জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন

জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি) হল  চিকিৎসাবিদ্যা এবং চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ন্ত্রণের জন্য গঠিত তেত্রিশ সদস্যের ভারতীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এটি পূর্বতন মেডিক্যাল চিকিৎসা পরিষদ তথা মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার স্থলে ২০২০ খ্রিস্টাব্দের ২৫ সেপ্টম্বর কার্যকরী হয়।[][] কমিশন ভারতে চিকিৎসা যোগ্যতার স্বীকৃতি প্রদান, মেডিক্যাল স্কুলের অনুমোদন, চিকিৎসকদের নিবন্ধন, চিকিৎসা অনুশীলনের পর্যবেক্ষণ, চিকিৎসা পরিকাঠামোর মূল্যায়ণ ইত্যাদি বিষয়ক কাজ করে থাকে।

জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন
সংক্ষেপেএনএমসি
পূর্বসূরীমেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া
গঠিত২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
উদ্দেশ্যচিকিৎসা নিয়ন্ত্রক সংস্থা
সদরদপ্তরনতুন দিল্লি ভারত
চেয়ারপার্সন
ড. সুরেশচন্দ্র শর্মা
প্রধান অঙ্গ
কমিশন
সম্পৃক্ত সংগঠনস্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক
ওয়েবসাইটnmc.org.in, ১১ আগস্ট ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০২২ 

এটি ছয় মাস আগে ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে আনা এক অধ্যাদেশে এবং পরে ভারতীয় সংসদে আনা স্থায়ী আইনবলে স্থাপিত হয় যখন ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ৮ আগস্ট ভারতের রাষ্ট্রপতির অনুমোদন লাভ করে। []

ইতিহাস

সম্পাদনা
 

ভারতের নীতি আয়োগ পূর্বতন মেডিক্যাল চিকিৎসা পরিষদ তথা মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার পরিবর্তে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন তৈরিতে অনুমোদন দেয়। এই সিদ্ধান্তে বেশিরভাগ রাজ্য সম্মতি জানায়  এবং প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের সাপেক্ষে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন সংক্রান্ত বিল ভারতীয় সংসদে পাশ করানো পর ২০১৯ থ্রিস্টাব্দের ৮ আগস্ট ভারতের রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে। [] [] []

মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া'র পরিবর্তে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন গঠন সম্পর্কিত অধ্যাদেশ ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের গোড়ার দিকে আনা হয়েছিল, যেটি ভারতের রাষ্ট্রপতি ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে জারি করেন।  

ভারতের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় মেডিক্যাল কাউন্সিলের স্থলে ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাস থেকে ভারত সরকারকে পাঁচ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারা চিকিৎসা বিজ্ঞানে শিক্ষা পদ্ধতি তদারকি করতে অনুমতি দেয়। []

এর আগেই পরিকল্পনা কমিশন মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার পরিবর্তে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছিল। এই সিদ্ধান্তে বেশির ভাগ রাজ্য সম্মতি জানালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সম্মতিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের মন্ত্রী ড. হর্ষবর্ধন সংসদের অধিবেশনে চূড়ান্ত বিল আনার প্রস্তাব করেন। [] বিলটি ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে লোকসভার উভয়কক্ষের সমর্থন লাভ করে। [] [১০] [১১] [১২] ভারতের রাষ্ট্রপতি ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ৮ আগস্ট সম্মতি দেওয়ায় জাতীয় মেডিক্যাল কশিশন গঠন আইনানুগ হয়।। [] []

কমিশন চারটি স্বায়ত্তশাসিত বোর্ড নিয়ে গঠিত: [১৩]

  • আন্ডার-গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড (ইউজিএমইবি),
  • পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড (পিজিএমইবি),
  • মেডিকেল অ্যাসেসমেন্ট এবং রেটিং বোর্ড এবং
  • এথিক্স অ্যান্ড মেডিক্যাল রেজিস্ট্রেশন বোর্ড

তেত্রিশ জন সদস্য নিয়ে কমিশন গঠিত হয় - [১৪]

ক) চেয়ারপারসন- ১জন (শুধুমাত্র চিকিৎসা পেশাদার)

খ) পদাধিকারবলে সদস্য:- ১০ জন

  • আন্ডার গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি
  • পোস্ট-গ্রাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন বোর্ডের সভাপতি
  • মেডিকেল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড রেটিং বোর্ডের সভাপতি
  • এথিক্স অ্যান্ড মেডিকেল রেজিস্ট্রেশন বোর্ডের সভাপতি
  • ডিরেক্টরেট জেনারেল অভ হেল্‌থ সার্ভিসেস, নতুন দিল্লির পরিচালক
  • ভারতীয় চিকিৎসা গবেষণা পর্ষদের মহাপরিচালক
  • অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসের যে কোনও একজন পরিচালক।
  • স্নাতকোত্তর ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ, জওহরলাল ইনস্টিটিউট অফ স্নাতকোত্তর মেডিকেল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ, টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতাল, নর্থ ইস্টার্ন ইন্দিরা গান্ধী রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ অ্যান্ড মেডিক্যাল সায়েন্সেস এবং অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ -এর পরিচালকদের মধ্যে থেকে দুজন ব্যক্তি।
  • স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ১ জন

গ) আংশিক সময়ের সদস্য: ২২ জন

  • ব্যবস্থাপনা, আইন, চিকিৎসা নৈতিকতা, স্বাস্থ্য গবেষণা, ভোক্তা বা রোগীর অধিকার ওকালতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং অর্থনীতি সহ এই ধরনের ক্ষেত্রে বিশেষ জ্ঞান এবং পেশাদার অভিজ্ঞতা আছে এমন ব্যক্তিদের মধ্য থেকে তিনজন সদস্য নিয়োগ করা হয়।
  • চিকিৎসা উপদেষ্টা পরিষদে রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মনোনীত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে ঘূর্ণায়মান ভিত্তিতে নিযুক্ত দশ সদস্য।
  • চিকিৎসা উপদেষ্টা পরিষদে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মনোনীত ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে নয়জন সদস্য নিযুক্ত করা হয়। [১৫]

এদের ষাট শতাংশ সদস্যকে অবশ্যই পেশাগতভাবে চিকিৎসক হতে হবে।

আরো দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "NMC comes into force from today, repeals Indian Medical Council Act"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-০৩ 
  2. "President gives assent to National Medical Commission Bill; panel to replace MCI will be formed within six months"Firstpost। ৮ আগস্ট ২০১৯। 
  3. Feb 4, Sushmi Dey | TNN |; 2020। "National Medical Commission in advanced stage of formation, assures health minister | India News – Times of India"The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-২৭ 
  4. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৬ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০২২ 
  5. "President gives assent to National Medical Commission Bill; panel to replace MCI will be formed within six months-India News, Firstpost"Firstpost। ৮ আগস্ট ২০১৯। 
  6. "Medical Council of India is soon to be National Medical Commission"। teluguglobal.in। ১ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টে ২০১৬ 
  7. "SC allows Centre to replace Medical Council of India oversight committee"The Economic Times। ১৮ জুলাই ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২১ 
  8. "Medical Council of India is soon to be National Medical Commission"। teluguglobal.in। ১ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টে ২০১৬ 
  9. DelhiJuly 29, Press Trust of India New; July 29, 2019UPDATED। "Lok Sabha passes National Medical Commission Bill"India Today 
  10. "Rajya Sabha Passes National Medical Commission Bill, 2019"Jagranjosh.com। ২ আগস্ট ২০১৯। 
  11. "National Medical Commission bill passes Rajya Sabha test; healthcare on verge of landmark changes"The Economic Times। ৮ আগস্ট ২০১৯। 
  12. "National Medical Commission Bill passed by Lok Sabha"The Economic Times। ২৯ জুলাই ২০১৯। 
  13. "THE NATIONAL MEDICAL COMMISSION BILL, 2019" (পিডিএফ)। ২৯ জুলাই ২০১৯। ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মে ২০২১ 
  14. "National Medical Commission, India's regulator of medical education, comes into existence replacing MCI"। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০২১ 
  15. "Archived copy" (পিডিএফ)। ১৯ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৯ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা