তাত্রা বল্গা

‘প্যাপিলিওনিডি’ পরিবারের প্রজাপতি

তাত্রা বল্গা[২] (বৈজ্ঞানিক নাম: Graphium eurous) এক প্রজাতির বড় আকারের প্রজাপতি । এদের নিচের ডানার পিছনের দিকে লেজের মত প্রক্ষিপ্ত অংশ থাকে, যার জন্য এদের সোয়ালোটেল (sowallotail) বলা হয়। এরা ‘প্যাপিলিওনিডি’ পরিবারের সদস্য।

তাত্রা বল্গা
Sixbar Swordtail
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: Arthropoda
শ্রেণী: Insecta
বর্গ: Lepidoptera
পরিবার: Papilionidae
গণ: Graphium
উপগণ: Pazala
প্রজাতি: G. eurous
দ্বিপদী নাম
Graphium eurous[১]
(Leech, 1893)[১]

আকার সম্পাদনা

প্রসারিত অবস্থায় তাত্রা বল্গার ডানার দৈর্ঘ্য ৬০-৭০ মিলিমিটার হয়।[২]

উপপ্রজাতি সম্পাদনা

তাত্রা বল্গার উপপ্রজাতি হল-[৩][৪][৫]

  • G. e. eurous Leech 1893 - ইউনান থেকে উত্তর ও মধ্য মায়ানমার জুড়ে এবং কেন্দ্রীয় ও পূর্ব হিমালয়ের নেপাল থেকে পশ্চিমে উত্তরবঙ্গ, সিকিম, সম্ভবত ভুটান, আসাম, মণিপুর থেকে বরাবর
  • G. e. caschmirensis (Rothschild, 1895) - হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড, জম্মু ও কাশ্মীর থেকে পশ্চিম হিমালয়
  • G. e. sikkimica (Heron, 1895) - উত্তর পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মণিপুর এবং মেঘালয় এছাড়াও নেপাল.[৬]
  • G. e. inthanon Katayama, 1986 - উত্তর থাইল্যান্ড ও লাওস
  • G. e. panopaea (de Nicéville, 1900) - পশ্চিম চীন
  • G. e. meridionalis (Mell 1935) - দক্ষিণ-পূর্ব চীন (উত্তর কুয়াংতুং ও চচিয়াং)
  • G. e. melli Racheli & Cotton 2009 - দক্ষিণ চীন
  • G. e. asakurae (Matsumura, 1908) - তাইওয়ান

ভারতে প্রাপ্ত তাত্রা বল্গার উপপ্রজাতি হল-[৭]

  • Graphium eurous caschmirensis Rothschild, 1895 – West Himalayan Six-bar Swordtail
  • Graphium eurous sikkimica Heron, 1899 – East Himalayan Six-bar Swordtail

বিস্তার সম্পাদনা

এই প্রজাপতিটি উত্তর পাকিস্তান থেকে পশ্চিম হিমালয়,[৮] জম্মু কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, গাড়োয়াল এবং কুমায়ুন, সিকিম, আসাম ও মনিপুরে দেখা যায়। এছাড়াও নেপাল, ব্রহ্মদেশের উত্তরাংশ থেকে পশ্চিম এবং মধ্য চীনতাইওয়ান এদের প্রাপ্তিস্থান। এই প্রজাপতি হিমালয়ের ৩০০০ থেকে ৮০০০ ফুটের মধ্যে বৃক্ষাচ্ছাদিত অঞ্চলে খোলা জায়গা পাওয়া যায়। এছাড়াও নির্দিষ্ট ছোট ছোট এলাকায় এদের পাওয়া যায়।

আচরণ সম্পাদনা

পুরুষ প্রজাপতিরা তাদের প্রিয় অঞ্চল থেকে বেশি দূরে যাওয়া পছন্দ করে না। তবে স্ত্রী প্রজাপতিদের তাদের হোস্ট গাছ, মূলত ম্যাগ্নোলিয়ার সন্ধানে উন্মুক্ত স্থানে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়।

পুরুষেরা জমি থেকে অনেকটা উপরে কিছু নির্দিষ্ট গাছের আশেপাশে উড়ে বেড়ায়। এরা সাধারণত চঞ্চল প্রকৃতির হয়। তবে মাঝেমধ্যে এরা যখন নিচের দিকে নামে, তখন জালে ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকে।অপরপক্ষে স্ত্রী প্রজাপতিরা শান্ত প্রকৃতির হয়। এরা জমির কাছাকাছি ওড়ে এবং এদের সাধারণত হোস্ট গাছে বসে থাকতে দেখা যায়।

বৈশিষ্ট্য সম্পাদনা

ডিম সম্পাদনা

এরা বছরে একবার ডিম দেয়। স্ত্রী প্রজাপতিরা অপেক্ষাকৃতভাবে দেরীতে নিষ্ক্রমণ করে। অনেকক্ষেত্রেই প্রাণবন্ত স্ত্রী প্রজাপতিদের সঙ্গে জীর্ণ ডানার পুরুষ প্রজাপতিদের সম্পর্ক স্থাপনে সচেষ্ট হতে দেখা যায়।

শূককীট সম্পাদনা

তাত্রা বল্গার শূককীট সবুজাভ হয় এবং এদের গায়ে কালো বিন্দু দেখা যায়। এখানে হলুদ রঙের তির্যক ব্যান্ড থাকে। প্রতিটি বক্ষাংশে একজোড়া করে কাঁটা থাকে। পায়ুদেশ হলুদ হয় এবং এখানে কালো বিন্দু থাকে।

আহার্য উদ্ভিদ সম্পাদনা

এই শূককীট Persea duthii,Persea odoratissima, Michelia doltsopa,Persea duthei [৯], Neolitsea umbrosa এছাড়া (Magnoliaceae) পরিবারের [১০] গাছের পাতার রসালো অংশ আহার করে।[১১]

মূককীট সম্পাদনা

পিউপাদের আকৃতি সাধারণত পাতলা ও রং সবুজ হয় যেখানে চারটে হলুদ দাগ দেখা যায়।

হিমাচল প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিতভাবে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু করে মে মাসের মাঝামাঝি অবধি দেখা যায়। আসাম থেকে শুরু করে পূর্ব হিমাচল অঞ্চলে জানুয়ারির শুরুর দিকে নতুন প্রজাপতিদের দেখা যায়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Häuser, Christoph L.; de Jong, Rienk; Lamas, Gerardo; Robbins, Robert K.; Smith, Campbell; Vane-Wright, Richard I. (২৮ জুলাই ২০০৫)। "Papilionidae – revised GloBIS/GART species checklist (2nd draft)"। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুন ২০১৩ 
  2. A Pictorial Guide Butterflies of Gorumara National Park (2013 সংস্করণ)। Department of Forests Government of West Bengal। পৃষ্ঠা 13। 
  3. Savela, Markku (১৬ ফেব্রু ২০০৮)। "Graphium"Lepidoptera and some other life forms। nic.funet.fi। 
  4. Cotton, Adam; Fric, Zdenek Faltynek; Smith, Colin & Smetacek, Peter (মার্চ ২০১৩)। "Subspecies catalogue of the butterflies of India (Papilionidae): A Synopsis"। Bionotes15 (1): 5–8। 
  5. Racheli, T. & Cotton, Adam। Bozano, GC, সম্পাদক। Guide to the Butterflies of the Paearctic Region, Papilionidae Part 1, Subfamily Papilioninae, Tribe Troidini। Milano 2010: Omnes Artes। পৃষ্ঠা 23–26। 
  6. Smith, Colin (১৯৮১)। Field Guide to Nepal's Butterflies। Natural History Museum। 
  7. "Graphium eurous Leech, 1893 – Six-bar Swordtail"। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০১৬ 
  8. Bhardwaja, M. et.al.,। "Butterfly communities along an elevational gradient in the Tons valley, Western Himalayas: Implications of rapid assessment for insect conservation"। Journal of Asia-Pacific Entomology(2012)। পৃষ্ঠা 207–217। 
  9. Singh, Arun Pratap (২০১১)। Butterflies of India। Noida: Om Book International। পৃষ্ঠা 31। আইএসবিএন 978-93-80069-60-9 
  10. Haribal, Meena (১৯৯২)। The Butterflies of Sikkim Himalaya and Their Natural History। Gangtok, Sikkim, India: Sikkim Nature Conservation Foundation। 
  11. Smetacek, Peter (মার্চ ২০১২)। "Preimaginal stages of Graphium (Pazala) eurous caschmirensis (Rothschild 1895) (Lepidoptera: Papilionidae) in the Kumaon Himalaya, India"। Nachrichten des Entomologischen Vereins Apollo32 (3/4): 109–112। আইএসএসএন 0723-9912