পলল

(পলি থেকে পুনর্নির্দেশিত)

পলল বা পলি হল প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট উপাদান যা মৃত্তিকা আবহবিকার এবং ভূমিক্ষয় প্রক্রিয়ায় ভেঙ্গে বায়ু, জল, বা বরফ এর কারণে এবং কণার উপর ক্রিয়াশীল মহাকর্ষ বলের দ্বারা পরিবাহিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, বালি এবং পলল নদীর পানির সাথে মিশে পরিবাহিত হতে পারে এবং সমুদ্রে পৌছে থিতিয়ে জমা হয়ে সবশেষে বেলেপাথর বা পাললিক শিলা পরিনত হতে পারে।

সৈকতে কাঁকড়
লেক জেনেভাতে নদী রোন প্রবাহ,পললের কারণে পানি বাদামি-ধূসর দেখায়। এটা নিবিড় শিল্পায়নে ভূমির ব্যবহার, জমি দখল এবং খারাপ মাটি ব্যবস্থাপনা কারণে বাড়তি পানি সঞ্চালন,ভূমি অবনতি, ক্ষয় এর সূচক
ইতালীর কূল থেকে আড্রিয়াটিক সাগরে পললের স্রোত

পলল প্রায়শই জল (নদীজ পদ্ধতি), বাতাস (বায়ুপ্রবাহ দ্বারা চালিত পদ্ধতি) এবং হিমবাহ দ্বারা পরিবাহিত হয়। সৈকতের বালুকণা এবং নদীর চ্যানেলের তলানি নদীজ পরিবহন এবং জমাকরণ এর উদাহরণ। যদিও পলল প্রায়ই হ্রদ এবং মহাসাগরের মধ্যে ধীর গতির বা স্থায়ী জলেও জমে। মরুভূমির বালুচর এবং ধূসর-হরিদ্রাভ রঙের মিহি মাটির স্তর হল বায়ুপ্রবাহ দ্বারা চালিত পরিবহন এবং জমার উদাহরণ। হিমবাহে গ্রাবরেখায় অবক্ষেপ এবং হিমকর্দ বরফ পরিবাহিত পলল।

শ্রেণিবিন্যাস

সম্পাদনা

পলল এর আকার বা গঠনের উপর ভিত্তি করে একে শ্রেণীবদ্ধ করা যাবে।

কণার আকার

সম্পাদনা

পলল আকার পরিমাপ করা হয় "ফাই" স্কেল নামের ২ ভিত্তিক লগ স্কেল দিয়ে, যেটা কণার আকার অনুসারে কলয়েড থেকে নুড়িতে  শ্রেণীভুক্ত করে।

φ স্কেল আকার পরিসীমা

(মেট্রিক)

আকার পরিসীমা (ইঞ্চি) সমষ্টিগত শ্রেনী

(ওয়েন্টওর্থ)

অন্য নাম
< -৮ > ২৫৬ মিলিমিটার > ১০.১ ইঞ্চি নুড়ি
-৬ থেকে -৮ ৬৪–২৫৬ মিলিমিটার ২.৫–১০.১ ইঞ্চি খোয়া
-৫ থেকে -৬ ৩২–৬৪ মিলিমিটার ১.২৬–২.৫ ইঞ্চি খুব মোটা কাঁকর উপল
-৪ থেকে -৫ ১৬–৩২ মিলিমিটার ০.৬৩–১.২৬ ইঞ্চি মোটা কাঁকর উপল
-৩ থেকে -৪ ৮–১৬ মিলিমিটার ০.৩১–০.৬৩ ইঞ্চি মধ্যম কাঁকর উপল
-২ থেকে -৩ ৪–৮ মিলিমিটার ০.১৫৭–০.৩১ ইঞ্চি মিহি কাঁকর
-১ থেকে -২ ২–৪ মিলিমিটার ০.০৭৯–০.১৫৭ ইঞ্চি সূক্ষ্ম কাঁকর কণিকা
০ থেকে -১ ১–২ মিলিমিটার ০.০৩৯–০.০৭৯ ইঞ্চি খুব মোটা বালি
১ থেকে ০ ০.৫–১ মিলিমিটার ০.০২০–০.০৩৯ ইঞ্চি মোটা বালি
২ থেকে ১ ০.২৫–০.৫ মিলিমিটার ০.০১০–০.০২০ ইঞ্চি মধ্যম বালি
৩ থেকে ২ ১২৫–২৫০ মাইক্রোমিটার ০.০০৪৯–০.০১০ ইঞ্চি মিহি বালি
৪ থেকে ৩ ৬২.৫–১২৫ মাইক্রোমিটার ০.০০২৫–০.০০৪৯ ইঞ্চি সূক্ষ্ম বালি
৮ থেকে ৪ ৩.৯–৬২.৫ মাইক্রোমিটার ০.০০০১৫–০.০০২৫ ইঞ্চি পঙ্ক কাদা
>৮ < ৩.৯ মাইক্রোমিটার < ০.০০০১৫ ইঞ্চি কাদামাটি কাদা
>১০ < ১ মাইক্রোমিটার < ০.০০০০৩৯ ইঞ্চি কলয়েড কাদা

পলল এর গঠন পরিমাপ করার শর্তাবলী:

  • মূল শিলার শিলাতত্ত্ব
  • খনিজ গঠন
  • রাসায়নিক মেক-আপ

কাদা, আকার-পরিসীমা ও গঠন উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা যেতে পারে বলে এটি অস্পষ্টতার দিকে পরিচালিত করে।

 
মেক্সিকো উপসাগর এ পলল

পলল পরিবহন

সম্পাদনা
 
পলল মানুষের বানানো বাধ থেকে তৈরি হয় , কারণ এগুলো পানি প্রবাহের গতি কমায়, যাতে প্রবাহ বেশি পলল বহন করতে না পারে

পলল পরিবাহিত হয় স্রোতের শক্তির উপর ভিত্তি করে যাতে এর নিজস্ব আকার, আয়তন, ঘনত্ব ও আকৃতি বহন করতে পারে। শক্তিশালী স্রোতের কণার উপর

টেনে তোলার বল বেশি কাজ করে, যার ফলে এটি উঠে আসে,যেখানে বড় বা ঘন কণা স্রোতে ফেললে তা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

নদীজ পদ্ধতি: নদী, জলপ্রবাহ, এবং স্থলপথে স্রোত

সম্পাদনা

কণার গতি

সম্পাদনা

নদ-নদী এবং জলপ্রবাহ তাদের স্রোতে পলল বহন করে। এই পলল স্রোতের বিভিন্ন অবস্থানের হতে পারে, কণার ঊর্ধ্বমুখী গতি(টান এবং তোলার বল) এবং প্রান্তিক গতির মধ্যে ভারসাম্যের উপর নির্ভর করে। এই সম্পর্কগুলি নিম্নলিখিত জাগান সংখ্যার জন্য দেয়া টেবিলে দেখানো হল যা ঊর্ধ্বগামী বেগ থেকে পলল পড়ার বেগের  অনুপাত প্রকাশ করে।

 
জমাট বাঁধা পাথরের পরিবহন। এই পাথর হিমবাহের পশ্চাদ্ধাবন হিসাবে জমা হয়

 

যেখানে,

  •   = পতনের বেগ
  •   = কারমেন ধ্রুবক
  •   = কৃন্তন বেগ
পরিবহনের ধরন জাগান সংখ্যা
তল লোড >২.৫
স্থগিত লোড: ৫০% স্থগিত >১.২, <২.৫
স্থগিত লোড: ১০০% স্থগিত >০.৮, <১.২
ধোয়া লোড <০.৮
 
জুলস্ট্রোম বক্ররেখা:বিভিন্ন মাপের পলল কণা ক্ষয়, পরিবহন, এবং বন্টনের (অবক্ষেপন) জন্য প্রয়োজনীয় স্রোতের বেগ।

যদি ঊর্ধ্বমুখী বেগ প্রান্তিক বেগের প্রায় সমান হয়, পলল, ভাটিতে সম্পূর্ণরূপে স্থগিত লোড এ পরিবাহিত হবে। যদি ঊর্ধ্বমুখী বেগ প্রান্তিক বেগের তুলনায় অনেক কম হলেও এটা পলল সরানোর জন্য যথেষ্ট (দেখুন গতি প্রবর্তন), এটি তল বরাবর তল লোড দ্বারা ঘূর্ণায়মান, পিছলে এবং সল্টেটিং (প্রবাহে উঠে কিছু দূর গিয়ে আবার পড়ে যাবে) এর মাধ্যমে সরবে। যদি ঊর্ধ্বমুখী বেগ প্রান্তিক বেগ এর বেশি হয়, পলল  ধোয়া লোড এ উচ্চ স্রোতে পরিবাহিত হবে।

সাধারণত প্রবাহে বিভিন্ন কণার মাপের একটি পরিসীমা আছে, এই পরিসীমা বিভিন্ন মাপের উপাদানের প্রদত্ত স্রোতাবস্তায় স্রোতের সমস্ত এলাকার মধ্যে স্থানান্তরিত হওয়ার ক্ষেত্রে একই হয়।।

নদীর তলা

সম্পাদনা
 
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস এ হান্টার নদীর তলে আধুনিক অসম ঢেউ বালিতে দেখা যাচ্ছে , প্রবাহের দিক ডান থেকে বামে।

পলল গতি নদীতে বা স্রোতগর্ভে স্ব-সংগঠিত কাঠামো তৈরি করতে পারে যেমন ঢেউ, বালিয়াড়ি, ছোট বালিয়াড়ি।  পাললিক শিলায় এই তলানী প্রায়ই সংরক্ষিত হয় এবং দিক ও স্রোতের এর মাত্রা অনুমান করতে এই জমানো পলল ব্যবহার করা হয়।

তল ক্ষয়

সম্পাদনা

স্থল স্রোত, মাটি কণা ক্ষয় করে এবং ঢালু তলের দিকে নিয়ে যায়। আবহাওয়া ও স্রোতের অবস্থার উপর নির্ভর করে স্থল স্রোতের সাথে সম্পর্কিত ক্ষয় বিভিন্ন পদ্ধতিতে হতে পারে।

  • যদি বৃষ্টি ফোঁটার প্রাথমিক প্রভাবে মাটি ভেঙ্গে যায়, তবে প্রপঞ্চকে বৃষ্টিপাতের ক্ষয় বলা হয়।
  • যদি স্থল স্রোত নালা গঠন না করে পলল ছড়িয়ে পড়ার জন্য সরাসরি দায়ী হয়, তবে একে  "শীট/পাত ক্ষয়" বলে
  • যদি স্রোত এবং স্তর নালার তৈরির যোগ্য হয়, সেক্ষেত্রে নালা তৈরি হবে; একে "নালা ক্ষয়" বলে।

প্রধান নদীজ অবক্ষেপনের পরিবেশ

সম্পাদনা
 
নোভা স্কটিয়ার উল্ভিলের কর্নওয়ালিস নদীতে ভাটায় আঁকাবাঁকা-খাঁজত্তয়ালা বালিয়াড়ি দেখা যাচ্ছে

অবক্ষেপনের জন্য প্রধান নদীজ  পরিবেশগুলো হলঃ

  • বদ্বীপ (নদীজ এবং সামুদ্রিকের একটি মধ্যবর্তী পরিবেশ)
  • নদী তীরের বাধা
  • পাললিক বাতাস
  • কাটা নদী
  • অক্সবো হ্রদ
  • নদীতীরের বাঁধ
  • জলপ্রপাত
 
নোভা স্কটিয়ার থরবার্নের কাছাকাছি কোলবার্ন পিট স্টেলারটন গঠনে প্রাচীন প্রনালীর স্তর (পেনসিলভেনিয়ার)

বায়ুপ্রবাহ চালিত প্রক্রিয়া:বাতাস

সম্পাদনা

বাতাস মিহি পলল পরিবহন করে মরুভূমি এবং মাটি থেকে বায়ু বাহিত ধুলা তৈরি করতে পারে।  

বরফ-সংক্রান্ত পদ্ধতি

সম্পাদনা

হিমবাহ বিশাল আকারের পলল বহন করে এবং গ্রাবরেখায় জমা করে।  

ভারসাম্য

সম্পাদনা

পলল পরিবহন এবং তলে জমা হওয়ার ভারসাম্য নির্ভর করে এক্সনার সমীকরনের উপর। এই সমীকরণ থেকে দেখা যায় যে বাতাসে এসে পরা পললের পরিমান সমতলে তলানির উচ্চতা বৃদ্ধির সমানুপাতিক। এই সমীকরণের গুরুত্বপূর্ণ দিক হল প্রবাহের শক্তির কারণে প্রবাহের পলল বহনের ক্ষমতা পরিবর্তিত হয় এবং তা ক্ষয় ও জমা হওয়ার গড়নের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়।

 
মন্টানার হিম পলল

এটা স্থানীয় এবং ছোট প্রতিবন্ধকতার জন্যও হতে পারে: উদাহরণ হল পাথরের পিছনে গর্তে প্রবাহ বৃদ্ধি পেলে বিবর্ধিত বাঁকের পদচ্যুতি ঘটে। ক্ষয় এবং তলানি এলাকাভিত্তিক হতে পারে: বাঁধ তুলে ফেলা ও ভিত্তিস্তরের ধসে ক্ষয় হতে পারে। বাঁধ প্রতিস্থাপনের কারণে তলানি পড়তে পারে ফলে নদীর গভীরতা হ্রাস পাবে, এর সবটুকু ভার তলানির জন্য বা ভিত্তিস্তরের বৃদ্ধির কারণে।  

সাগরের কূল ও অগভীর স্থান

সম্পাদনা

সমুদ্র, মহাসাগর এবং হ্রদে সময়ের সাথে পলল জমা হয়। এতে ভুমি থেকে ক্ষয়প্রাপ্ত উপাদান থাকে যা হয় ভুমিতে না হয় জলে না হয় হ্রদে জমা হতে পারে,অথবা জলেই থাকতে পারে। ভুমি থেকে ক্ষয়প্রাপ্ত উপাদান কাছেই থাকা নদী এবং স্রোত বা পুনর্বিন্যাসিত সামুদ্রিক পলল (উদাঃ বালি) থেকে আসে।

মধ্য মহাসাগরে, মৃত প্রাণীর কঙ্কাল প্রাথমিকভাবে পলল সঞ্চয়ের জন্য দায়ী।

জমা হওয়া অবক্ষেপ পাললিক শিলার উৎস, যা জলের বাসিন্দাদের মৃত্যুর পর জীবাশ্ম সংগৃহীত পললে আচ্ছাদিত করতে পারে। লেকের তলে জমা পললগুলি শিলায় পরিনিত হয় না বলে এগুলো অতীত আবহাওয়ার অবস্থা নির্ধারণ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

প্রধান সামুদ্রিক অবক্ষেপনের পরিবেশ

সম্পাদনা
 
বাহামার লং আইল্যান্ডের সৈকতে হলসিন এওলিয়নাইট এবং কার্বনেট।

সামুদ্রিক পরিবেশে পললকরণের প্রধান কারণগুলি হল:

  • উপকূলবর্তী বালি (যেমন সমুদ্র সৈকতের বালুকণা, নদী তীরের বালি, উপকূলীয় বার এবং স্পিট, সামান্য ফেনাল উপাদানের সাথে বড় ক্লাস্টার)
  • মহী সোপান (পললমাটি, সামুদ্রিক প্রানীজ উপাদান বৃদ্ধি)
  • সোপান সীমা (ভুমি উপাদান কম, অধিকাংশ ক্যালাসাইট প্রানীজ কঙ্কাল)
  • সোপানের ঢাল (অধিক মিহি পলল কণা এবং কাদা)
  • তলানিসহ মোহনার তল খাঁড়ি কাদা নামে পরিচিত।

নদী এবং সামুদ্রিক মিশ্রণের অন্য একটি অবক্ষেপনের পরিবেশ হল টার্বিডিট ব্যবস্থা, যা পলল এবং আবদ্ধ অববাহিকার পাশাপাশি গভীর মহাসমুদ্রীয় খাঁড়ির পললের প্রধান উৎস।

সময়ের সাথে সাথে সামুদ্রিক পরিবেশের নিচু এলাকায় পলল জমা হলে তাকে পলল ফাঁদ বলে।

নাকচ বিন্দু তত্ত্ব ব্যাখ্যা করে সামুদ্রিক পরিবেশে জলের প্রবাহে  কীভাবে পলল ক্ষয় হয়ে আরও মিহি দানায় পরিনত হয়।

পরিবেশগত সমস্যা

সম্পাদনা

ক্ষয় ও কৃষিজ পলল নদীতে সরবরাহ

সম্পাদনা

অগ্নি-পতিত চাষ এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনের চাষ পরিবর্তন, অধিক পলল আসার প্রধান কারণ। মাটির উদ্ভিদ তুলে ফেললে এবং জীবিত সকল কিছু শুকিয়ে গেলে, উপরের মাটি বাতাস এবং পানিতে ক্ষয়ে যাওয়ার জন্য উন্মুক্ত থাকে। পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে, পুরো এলাকা ক্ষয়যোগ্য হয়ে গেছে। যেমন মাদাগাস্কারের কেন্দ্রীয় উচ্চ মালভূমি, যা মোট ভুমির প্রায় ১০%, অধিকাংশ জমির উদ্ভিদ তুলে ফেলা হয়েছে এবং মূলত ৫০ মিটার গভীরে এবং এক কিলোমিটার চওড়া ব্যাসার্ধের খাঁজে মাটি ক্ষয় হচ্ছে। এই অবস্থায় নদীর পানি গাঢ় লাল বাদামী রং এ পরিণত হয়েছে এবং মাছ মেরে ফেলছে।

আধুনিক চাষের ক্ষেত্রে ভুমিক্ষয় একটি সমস্যা, যেখানে একটি একক ফসল চাষ ও চাষের জন্য স্থানীয় উদ্ভিদ অপসারণের ফলে মাটি অসমর্থিত হয়ে গেছে। এই সকল অঞ্চল অনেক নদী এবং ড্রেনের কাছাকাছি। দরকারী কৃষিজমির মাটি ভুমিক্ষয়ে পলল লোডে যোগ হচ্ছে এবং নৃতাত্ত্বিক সার নদীতে ফেলছে ফলে নদী শ্যাওলায় ঢেকে যাচ্ছে।

প্রবালপ্রাচীর নিকটবর্তী উপকূলীয় উন্নয়ন ও পললক্ষেপণ

সম্পাদনা

প্রবাল প্রাচীরের কাছাকাছি পানিপ্রবাহের উন্নয়ন পলল-সংক্রান্ত প্রবালের চাপের একটি প্রধান কারণ। উন্নয়ন জন্য জলের মধ্যে প্রাকৃতিক গাছপালা তুলে ফেলায় বায়ু ও বৃষ্টিপাতে মাটিকে উন্মুক্ত করে দেয়,ফলে বৃষ্টিপাতের সময়ে মাটি ক্ষয়ে সহজেই পলল তৈরি হয় এবং সামুদ্রিক পরিবেশে চলে যায়। পলল অনেক উপায়ে প্রবালকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে যেমন বাহ্যিক ভাবে কোমল করে তুলে, তলে ঘর্ষন তৈরি করে, পলল সরানোর সময় প্রবালের শক্তির অপচয় এবং শ্যাওলার বৃদ্ধি করে সমুদ্রগর্ভের জায়গা নষ্ট করে যেখানে জুভেনাইল প্রবাল বসতে পারে।

যখন সমুদ্রের উপকূলীয় অঞ্চলে ভূমি, সামুদ্রিক এবং জৈব উপজাত পললগুলি আসে, পলল উৎপাদন উৎসের কাছাকাছি সমুদ্রপৃষ্ঠের চরিত্রের অনুপাতে পরিবর্তিত হয়। এছাড়াও, পলল উৎস (যেমন, ভূমি, মহাসাগর বা জৈবিকভাবে) প্রায়শই পললের মিহি বা মোটা দানা হওয়ার সাথে সম্পর্কযুক্ত যা গড়ে একটি এলাকা নির্দেশ করে। বিভিন্ন স্তরে পললের বণ্টন আকার ও উৎস অনুসারে হয় যেমন মাটি(সাধারণত মিহি), সামুদ্রিক (সাধারণত মোটা) এবং জৈব অপজাত (বয়স অনুসারে ভিন্ন) পলল। সামুদ্রিক তলদেশে এই পরিবর্তনগুলি যে কোনও সময়ে এবং পলল-সংক্রান্ত প্রবালের চাপে পানির কলামে আটকে যাওয়ার পরিমাণকে চিহ্নিত করে।

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  • Prothero, Donald R.; Schwab, Fred (১৯৯৬), Sedimentary Geology: An Introduction to Sedimentary Rocks and Stratigraphy, W. H. Freeman, আইএসবিএন 0-7167-2726-9 
  • Siever, Raymond (১৯৮৮), Sand, New York: Scientific American Library, আইএসবিএন 0-7167-5021-X 
  • Nichols, Gary (১৯৯৯), Sedimentology & Stratigraphy, Malden, MA: Wiley-Blackwell, আইএসবিএন 0-632-03578-1 
  • Reading, H. G. (১৯৭৮), Sedimentary Environments: Processes, Facies and Stratigraphy, Cambridge, MA: Blackwell Science, আইএসবিএন 0-632-03627-3