নিদান
নিদান (অনেকে চিনেন মিদান বা ইদান) সুত্রানুযায়ী তিনি ছিলেন, ৬ষ্ঠ ও ৭ম শতাব্দীর ওয়েলশের একজন যাজক এবং খ্রিস্টীয় ধর্মগুরু। আজও তাকে সাধক হিসেবে স্মরণ করে উৎসব পালন করা হয়। তিনি সাধক পেনমন কে প্রধান করে একটি পাপ স্বীকারোক্তি আশ্রম তৈরী করেন এবং এটি আজও ললানিদান এর গির্জা হিসেবে পরিচিত। জায়গা দুটি ওয়েলশ দ্বীপের এনগ্লোসিতে অবস্থিত। তিনি এনগ্লোসির দুটি গীর্জার সাধক: একটি সেন্ট নিদানের গির্জা ললানিদান। এটি ঊনবিংশ শতকে নির্মিত, এবং অপরটি তার মধ্যযুগীয় পূর্বপুরুষ, সেন্ট নিদানের প্রাচীন চার্চ, ললানিদান। মিডমার প্রাচীন গির্জা যেটি স্কটল্যান্ডের এবারদিনসারে অবস্থিত, এটি তার নামে উৎসর্গ করা হয়। নিদান সম্পর্কে বলা হয় তিনি খ্রিস্টধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে তার এলাকা কিনটিগারে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছেন । সেন্ট নিদানের ১৪শ বা ১৬শ শতাব্দীর একটি রেলিকোয়্যারি (স্মৃতিচিহ্নের আধার) ললানিদানে রয়েছে, যেটি তার বাড়ির ধ্বংসাবশেষ হিসেবে বিবেচিত হয়।
নিদান | |
---|---|
জন্ম | ৬ষ্ঠ শতাব্দী |
মৃত্যু | ৭ম শতাব্দী (সম্ভবত ৬১০) |
শ্রদ্ধাজ্ঞাপন | ওয়েলসে চার্চ, রোমান ক্যাথলিক চার্চ[১] |
প্রধান স্মৃতিযুক্ত স্থান | ভগ্নাবশেষ এ খ্যাতি বা অখ্যাতি সেন্ট নিদানের চার্চ, ললাদান |
উৎসব | ৩০সেপ্টেম্বর (ওয়েলস) ৩ নভেম্বর (স্কটল্যান্ড) |
এর রক্ষাকর্তা | ওয়েলসে: দুটি গীর্জা এনগ্লোসি স্কটল্যান্ডে: একটি গীর্জা এবারদিনসার |
জীবন
সম্পাদনানিদানের জীবন সম্পর্কে খুব অল্পই বিস্তারিত জানা গেছে, আর তার জন্ম-মৃত্যু সাল ও স্থান অজানা। তাকে কখনো কখনো "মিদান" বা "ইদান" বলে উল্লেখ করা হয়।[১][২] যেমন হস্তলিখিত সূত্র মতে,পেনিয়ারথ এম ৪৫ (বলছে তিনি ১৪শ শতাব্দীতে মৃত্যু বরণ করেছেন)[৩]ওয়েলসের জাতীয় গ্রন্থাগারের তথ্যে, তিনি ছিলেন গ্রফিউ এব পাসগান এব ইউরিন রহেকডের ছেলে।[২] তিনি ইউরিন রহেকডের বংশধর, যেমন ললানরিসটের সেন্ট গ্রাস্ট ছিলেন। তখন এই এলাকাটি ছিল উত্তর ওয়েলসের মূল ভূখন্ডের একটি শহর, বর্তমানে যা কোনয়ি কাউনটি ব্রগ।.[৪] ইউরিন ছিলেন গত ৫ম শতাব্দীর "বিখ্যাত যোদ্ধা", যার কর্ম স্মরণ করা হয় কবি টেলিউইসিনের মাধ্যমে।[৫]
নিদান সেন্ট সেইরিওলের পেনমনের আশ্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। উত্তর ওয়েলসের পূর্বাঞ্চলীয় পরামর্শক হিসেবে এনগালেসিতে ছিলেন এবং পাপ স্বীকার আশ্রমেও ছিলেন।[২] তাকে একজন বিশপের (ধর্মগুরুর) উৎস হিসেবে উল্লেখ করা হয়।[৬] এনাগ্লেসি ছাড়াও মেনাই স্ট্রেটসের পাশে ললানিদান তার প্রতিষ্ঠিত গির্জা হিসেবে পরিচিত। প্রচলিত রীতি অনুয়াযী এটি ৬১৬ খ্রীস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত।[৭] একটি প্রতিবেদনে বলা হয় তার বসবাস ছিল কাদির ইদানের চার্চের নিকট, চার্চের তথ্য থেকে জানা যায় তার পবিত্র কর্মের নিদর্শন গির্জা থেকে মাত্র ২০০ গজ (১৮০ মি) দূরে পাওয়া যেত।[২]
নিদান সম্পর্কে বলা হয়েছে, তিনি তাদের একজন যে ৬৬৫ জন সন্ন্যাসী সেন্ট কেনটিগ্রার (সেন্ট মুঙ্গ হিসেবে পরিচিত এবং তার কথিত চাচাত ভাইয়ের) সঙ্গে উত্তর ওয়েলসের ললানেলী থেকে স্কটল্যান্ড পর্যন্ত ভ্রমণ করেছেন। ৭ম শতাব্দীতে একত্রে কেনটিগারনে ও ফিনান বা ফফাইন সাধুরাদের প্রচেষ্টায়, বলা যায় মিডমার ও বর্তমানের এবারদিনসরে খ্রিস্টধর্ম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মিডমারের একটি গির্জা নিদনকে উৎসর্গ করা হয়।[২][৮] যাইহোক, নিদান এবং কেন্টিগ্রানের মধ্যে একটি যোগসূত্র আছে। এক লেখক বলেন, "কোন বাস্তব ভিত্তি ছাড়াই কেন্টিগ্রানের সঙ্গে এই দুইজন (নিদান ও ফফাইনাল) ব্যক্তির মধ্যে সম্পর্ক ছিল।"[৯]
কিছু সূত্র অনুযায়ী, তিনি ৬১০ সালে মারা যান। যা ললানিদানের গির্জার দেওযা তথ্য ৬১৬ এর সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।[১][১০]
স্মৃতিরক্ষা
সম্পাদনাললানিদানে সেন্ট নিদানের পুরাতন চার্চ ১৯শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় পর্য়ন্ত ব্যবহৃত হয়েছিল, এরপর এটি নিদানের গির্জা, ললানিদান নামে নিকটের একটি গ্রাম ব্রিনসিযেসিতে প্রতিস্থাপিত হয়েছিল। অবশ্য এর দুটি কারণ ছিল; প্রথমত: পুরোনো গির্জা মেরামতের প্রয়োজন, আর দ্বিতীয়: ব্রিনসিযেসি গ্রামের জনসংখ্য বৃদ্ধি পেয়েছিল বলে, সেখানে একটি গির্জার প্রয়োজন ছিল। এরপর পুরোনো গির্জাটি অংশিকভাবে ধ্বংস করে ছিল।[৭][১১] নতুন গির্জাটিতে একটি বেলেপাথরের রেলিকোয়্যারি নির্মাণ করা হয়েছিল, যা লম্বায় ২৬ ইঞ্চি (৬৬ সেমি) দীর্ঘ, যাকে নিদানের ধ্বংসাবশেষ বলা হয়ে থাকে।[১২][১৩] এটির রেলিকোয়্যারি তারিখ অনিশ্চিত: এটা গণনা করে বর্ণনা করা হয়েছে"সম্ভবত" ১৪শ শতাব্দী থেকে,[২] কিন্তু এছাড়াও, আরো সাম্প্রতিক হিসেবে "সম্ভবত ১৬শ শতাব্দী".[৭] এটা ১৭০০ সালের পুরোনো বেদির নিচে চাপা পরা গির্জা।[২]
ওয়েলশ সাধুদের ক্যালেন্ডারে, তার স্মরণ উৎসব ৩০শে সেপ্টম্বর; আর স্কটিশ সাধুদের ক্যালেন্ডারে, ৩রা নভেম্বর।[২][১৪] নিদানকে একজন সাধু হিসেবে সকলে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে, যদিও তিনি কোন পোপের মাধ্যমে যাযক নয়, ইতিহাসবিদ হিসেবে জেন কার্টরাইট নোট, ওয়েলসের পবিত্রতার মধ্যে স্থানীয়ভাবে অর্পিত ও মধ্যযুগীয় ওয়েলশ সাধুদের কেউ রোমান ক্যাথলিক চার্চ দ্বারা যাযক হয়েছে বলে মনে হচ্ছে হয় না"[১৫]
আরও দেখুন
সম্পাদনাস্থানীয় গির্জায় স্মরণ করা অন্য এনগ্লোসি সাধুদের মধ্যে রয়েছেন:-
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ St. Augustine's Abbey (Ramsgate, England) (১৯৯৪)। The book of saints (6th সংস্করণ)। Cassell। পৃষ্ঠা 401।
Midan (Nidan) (St) Sept 30 d. c.610. A saint of Anglesey who flourished early in the seventh century.
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ Baring-Gould, Sabine; Fisher, John (১৯০৭)। The lives of the British saints; the saints of Wales and Cornwall and such Irish saints as have dedications in Britain। 4। Honourable Society of Cymmrodorion। পৃষ্ঠা 14–16।
- ↑ Owen, Morfydd E.। "Welsh Triads: An Overview" (পিডিএফ)। Celtica। Dublin Institute for Advanced Studies। 25: 225। ২৪ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুন ২০১০।
NLW MS Peniarth 45 [was] dated by J. Gwenogvryn Evans to the thirteenth century. Daniel Huws would date the manuscript a quarter of a century later and to the fourteenth.
- ↑ Anwyl, E. (১৯০৫)। "Prolegomena to the Study of Old Welsh Poetry"। The Transactions of the Honourable Society of Cymmrodorion: Session 1903–1904। London: Honourable Society of Cymmrodorion। পৃষ্ঠা 76।
- ↑ Way, Albert (১৮৬৯)। "Alabaster reliquary found in Caldey Island, Pembrokeshire, with notices of an object of the like description existing in Anglesey"। Archaeological Journal। Royal Archaeological Institute। XXVI: 219।
- ↑ Barrett, Michael (১৯১৯)। A calendar of Scottish saints। Fort Augustus: Abbey Press। পৃষ্ঠা 158।
- ↑ ক খ গ Haslam, Richard; Orbach, Julian; Voelcker, Adam (২০০৯)। "Anglesey"। The Buildings of Wales: Gwynedd। Yale University Press। পৃষ্ঠা 190। আইএসবিএন 978-0-300-14169-6।
- ↑ "Aberdeenshire's Historic Kirkyards: Midmar Old Kirk" (পিডিএফ)। Aberdeenshire Council। ১৫ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০১০।
- ↑ Jackson, Kenneth H. (১৯৫৮)। "The sources for the life of St Kentigern"। Studies in the Early British Church। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 317। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০১০।
- ↑ Sheehan, Thomas W. (২০০১)। Dictionary of Patron Saints' Names। Our Sunday Visitor Publishing। পৃষ্ঠা 214। আইএসবিএন 978-0-87973-539-5। ১২ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০১০।
- ↑ Lewis, Samuel (১৮৪৯)। "A Topographical Dictionary of Wales"। British History Online। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০১০।
- ↑ Cadw (২০০৯)। "Church of St Nidan (new church)"। Historic Wales। ৩১ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১১।
Reliquary chest, moved from the old church, of sandstone, with coped lid and moulded mullions. Now with glass front, locally reputed to hold the relics of St. Nidan.
- ↑ Way, Albert (১৮৬৯)। "Alabaster reliquary found in Caldey Island, Pembrokeshire, with notices of an object of the like description existing in Anglesey"। The Archaeological Journal। Royal Archaeological Institute। XXVI: 215–216।
- ↑ Rees, Rice (১৮৩৬)। "Section XIII: The Welsh Saints from A.D.600 to the Death of Cadwallon A.D.634"। An Essay on the Welsh Saints। London: Longman, Rees, Orme, Brown, Green, and Longman। পৃষ্ঠা 295।
- ↑ Cartwright, Jane (Spring ২০০২)। "Dead virgins: feminine sanctity in medieval Wales"। Medium Aevum। The Society for the Study of Medieval Languages and Literature। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১১।