ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি

বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রকল্প

ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি হল বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত একটি বেকারত্ব দূরিকরণ প্রকল্প। এ কর্মসূচিতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এর আওতায় বেকার যুবক ও যুব মহিলাদের চরিত্র গঠন ও স্বল্পমেয়াদি কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকার যুবক ও যুব মহিলাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও স্বাবলম্বীকরণ দ্বারা বেকারত্ব দূরীকরণ ও দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন। এ প্রকল্পের শ্লোগান হল আত্মকর্মী যুবশক্তি, টেকসই উন্নয়নের মূলভিত্তি

ইতিহাস সম্পাদনা

ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি প্রকল্পটি ২০১০ সালের ৬ মার্চ প্রথম পরীক্ষামূলক ভাবে কুড়িগ্রাম জেলার চালু করা হয়েছিল।[১] এর পূর্বে ২০০৮ সালে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় আওয়ামী তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল এবং ৫ই মার্চ ২০১০ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ন্যাশনাল সার্ভিস প্রকল্পের ঘোষণা দিয়েছিল।[২] প্রথম পর্বের বাকি বরগুনা জেলায় ৬ মে এবং গোপালগঞ্জ জেলায় ৩১ জুলাই চালু হয়েছিল। প্রথম পর্বের মেয়াদ শেষ হয় ৩১ অক্টোবর ২০১৩ সালে। দ্বিতীয় পর্বে রংপুর বিভাগের ৮ উপজেলায় ২৮ মে ২০১৩ সালে চালু হয় এবং শেষ হয় ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে। ১ জুলাই ২০১৫ থেকে তৃতীয় পর্বে ১৭টি জেলার ১৭টি উপজেলায় নিয়োগ শুরু হয় এবং মেয়াদ শেষ হয় ৩০ জুন ২০১৭ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৮ এর মধ্যে। চতুর্থ পর্ব ১ জুন ২০১৬ সালে এবং পঞ্চম পর্ব ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সালে শুরু হয়।[৩]

২০১৪ সালের ৩ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয একটি “শিক্ষক পুল নীতিমালা ২০১৪” জারি করেছিল। যাতে বলা হয়েছিল, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলভুক্ত শিক্ষক ও ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচীর সদস্যরা অগ্রাধিকার পাবেন। কিন্ত সার্ভিসভুক্ত শিক্ষকদের বাদ দিয়ে নীতিমালা বাস্তবায়ন করা হয়, ফলে পঞ্চগড় ও ময়মনসিংহের ২৭ জন সদস্য হাইকোর্টে রিট আবেদন দাখিল করে । রিট আবেদনের পরিপেক্ষিতে ১৩ মার্চ ২০১৮ তারিখে হাইকোর্ট শিক্ষকদেরকে কেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে।[৪]

বাস্তবায়ন সম্পাদনা

২০১০ সালে কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ে কুড়িগ্রাম, বরগুনা ও গোপালগঞ্জ জেলার ১৯টি উপজেলায় ৫৬,৮০১ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল এবং ৫৬,০৫৪ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। প্রথম পর্বের মেয়াদ শেষ হয় ৩ অক্টোবর ২০১৩ সালে এবং মোট ব্যয় হয় ৮৪৮ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা।[৫] দ্বিতীয় পর্যায়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ সালে রংপুর বিভাগের ৭ জেলার ৮ উপজেলায় (ডিমলা, পীরগঞ্জ, কাউনিয়া, ফুলছড়ি, হাতীবান্ধা, খানসামা, হরিপুর ও পঞ্চগড় সদর) ১৪,৪৬৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং এদের মেয়াদ শেষ হয় ২০১৬ সালে, মোট ব্যয় হয় ২২২ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা।[৫] তৃতীয় পর্যায়ে দরিদ্রতম ও মঙ্গা পিড়িত ১৭টি জেলার ১৭টি উপজেলায় ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে, ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে চতুর্থ পর্যায়ে ৭টি জেলার ২০টি উপজেলায়, পঞ্চম পর্যায়ে ১৫টি জেলার ২৪টি উপজেলায় সম্প্রসারণ করা হয়।

সমালোচনা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি"www.jaijaidinbd.com। যায়যায়দিন। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৮ 
  2. (www.dw.com), Deutsche Welle। "ন্যাশনাল সার্ভিস প্রকল্পের কর্মীরা হতাশ - DW - 15.07.2012"DW.COM 
  3. "ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির ৫ম পর্বের উদ্বোধন"www.moysports.gov.bdযুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১৮ 
  4. "ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচীর সদস্যদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগে হাইকোর্টের রুল"www.amar-sangbad.com। আমার সংবাদ। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১৮ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. "ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির তথ্য" (পিডিএফ)dyd.portal.gov.bd। ১৭ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০১৮ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা