তেমু

পাখির প্রজাতি

তেমু বা আলপাইন চোঘ (বৈজ্ঞানিক নামঃ Pyrrhocorax graculus), হলুদ ঠোঁটের চোঘ নামেও পরিচিত, কাক পরিবারের সদস্যা। পাইরোকোর‍্যাক্স গণের মাত্র দুটি প্রজাতি রয়েছে এরা তার একটি। এদের দুটি উপ প্রজাতি স্পেন থেকে শুরু করে ইউরোপের দক্ষিণাংশে এবং উত্তর আফ্রিকা থেক মধ্য এশিয়া এবন নেপালের উচু পার্বত্য এলাকায় বাস করে। এরাই সম্ভবত পাখিদের মধ্যে সব থেকে উচুতে বাসা বাঁধা পাখি।

তেমু
Pyrrhocorax graculus
প্রাপ্তবয়স্ক নোমিনেট উপপ্রজাতির আলপাইন চোঘ, সুইজারল্যান্ড
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: Chordata
উপপর্ব: Vertebrata
শ্রেণী: Aves
বর্গ: Passeriformes
পরিবার: Corvidae
গণ: Pyrrhocorax
প্রজাতি: Pyrrhocorax graculus
দ্বিপদী নাম
Pyrrhocorax graculus
(Linnaeus, 1766)
সবুজ রঙ দ্বারা এদের বাসস্থান বোঝানো হয়েছে

শ্রেণীবিন্যাস সম্পাদনা

 
উড়ন্ত আলপাইন চোঘ, ওয়েনজেন, সুইজারল্যান্ড

১৭৬৬ সালে ক্যারোলাস লিনিয়াস তার সিস্টেমা ন্যাচারাই গ্রন্থে আলপাইন চোঘকে প্রথমে করভাস গ্রাকুলাস হিসেবে উল্লেখ করেন[২]। ১৭৭১ সালে ইংরেজ পক্ষীবিদ মারমাডিউক টুন্সটাল তার অর্নিথোলজিয়া ব্রিটানিকারে একে পাইরোকোর‍্যাক্স গণে স্থানান্তর করেন[৩]। এদের গণ নাম এসেছে গ্রীক πύρρος (purrhos), "অগ্নি শিখার রঙ", and κόραξ (korax), "দাঁড় কাক" থেকে।[৪]

বর্ণনা সম্পাদনা

 
Red-billed chough (left) has deeper wing "fingers" and tail wedge in flight than Alpine (on right), and its wings extend to or beyond the tail tip when standing.

পূর্নবয়স্ক নোমিনেট, আলপাইন চোঘের উপ প্রজাতি, পাখনার রঙ কুচকুচে কালো, ছোট হলুদ ঠোঁট, গাঢ় বাদামী আইরিস এবং লাল পা। এরা লাল ঠোঁট চোঘ থেকে সামান্য ছোট, ৩৭-৩৯ সেমি লম্বা, লেজ ১২-১৪ সেমি এবং ডানার দৈর্ঘ্য ৭৫-৮৫ সেমি। এরা ভালো উড়তে পারে[৫]। পুরুষ এবং স্ত্রী পাখি দেখতে একই রকম হলেও পুরুষ পাখি আকারে কিছুটা বড় হয়।

 
Pyrrhocorax graculus graculus

বাসস্থান সম্পাদনা

আলপাইন পাখি পর্বত এলাকায় দেখতে পাওয়া যায়। স্পেনের পূর্বাঞ্চল থেকে ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চল, মধ্য এশিয়ার আল্পস পর্বত মালা, হিমালয় থেকে চীনের পশ্চিমাঞ্চলে এরা বাস করে। মরোক্কোকর্সিকা এবং ক্রিট এ এদের দেখতে পাওয়া যায়। এরা এদের নির্দিষ্ট অঞ্চলেই বাস করে, কখনো অভিবাসী হয় না।

স্বভাব সম্পাদনা

আলপাইন চোঘ একগামী, শীত ও গ্রীষ্মকালে এবং বছরের পর বছর এরা সংগীর প্রতি টান দেখিয়ে থাকে। এরা মে'র শুরুর দিকে বাসা তৈরী শুরু করে। এরা কলোনি আকারে না থাকলে পাশাপাশি কয়েক জোড়া পাখি বাসা বাঁধে।

এরা ৩ থেকে ৫ টি ডিম পাড়ে। ডিমের রঙ ক্রিম অথবা হালকা সবুজাভ হয়, ছোট ছোট বাদামী ফোটা থাকে। স্ত্রী পাখি ১৪-২১ দিন ডিমে তা দেওয়ার পরে বাচ্চা ফুটে বের হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Pyrrhocorax graculus"বিপদগ্রস্ত প্রজাতির আইইউসিএন লাল তালিকা। সংস্করণ 2012.2প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন। 2012। সংগ্রহের তারিখ 24/10/2012  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  2. Linnaeus, C. (১৭৬৬)। Systema naturae per regna tria naturae, secundum classes, ordines, genera, species, cum characteribus, differentiis, synonymis, locis. Tomus I. Editio duodecima (লাতিন ভাষায়)। Holmiae. (Laurentii Salvii)। পৃষ্ঠা 158। 
  3. Tunstall, M. (১৭৭১)। Ornithologia Britannica: seu Avium omnium Britannicarum tam terrestrium, quam aquaticarum catalogus, sermone Latino, Anglico et Gallico redditus (লাতিন ভাষায়)। London, J. Dixwell। পৃষ্ঠা 2। 
  4. "Chough Pyrrhocorax pyrrhocorax [Linnaeus, 1758]"BTOWeb BirdFacts। British Trust for Ornithology। ২৪ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ 
  5. Snow, David; Perrins, Christopher M., সম্পাদকগণ (১৯৯৮)। The Birds of the Western Palearctic concise edition (2 volumes)। Oxford: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 1464–1466। আইএসবিএন 0-19-854099-X 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা