নাবাবিয়া মুসা মুহাম্মদ বাদাউইয়া (আরবি: نبوية موسى محمد بدوية  ; ১৭ ডিসেম্বর ১৮৮৬ - ৩০ এপ্রিল ১৯৫১) ছিলেন একজন মিশরীয় জাতীয়তাবাদী এবং নারীবাদী। তিনি মিশরে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নারীবাদী হিসেবে স্বীকৃত। তার কর্ম ও জীবন প্রায়ই হুদা শারাওভি এবং মালাক হিফনি নাসিফের মতো ব্যক্তিত্বদের পাশাপাশি আলোচনা করা হয়, কারণ এই তিনজন মহিলাই নারী অধিকারের পক্ষে দিয়েছিলেন এবং অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি ওধিক শিক্ষা, স্বাস্থ্যের প্রচার এবং মহিলাদের জন্য যৌন শোষণ হ্রাস করার জন্য অন্যান্য অনুষ্ঠান আয়োজন করেছেন। [১] তিনি আলেকজান্দ্রিয়ায় বড় হন এবং মিশরীয় মধ্যবিত্ত শ্রেণীর অংশ ছিলেন। একজন উৎসাহী শিক্ষাবিদ হওয়ার পাশাপাশি, তিনি একজন প্রখ্যাত লেখক ছিলেন। তিনি ১৯০২ সালে "আল-আয়ত আল-বাদিয়ানা ফি তারবিয়া আল-বানাত" (মেয়েদের শিক্ষার উপর একটি গ্রন্থ) এর মতো নিবন্ধ লিখেছিলেন এবং ১৯২০ সালে "আল-মার'ওয়া-ল-আমাল" (নারী ও কর্ম) প্রকাশ করেছিলেন। সেইসাথে আল-বালাঘ আল-উসবুই (সাপ্তাহিক সংবাদ) এর জন্য একজন মহিলার বিষয়ক পাতার সম্পাদনা করেছিলেন।[১][২] তিনি প্রথম মিশরীয় মহিলা হিসেবে পরিচিত যিনি ব্যাকালোরিয়েট মাধ্যমিক ডিগ্রী অর্জন করেন, এবং তার লেখাগুলো গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক নথি হিসেবে বিবেচিত হয় যা মিশরীয় ইতিহাসের সময়কালকে বিশেষ করে ব্রিটিশ প্রটেক্টরেটের শাসনের অধীনে মিশরীয় জীবন প্রতিফলিত করে।[৩][৪]

শিক্ষা সম্পাদনা

নাবাওয়াইয়া মোহামেদ মুসা বাদাভিয়া ছিলেন একজন জাগাজিগি ফালাহি (কৃষক) মহিলা যিনি একজন নারী হিসেবেও জাতীয়তাবাদ এবং নারীবাদের শক্তিশালী নীতি প্রদর্শন করেছিলেন। তিনি তার জাতি এবং সহ মিশরীয় নারীদের অধিকারের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন। নাবাউয়ার বাবা একজন মিশরীয় কর্মকর্তা ছিলেন, যিনি একসময় সুদানে একটি মিশনে গিয়েছিলেন, আর ফিরে আসেননি।[৫] এরপর তিনি সহ তার ভাই ও তার মা তার ভাইয়ের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য কায়রোতে চলে যান।[৪]

পিতৃতান্ত্রিক সমাজে মহিলাদের ক্ষমতায়নের সময় ভয়ের কারণে নাবাবিয়া মুসা ছিলেন প্রথম এবং শেষ নারীদের মধ্যে একজন যিনি শিক্ষা পরীক্ষা শেষ করেছিলেন এবং ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে সানিয়া স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন। তার শৈশবে তার ভাই তাকে বাড়িতে লেখাপড়া শিখতে সহায়তা করেছিল। তিনি গণিতে স্ব-শিক্ষিত ছিলেন। তেরো বছর বয়সে তিনি স্কুলে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে আগ্রহী ছিলেন, কিন্তু তার পরিবার তা প্রত্যাখ্যান করেছিল। সেই সময়ের প্রতিষ্ঠিত সামাজিক রীতিনীতিকে অমান্য করে, সে তার মায়ের স্ট্যাম্প চুরি করে এবং স্কুলে আবেদন করার জন্য তার সোনার ব্রেসলেট বিক্রি করেন। তিনি তার পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গোপনে তার পড়াশোনা চালিয়ে যান। [৬]

তিনি ১৯০৭ সালে তার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা শেষ করে মিশরে উচ্চ বিদ্যালয় শেষ করা প্রথম মেয়ে হন। ১৯০৮ সালে তিনি শিক্ষায় ডিগ্রী শেষ করেন এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জন্য একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং নারী অধিকারের পক্ষে একজন উকিল হন। [৬] ১৯২২ সালের পর নতুন প্রতিষ্ঠিত মিশরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আরো নারীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি; এই সময়ের মধ্যে নাবাউইয়া মুসা তার সহকর্মীদের মধ্যে একজন প্রধান প্রভাষক এবং নেতা ছিলেন। ৩ নাবাউইয়া উল্লেখযোগ্যভাবে প্রথম মিশরীয় মহিলা যিনি উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। [১]

মৃত্যু সম্পাদনা

মুসা ১৯৫১ সালের ৩০ শে এপ্রিলে মারা যান। [১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Badran, Margot (১৭ নভেম্বর ২০১৩)। "The Feminist Vision in the Writings of Three Turn-of-the-Century Egyptian Women" (পিডিএফ)Taylor & Francis। British Society for Middle Eastern Studies। ২০ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  2. "Nabawiyya Musa"Arab Women Writers। Arab Women Writers। ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬। ৯ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  3. الله, نجم الدين خلف। "صدر قديماً: "المرأة والعمل" لـ نبوية موسى"alaraby (আরবি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-০৮ 
  4. Civantos, Christina (২০১৩)। "Reading and Writing the Turn-of-the-Century Egyptian Woman Intellectual: Nabawiyya Musa's Ta'rikhi Bi-Qalami" (ইংরেজি ভাষায়): 4–31। আইএসএসএন 1552-5864ডিওআই:10.2979/jmiddeastwomstud.9.2.4 
  5. "Nabawiyya Mohamed Musa Badawia نبوية موسى.. "الأستاذة"" 
  6. Badran, Margot (ফেব্রুয়ারি ১, ২০০৯)। Feminism in Islam: Secular and Religious Convergences। Oneworld Publications। পৃষ্ঠা 358আইএসবিএন 978-1851685561