকা। উদ্যোক্তা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৫ শতাংশ ব্যয় বহন করবেন। কেবলমাত্র মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে এই সরকারি ঋণ দেওয়া হবে।

স্বামী বিবেকানন্দ-এর নামে এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয় ২০১২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর। তাদের ভরতুকি দেওয়ার পাশাপাশি প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। যেহেতু রাজ্যের প্রান্তিক অঞ্চলের যুবক-যুবতীদের স্বনিযুক্তির ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হচ্ছে, তাই আঞ্চলিক ক্ষেত্রে কাঁচামাল প্রাপ্তির ভিত্তিতে নানা ধরনের উৎপাদনমুখী কর্মসংস্থানের কথা ভাবা হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে যেসব কাঁচামাল পাওয়া সহজ, সেগুলিকে ভিত্তি করে নানা ধরনের প্রয়োজনীয় এবং নতুন জিনিস তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এমন অনেক কাঁচামাল বাংলার গ্রামাঞ্চলে সুলভ, যেগুলির ব্যবহার অজানা থাকায় কাজে লাগানো যায়নি এতদিন। বর্তমানে যথাযথভাবে সেগুলির ব্যবহারের মাধ্যমে সুন্দর সুন্দর জিনিস তৈরি হচ্ছে, রাজ্যের বাইরেও সেগুলির চাহিদা থাকছে। ফলে আয় হচ্ছে সহজে। তাছাড়া বাংলার চিরাচরিত শিল্পকর্ম তো আছেই। ২০১৭-র ডিসেম্বর পর্যন্ত এই প্রকল্পে ২৭,৫৮৮ জন উদ্যোগীকে ২৪৩.৭৫ কোটি টাকা সহায়তা করা হয়েছে।

কারা আবেদন করতে পারবেন: যাঁদের পারিবারিক মাসিক আয় ১৫ হাজার টাকার উর্ধ্বে নয় এবং শিল্প, বাণিজ্য ও পরিষেবা সংক্রান্ত ইউনিট নতুন করে তৈরি করতে উদ্যোগীরা আবেদন করতে পারবেন।

যোগাযোগ: পশ্চিমবঙ্গ স্বরোজগার নিগম লিমিটেড (West Bengal Swarojgar Corporation Ltd.)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি দপ্তর, ইস্ট ইন্ডিয়া হাউস (প্রথম তল), ২০বি আব্দুল হামিদ স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০৬৯, email: wbscl@yahoo.com

জেলা বা মহকুমা: যে কোনও যোগ্যতাসম্পন্ন উদ্যোগী ব্লক/পৌরসভা/বরো স্তরের স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি দপ্তর থেকে ফর্ম সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রকল্প সহায়কের কাছে প্রকল্প প্রতিবেদন-সহ জমা দেবেন। প্রকল্প সহায়করা এ কাজে সাহায্য করবেন।

সাংবাদিকদের অবসরকালীন ভাতা (ওয়েস্ট বেঙ্গল পেনশন স্কিম ফর জার্নালিস্টস, ২০১৮) সম্পাদনা

দপ্তর: তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর

প্রকল্পের উদ্দেশ্য: সাংবাদিকরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চাকুরিক্ষেত্র থেকে অবসর গ্রহণের পর আর্থিক সমস্যার মুখোমুখি হয়ে পড়েন। বয়স্ক সাংবাদিকদের এই অর্থনৈতিক সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল থেকে এই পেনশন প্রকল্পের সূচনা করেন। দুস্থ, বয়স্ক সাংবাদিকরা জীবিতাবস্থায় এর মাধ্যমে মাসিক ২৫০০ টাকা করে পেনশন পাবেন।

কারা আবেদন করতে পারবেন: যে সব সাংবাদিকের ষাট বছর বয়স অতিক্রান্ত হয়েছে এবং যাঁদের চাকরি থেকে অবসরের পর মাসিক রোজগার দশ হাজার টাকার কম এবং দশ বছরের বেশি সময় ধরে যাঁদের প্রেসকার্ড আছে, তাঁরাই এই পেনশনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

যোগাযোগ: তথ্য অধিকর্তা, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর, নবান্ন, হাওড়া।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. আবসার, নুরুল। "'আনন্দধারা'য় স্বনির্ভরতার দিশা পাচ্ছেন প্রতিবন্ধীরাও"www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২৮ 
  2. "Khelashree Prakalpa: স্কুল-পড়ুয়াদের ক্রীড়ায় আগ্রহী করে তুলবে রাজ্যের খেলাশ্রী প্রকল্প"Eisamay। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২১ 
  3. সংবাদদাতা, নিজস্ব। "সেচের হাল ফেরাতে নতুন প্রকল্প 'জলতীর্থ'"www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২৮ 
  4. সংবাদদাতা, নিজস্ব। "১৮ হোক, বিয়ে দেবে রূপশ্রী"www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২৮ 
  5. Src='https://Secure.gravatar.com/Avatar/E25cd99f5b49e6d2b871c4b167816a0c?s=32, <img Alt=; #038;d=wavatar; Srcset='https://Secure.gravatar.com/Avatar/E25cd99f5b49e6d2b871c4b167816a0c?s=64, #038;r=g'; #038;d=wavatar; says, #038;r=g 2x' class='avatar avatar-32 photo' height='32' width='32' decoding='async'/> ABHIJIT DAS (২০২৩-০৬-০১)। "বাংলার নতুন প্রকল্প, প্রতিমাসে 800 টাকা দিচ্ছে রাজ‍্য সরকার, আবেদন করলেই পাবেন। - Sukhobor Bangla" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২১ 
  6. সংবাদদাতা, নিজস্ব। "কিশোরী শক্তি যোজনা, মেয়েদের অপুষ্টি দূর করতে নতুন প্রকল্প রাজ্যের"www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২১ 
  7. সংবাদদাতা, নিজস্ব। "শিশু জন্মালেই চারা বিলির নয়া প্রকল্প"www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২৮ 
  8. সংবাদদাতা, নিজস্ব। "সুপার স্পেশ্যালিটিতে সবুজশ্রী প্রতিদিন"www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২১ 
  9. মুখোপাধ্যায়, তিয়াষ। "সবুজায়নের সঙ্গে সুস্থ শৈশব, পথ দেখাবে সবুজশ্রী"www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২৮ 
  10. "স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের স্বাস্থ্যবিমা সরকারের, দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে পরিবারের জন্য ২ লাখ"Eisamay। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২১ 
  11. বসু, ঋজু। "ন্যায্য দামে জৈব খাদ্য আনছে সুফল বাংলা"www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২১ 
  12. "Now, South Kolkata can click & shop from first govt-run grocery market"The Indian Express (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৭-২০। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২৬ 
  13. Network, Knn India-Knowledge & News। "Bengal Govt to introduce mobile app for 'Sufal Bangla'"knnindia.co.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২৬ 
  14. "পরিযায়ী শ্রমিক, সামাজিক সুরক্ষা ও নগর অর্থনীতি"www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২৮ 
  15. Bangla, TV9 (২০২২-০৯-২৫)। "শুরু করুন নিজের ব্যবসা, ঋণ দেবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার! এইভাবে করুন আবেদন"TV9 Bangla। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২৬