নাঁদগাঁও রাজ্য (যা নন্দগাঁও বা রাজনন্দগাঁও নামে পরিচিত ছিল) ছিলো ব্রিটিশ শাসিত ভারতে অবস্থিত একটি দেশীয় রাজ্য, যা বর্তমানে ভারতের অন্তর্গত৷ বর্তমান ছত্তিশগড় রাজ্যের রাজনন্দগাঁও জেলার জেলাসদর রাজনন্দগাঁও শহরটি ছিল এই রাজ্যটির রাজধানী ও প্রশাসনিক সদর। [] এই রাজ্যে এটিই একমাত্র শহরাঞ্চল ছিল এবং শাসকগণ এখানেই বাস করতেন।

নাঁদগাঁও রাজ্য
नांदगाँव
ব্রিটিশ ভারতের দেশীয় রাজ্য
১৮৩৩–১৯৪৮
পতাকা

Nandgaon State in the ইম্পেরিয়াল গেজেটিয়ার অব ইন্ডিয়া থেকে প্রাপ্ত নাঁদগাঁও রাজ্যের মানচিত্র
আয়তন 
• ১৯০১
২,২৫৬ বর্গকিলোমিটার (৮৭১ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা 
• ১৯০১
১,২৬,৩৬৫
ইতিহাস 
• প্রতিষ্ঠিত
১৮৩৩
১৯৪৮
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
মারাঠা সাম্রাজ্য
ভারত
বর্তমানে যার অংশরাজনন্দগাঁও জেলা, ছত্তিশগড়
আর্নল্ড রাইট এডিশন., ইণ্ডিয়ান স্টেটেস: আ বায়োগ্রাফিকাল, হিস্টোরিকাল এন্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভে, পৃষ্ঠা ৮১২
নাঁদগাঁও জেলার ডাকটিকিটের চিত্র

রাজ্যটির প্রথম শাসক মহন্ত ঘাসিদাস ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ কোম্পানি দ্বারা সামন্ত রাজা স্বীকৃতি পান৷ প্রকাশিত সনদে স্বত্ববিলোপ নীতির উল্টোস্রোতে এই রাজ্যটিকে দত্তকপুত্র নেওয়ার যোগ্য বলেও উল্লেখ করে ব্রিটিশরা। পরে তারা রাজ্যের শাসক মহন্তদের রাজা উপাধি কে দেন। [][]

ইতিহাস

সম্পাদনা

ঐতিহাসিক পটভূমি

সম্পাদনা

নাঁদগাঁও রাজ্য বা জমিদারি প্রতিষ্ঠার ইতিহাস খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দী পুরাতন যখন শুরুর পাঞ্জাব অঞ্চল থেকে প্রহ্লাদ দাস নামে একজন ব্যবসায়ী এই অঞ্চলে আসেন। তিনি এসে রতনপুর নামক স্থানে বসবাস শুরু করেন, সেই সময় মারাঠা ভোঁসলের সাম্রাজ্য ছিল এটি।

প্রহ্লাদ দাস ছিলেন হিন্দু ধর্মের বৈরাগী সম্প্রদায়ভুক্ত একজন যিনি কঠোর কৌমার্য পালনে ব্রতী ছিলেন। বৈরাগী শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ বৈরাগ্য থেকে যার অর্থ জাগতিক সুখ থেকে মুক্তি। নির্বাচিত শিষ্যদের থেকে উত্তরসূরি নির্বাচনের সময়তার শিষ্য হরিদাস মহন্ত ঘোষিত হন এবং যথেষ্ট প্রভাব প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করেন। প্রতিপত্তি বৃদ্ধির সাথে সাথে স্থানীয় মারাঠা শাসকদের তৎপরতায় তিনি ধর্মীয় উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হন এবং পূর্বের তুলনায় অধিক ক্ষমতা লাভ করেন। প্রায় একশ বছর পর মহান্তরা নাগপুরের রাজার শাসনাধীন একটি সামন্ত রাজ্যের চারটি পরগনা নাঁদগাঁও, পাণ্ডদহ, মোহগাঁও এবং ডোঙ্গরগাঁও দখল করেন।

দেশীয় রাজ্য

সম্পাদনা

১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে চারটি সামন্ত পরগনা একত্রিত করে বৈরাগী সম্প্রদায়ের মহন্তরা নাঁদগাঁও নামে একটি দেশীয় রাজ্য গঠন করেন। ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে সপ্তম মহন্ত ঘাসিদাস প্রথম বিবাহ করেন এবং উভয়ের এক পুত্র সন্তান জন্ম নিলে কৌমার্য ভঙ্গ ঘটে এবং রাজ্যটি নির্বাচিত শিষ্যপরম্পরা ব্যতিরেকে বংশপরম্পরা অনুযায়ী অগ্রসর হওয়া শুরু করে। রাজ্যটির অধিকাংশ বাসিন্দা ছিলেন গোণ্ড, তেলি, চামার, আহির প্রভৃতি সম্প্রদায়ের যারা রাজ্যের মোট ৫১৫ টি গ্রামে বসবাস করতেন।[] নাঁদগাঁও রাজ্যের শেষ শাসক ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের পয়লা জানুয়ারি তারিখে ভারতীয় অধিরাজ্যে যোগদানের চুক্তিপত্রে সম্মতিস্বাক্ষর করেন। []

শাসকবর্গ

সম্পাদনা

নাঁদগাঁও দেশীয় রাজ্যের শাসকরা মহন্ত উপাধিতে ভূষিত হতেন। []

  • ১৮৬৫ – নভেম্বর ১৮৮৩ : মহন্ত ঘাসিদাস
  • নভেম্বর ১৮৮৩ – ১৮৯৭ : মহন্ত বলরাম দাস (নিজের ব্যবহারে ২ জানুয়ারি ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে রাজা বাহাদুর উপাধি ধারণ)
  • ১৮৯৭ – ২৫ মে ১৯১২ : মহন্ত রাজেন্দ্র দাস
  • ২৪ জুন ১৯১৩ – ১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৪০ : মহন্ত সর্বেশ্বর দাস
  • ১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৪০ – ১৫ আগস্ট ১৯৪৭ : মহন্ত দিগ্বিজয় দাস

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. চিসাম, হিউ, সম্পাদক (১৯১১)। "Nandgaon"। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ19 (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 161। 
  2. Chhattisgarh ki Riyaste/Princely stastes aur Jamindariyaa। Raipur: Vaibhav Prakashan। আইএসবিএন 81-89244-96-5 
  3. Chhattisgarh ki Janjaatiyaa/Tribes aur Jatiyaa/Castes। Delhi: Mansi publication। আইএসবিএন 978-81-89559-32-8 
  4. The Tribes and Castes of the Central Provinces of India
  5. "Nandgaon Princely State"। ৮ জুন ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ অক্টোবর ২০২০ 
  6. Princely States of India[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]