জামকারান মসজিদ

ইরানের মসজিদ

জামকারান মসজিদ (ফার্সি: مسجد جمکران, মসজিদে জামকারান) হলো ইরানের কোম শহরের পাশে অবস্থিত একটি প্রধান গুরুত্বপূর্ণ মসজিদ।

জামকারান মসজিদ
مسجد جمکران
জামকারান মসজিদ, জামকারান, ইরান
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিইসলাম
জেলাকোম
প্রদেশকোম
যাজকীয় বা
সাংগঠনিক অবস্থা
মসজিদ
নেতৃত্বমুহাম্মদ হাসান রাহিমিয়ান
অবস্থান
অবস্থানজামকারান, ইরান
জামকারান মসজিদ ইরান-এ অবস্থিত
জামকারান মসজিদ
ইরানে অবস্থান
স্থানাঙ্ক৩৪°৩৪′৫৯.৫″ উত্তর ৫০°৫৪′৫০″ পূর্ব / ৩৪.৫৮৩১৯৪° উত্তর ৫০.৯১৩৮৯° পূর্ব / 34.583194; 50.91389
স্থাপত্য
স্থাপত্য শৈলীইসলামি
বিনির্দেশ
গম্বুজসমূহ
মিনার
ওয়েবসাইট
www.jamkaran.ir

সাধারণ তথ্য ও ইতিহাস সম্পাদনা

কোম শহর থেকে ছয় কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত মসজিদটি অত্যন্ত পবিত্র বিবেচিত হয়। মসজিদের ওয়েবসাইট অনুসারে, ৩৭৩ হিজরি সনের ১৭ রমজান (২২ ফেব্রুয়ারি ৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দ) জনৈক শেখ হাসান ইবনে মুতলিহ জামকারানি মুহম্মদ আল-মাহদি ও তার সাথে প্রেরিত পুরুষ হজরত খিজিরের সাথে বর্তমান মসজিদের স্থানে সাক্ষাৎ করেন। জামকারানিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে তারা যে জমি ছিল এটি পবিত্র এবং এটির মালিক হাসান বিন মুসলিম এবং চাষাবাদ বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো। জমি চাষ করে যে পরিমাণ উপার্জন করেছিলেন তা থেকে জমির উপর মসজিদ নির্মাণের অর্থ ব্যয় করা উচিত।[১][২]

১৯৯৫ থেকে ২০০৫ - এই দশকের মধ্যে মসজিদের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে এবং সেই সাথে তীর্থযাত্রীরা, বিশেষ করে তরুণেরা এখানে আসতে শুরু করে। মসজিদের পাশে একটি "অনুরোধের কুয়া" রয়েছে। এখানে শিয়াদের দ্বাদশ ইমাম একদা ঐশ্বরিকভাবে সৃষ্টিকর্তার সাথে সংক্ষিপ্ত কথোপকথনের সুযোগ লাভ করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। এই পবিত্র কুয়ার চারপাশের প্রাচীরে তীর্থযাত্রীরা সুতা দিয়ে ছোট একটি গিঁট বেঁধে দেন। এর মাধ্যমে ইমাম মাহদী একদিন তাদের ইচ্ছা পূর্ণ করবেন বলে তারা বিশ্বাস করেন। প্রতিদিন সকালে প্রহরীরা পূর্ব দিনে বাঁধা সুতা কেটে দেন।[৩]

জামকারান মসজিদে মঙ্গলবার রাতের প্রার্থনা ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত। ধারণা অনুযায়ী, সপ্তাহের এই দিনে [ইমাম] অদৃশ্য হওয়া সত্ত্বেও প্রার্থনা মঞ্জুর করেন। সে সময় মসজিদে লোকজন জমায়েত করে গজলের আসর বসান, পার্কিংয়ের স্থানে ফেরিওয়ালারা জিনিস বিক্রি করতে বসে এবং বিভিন্ন পরিবার প্রাঙ্গণে বসে মূল অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার অপেক্ষা করে।[৪] কখনো কখনো মাগরিবের সময় মসজিদ ভবন ছাপিয়ে হাজার হাজার তীর্থযাত্রী সামনের প্রাঙ্গণে নামাজ আদায় করেন। নারী ও পুরুষকে আলাদা করার জন্য নারীদের আলাদা ঘেরাও করা প্রার্থনা কক্ষ, এমনকি আলাদা কুয়াও রয়েছে।[৪] এছাড়াও মঙ্গলবার, মসজিদের রান্নাঘর থেকে হাজার হাজার গরিব মানুষের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।[৩] রাষ্ট্রপতি মাহমুদ আহমেদিনেজাদ সরকারের প্রথম পদক্ষেপগুলোর একটি ছিল, "সাধারণ আকারের জামকারান মসজিদকে একটি বিশাল প্রার্থনা গৃহ করার লক্ষ্যে ইবাদতখানা, মিনারেট, গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা ও অজুখানা নির্মাণ" এর জন্য প্রায় দশ মিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ করা। সাম্প্রতিক সময়ে জামকারান মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণকারীরা বহির্বিশ্বে মসজিদের ভাবমূর্তি সম্পর্কে সংবেদনশীল আচরণ করছে এবং মূল মসজিদ ও কূয়া কমপ্লেক্সে বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।[৫]

২০২০ খ্রিষ্টাব্দে বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ড্রোন হামলার প্রতিবাদে সে বছরের ৪ জানুয়ারি মসজিদের গম্বুজের ওপরে প্রতিশোধের প্রতীক হিসেবে একটি রক্তলাল পতাকা উত্তোলন করা হয়। যদিও, সাধারণভাবে প্রতি বছর মহররম মাসে মসজিদে লাল পতাকা উত্তোলন করা হয়।[৬]

চিত্রশালা সম্পাদনা

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Holy Jamkaran Mosque. English ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০০৬-১০-২৩ তারিখে (click on "Brief History")
  2. "History of Jamkaran Mosque"। ৭ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০২০ 
  3. Nasr, Vali, The Shia Revival, (Norton, 2006), p.220
  4. Majd, Hooman, The Ayatollah Begs to Differ : The Paradox of Modern Iran, by Hooman Majd, Doubleday, 2008, p.83-4
  5. Majd, Hooman, The Ayatollah Begs to Differ : The Paradox of Modern Iran, by Hooman Majd, Doubleday, 2008, p.84-5
  6. "WATCH: Iran unveils red flag of revenge against America at mosque"Washington Examiner (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০১-০৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-০৫