নর্মা আলভারেজ একজন ভারতীয় সমাজসেবক, পরিবেশকর্মী, আইনজীবী [১][২] এবং পরিবেশরক্ষার্থে কাজ করা বিখ্যাত বেসরকারি সংগঠন ব্রিদস অফ গোয়া নামক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য[৩]। প্রায় তিন দশক ধরে তিনি পরিবেশগত সমস্যা, মানবাধিকার, নারীদের জন্যে সমানাধিকার এবং প্রাণী কল্যাণে দু' শতাধিক জনস্বার্থ মামলা-মোকদ্দমার জন্য বিনা পারিশ্রমিকে ওকালতি করেছেন। আলভারেস আইনজীবী সংগ্রহের একজন ট্রাস্টি এবং দ্য আদার ইন্ডিয়া বুকস্টোর সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি[৪]

নর্মা আলভারেজ
জন্ম
পেশাসমাজকর্মী, আইনজীবী
পরিচিতির কারণখনি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই
দাম্পত্য সঙ্গীক্লদ আলভারেজ
সন্তান
পুরস্কারপদ্মশ্রী, যশদামিনী পুরস্কার
ওয়েবসাইটProfile

নর্মা পশুকল্যাণ গোষ্ঠী পিপল ফর আনিম্যালসের সভাপতি[৫]। তিনি ২০০০ সাল থেকে ভারতের প্রাণী কল্যাণ বোর্ডেরও সদস্য এবং তিনটি মেয়াদে প্রাণীদের উপর তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে কমিটির সদস্য হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০২ সালে প্রাণী ও পরিবেশ সুরক্ষায় তাঁর অবদানের জন্য ভারতের চতুর্থ সর্ব্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

নর্মা মুম্বাইয়ের সোফিয়া কলেজ থেকে স্নাতক উত্তীর্ণ হন এবং সেই কলেজেই পড়ানোর সুযোগ পান। কলেজে থাকাকালীনই তাঁর সাথে ক্লদের আলাপ হয়। তাঁদের ৫ জনের একটি সঙ্গীতের দল ছিল যেখানে নর্মা কন্ঠশিল্পী ছিলেন এবং ক্লদে গিটার বাজাতেন। তাঁরা রেডিওতে অনুষ্ঠান করতেন এবং বিভিন্ন জায়গায় মঞ্চানুষ্ঠানও করতেন। পরবর্তীকালে নর্মা এবং ক্লদে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এবং বর্তমানে এই দম্পতি তাঁদের তিন সন্তান রাহুল, সমীর এবং মিলিন্দের সাথে গোয়ার পেরেরায় থাকেন[১]। কলেজ শেষ করার পরে নর্মা এবং ক্লদে দুজনেই গ্রামীণ ভারতের জন্যে কিছু করতে চেয়েছিলেন এবং সেই জন্যে তাঁরা পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পাদদেশে গোয়ার এক গ্রামে তাঁদের কাজ শুরু করেন। সেখানে কাজ করার সময়েই তাঁরা লক্ষ্য করেন যে গ্রামীণ জীবন এমনিতেই প্রকৃতি নির্ভর কিন্তু প্রকৃতি এবং পরিবেশ রক্ষার জন্যে তাঁদের আইনি সহায়তার প্রয়োজন হয়। এরপরে মাতৃত্বকালীন অবসরে নর্মা আইন নিয়ে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নেন এবং ১৯৮৫ সালে আইনের স্নাতক হন।

কর্মজীবন সম্পাদনা

১৯৮৬ সালে ভারত সরকার পরিবেশ রক্ষা আইন প্রণয়ন করেন। নর্মা সিদ্ধান্ত নেন পরিবেশ রক্ষায় আইনি সহায়তাই তাঁর জীবনের ব্রত হবে। ১৯৮৭ সালে গোয়ার সমুদ্রতট রক্ষার্থে প্রথম জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন নর্মা। এই মামালাটি ছিল গোয়ার বালুভূমি থেকে বেআইনি সিলিকা উত্তোলনকারী মাফিয়াদের বিরুদ্ধে। এরপরেই ক্লদে এবং নর্মা গোয়া ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। গোয়া ফাউন্ডেশন ১৯৯২ সাল থেকে অবৈধ খনির বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। তাঁদের দায়ের করা প্রথম মামলাটি গোপালার বোম্বাইয়ের হাই কোর্টের সামনে ডেম্পো মাইনসের বিরুদ্ধে হয়েছিল। আদালতে অনেক লড়াইয়ের পরে এই দম্পতি তাঁদের আইনি কাজ হ্রাস করছেন, যদিও আদালতে এখনও অনেক মামলা চলমান রয়েছে। ২০০৪ সালে, তাঁরা একটি অলাভজনক সংস্থা গ্রিন গোয়া ওয়ার্কস গঠন করেন, যা বর্জ্যকে কীভাবে সারে রূপান্তর করা যায় বা বর্জ্য পদার্থকে কীভাবে পরিবেশে মিশিয়ে দেওয়া যায়- তার উপর কাজ করে। এছাড়াও তাঁরা তাঁদের গ্রীন শপের মাধ্যমে বিভিন্ন জৈব প্রযুক্তি ভিত্তিক পণ্য তৈরির কাজ করেন এবং জৈব শস্য, জৈব কীট বিচ্ছুরণ এবং কার্যকর অণুজীবের (ইএম) বিপণন করেন। তাঁরা বিভিন্ন সংস্থার জন্যে জৈব সার প্রস্তুতির ইউনিট স্থাপন করার ব্যবস্থাও করেন।[৬]

সম্মাননা ও স্বীকৃতি সম্পাদনা

  • পরিবেশ রক্ষায় তাঁর অবদানের জন্যে ভারত সরকার দ্বারা ২০০১ সালে পদ্মশ্রী পুরস্কার
  • গোয়া সরকার দ্বারা ২০০২ সালে যশদামিনী পুরস্কার

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "India Inspires"। India Inspires। ২০১৫। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  2. "Livemint"। Livemint। ৯ আগস্ট ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  3. "Goa Foundation"। Goa Foundation। ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  4. "Other India Book Store"। Other India Book Store। ২০১৫। ২১ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  5. "PFA Goa"। PFA Goa। ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  6. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" (পিডিএফ)। ৬ জুন ২০২১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মার্চ ২০২০