জার্মান পুনঃএকত্রীকরণ

জার্মান পুনঃএকত্রিকরণ (জার্মান: Deutsche Wiedervereinigung) সম্পন্ন হয় ১৯৯০ সালের ১৩ অক্টবর।এর মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রি জার্মানি(পূর্ব জার্মানি)র অঞ্চল সমূহ ফেডারেল প্রজাতন্ত্রি জার্মানি(পশ্চিম জার্মানি)র সাথে একীভূত হয়। এ পরিবর্তন কে Die Wende (The Turning/The Change) বলে আখ্যায়িত করা হয়।

।১৯৪৯ সালে জার্মান বিভাজন।ভবিষ্যৎ পশ্চিম জার্মানির(নীল) মধ্যে রয়েছে মার্কিন,ব্রিটিশ এবং ফরাসি অঞ্চল (বেগুনি রঙের অংশ বাদে, এ অংশটি পরবর্তীতে পশ্চিম জার্মানির সাথে একীভূত হয়)।পূর্ব জার্মানি(লাল,হলুদ রঙের পশ্চিম বার্লিন বাদে বার্লিনের বাকি অংশ) সোভিয়েত অঞ্চলের মাঝে প্রতিষ্ঠা করা হয়

১৮ মার্চ, ১৯৯০ পূর্ব জার্মানিতে প্রথম মুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর পূর্ব এবং পশ্চিম অংশ আলোচনার মাধ্যমে পুনঃএকত্রিকরণের ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি নিয়ন্ত্রণকারি ৪ টি পরাশক্তির প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে এ চুক্তিকে "Two Plus Four Treaty" ও বলা হয়।

একীভূত জার্মানি ইউরোপিয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোর সদস্য

নামকরণ

সম্পাদনা

১৯৯০ সালের ঘটনাবলীকে একত্রিকরণ নাকি পুনঃএকত্রিকরণ বলা হবে, তা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মতামত রয়েছে।১৮৭১ সালে প্রথমবার জার্মান একত্রিকরণ হয়েছিল বলে, বার্লিন দেয়াল খুলে দেবার ঘটনাকে অনেকে পুনঃএকত্রীকরণ বলে থাকেন। জার্মান রাজনীতিবাদরা তাই একে বলতেই বেশি স্বচ্ছন্দবোধ করেন। অনেকে এ ঘটনাকে শুধুমাত্র জার্মান ঐক্য(Deutsche Einheit) বলে থাকেন

পুনঃএকত্রীকরণ

সম্পাদনা

ইতিহাস

সম্পাদনা
 
পূর্ব জার্মান পুলিশ কর্মকর্তাগণ বার্লিন দেয়ালের ব্রান্ডেনবার্গ গেইট আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেবার জন্য অপেক্ষা করছেন

৩ অক্টোবর ১৯৯০ তে পুনঃএকত্রিকরণ প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন করা হয়। পূর্ব জার্মানির ৫ টি প্রদেশ এর মাধ্যমে ফেডারেল জার্মানিতে যোগ দেয়। জার্মান সংবিধান সংশোধিত হয়, যেখানে ভবিষ্যতে অস্ট্রিয়াকে জার্মানির সাথে একীভূত হওয়ার আমন্ত্রণ জানানোর সুযোগ আছে।

১৪ নভেম্বর, ১৯৯০ পোল্যান্ডএর সাথে আনুষ্ঠানিক চুক্তির মাধ্যমে ওদের-নিসে লাইন কে জার্মানি-পোল্যান্ডের সীমানা বলে স্বীকৃতি দেয়া হয়।

পরবর্তী মাসে ১৯৩২ সালের পর সমগ্র জার্মানির প্রথম নির্বাচনে হেলমুট কোল চ্যান্সেলর নির্বাচিত হন। ৩ রা অক্টোবরকে "জার্মান ঐক্য দিবস" হিসেবে সরকারী ছুটি ঘোষণা করা হয়

পরবর্তী প্রভাব

সম্পাদনা

পুনঃএকত্রীকরণ জার্মান অর্থনীতিকে তীব্র চাপের মুখে ফেলে দেয়।একত্রীকরণে আনুমানিক ১.৫ ট্রিলিয়ন ইউরো খরচ হয়। এ বিশাল ব্যয়ের মূলে ছিল পূর্ব জার্মানির দূর্বল অর্থনৈতিক কাঠামো। পূর্ব এবং পশ্চিম জার্মানির মুদ্রাকে সমমানের হিসাব করায় মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়। পশ্চিমা প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেক পূর্ব জার্মান শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে কর্মসংস্থানের খোঁজে অনেকে পশ্চিমাংশে পাড়ি জমাতে শুরু করে। পূর্বাংশ হারায় বিশাল জনশক্তি। পূর্ব জার্মানির রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্প কারখানাগুলো ব্যক্তি মালিকানায় হস্তান্তর করতে গিয়েও প্রচুর লোকসানের শিকার হতে হয়। এখন পর্যন্ত জার্মানি প্রতিবছর পূর্ব জার্মানির প্রদেশগুলোর উন্নয়নের জন্য বাৎসরিক ১০ বিলিয়ন ইউরো খরচ করছে।

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা