নরেন্দ্রচন্দ্র দত্ত
নরেন্দ্রচন্দ্র দত্ত (২৫ নভেম্বর ১৮৭৮ - ১৫ এপ্রিল ১৯৬২) ছিলেন একজন ভারতীয় ব্যাংকার। তিনি কুমিল্লা ব্যাংকিং কর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা। দেশভাগের পর ১৯৫০ সালে তিনি ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠার পিছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।[১]
নরেন্দ্রচন্দ্র দত্ত | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৫ এপ্রিল ১৯৬২ কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত | (বয়স ৮৩)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা | ব্যাংকার |
সন্তান | বটকৃষ্ণ দত্ত |
পিতা-মাতা | মহেশচন্দ্র দত্ত |
জীবনের প্রথমার্ধ
সম্পাদনানরেন্দ্রচন্দ্র দত্ত তৎকালীন ত্রিপুরা জেলার (বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা) কালিকচ্ছে জন্মগ্রহণ করেন, যা বর্তমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলায় অবস্থিত। মাত্র নয় মাস বয়সে তার বাবা মহেশচন্দ্র দত্ত মৃত্যুবরণ করেন। তার মা তাকে লালন-পালন করার জীবনসংগ্রামে বেশ অসহায় জীবনযাপন করেছিলেন। ১৯০৫ সালে তিনি কলকাতার রিপন কলেজ থেকে আইনে স্নাতক হন। তিনি কুমিল্লার দেওয়ানী আদালতে তিনি আইনপেশা শুরু করেন এবং শীঘ্রই তা লাভজনক পেশায় পরিণত হয়।
কর্মজীবন
সম্পাদনা১৯১৪ সালে তিনি কমিউনিটি নেতা অখিল চন্দ্র দত্তের পরামর্শে মহেশচন্দ্র ভট্টাচার্যের (১৮৪৮-১৯৪৪) সহযোগিতায় কুমিল্লা ব্যাংকিং কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ৪০০০ টাকার ঘোষিত মূলধন নিয়ে ব্যাংকটির কার্যক্রম শুরু করে একইসাথে আরও ২,৫০০ টাকা সংগ্রহ করেন। মূলধন জোগাড় করার জন্য তিনি নিজের বাড়িটি ১,৫০০ টাকায় বিক্রি করেছিলেন। শুরুতে তিনি ব্যাংক থেকে মাসিক আট টাকা পারিশ্রমিক পেতেন।
নরেন্দ্রচন্দ্র দত্ত পূর্ব ভারতের একটি অর্থনৈতিক জরিপ করে চা শিল্পে বিনিয়োগ শুরু করেছিলেন। কুমিল্লা ব্যাংকিং কর্পোরেশনের মাধ্যমে তিনি চা শিল্পের সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের চা বাগান এবং সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি কেনার জন্য ঋণ প্রদান শুরু করেন।
পড়াশোনা শেষ করে দত্তের বড় ছেলে বটকৃষ্ণ দত্ত কুমিল্লায় ফিরে এসে কুমিল্লা ব্যাংকিং কর্পোরেশনে প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে যোগ দেন। কয়েক সপ্তাহ নরেন্দ্রচন্দ্র দত্ত বটকৃষ্ণকে পরামর্শ দেন, বটকৃষ্ণ নিজেই একটি ব্যাঙ্ক চালাতে পারেন। তরুণ বটকৃষ্ণ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে ১৯৩০ সালে বিলুপ্ত কুমিল্লা রাইস অ্যান্ড অয়েল মিলস লিমিটেডের দায়িত্ব গ্রহণ করে ত্রিশ হাজার টাকার প্রাথমিক পরিশোধিত মূলধন নিয়ে নিউ স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক অব ইন্ডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন।[২]
১৯৪৬ সালে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তৎকালীন গভর্নর চিন্তামন দ্বারকানাথ দেশমুখের পরামর্শে নিউ স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক অব ইন্ডিয়া তার সমস্ত সম্পত্তি স্থানান্তর করে কুমিল্লা ব্যাংকিং কর্পোরেশনের সাথে একীভূত হয়। ভারতের স্বাধীনতা ও দেশভাগের পর ১৯৫০ সালে নরেন্দ্রচন্দ্র দত্ত জ্যোতিষ চন্দ্র দাসের সাথে মিলে কুমিল্লা ব্যাংকিং কর্পোরেশন, কুমিল্লা ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক, বেঙ্গল সেন্ট্রাল ব্যাংক ও হুগলি ব্যাঙ্ক একীভূতকরণ সম্পন্ন করার মাধ্যমে কলকাতায় ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠা করেন।
আরো দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Samsad Bangali Charitabhidhan (Bibliographical Dictionary)।
- ↑ Mallick, Indrajit (১০ জানুয়ারি ২০০০)। A Development Banker from Bengal (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। Munich Personal RePEc Archive। পৃষ্ঠা 6–7। সংগ্রহের তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর ২০১১।