আরব বংশতাত্ত্বিক ঐতিহ্য অনুসারে, নিজার ইবনে মা'আদ ইবনে আদনান (আরবি: نزار بن معد بن عدنان) ছিলেন উত্তর আরবের অধিকাংশ গোত্রের (আদনানীদের) সাধারণ পূর্বপুরুষ। ফলস্বরূপ, 'নিজার' বা নিজারিয়া (نزارية) শব্দটি গোত্রগুলির একটি অস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত গোষ্ঠীর নাম হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে, যার মধ্যে সর্বাধিক সাধারণ হল রাবিয়া ও মুদার গোত্র, তবে মাঝে মাঝে এতে অন্যদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

নিজার ইবনে মা'আদ ইবনে আদনান
نزار بن معد بن عدنان
জন্মআরব উপদ্বীপ
মৃত্যুআরব উপদ্বীপ
সমাধি
বংশধর
পিতামা'আদ ইবনে আদনান
মাতামুআনা বিনতে জাহলা জুরহুম উপজাতি

পূর্বপুরুষ সম্পাদনা

তাঁর পিতার নাম ছিল মা'আদ ইবনে আদনান, এবং তাঁর মাতার নাম ছিল মু'আনা বিনতে জাহলা, যিনি দক্ষিণ আরবের জুরহুম বংশের ছিলেন।[১] এদের থেকে বেশি উল্লেখযোগ্য হল তাঁর চার পুত্র, যারা বৃহত্তর গোত্রগুলোর পূর্বপুরুষ: রাবিয়া, মুদার, আনমার এবং ইয়াদ।[১][২] আরব বংশতালিকাবিদদের মতে, মুদার এবং ইয়াদ জন্ম নিয়েছিলেন সাওদা বিনতে আক্ক ইবনে আদনান এর গর্ভে, এবং রাবিয়া ও আনমার এর মা ছিলেন জুরহুম গোত্রের হাদালা বিনতে ওয়া'লান।[২]

উপজাতীয় পরিচয় সম্পাদনা

'নিজার' শব্দটি ইসলাম-পূর্ব যুগে খুব কমই দেখা যায়। ৬৮৪ সালের মার্জ রাহিতের যুদ্ধের পরেই, যে যুদ্ধটি "দক্ষিণী" ও "উত্তরী" আরব উপজাতিদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে পাকাপোক্ত করেছিল, শুধুমাত্র সেই সময়ের পরেই 'নিজার' (বনু নিজার বা নিজারিয়া) শব্দটি ঘন ঘন উচ্চারিত হতে শুরু করে। এটিকে একটি জাতিগত এবং রাজনৈতিক সূচক হিসাবে ব্যবহার করা হতো, যা দক্ষিণী "ইয়েমেনি" (ইয়ামানিয়া) বা "কাহতানীয়" (বনু কাহতান) উপজাতিদের থেকে আলাদা। 'ইবনা নিজার' (আক্ষরিক অর্থে 'নিজারের দুই পুত্র') শব্দটি রাবিয়া এবং মুদার নামের দুটি বড় "উত্তরী" উপজাতীয় গোষ্ঠীকে বোঝাতে ব্যবহৃত হতো, যাদের আগে সম্পর্কহীন বলে মনে করা হতো। ইয়াদ বা আনমার এর বংশধর বলে দাবি করা উপজাতিগুলো, যাদের কিছু উৎসে মায়াদের পুত্র হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে, তাদের খুব কমই নিজারী উপজাতির অংশ হিসাবে বিবেচনা করা হতো। তবে এই শব্দটি অস্পষ্ট এবং নিম্নীয়ই ছিল: বনু কালবকে নিজারের বংশধর হিসাবে পুনঃশ্রেণীবদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছিল, যারা মূলত "দক্ষিণী" বংশোদ্ভূত ছিল। কারণ তারা "নিজারি" উমাইয়া রাজবংশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমর্থক ছিল।

ভাষাবিদ ও ঐতিহাসিক জর্জিও লেভি দেলা ভিদা লিখেছেন, "এটা স্পষ্ট যে আমরা নিজারকে একটি উপজাতি হিসাবে বলতে পারি না যার একটি বাস্তব ঐতিহাসিক অস্তিত্ব ছিল বা, মায়াদের ক্ষেত্রে যেমনটি ঘটেছে, বিভিন্ন উৎসের অনেকগুলো উপজাতির একটি কার্যকরী গোষ্ঠীকরণকে নির্দেশ করে। নিজার কেবল একটি কাল্পনিক আবিষ্কার, একটি লেবেল যা রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য তৈরি করা হয়েছে"।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Levi Della Vida 1995, পৃ. 82।
  2. Kindermann 1995, পৃ. 352।