বৌদ্ধ ধর্মে ত্রিশরণের মধ্যে ধম্ম গুণ দ্বিতীয়। বৌদ্ধ ত্রিপিটক গ্রন্থে ত্রিশরণের গুণ ব্যাখ্যা করা আছে। বৌদ্ধ গ্রন্থে ধম্মের গুণকে ছয়টি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। যথা -

"স্বাক্খতো ভগবতা ধম্মো, সন্দিটি্ঠকো, অকালিকো, এহি পেসি্সকো, ওপনয়িকো, পচ্চত্তং বেদিতব্বো, বিঞ্ঞুহীতি।"

এই ধম্মের ছয় গুণকে ড. ভিক্ষু সত্যপাল বাংলায় বর্ণনা করেছেন[১] -

"১.ভগবান বুদ্ধের প্রবর্তিত ধর্মে কোনো প্রকার রহস্য নেই। ত্রিপিটকে সংরক্ষিত বুদ্ধ-বাণীর সবই সুন্দরভাবে বিশ্লেষিত ও সুব্যাখ্যাত হয়েছে তথাগত সর্বজ্ঞ বুদ্ধের মাধ্যমে। তাঁর ধর্ম-বাণীতে সত্য ব্যতীত অন্য কিছুই ব্যাখ্যাত হয়নি। সত্য সবার কাছে উন্মোক্ত। কেহ দেখতে না পেলে তা তার দোষ নয়।

২.বুদ্ধ- প্রবর্তিত ধর্ম অনুশীলনের সুপরিণাম কেবল পরজন্মেই দৃষ্ট হয় তা নয়, এজন্মেও পাওয়া যায়। ধর্ম অনুশীলনের ফলাফল পেতে অনুশীলনকারীকে আগামী কালের প্রতীক্ষা কলতে হয় না। আজ, আর এখনই, অনুশীলন করা মাত্রই অনুশীলনকারীর জীবনে তার সুফল অনুভূত হয়। ৩.বুদ্ধ প্রবর্তিত ধর্ম (অষ্টাঙ্গিক মধ্যম-মার্গ) অনুশীলনের কোন নির্দিষ্ট কাল নেই। যে কোন কালে তা আচরণযোগ্য। ৪.বুদ্ধ প্রবর্তিত ধর্মে অন্ধবিশ্বাসের কোনো স্থান নেই। বুদ্ধ বলেছেন বলেই যে তা অন্ধভাবে বিশ্বাস করতে হবে এমন কোন শর্ত নেই। এ পথকে জীবনের অঙ্গরূপে অঙ্গীকার করার পূর্বে নানা দৃষ্টিতে এর পরীক্ষা- নিরীক্ষা করার প্রয়োজন রয়েছে। বুদ্ধত্ত্ব প্রাপ্তির পূর্বে বোধিসত্ত্ব সিদ্ধার্থও তার অনুশীলিতব্য ধর্মকে নানাভাবে পরীক্ষা করেছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন- গ্রাহ্য ধর্মের কাছে এসে, নানা দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ কর, এর পর উপকারী মনে হলে তা গ্রহণ কর আর অনুপকারী মনে হলে তা বর্জন কর। ৫. ভগবান বুদ্ধ প্রবর্তিত ধর্মের (অষ্টাঙ্গিক মধ্যম মার্গ) অনুশীলনে অনুশীলনকারীর জীবনে কোন প্রকারের হানি হয় না, বরংচ তাঁর ক্রমোত্তর ও নিরন্তর বিকাশ হয়।

৬.ভগবান বুদ্ধ - প্রবর্তিত ধর্মের অনুশীলনের সুফল বিজ্ঞজন মাত্রেই অনুভূতির বিষয়। তা অজ্ঞানীজনের অনুভূতির বিষয় নয়।"

পদটীকা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Pali Sahitto Chandra-Katha, D. Vicku Sattapa,Pubblisher:Buddha Triratno Mission, Delhi,India.28May 2010. P.19.20