ঘুম

ঘুমের পরিচয়
(নিদ্রা থেকে পুনর্নির্দেশিত)

ঘুম বা নিদ্রা হচ্ছে মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর দৈনন্দিন কর্মকান্ডের ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যখন সচেতন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া স্তিমিত থাকে। নিষ্ক্রিয় জাগ্রত অবস্থার সাথে ঘুমন্ত অবস্থার পার্থক্য হল এ সময় উত্তেজনায় সাড়া দেবার ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং শীতনিদ্রা বা কোমার চেয়ে সহজেই জাগ্রত অবস্থায় ফেরত আসা যায়। সকল স্তন্যপায়ী ও পাখি এবং বহু সরীসৃপ, উভচর এবং মাছের মধ্যে ঘুমানোর প্রক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। মানুষ ও অন্যান্য স্তন্যপায়ী এবং অন্য বেশ কিছু প্রানীর (যেমন কিছু প্রজাতির মাছ, পাখি, পিঁপড়া এবং ফ্রুটফ্লাই) অস্তিত্ব রক্ষার জন্যে নিয়মিত ঘুম আবশ্যক। ঘুমানোর কারণ সম্বন্ধে বিজ্ঞানীরা এখনো পুরোপুরি জানতে পারেননি এবং তা নিয়ে বর্তমানে গবেষণা চলছে। আর একটি ব্যপার। ঘুমন্ত মানুষের চেহারার কোন এক অজানা অতিরিক্ত আবেগ অনুভূতি কাজ করে। যা তার গোপন এক প্রাকৃতিক নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। [১]

তেহরানের দুই ঘুমন্ত মানুষ

ঘুমের উপকারিতা সম্পাদনা

সুস্থ থাকতে হলে নিয়মিত ঘুমের বিকল্প নেই। কারণ সারা দিনের ক্লান্তি দূর করে ঘুম। তাই প্রতি রাতে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। তবে অনেকেরই ঘুমের সমস্যা রয়েছে। ঘুমের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।কারণ ঘুম আসে না। অনেকেই ঘুমানোর জন্য ঘুমের ওষুধ খেয়ে থাকেন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়। ঘুমের ওষুধের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতাও আমাদের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আসুন জেনে নিই অনিয়মিত ঘুম যেসব রোগের ঝুঁকি বাড়ায়-

১. পর্যাপ্ত ঘুম না হলে বা কম হলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বাড়তে পারে। চিকিৎসকদের মতে, ঘুম না হলে শরীরের ‘লিভিং অরগানিজমগুলো ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। নষ্ট হতে পারে শরীরের হরমোনের ভারসাম্য। বাড়তে পারে উচ্চ রক্তচাপ ও হাইপার টেনশন।

২. ঘুম কম হলে হার্টের সমস্যা হতে পারে। ঘুমের সময় হৃৎপিণ্ড ও রক্তনালি বিশ্রাম পায়। তাই ঘুম কম হলে প্রতিনিয়ত কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা বাড়তে থাকে। ফলে হার্টের সমস্যা বাড়তে থাকে।

৩. ঘুম পর্যাপ্ত না হলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। দীর্ঘদিন রাতে না ঘুমানো বা কম ঘুমানোর ফলে শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন ব্যাহত হয়। তাই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে।

৪. ঘুম শরীরের ক্ষতি পূরণ ও শক্তি সঞ্চয়ের একটি পন্থা। তাই ঘুম কম হলে তা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়। আমরা যখন ঘুমাই, তখন আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য দায়ী ‘লিভিং অরগানিজম’ (Living organisms)। কিন্তু আমরা না ঘুমালে এই ‘লিভিং অরগানিজম’গুলো কাজ করতে পারে না। ফলে ক্রমশ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে।

৫. মস্তিষ্কে ওরেক্সিন নামের একটি নিউরোট্রান্সমিটার আছে, যা মস্তিষ্ককে সচল রাখতে সহায়তা করে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ওরেক্সিন উৎপাদনের গতি মন্থর হয়ে যায়।

৬. প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে বাড়তে পারে হজমের সমস্যা। না ঘুমালে শরীরের পাচন ক্রিয়ায় সাহায্যকারী অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। ফলে খাবার হজমে সহায়ক পাচক রসগুলো উপযুক্ত মাত্রায় নিঃসরণে বাধা পায়।



  • মানসিক অবস্থা বিঘ্নিত হওয়া।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Bingham, Roger (২০০৭)। "Waking Up To Sleep" (Several conference videos)। The Science Network। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০১-২৫  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য); অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা