ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আন্দোলনের সাথে যুক্ত একটি স্বেচ্ছাসেবী ছাত্র সংগঠন। [১][২] এটি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আন্দোলনের পথিকৃৎ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ সংক্ষেপে ডিইউএফএস নামেও পরিচিত। ডিইউএফএস বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটির সদস্য।[৩]
সংক্ষেপে | ডিইউএফএস |
---|---|
নীতিবাক্য | সুস্থ চলচ্চিত্র, সুস্থ দর্শক |
গঠিত | ১৫ জুলাই ১৯৯১ |
ধরন | স্বেচ্ছাসেবী ছাত্র সংগঠন |
আইনি অবস্থা | নিবন্ধভুক্ত |
উদ্দেশ্য | বিনোদন, চলচ্চিত্র আন্দোলন, চলচ্চিত্র প্রদর্শন |
সদরদপ্তর | ২য় তলা, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা, বাংলাদেশ |
স্থানাঙ্ক | ২৩°৪৩′৫২″ উত্তর ৯০°২৩′৪৬″ পশ্চিম / ২৩.৭৩১১১° উত্তর ৯০.৩৯৬১১° পশ্চিম |
যে অঞ্চলে কাজ করে | বাংলাদেশ |
সদস্যপদ | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য |
দাপ্তরিক ভাষা | বাংলা |
সভাপতি | তীর্থ প্রতিম দাস |
সাধারণ সম্পাদক | নিশাত সালসাবিল রব |
প্রধান অঙ্গ | কার্যকারি কমিটি |
প্রধান প্রতিষ্ঠান | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ |
অনুমোদন | বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিস |
স্বেচ্ছাকর্মী | প্রায় ১৫০ |
ওয়েবসাইট | http://www.dufs.org |
কার্যক্রম
সম্পাদনা- চলচ্চিত্র উৎসব
- ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ম্যানিফেস্টিশন প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফএমপি)
- প্রকাশনা
- পাঠচক্র
- পাঠাগার কর্মসূচী
- সেমিনার
- ওয়ার্কশপ
- যৌথ আয়োজন
- জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসসমূহ পালন
ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ম্যানিফেস্টিশন প্রোগ্রাম
সম্পাদনাওয়ার্ল্ড ফিল্ম ম্যানিফেস্টিশন প্রোগ্রাম সংক্ষেপে (ডব্লিউএফএমপি) ডিইউএফএসে মাসিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। ডব্লিউএফএমপি সাধারনত বিদেশি দূতাবাসগুলোর সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে প্রদর্শিত হয় যেমন, গ্যেটে ইন্সটিটিউট, রাশিয়ান কালচারাল সেন্টার, আলিয়াঁস ফ্রঁসেজ, ইন্দিরা গান্ধি কালচারাল সেন্টার, ইরানিয়ান কালচারাল সেন্টার এবং এডওয়ার্ড কেনেডি সেন্টার (ইএমকে)।
চলচ্চিত্র সংসদকর্মীদের বিশ্বের সমকালীন ও ধ্রুপদী চলচ্চিত্রের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়াই ডব্লিউএফএমপির প্রধান উদ্দেশ্য। ডব্লিউএফএমপি আসলে ভিউয়ারর্স ফোরাম নামে ১৯৯৮ সালের জুনে গ্যেটে ইন্সটিটিউট প্রথম প্রদর্শিত হয়। পরবর্তি দুই বছরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে আরোও ১৪টি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এই উদ্যোগের নাম পরিবর্তিত হয়ে ডব্লিউএফএমপি নামে ২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে নতুন ভাবে আত্নপ্রকাশ করে।[৪]
দীর্ঘ পথযাত্রায় ডব্লিউএফএমপির ১০০তম সেশন ২০১৩ সালের নভেম্বরে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়।এখন পর্যন্ত এর ১২০টির মত আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ফ্ল্যাশব্যাক
সম্পাদনাফ্ল্যাশব্যাক ডিইউএফএসর ত্রৈমাসিক প্রকাশনা।
পাঠচক্র
সম্পাদনাচলচ্চিত্রের খুঁটিনাটি, চলচ্চিত্র পরিভাষা-ইতিহাস, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা, পারষ্পরিক অভিজ্ঞতা-মতামত বিনিময় হয় পাঠচক্রে। এই আসর সকলের জন্য উন্মুক্ত।
ফিল্ম ওরিয়েন্টেশন ও ফিল্ম অ্যাপ্রিসিয়েশন কোর্স
সম্পাদনাসংগঠনের নতুন সদস্যদের চলচ্চিত্রের মৌলিক বিষয়সমূহের উপর প্রাথমিক ধারণা দিতে ফিল্ম ওরিয়েন্টেশন কোর্স এবং পরবর্তীতে চলচ্চিত্রের নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সাথে বিষদভাবে পরিচয় করিয়ে দিতে আয়োজন করা হয় ফিল্ম অ্যাপ্রিসিয়েশন কোর্স।
উৎসব
সম্পাদনাআমার ভাষার চলচ্চিত্র
সম্পাদনাভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং সাধারণ দর্শকের সাথে বাংলা চলচ্চিত্রের মেলবন্ধন ঘটানোর প্রয়াসে প্রতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ আয়োজন করে ‘আমার ভাষার চলচ্চিত্র’ শীর্ষক চলচ্চিত্র উৎসব। বাংলা ভাষায় নির্মিত ঐতিহ্যবাহী সব চলচ্চিত্র নিয়ে এই আয়োজন। ২০০২ সালে ভাষা আন্দোলনের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘আমার ভাষার চলচ্চিত্র’ শিরোনামে প্রথম বারের মতো এ উৎসবের সূচনা হয়। সে বছর ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন এই চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধন করেন। পরবর্তীতে ‘চলচ্চিত্রে বাংলার মুখ’, ‘সত্যজিতের চলচ্চিত্র’, ‘বাংলা চলচ্চিত্রের ৫০ বছর’ প্রমূখ বিভন্ন নামে আয়োজন হবার পর ২০০৭ সাল থেকে ‘আমার ভাষার চলচ্চিত্র’ নামেই এ উৎসব আয়োজিত হয়ে আসছে। ২০১৭ সালে এই উৎসবের ১৬তম আসরে বছরের সেরা বাংলা চলচ্চিত্রকে ‘হীরালাল সেন’ পদক দেওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসব
সম্পাদনা২০০৭ সাল থেকে নিয়মিতভাবে আয়োজিত হয়ে আসছে এ উৎসব। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চলচ্চিত্র প্রেমী বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণদের নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নিয়ে এই আসর। ২০১৭ সালে উৎসবের ৯ম আসরে ৯৬টি দেশ থেকে ১৭০২টি চলচ্চিত্র জমা পড়ে। এর মধ্য থেকে ২০০টি চলচ্চিত্র প্রদর্শনের জন্য মনোনীত হয়। ঢাকাস্থ বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, টিএসসি মিলনায়তন এবং স্টার সিনেপ্লেক্স এ চলচ্চিত্রগুলো প্রদর্শিত হয়। উৎসবের সেরা চলচ্চিত্র ‘জহির রায়হান পদক’ এবং সেরা বাংলাদেশী চলচ্চিত্র ‘তারেক মাসুদ পদক’ এ ভূষিত হয়।
নবীনদের জন্য চলচ্চিত্র
সম্পাদনাপ্রতি বছর নতুন শিক্ষার্থীদের আগমনের পরপরই তাদের কলরবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ যখন মুখরিত হয়ে ওঠে, তখনই তাদের বরণ করে নিতে আয়োজন করা হয় ফিল্ম ফর ফ্রেশার্স বা নবীনদের জন্য চলচ্চিত্র।
সদস্যতা
সম্পাদনাশুধুমাত্র প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা মৌখিক সাক্ষাৎকারে উত্তীর্ণ হয়ে সংসদের সদস্য পদ লাভ করেন। উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব থাকাকালীন সময়েই কেবল শিক্ষার্থীরা এই সংগঠনের সদস্য থাকতে পারবেন।
বিশ্ব চলচ্চিত্র দিবস উদযাপন
সম্পাদনা১৮৯৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর ল্যুমিয়ের ভ্রাতৃদ্বয় ‘সিনেম্যাটোগ্রাফি’র মাধ্যমে প্রথম চলচ্চিত্র প্রদর্শন করেন। সেই থেকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম চলচ্চিত্রের উদ্ভব। এই বিশেষ দিনকে স্মরণ করে ২৮ ডিসেম্বর ‘বিশ্ব চলচ্চিত্র দিবস’ পালন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ এদিন আয়োজন করে উন্মুক্ত চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা।
অন্যান্য কার্যক্রম
সম্পাদনাঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ জাতীয় শোক দিবস, মহান বিজয় দিবস, মহান স্বাধীনতা দিবস সহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে টিএসসি প্রাঙ্গণে উন্মুক্ত চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে। বছরের বিভিন্ন সময়ে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বদের স্মরণে আয়োজন করা হয় উন্মুক্ত চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভার। পাশাপাশি চলচ্চিত্রের বিভিন্ন দিক বিবেচনায় আয়োজিত হয় বিষয়ভিত্তিক সেমিনার।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৮ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৬।
- ↑ http://www.thedailystar.net/newDesign/news-details.php?nid=12520# Dhaka University Film Society: A hub for young cine-enthusiasts
- ↑ "Dhaka University Film Society"। New Age। ২৪ নভেম্বর ২০১২। ৩ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩।
- ↑ Romel, Rafiqullah। "ডব্লিউএফএমপি-র ফ্ল্যাশব্যাক : সময়ের ইতিকথা"। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৪।