নীল দরিয়া রংপুর জেলার অন্তর্গত, পীরগঞ্জ উপজেলাধীন ১৪ নং চতরা ইউনিয়নে অবস্থিত এই নীল দরিয়া। এখানে কুরাইশ বংশীয় পীর হযরত শাহ ইসমাঈল গাজী ও সেন বংশীয় রাজা নীলাম্বর সেনের প্রাচীন স্মৃতি বিজরিত বহু ধ্বংসাবশেস রয়েছে। রাজা নীলাম্বরের নামনুসারে স্থানটিকে বলা হয় নীল দরিয়া।[১][২]

নীল দরিয়া
দেশ বাংলাদেশ
অঞ্চল রংপুর বিভাগ
জেলাসমূহ পীরগঞ্জ উপজেলা, রংপুর জেলা, রংপুর জেলা
উৎস চতরা ইউনিয়নের বিল

অবস্থান সম্পাদনা

নীল দরিয়া চতরা ইউনিয়নের জলামহল মৌজা অবস্থিত । এর উত্তরে সোনাতলা ও অনন্তপুর মৌজা। দক্ষিণে নিশ্চিন্তা বাটী ও কাটাদুয়ার । পূর্বে গৌড়েশ্বরপুর ও  চতরা হাট । পশ্চিমে সন্ধলপুর বাটিকামারী গ্রাম।[৩]

আয়তন সম্পাদনা

নীল দরিয়া নামক স্থান ৯২ একর জলাশয় বেষ্টন করে আছে বিশাল এক স্থল ভাগকে। মাঝখানের এই স্থল ভাগ দুটি ভাগে বিভক্ত। খন্ড দুটিকে বলা হয় যথাক্রমে ১ম কোর্ট ও ২য় কোর্ট । ১ম কোর্টে ভুমির পরিমাণ ২৬ একর। ২য় কোর্টে জমির পরিমাণ ২২ একর। নীল দরিয়ার জল সংলগ্ন এই ভূখন্ড দুটির চার পার্শ্বে নীলাম্বর রাজার প্রাচীর আছে। ১ম কোর্টে বর্তমানে লোকালয় গড়ে ওঠেছে। ২য় কোর্ট বন বিবাগ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত আছে। জলাশয়টিকে সরকারি ভাবে ইজারার মাধ্যমে মাছ চাস অব্যাহত আছে।

রংপুর জেলার,পীরগঞ্জ থানার অন্তর্গত, সুপ্রসিদ্ধ চতরা হাটের পশ্চিম পার্শ্বে অবস্থিত নীল দরিয়া। আয়তনে ৯২ একর এক গভীর জলাধার বৃত্তাকারে বেষ্ঠন করে আছে এক স্থল ভাগকে। যার উত্তরে সোনাতলা ও অনন্তপুর মৌজা। দক্ষিনে নিশ্চিন্তাবাটা ও কাটাদুয়ার। পূর্বে গৌড়েশ্বরপুর ও চতরা হাট। পশ্চিমে সুন্দলপুর গ্রাম। এ সকল গ্রাম বেষ্ঠিত নীলাম্বর ও শাহ ইসমাঈল গাজীর বহূ পুরাকীর্তির ধংশাবশেষ বিদ্যমান রয়েছে।মূলত:ইহা রাজা নীলাম্বরের একটি সুরক্ষিত ও দুভের্দ্য পরিখা।

নীল দরিয়ার ভিতরে ও বাহিরে কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তন্মেধ্যেপ্রাকৃতিক বির্বতনে প্রায় গুলোরই ধ্বংসাশেস পর্যন্ত দৃষ্টিগোচর হয় না। জনশ্রুতি আছে, অবলুপ্ত চাড়ালের কবর, পুলদুয়ার, প্রথম কোটে-বাজার বর্হিবাটা,আমডারা, দ্বিতীয় কোটে রাজ-বাড়ী, জীয়ন কুন্ড, মরণ কুন্ড, রানীর ঘাট, রাজার ঘাট, নীল জলাশয়, পান ধোয়া ঘাট, জল যোগের ঘাট, পাখীর ঘাট, দরিয়ার প্রশস্ত পাড়, বরুজের গড়, চন্ডির-মন্ডপ, নিশান ঘাট, কামতা বা কালি মন্দির, শাহ ইসমাঈল গাজী(রহ:) পবিত্র মাজার বা শহীদ সমাধি ক্ষেত্র প্রধান। বন্য পাখি, নারিকলে বিথী ও করোতেয়া নদী বিধেৌত উম্মুক্ত প্রান্তরে সবুজের সমারোহ উপভোগ্য স্নিগ্ধ সমীরন, মনোঙ্গ।

রাজা নীলাম্বেশর এর ধ্বংশাবেশেষ  মুল জায়গাটি পানির নিচে চলে যায়। প্রায় ৯২ একর জমির উপর বর্তমানে লেকের মত এবং আইল্যান্ডের মত দেখতে এবং  চারিদিকে ধ্বংশাবেশেষ কিছু অংশ বিশেষ এখনো দেখা যায়। বর্তমান স্থানীয় চেয়ারম্যান এনামুল হক শাহিন বন কর্মকর্তার সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকতার সাথে পরিদর্শন করেন এং  স্থানটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলার লক্ষে বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছে। এখানে মনোরম পরিবেশে নদীর মত পরিশরে নৈকা ভ্রমণ, পিকনিক করা সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন বহু লোকের সমাগম হয়।[৪]

প্রত্ননিদর্শন সম্পাদনা

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নে নীলাম্বর সেনের অন্যতম রাজধানী থেকে মাটি কাটার সময় ২ কেজি ৭২৫ গ্রাম ওজনের একটি কৃষ্ণ মূর্তি পাওয়া যায়। উল্লেখ্য, সেন বংশের রাজা নীলাম্বর সেন চতরায় তার দুর্গ নির্মাণ শেষে নিরাপত্তা বেষ্টনীর জন্য পরিখা ও গড় তৈরি করেন এবং নীলদরিয়া নামক পুকুর খনন করেন। ধারণা করা হচ্ছে, সেই সময় ঘোনা চতরার গড়ে মূল্যবান ওই কৃষ্ণমূর্তিটি ছিল।[৫][৬]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "চতরা ইউনিয়ন"chattraup.rangpur.gov.bd (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-২৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "পীরগঞ্জে মূল্যবান কৃষ্ণ মূর্তি উদ্ধার"www.uttorbangla.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৫-০৭-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-২৭ 
  3. Pratidin, Bangladesh (২০২১-০৬-১০)। "নীল দরিয়া আলোর মুখ দেখছে না"বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-২৭ 
  4. "আগামীকাল পীরগঞ্জে আসছেন মিজানুর রহমান আজহারী"www.abhijug.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-২৭ 
  5. "পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৩৬ - উইকিসংকলন একটি মুক্ত পাঠাগার"bn.wikisource.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-২৭ 
  6. "কৃষ্ণমূর্তি উদ্ধার"SAMAKAL (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-২৭