অপরাজেয় বাংলা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মরণে নির্মিত একটি ভাস্কর্য

অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্যটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মরণে নিবেদিত একটি ভাস্কর্য যা তিনজন মুক্তিযোদ্ধাকে চিত্রায়িত করেছে।[১]

অপরাজেয় বাংলা
অপরাজেয় বাংলা, সেপ্টেম্বর ২০১৮
শিল্পীসৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদ
আয়তন৫.৫ মি (১৮ ft)
অবস্থানঢাকা
স্থানাঙ্ক

অবস্থান

সম্পাদনা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে অবস্থিত একটি ভাস্কর্য। এটি নির্মাণ করেন মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদ[১] অপরাজেয় বাংলা নামকরণটি করেছিলেন মুক্তিযাদ্ধা ও সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী (১৯৩৮ - ২০১৭)।

ভৌগোলিক স্থানাঙ্কে অপরাজেয় বাংলার অবস্থান ২৩°৪৪′০১″ উত্তর ৯০°২৩′৩৪″ পূর্ব / ২৩.৭৩৩৫৮৩৭° উত্তর ৯০.৩৯২৭৫০৮° পূর্ব / 23.7335837; 90.3927508

১৯৭৩ সালে ভাস্কর্যটি তৈরি করা শুরু হয়। ১৯৭৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে অপরাজেয় বাংলা উদ্বোধন করা হয়।[২] ৬ ফুট বেদীর উপর নির্মিত এর উচ্চতা ১২ ফুট, প্রস্থ ৮ ফুট ও ব্যাস ৬ ফুট।[১] এই ভাস্কর্যটিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রসমাজসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণের দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে।

স্থাপত্য তাৎপর্য

সম্পাদনা

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে। তাদের সম্মিলিত প্রতিরোধ ও আক্রমণে পাক বাহিনী পরাজিত হয়। সর্বস্তরের মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণের প্রতীকী চিহ্নই 'অপরাজেয় বাংলা'। ১৯৭২-৭৩ সালে ডাকসুর ভিপি ছিলেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং জিএস ছিলেন মাহবুব জামান। এ সময় ডাকসুর উদ্যোগে অপরাজেয় বাংলার কাজে হাত দেয়া হয়। এর তিনটি মূর্তির একটির ডান হাতে দৃঢ় প্রত্যয়ে রাইফেলের বেল্ট ধরা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি। এর চোখেমুখে স্বাধীনতার চেতনা উদ্দীপনা নিরাপোষ। এর মডেল ছিলেন আর্ট কলেজের ছাত্র মুক্তিযোদ্ধা বদরুল আলম বেনু। থ্রি নট থ্রি রাইফেল হাতে সাবলীল ভঙ্গিতে দাঁড়ানো অপর মূর্তির মডেল ছিলেন সৈয়দ হামিদ মকসুদ ফজলে। আর নারী মূর্তির মডেল ছিলেন হাসিনা আহমেদ। ১৯৭৫ সালের পর অনেকদিন অপরাজেয় বাংলার নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল।

১৯৭৯ সালের ১৯ জানুয়ারি পূর্ণোদ্যমে অপরাজেয় বাংলার নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৯৭৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় এ ভাস্কর্যের উদ্বোধন করা হয়। তবে অপরাজেয় বাংলার কাছে ভাস্করের নাম খচিত কোন শিলালিপি নেই। স্বাধীনতার এ প্রতীক তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন গুণী শিল্পী ভাস্কর সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনের বেদিতে দাঁড়ানো তিন মুক্তিযোদ্ধার প্রতিচ্ছবি যেন অন্যায় ও বৈষম্য দূর করে দেশে সাম্য প্রতিষ্ঠার গান গাইছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে। এ ভাস্কর্যে সব শ্রেণীর যোদ্ধার প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হয়েছে।[১]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], সুজন ঘোষ, সাইফুর রহমান আকন্দ, মোঃ হাবিবুর রহমান, দৈনিকজনকণ্ঠ। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ১৯ ডিসেম্বর ২০১০ খ্রিস্টাব্দ।
  2. "অপরাজেয় বাংলা :মুক্তিযুদ্ধের অসামান্য প্রতীক"দৈনিক ইত্তেফাক। ৭ জুন ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০১৮