টুমডাক' হল ভারতের বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও পূর্ব ভারতের এবং বাংলাদেশের সাঁওতাল জনগণের একটি দ্বি-মাথাযুক্ত আনদ্ধযন্ত্র[১][২] । টুমডাক নলাকার হয় এবং এটি মাটি দিয়ে তৈরি। ড্রামের দুটি মাথা সাধারণত গোচর্ম আচ্ছাদিত থাকে। ডানদিকেরটি বামদিকের চেয়ে সামান্য ছোট হয়। অনেকগুলি অনুরূপ ভারতীয় ড্রামের মতো, প্রতি মাথার কেন্দ্রস্থলে সুরকরণ লেইয়ের একটি গোল টুকরো থাকে যেটি শব্দকে বাড়িয়ে তোলে। টুমডাক দ্বি-মাথাযুক্ত ভারতীয় ড্রামগুলির বৃহৎ বিভাগে পড়ে, যাদের বিভিন্ন নাম রয়েছে, যেমন: ঢোলক, নাল, মৃদঙ্গ ইত্যাদি।

একজন সাঁওতাল বাদক একটি টুমডাক বাজাচ্ছেন।

ব্যবহার সম্পাদনা

সাঁওতাল সম্প্রদায় সাধারণত ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং সাঁওতালি উৎসবগুলির জন্য তমাহ'র সমাহারে টুমডাক ব্যবহার করে। এই দুই ধরনের বাদ্যযন্ত্রই প্রায় সর্বজনীনভাবে পুরুষেরা বাজায়, নারীরা নয়। যখন নাচের জন্য বাজানো হয়, টুমডাক বাদক ড্রামটিকে তার গলায় দড়ি বা চামড়ার সরু ফালি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। সুরের প্রকারের ওপর নির্ভর করে বাদক পুরো হাত এবং আঙ্গুল দিয়ে টুমডাক বাজায়। তমাহ' এবং টুমডাকের ছন্দটি সাঁওতাল নৃত্যের জন্য মৌলিক ছন্দেময় / ছন্দবদ্ধ নিদর্শন গঠন করে এবং এটি প্রথাগত সাঁওতালি সংগীতের জন্য প্রয়োজনীয়।

বর্ণনা সম্পাদনা

বাদ্যযন্ত্রটি মাটি দিয়ে তৈরি হয়। ডানদিকের মাথা (ব্যাস প্রায় ২০ সেমি) বামদিকের মাথার (ব্যাস প্রায় ২৯ সেমি) চেয়ে ছোট, এবং শাঙ্কব দেহের কেন্দ্রটি খুব আলতোভাবে কটিযুক্ত (বিপরীত দ্বি-শঙ্কু), যদিও এটি চামড়ার ফিতার কারণে প্রচ্ছন্ন থাকে। 'ভি' আকারে ঘনভাবে জড়িত ফিতা একটি দীর্ঘ, দুই পাশ কাটা শঙ্কুর চেহারা দেয়। উভয় মাথাতেই দ্বিস্তরীয় গরু বা ছাগলের চামড়া থাকে। উপরের চামড়া (মৃধা) নীচের চামড়ার (চক্কি) ওপর আঠা দিয়ে আটকানো থাকে এবং এমন ভাবে কাটা হয় যাতে একটি বহিস্থ বলয়ের আকার আসে। ডানদিকের মাথার উপরের চামড়াটি প্রায় ৩৭ মিমি প্রশস্ত। নীচের চামড়াটিতে গুঁড়ো চুনাপাথর, ছোলার বেসন, আধা সিদ্ধ চাল, এবং কালির লেই (খারেন) লাগানো হয়। এটি তিন থেকে চার দিনের জন্য শুকানো হয় এবং একটি পাথর দিয়ে ঘষে মসৃণ করা হয়। বাম মাথার লেইটি (যার উপরের বলয়টি প্রায় ৪৫ মিমি প্রশস্ত) ঘন থাকে। এইদিকে কালি থাকেনা এবং এটি মসৃণ করাও হয়না। বাদক উভয় মাথায় হাত দিয়ে আঘাত করে বাজান।[১]

আরো দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Tumdak' [tumdā]"। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০২১ 
  2. "Status, Development and Future of Santals"Sanatan Marndi। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-০৬