পর্সা জাতীয় উদ্যান

নেপালের জাতীয় উদ্যান

পর্সা জাতীয় উদ্যান হলো দক্ষিণ-মধ্য নেপালের অভ্যন্তর তরাই নিম্নভূমিতে একটি সুরক্ষিত অঞ্চল। এই উদ্যানটি পর্সা, মকবানপুর এবং বারা জেলার অন্তর্ভুক্ত। জাতীয় উদ্যাটির আয়তন প্রায় ৬২৭.৩৯ কিমি (২৪২.২৪ মা)। এটি শিবালিক পাহাড়ের ঢাল পর্যন্ত বিদ্যমান। সেখানে এর উচ্চতা ৪৩৫ মি (১,৪২৭ ফু) থেকে প্রায় ৯৫০ মি (৩,১২০ ফু) পর্যন্ত। এই অঞ্চলকে ১৯৪৮ সালে একটি বন্যজীবন সংরক্ষণাগার হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ২০০৫ সালে ঘোষিত বাফারজোনে ২৮৫.৩ কিমি (১১০.২ মা) অন্তর্ভুক্ত।[১] ২০১৫ সালে অভয়ারণ্যের সীমানা ১২৮ কিমি (৪৯ মা) পর্যন্ত বিস্তৃত করা হয়েছে।[২] ২০১৩ সাল থেকে এটি জাতীয় উদ্যানের স্বীকৃতি পায়।

পর্সা জাতীয় উদ্যান
মানচিত্র পর্সা জাতীয় উদ্যানের অবস্থান দেখাচ্ছে
মানচিত্র পর্সা জাতীয় উদ্যানের অবস্থান দেখাচ্ছে
অবস্থাননেপাল
নিকটবর্তী শহরবীরগঞ্জ
স্থানাঙ্ক২৭°২৮′ উত্তর ৮৪°২০′ পূর্ব / ২৭.৪৬৭° উত্তর ৮৪.৩৩৩° পূর্ব / 27.467; 84.333
আয়তন৬২৭.৩৯ কিমি (২৪২.২৪ মা)
স্থাপিত১৯৮৪ সাল (অভয়ারণ্য)
২০১৭ সাল (জাতীয় উদ্যান)
কর্তৃপক্ষজাতীয় উদ্যান ও জীববৈচিত্র‍্য সংরক্ষণ মন্ত্রণালয়

বিস্তারিত সম্পাদনা

পর্সা জাতীয় উদ্যানের উত্তরে রাপ্তি নদী এবং শিবালিক পর্বতশ্রেণী মানব বসতির জন্য প্রাকৃতিক সীমানা গঠন করে। পূর্ব দিকে এটি হেটৌডা-বীরগঞ্জ মহাসড়ক পর্যন্ত বিস্তৃত। দক্ষিণে একটি জংলি রাস্তা সীমানা নির্ধারণ করে। পশ্চিমে সংলগ্ন চিতবন জাতীয় উদ্যান। ভারতীয় বাঘ সংরক্ষিত অঞ্চল বাল্মীকি জাতীয় উদ্যানের সাথে মিলিতভাবে ২,০৭৫ কিমি (৮০১ মা)। এর সুসংহত সুরক্ষিত অঞ্চলটি বাঘ সংরক্ষণ ইউনিট (টিসিইউ) চিত্রওয়ান-পার্সা-ভালমিকি প্রতিনিধিত্ব করে, যা ৩,৫৪৯ কিমি (১,৩৭০ মা) পলল ঘাসের জমির ব্লক জুড়ে এবং উষ্মমণ্ডলীয় আর্দ্র পাতাঝরা বন।[৩]

অভয়াশ্রমে রূপান্তরিত হওয়ার আগে অঞ্চলটি শাসক শ্রেণির শিকারের জায়গা হিসাবে ব্যবহৃত হত।[১][৪]

উদ্ভিদবৈচিত্র‍্য সম্পাদনা

উদ্যানের বেশিরভাগ উদ্ভিদই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং উপগ্রীষ্মমণ্ডলীয় বন প্রজাতির উদ্ভিদ। উদ্যানে শতকরা নব্বই ভাগ শাল গাছের উপস্থিতি রয়েছে। শিবালিক পর্বতশ্রেণি অঞ্চলে চির পাইন গাছ জন্মে। এছাড়াও যেসব উদ্ভিদের আধিক্য দেখা যায় তা হল-

  • খাইর গাছ
  • শিশু গাছ
  • সিল্ক তুলা

চুরিয়া পাহাড়ের দক্ষিণ দিকে সাবাই ঘাস ভাল জন্মায়।[৪]

আনুমানিক ৯১৯ প্রজাতির উদ্ভিদ শনাক্ত করা হয়েছে যার মধ্যে ২৯৮ ভাস্কুলার উদ্ভিদ, ২৩৪ ডিকট, ৫৮ মনোকোট, পাঁচটি টেরিডোফাইট এবং একটি জিমনোস্পার্ম রয়েছে।[১]

প্রাণিবৈচিত্র্য সম্পাদনা

২০০৮ সালের মে মাসে সরকার কর্তৃক পরিচালিত একটি আদমশুমারিতে ৩৭টি গৌরের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।[৫] ২০১৬ সালে পার্ক কর্তৃপক্ষ আরেকটি জরিপ চালায়। এই জরিপে দেখা যায় গৌরের সংখ্যা বেড়ে ১০৫-এ দাড়িয়েছে। ২০০৮ সালে পরিচালিত বিস্তৃত ক্যামেরা-ট্র্যাপিংয়ের সাহায্য নিয়ে এক সমীক্ষায় চারটি প্রাপ্তবয়স্ক রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে।২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে তিন মাস ধরে পরিচালিত একটি ক্যামেরা-ট্রাপিং জরিপে ১৯টি বাঘের উপস্থিতি সমন্ধে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এটি তিন বছরে বাঘের সংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Bhuju, U. R., Shakya, P. R., Basnet, T. B., Shrestha, S. (২০০৭)। Nepal Biodiversity Resource Book. Protected Areas, Ramsar Sites, and World Heritage Sites (পিডিএফ)। Kathmandu: International Centre for Integrated Mountain Development, Ministry of Environment, Science and Technology, in cooperation with United Nations Environment Programme, Regional Office for Asia and the Pacific। আইএসবিএন 978-92-9115-033-5। ২৬ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৯ 
  2. Anonymous. 2015. Good news for tigers as Nepal extends Parsa Wildlife ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ জুলাই ২০১৮ তারিখে. Wildlife Extra, 9 September 2015.
  3. Wikramanayake, E.D., Dinerstein, E., Robinson, J.G., Karanth, K.U., Rabinowitz, A., Olson, D., Mathew, T., Hedao, P., Connor, M., Hemley, G., Bolze, D. (1999). Where can tigers live in the future? A framework for identifying high-priority areas for the conservation of tigers in the wild. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১০ মার্চ ২০১২ তারিখে In: Seidensticker, J., Christie, S., Jackson, P. (eds.) Riding the Tiger. Tiger Conservation in human-dominated landscapes. Cambridge University Press, Cambridge. hardback আইএসবিএন ০-৫২১-৬৪০৫৭-১, paperback আইএসবিএন ০-৫২১-৬৪৮৩৫-১. Pages 255–272 "Archived copy"। এপ্রিল ৬, ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-১০ 
  4. Majupuria, T.C., Kumar, R. (1998) Wildlife, National Parks and Reserves of Nepal. S. Devi, Saharanpur and Tecpress Books, Bangkok. আইএসবিএন ৯৭৪-৮৯৮৩৩-৫-৮. Pages 245–248.
  5. WWF Nepal (2008) Gaur count in Parsa Wildlife Reserve ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৫ মার্চ ২০১২ তারিখে EcoCircular Newsletter Vol. 44 No. 8, June 2008