তায়ম্বক
থায়াম্বাকা কেরালার একটি বিখ্যাত সমবেত বাদন। এটি চেন্দার উত্তেজনাপূর্ণ তালের অনন্য ঐকতান বৈশিষ্ট্যযুক্ত। এটি এক ধরনের চেন্দা প্রদর্শন, যেটি দক্ষিণ ভারতের কেরল রাজ্যে বিকশিত হয়েছে। পঞ্চবাদ্যের সমাহারের মতই থায়াম্বাকা প্রতিটি অর্থেই কেরালার সংগীত। পঞ্চবাদ্যের কেবল ইলাথালম থায়াম্বাকে ব্যবহৃত হয় এবং অনেক চেন্দা ব্যবহার করা হয়। থায়াম্বাকায় কেবল এক হাতে বাদ্য কাঠি থাকে, এটি চেন্দা ঐকতান থেকে আলাদা। অন্য হাতে কোনও কাঠি ব্যবহার না করে বাজানো হয়।[১] এখানে কেন্দ্রস্থিত প্রধান বাদক ছ'টি বা তারও বেশি চেন্দা এবং ইলাথালমে তাৎক্ষণিক ছন্দবদ্ধভাবে সুর তোলে।
অনুষ্ঠান সম্পাদন
সম্পাদনাচেন্দায় একটি থায়াম্বাকা প্রদর্শনের ক্ষত্রে প্রধান বাদকের সম্পূর্ণ মনোযোগ থাকে চেন্দার কাঠি-তালু পেষণীতে) উৎপাদিত ইন্তানতালে (ত্রিগুণ), তার সহযন্ত্রীরা ভালানতাল (খাদ) চেন্দা এবং ইলাথালামে (করতাল) তাল ধরে রাখে।[২] সামন্তকালীন যুগে থায়াম্বাকা বিকাশ লাভ করেছিল বলে বিশ্বাস করা হয়। এটি গড়ে ৯০ মিনিটের মতো চলে। এটি ধীর লয়ে প্রথমে শুরু হয়, তারপর ধীরে ধীরে মাঝারি তালে এবং শেষ পর্যন্ত উচ্চ, উন্মত্ত গতিতে পৌঁছে শেষ হয়। এটিতে একটি কাঠামো বিন্যাস রয়েছে যার উপর ভিত্তি করে প্রদর্শনটি এগিয়ে যায়, তবে মুখ্য বাদকের স্বাধীনতা থাকে, তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ভাবন করে ছন্দের ওপর দখল, সূক্ষ্ম কৌশল এবং মস্তিষ্কের প্রতিভা প্রদর্শন করার। আসলে, থায়াম্বাকা হল এমন একটি চেন্দা সঙ্গীতানুষ্ঠান যেখানে মূল বাদকের সর্বাধিক স্বাধীনতা থাকে।
পঞ্চবাদ্যম বা বেশিরভাগ চেন্দামেলার মতো থাইম্বাকা মূলত একটি মন্দির কেন্দ্রিক শিল্প, তবে এটি মন্দিরের বাইরেও করা হয় - যেমন যবনিকা এবং ঐকতানবাদকের বসার মধ্যের মঞ্চ (প্রোসেনিয়াম), উন্মুক্ত ক্ষেত্র বা সমারোহ মাঠ। একটি আধ্যাত্মিক মন্দির শিল্প হিসাবে, বেশিরভাগ বার্ষিক উৎসবে গর্ভগৃহের অভ্যন্তরে দীপারাধনার সূর্যাস্ত অনুষ্ঠানের পরেই থায়াম্বাকা পরিবেশিত হয়, যার পরে দেবতাকে নাডাপ্পুরায় (মন্দিরের সীমানার ভিতরে খোলা ঘর) আনা হয়। এ জাতীয় ক্ষেত্রেও লক্ষণীয় দক্ষতা প্রদর্শিত হয়, তবুও প্রদর্শনকে উপস্থিত দেবতা / দেবীর উপহার হিসাবেই বিবেচনা করা হয়। অন্য যে কোনও শিল্পের মতোই, থায়াম্বাকা বাদকের প্রতিটি বাদ্য রসপণ্ডিতেরা শোনেন এবং তাদের সমালোচনা করে বিচার করেন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- Killius, Rolf. Ritual Music and Hindu Rituals of Kerala. New Delhi: BR Rhythms, 2006. আইএসবিএন ৮১-৮৮৮২৭-০৭-X (with author's permission).
- Paul, G. S. "Pulse of the chenda" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৮ জুন ২০০৯ তারিখে. The Hindu Friday, 8 August 2008.
টীকা
সম্পাদনা- ↑ "Thayambaka"। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০২১।
- ↑ Simon Broughton, Mark Ellingham. World Music, vol. 2, p. 97 (contributor Rolf Killius). Rough Guides, 2000. আইএসবিএন ১-৮৫৮২৮-৬৩৬-০