ঠেকুয়া ( নেপালি: ठेकुआ , ঠোকোয়া বা ঠেকারিস) , 'খাজুরিয়া' বা ' থিকরী' নামে পরিচিত, [১] ভারতীয় উপমহাদেশের একরকমের শুকনো মিষ্টি পিঠা। মূলত  ভারতের বিহার, উত্তর প্রদেশ ও ঝাড়খণ্ড এবং নেপালের তরাই অঞ্চলে অত্যন্ত জনপ্রিয়।[২]

ঠেকুয়া
অন্যান্য নামठेकुआ
ধরনপিঠা
প্রকারজলখাবার
উৎপত্তিস্থলভারত এবং নেপাল
অঞ্চল বা রাজ্যভারত(উত্তর প্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, নেপাল (তরাই অঞ্চল )
প্রধান উপকরণআটা, চিনি অথবা গুড়, ঘী, এলাচ, মৌরি নারিকেল,শুকনো ফল

ঠেকুয়া  হিন্দু ধর্মে ছট পূজা তথা সূর্য উপাসনার লৌকিক উৎসবের সময় নির্মিত এক ধরনের মিঠাই। সূর্য উপাসনায় সূর্য ও তার পত্নী ঊষার উদ্দেশ্যে সমর্পিত সামগ্রীর অন্যতম। সমপর্ণের পর এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান প্রসাদ হিসাবে বিবেচিত হয়। [৩] [৪] [৫] বহু শতাব্দী ধরে এই সমস্ত অঞ্চলে এটি সুস্বাদু জলখাবার হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। [৬] [৭] ঠেকুয়া একটি জলখাবার হলেও, এর খাদ্যগুণও অনেক। তৈরিতে যে সমস্ত উপকরণ ব্যবহৃত হয়, সেগুলির সঙ্গে আমণ্ড, কাজুবাদাম, কিশমিশের মতো শুকনো ফল যোগ করা হয়। এগুলি শরীরে ভিটামিন,প্রোটিন, অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট, ফাইবার, ফ্যাটি অ্যাসিডের যোগান দেয়। শীতকালে এগুলি রোগ প্রতিরোধের সহায়ক।[৮]

ঠেকুয়া বানানোর পদ্ধতি সম্পাদনা

আটা, সুজি, নারিকেল কোরা ও কুচি, মৌরি, চিনির সিরাপ, ঘী এবং দুধ। সিরাপ তৈরিতে চিনির পরিবর্তে বিকল্প হিসাবে গুড়ের ব্যবহার করা যায়।[৬] স্বাদ বৃদ্ধিতে এলাচ গুঁড়া সহযোগে উপরের সমস্ত  উপকরণ ভালভাবে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করা হয় এবং পরে অল্প অল্প দুধ মিশিয়ে এক মণ্ড বানানো হয়। এই মন্ড থেকে লুচির আকারের থেকে একটু বড় মাপের লেচি বের করা হয়। এরপর হাতে ঘি মাখিয়ে লেচিগুলো চেপে চেপে চ্যাপটা আকারের করে বিভিন্ন আকারে, প্রয়োজনে ছাঁচে বা পছন্দ মত নকশার আকারে নেওয়া যায়। এগুলিকে এরপর ডুবো ভোজ্য তেলে আঁচ কমিয়ে খুব ভালোভাবে  লালচে করে ভেজে নেওয়া হয়। গরম অবস্থায় এটি নরম থাকে, কিন্তু ঠাণ্ডা হলে শক্ত হয়ে যায়। কোন কিছু ছাড়াই এটি অনেক দিন সংরক্ষণ করা যায়।

রেকর্ড সম্পাদনা

 
ভারতীয় ডাক টিকিটে ঠেকুয়া

২০১৯ খ্রিস্টাব্দের বিহার রাজ্যের দ্বারভাঙার ষোলজনের একটি দল ৯১ কিলোগ্রাম ওজনের ঠেকুয়া তৈরি করে লিমকা বুক অফ রেকর্ডস স্থান অধিকার করেন [৯]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Sharma, Gunjan (২ নভেম্বর ২০১৯)। "Thekua: The blessing Of Chhath Maiya"G Plus (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-১৫ 
  2. Bureau, The Week। "Snack time delights"My Republica (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১০ 
  3. "Sun god to smile on devotees, scientists say"Telegraph India (ইংরেজি ভাষায়)। ৩০ অক্টোবর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-১৫ 
  4. "All you need to know about Thekua and how you can make it at home"The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-১১-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-১৫ 
  5. "Sun worshippers"kathmandupost.com (English ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১০ 
  6. "'Rasiao-kheer', 'thekua' make for festive platter"The Times of India। ১ নভেম্বর ২০১১। ১১ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০১২ 
  7. Grover, Neha (২ নভেম্বর ২০১৯)। "Chhath Puja 2019: Thekua And More; 5 Traditional Recipes To Celebrate The Festival With"NDTV Food। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-১৫ 
  8. "উপকারিতায় ভরপুর ঠেকুয়া সমাধান করে অনেক শারীরিক সমস্যার"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-২৮ 
  9. Nov 1, Sanjiv Das। "Bihar: Makers of 91kg 'thekua' eyeing Limca book"The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-১৫ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা