ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্র

জ্যোতিঃজীববিজ্ঞান ও গ্রহীয় জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানে ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্র বলতে ছায়াপথের এমন অঞ্চলকে বোঝায় যেখানে জীবনের বিকাশের সম্ভাবনা সর্বাধিক। ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রের ধারণাটি ধাতবিকতা (হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম অপেক্ষা ভারী মৌলের উপস্থিতি) এবং অতিনবতারা ইত্যাদি প্রধান বিপর্যয়গুলোর হার ও ঘনত্বসহ বিভিন্ন পরিস্থিতিকে বিশ্লেষণ করে এবং সেই বিশ্লেষণকে ব্যবহার করে একটা ছায়াপথের কোন কোন অঞ্চলে পার্থিব গ্রহের গঠন ও প্রাথমিকভাবে সরল জীবনের বিকাশ সম্ভব এবং সেই জীবনের বিবর্তন ও অগ্রসরণে সেই অঞ্চল অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে সক্ষম কিনা তা পরিগণনা করে।[] ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, আকাশগঙ্গার মতো ছোটো ছায়াপথগুলোর তুলনায় অতি বৃহৎ ছায়াপথগুলোয় বাসযোগ্য গ্রহের উৎপত্তি ও বিকাশের পক্ষে অনুকূল পরিবেশ থাকার সম্ভাবনা সম্ভবত বেশি।[] আকাশগঙ্গা ছায়াপথের ক্ষেত্রে মনে করা হয় যে, এটির ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রটি হল একটি অ্যানিউলাস (স্থূল বলয়াকৃতি), যার বাহ্যিক ব্যাসার্ধ প্রায় ১০ কিলোপারসেক (৩৩,০০০ আলোকবর্ষ) এবং অভ্যন্তরীণ ব্যাসার্ধ ছায়াপথীয় কেন্দ্রের নিকটবর্তী (উভয় ব্যাসার্ধের ক্ষেত্রেই পাকাপোক্ত সীমানার অভাব দেখা যায়)।[][]

একটি ছায়াপথের কোন অঞ্চল জীবনের উন্মেষের ক্ষেত্রে অনুকূল তার পরিস্থিতিগুলোকে যথাযথভাবে পরিমাপে একটি অক্ষমতার কারণে ছায়াপথীয় বাসযোগ্য অঞ্চলের তত্ত্বটি সমালোচিত হয়েছে।[] তাছাড়া কম্পিউটার সিম্যুলেশনের ফলে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে যে, ছায়াপথীয় কেন্দ্রের কাছে তারাগুলো লক্ষণীয়ভাবে তাদের কক্ষপথ পরিবর্তন করে। সেই কারণে ছায়াপথের নির্দিষ্ট কোনও এলাকা অন্যান্য এলাকার তুলনায় জীবন-ধারণের পক্ষে অধিকতর অনুকূল এমন ধারণা আংশিকভাবে হলেও বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে।[][][]

প্রেক্ষাপট

সম্পাদনা

একটি তারার চারিপাশে এমন এক অঞ্চল যেখানে তারাটিকে প্রদক্ষিণ-রত গ্রহ তার পৃষ্ঠভাগে জল ধরে রাখতে পারবে – এই অর্থে ১৯৫৩ সালে হুবার্টাস স্ট্রাগহোল্ডহার্লো শেপলি[][] এবং ১৯৫৯ সালে সু-শু হুয়াং[] পরিনাক্ষত্রিক বাসযোগ্য ক্ষেত্রের ধারণাটি প্রথম প্রস্তাব করেছিলেন। ১৯৭০-এর দশক থেকে গ্রহবিজ্ঞানী ও জ্যোতিঃজীববিজ্ঞানীরা অন্যান্য বিভিন্ন পরিস্থিতিকে জীবনের উদ্ভব ও রক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় বলে বিবেচনা করতে থাকেন। এই মতবাদগুলোর একটি ছিল এই যে, একটি নিকটবর্তী অতিনবতারা সম্ভবত জীবনের বিকাশে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।[১০] ১৯৮১ সালে কম্পিউটার বিজ্ঞানী জিম ক্লার্ক আকাশগঙ্গা ছায়াপথে পৃথিবী-বহিঃস্থ সভ্যতার আপাত অভাবের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে একটি সক্রিয় ছায়াপথীয় নিউক্লিয়াস থেকে সেফার্টজাতীয় বিস্ফোরণের কথা উল্লেখ করে এই তত্ত্ব প্রস্তাব করেন যে, একমাত্র পৃথিবীই যে এই বিকিরণের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে তার কারণ ছায়াপথে গ্রহটির নির্দিষ্ট অবস্থানটি।[১১] একই বছরে ওয়ালেশ হ্যাম্পটন টাকার অধিকতর সাধারণ প্রেক্ষাপটে ছায়াপথীয় বাসযোগ্যতার বিষয়টি বিশ্লেষণ করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীকালের গবেষণার ফলে তার টাকারের প্রস্তাবগুলো বাতিল হয়ে যায়।[১২]

রাশিয়ান স্পেস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এল. এস. মারোচনিক ও এল. এম. মুখিন আধুনিক ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্র তত্ত্বটি প্রস্তাব করেন। এই ক্ষেত্রের সংজ্ঞা হিসেবে তারা এমন একটি অঞ্চলের কথা বলেন যেখানে বুদ্ধিমান জীবনের বিকাশ সম্ভব।[১৩] ২০০০ সালে প্রকাশিত রেয়ার আর্থ: হোয়াই কমপ্লেক্স লাইফ ইজ আননোন ইন দ্য ইউনিভার্স গ্রন্থে ডোনাল্ড ব্রাউনলি ও জীবাশ্মবিজ্ঞানী পিটার ওয়ার্ড ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রের ধারণাটি এবং সেই সঙ্গে জটিল জীবনের উদ্ভবের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অন্যান্য পরিস্থিতির ধারণাটিকে প্রসারিত করেন।[১৪] এই গ্রন্থে লেখকেরা অন্যান্য পরিস্থিতির সঙ্গে ছায়াপথীয় বাসযোগ্য অঞ্চলের ধারণাটিকেও ব্যবহার করেছেন মহাবিশ্বে বুদ্ধিমান জীবন যে খুব সুলভ নয় তা ব্যাখ্যা করার কাজে।

২০০১ সালে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গিলারমো গঞ্জালেজের সহযোগিতায় ওয়ার্ড ও ব্রাউনলি ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রের ধারণাটিকে আরও প্রসারিত করে একটি গবেষনাপত্র প্রকাশ করেন।[১৫][১৬] এই গবেষণাপত্রে গঞ্জালেজ, ব্রাউনলি ও ওয়ার্ড বলেন যে, ছায়াপথীয় জ্যোতিশ্চক্রের নিকটবর্তী অঞ্চলগুলোতে বাসযোগ্য পার্থিব গ্রহ সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় অধিকতর ভারী মৌলগুলোর অভাব দেখা যায় এবং সেই কারণে ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রের আকারের ক্ষেত্রে বাইরের দিকে একটি সীমানা সৃষ্টি হয়।[১০] যদিও ছায়াপথীয় কেন্দ্রের খুব কাছে থাকলে একটি অন্যভাবে বাসযোগ্য গ্রহ অসংখ্য অতিনবতারা ও অন্যান্য ক্রিয়াশীল মহাজাগতিক ঘটনার খুব নিকটবর্তী হয়ে পড়বে এবং সেই সঙ্গে সেটির উপরে সংশ্লিষ্ট তারাটির উর্ট মেঘ এলাকার বিক্ষোভের ফলে মাত্রাতিরিক্ত ধূমকেতু সংঘাতের শিকার হবে। সেই কারণে তিন লেখক ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রের অভ্যন্তরীণ সীমানা নির্ধারণ করেন ছায়াপথীয় স্ফীতির ঠিক বাইরে।[১০]

বিবেচনা

সম্পাদনা

ছায়াপথের কোন অংশটিতে ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রের অবস্থান সম্ভব তা নির্ধারণ করতে হলে অনেকগুলো পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করতে হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে তারা ও সর্পিল বাহুগুলোর বণ্টন, একটি সক্রিয় ছায়াপথীয় নিউক্লিয়াসের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি, নিকটবর্তী অতিনবতারার পুনঃপুন সংঘটনের হার যা জীবনের অস্তিত্বের পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, অবস্থানটির ধাতবিকতা ও অন্যান্য বিষয়।[১০] এই সকল শর্তগুলো পূর্ণ না হলে ছায়াপথের কোনও অঞ্চল সুদক্ষভাবে জীবন সৃষ্টি বা রক্ষা করতে পারে না।

রাসায়নিক বিবর্তন

সম্পাদনা
 
পাতলা ছায়াপথীয় চাকতির ধাতবিকতা বাইরে প্রসারিত ছায়াপথীয় জ্যোতিশ্চক্রের তুলনায় অনেক বেশি।

একটি তারার চারিধারে জীবনের অস্তিত্ব সম্ভব করার ক্ষেত্রে একটি সর্বাপেক্ষা মৌলিক চাহিদা হল সেই তারাটির জীবন রক্ষণে সক্ষম যথেষ্ট ভরবিশিষ্ট একটি পার্থিব গ্রহ উৎপাদনের ক্ষমতা। লোহা, ম্যাগনেসিয়াম, টাইটানিয়াম, কার্বন, অক্সিজেন, সিলিকন ও অন্যান্য বিভিন্ন মৌল একটি বাসযোগ্য গ্রহ উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়। সমগ্র ছায়াপথ জুড়েই এই মৌলগুলোর কেন্দ্রীভবন ও অনুপাতে তারতম্য দেখা যায়।[১০]

মাপকাঠিসূচক সর্বাপেক্ষা সাধারণ মৌল অনুপাতটি হল [Fe/H]-এর অনুপাত। এটি পার্থিব গ্রহ উৎপাদনের ক্ষেত্রে ছায়াপথের একটি অঞ্চলের স্বাভাবিক প্রবণতাটিকে নির্ধারণ করে। ছায়াপথে ছায়াপথীয় কেন্দ্রের সর্বাপেক্ষা নিকটবর্তী অঞ্চল ছায়াপথীয় স্ফীতিতে সূর্যের অনুপাতের আপেক্ষিকে (যেখানে −১ হবে ১০ এই ধরনের ধাতবিকতা) [Fe/H] বণ্টন সর্বাধিক থাকে −০.২ ডেসিমাল এক্সপোনেন্ট একক (ডেক্স); পাতলা চাকতি, যেখানে স্থানীয় বাহুর স্থানীয় ক্ষেত্রগুলো অবস্থিত, সেখানে ছায়াপথীয় কেন্দ্রের চারিধারে সূর্যের কক্ষীয় দূরত্বে গড় ধাতবিকতা −০.০২ ডেক্স, যা কক্ষীয় দূরত্বের প্রতি অতিরিক্ত কিলোপারসেকে ০.০৭ ডেক্স হ্রাসপ্রাপ্ত হয়। প্রসারিত পুরু চাকতি অঞ্চলে গড় [Fe/H] হল −০.৬ ডেক্স, অন্যদিকে ছায়াপথীয় কেন্দ্র থেকে দূরতম অঞ্চল জ্যোতিশ্চক্রে সর্বনিম্ন [Fe/H] বণ্টন থাকে প্রায় −১.৫ ডেক্স।[১০] সেই সঙ্গে [C/O], [Mg/Fe], [Si/Fe] ও [S/Fe] অনুপাতগুলোও সম্ভবত ছায়াপথের একটি অঞ্চলে বাসযোগ্য পার্থিব গ্রহ গঠনের ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে এবং এগুলোর মধ্যে [Mg/Fe] ও [Si/Fe]-এর অনুপাত সময়ের সঙ্গে ধীরে ধীরে হ্রাসপ্রাপ্ত হয়, যার অর্থ ভাবীকালের পার্থিব গ্রহগুলো সম্ভবত বৃহত্তর লৌহ অন্তস্তলবিশিষ্ট হবে।[১০]

একটি পার্থিব গ্রহের ভর যে সব বিভিন্ন সুস্থির মৌলের নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্বারা গঠিত সেগুলো ছাড়াও ৪০K, ২৩৫U, ২৩৮U ও ২৩২Th-এর মতো রেডিওনিউক্লিডের প্রাচুর্যও গ্রহের অভ্যন্তরভাগের তাপ উৎপাদন এবং প্লেট টেকটনিক, আগ্নেয়গিরিভূচৌম্বক গতির মতো জীবন-রক্ষাকারী প্রক্রিয়াগুলোকে সঞ্চালিত করার জন্য প্রয়োজন হয়।[১০] [U/H] ও [Th/H] অনুপাতগুলো [Fe/H]-এর অনুপাতের উপর নির্ভরশীল; যদিও ৪০K-এর প্রাচুর্যের সাধারণ কার্যকরিতা প্রাপ্ত তথ্যের মাধ্যমে অনুধাবন করা যায়নি।[১০]

একটি বাসযোগ্য গ্রহের অভ্যন্তরভাগটিকে উত্তপ্ত করের তোলার জন্য যথেষ্ট রেডিওআইসোটোপ থাকলেও, সেখানে জীবনের উন্মেষের জন্য বিভিন্ন ধরনে প্রাক্-জীবজ অণুর উপস্থিতির প্রয়োজন হয়; তাই ছায়াপথে এই ধরনের অণুগুলোর বণ্টন ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্র নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে।[১৩] ২০০৮ সালে সামান্থা ব্লেয়ার ও সহকর্মীদের একটি গবেষণা সমগ্র আকাশগঙ্গা জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন দৈত্যাকার আণবিক মেঘ থেকে ফর্ম্যালডিহাইডকার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণগুলোকে বিশ্লেষণ করে ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রে বাহ্য সীমা নির্ধারণের চেষ্টা করে; যদিও এই ক্ষেত্রে প্রাপ্ত তথ্য সিদ্ধান্তমূলক বা সম্পূর্ণ কোনওটাই হতে পারেনি।

উচ্চ ধাতবিকতা পার্থিব বহির্গ্রহ সৃষ্টির ক্ষেত্রে সহায়ক হলেও এর মাত্রা বেশি হলে তা জীবনের পক্ষে ক্ষতিকারক হতে পারে। অতিরিক্ত ধাতবিকতা একটি নক্ষত্রজগতের মধ্যে অনেকগুলো গ্যাস দৈত্য গঠন করতে পারে, যা পরবর্তীকালে সেই জগতের হিমরেখার বাইরে থেকে অভিপ্রয়াণ করে তপ্ত বৃহস্পতিতে পরিণত হয়। এর ফলে যে গ্রহগুলো অন্যভাবে জগতটির পরিনাক্ষত্রিক বাসযোগ্য ক্ষেত্রের মধ্যে অবস্থিত সেগুলোর স্বাভাবিক অবস্থাকে বিঘ্নিত করে।[১৭] এইভাবেই জানা যায় যে, গোল্ডিলকস নীতি ধাতবিকতার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য; নিম্ন-ধাতবিকতাযুক্ত জগতগুলোতে পার্থিব-ভরযুক্ত গ্রহের উদ্ভবের সম্ভাবনা কম, অন্যদিকে মাত্রাতিরিক্ত ধাতবিকতার ফলে অধিক সংখ্যায় গ্যাস দৈত্য গঠিত হয়, যার ফলে জগতটির কক্ষীয় গতি ব্যাহত হয় এবং সেই জগতের পার্থিব গ্রহগুলোর বাসযোগ্যতার মান পরিবর্তিত হয়।

বিপর্যয়মূলক ঘটনাবলি

সম্পাদনা
 
বিদ্যমান ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রের উপর অতিনবতারার প্রভাব বিস্তারিতভাবে পর্যালোচিত হয়েছে।

ছায়াপথে রাসায়নিকভাবে প্রাণের উন্মেষে অনুকূল একটি অঞ্চলে অবস্থান করা ছাড়াও তারাকে বিপর্যয়মূলক মহাজাগতিক ঘটনার সংখ্যাধিক্য এড়িয়ে চলতে হয়, যাতে সেটির অন্যভাবে বাসযোগ্য গ্রহগুলোতে জীবন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।[১৭] উদাহরণস্বরূপ, নিকটবর্তী অতিনবতারাগুলো একটি গ্রহের জীবনকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার ক্ষমতা রাখে; এই ধরনের বিপর্যয়মূলক বিস্ফোরণের মাত্রাতিরিক্ত পুনঃপৌনিকতা বহু লক্ষ বছর ধরে ছায়াপথের একটি গোটা অঞ্চলকে বন্ধ্যা করে রাখতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ছায়াপথীয় স্ফীতি অংশটি অতি দ্রুত নক্ষত্র গঠনের প্রাথমিক তরঙ্গটি অনুভব করে থাকে,[১০] ফলে এই অংশে প্রচুর সংখ্যায় অতিনবতারা বিস্ফোরণ দেখা যায় এবং তা পাঁচ বিলিয়ন বছর অঞ্চলটিকে প্রাণের উন্মেষের পক্ষে প্রায় সম্পূর্ণ প্রতিকূল করে রাখে।

অতিনবতারা ছাড়াও গামা-রশ্মি বিস্ফোরণ,[১৮] মাত্রাতিরিক্ত বিকিরণ, অভিকর্ষজ ব্যাঘাত,[১৭] এবং অন্যান্য বিভিন্ন ঘটনা ছায়াপথে প্রাণের উন্মেষের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করা হয়। এই সব ঘটনার মধ্যে রয়েছে কিছু বিতর্কিত মতবাদও, যেমন "ছায়াপথীয় জোয়ার-ভাটা", যা ধূমকেতু সংঘাত বাড়িয়ে তুলতে পারে অথবা কৃষ্ণ পদার্থের শীতল বস্তুগুলোকে বৃদ্ধি করতে পারে,[১৮] যেগুলো জৈবব্যবস্তুগুলোর মধ্য দিয়ে যায় এবং বংশাণু-সংক্রান্ত বিকারকে বাড়িয়ে তোলে।[১৯] যদিও এই ধরনের অনেক ঘটনার প্রভাবের সংখ্যানিরূপণ সম্ভবত কঠিন।[১৭]

ছায়াপথীয় অঙ্গসংস্থান

সম্পাদনা

ছায়াপথগুলো অঙ্গসংস্থানসংক্রান্ত বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য এগুলোর বাসযোগ্যতার সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, সর্পিল বাহুগুলোতে তারাগুলো গঠিত হয়। কিন্তু এই বাহুগুলোতে অসংখ্য দৈত্যাকার আণবিক মেঘ অবস্থান করে এবং তারাগুলোর উচ্চ ঘনত্ব একটি তারা উর্ট মেঘ অঞ্চলকে বিধ্বস্ত করতে পারে, যার ফলে ভিতরের দিকে অবস্থিত যে কোনও গ্রহের দিকে অসংখ্য ধূমকেতু ও গ্রহাণু ছুটে আসার সম্ভাবনা থেকে যায়।[২০] সেই সঙ্গে তারাদের উচ্চ ঘনত্ব এবং অতিমাত্রায় তারা গঠনের হার সর্পিল বাহুর মধ্যে যে কোনও প্রদক্ষিণরত যে কোনও তারাকে অত্যধিক দীর্ঘক্ষণ অতিনবতারা বিস্ফোরণের দিকে উন্মুক্ত করে দিতে পারে এবং তার ফলে সেগুলোতে প্রাণের উন্মেষ ও রক্ষণের সম্ভাবনাগুলো হ্রাস পেতে পারে।[২০] এই সকল পরিস্থিতির বিচারে সূর্য ছায়াপথে একটি সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান করছে। এটি যে শুধু সর্পিল বাহুর বাইরে অবস্থিত তা-ই নয়, সহ-আবর্তন চক্রের কাছে এটির কক্ষপথ সর্পিল বাহুর ছেদস্থল থেকে দূরত্বও দীর্ঘায়িত করেছে।[২০][২১]

সর্পিল বাহুগুলো একটি গ্রহের জলবায়ু পরিবর্তনেরও কারণ হয়ে উঠতে পারে। ছায়াপথীয় সর্পিল বাগুগুলোর ঘন আণবিক মেঘের মধ্যে দিয়ে যেতে গিয়ে নাক্ষত্রিক বায়ু ধাক্কা খেয়ে পিছনের দিকে এমন এক স্থানে চলে যেতে পারে যেখান থেকে একটি প্রদক্ষিণকারী গ্রহের বায়ুমণ্ডলে এক প্রতিফলক হাইড্রোজেন স্তরের উৎপত্তি ঘটে এবং যার ফল হয় সম্ভবত একটি তুষারগোলক পৃথিবী-জাতীয় পরিস্থিতি।[][২২]

একটি ছায়াপথীয় বাধাও ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রের আকারকে প্রভাবিত করতে পারে। মনে করা হয় যে, ছায়াপথীয় বাধাগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পায় এবং ক্রমে ছায়াপথের সহ-আবর্তন ব্যাসার্ধে উপনীত হয়ে সেখানে ইতিমধ্যে বিদ্যমান তারাগুলোর কক্ষপথে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে।[২১] উদাহরণস্বরূপ, সূর্যের মতো উচ্চ-ধাতবিকতাযুক্ত তারাগুলো নিম্ন-ধাতবিকতাযুক্ত ছায়াপথীয় জ্যোতিশ্চক্র ও উচ্চ-বিকিরণযুক্ত ছায়াপথীয় কেন্দ্রের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। এই ধরনের তারা সম্ভবত সারা ছায়াপথেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। এর ফলে ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রের সংজ্ঞা নির্ধারণে অসুবিধা সৃষ্টি হচ্ছে। এই কারণেই কোনও কোনও বিজ্ঞানী মনে করেন একটি ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রের যথাযথ সংজ্ঞা নিরূপণ সম্ভবত অসম্ভব।[২১]

সীমানা

সম্পাদনা
 
ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রটিকে প্রায়শই ছায়াপথীয় কেন্দ্র থেকে আনিউলাস ৭-৯ কিলোপারসেক দূরে অবস্থিত মনে করা হয়। এই ছবিতে সবুজ রঙে চিহ্নিত। যদিও সাম্প্রতিক গবেষণার ফলে এই ধারণাটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

২০০১ সালে প্রকাশিত গঞ্জালেজ, ব্রাউনলি ও ওয়ার্ডের গবেষণাপত্রসহ ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্র-সংক্রান্ত আদি গবেষনাগুলোতে কোনও নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। শুধুই বলা হয়েছিল যে এই ক্ষেত্রটি অ্যানিউলাস এবং ছায়াপথের সেই অঞ্চলটিকে নিয়ে গঠিত যেটি ধাতুসমৃদ্ধ এবং মাত্রাতিরিক্ত বিকিরণের প্রভাবমুক্ত। সেই সঙ্গে এও বলা হয়েছিল যে ছায়াপথের পাতলা চাকতি অঞ্চলেই সম্ভবত বাসযোগ্য গ্রহের উদ্ভব সম্ভব।[১০] অবশ্য ২০০৪ সালে লাইনওয়েভার ও সহকর্মীদের গবেষণায় এই অ্যানিউলাসের সীমানা নির্ধারণ না করা হলেও বলা হয়েছিল যে এই ক্ষেত্রটি আকাশগঙ্গার ছায়াপথীয় কেন্দ্র থেকে ৭-৯ কিলোপারসেক দূরত্বের মধ্যে অবস্থিত।

লাইনওয়েভারের দলটি সময় ও খুঁজে পাওয়ার নিরিখে ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রের বিবর্তনটিকে বিশ্লেষণ করে। উদাহরণস্বরূপ, ছায়াপথীয় স্ফীতির নিকটবর্তী তারাগুলোকে দুই বিলিয়ন বছরের একটি সময়কালের মধ্যে গঠিত হতে হয় বাসযোগ্য গ্রহ উদ্ভবে সহায়ক হওয়ার জন্য।[১৭] এই সময়কালের পূর্বে ছায়াপথীয় স্ফীতির তারাগুলো ঘন ঘন অতিনবতারা ঘটনার জন্য জীবনের উন্মেষে সহায়ক গ্রহের জন্ম দিতে পারে না। অতিনবতারার আশঙ্কা কমে গেলেও ছায়াপথীয় অন্তঃস্থলের ক্রমবর্ধমান ধাতবিকতার ফলে তারাগুলোতে অধিক সংখ্যায় দানব গ্রহ সৃষ্টি হয়। তার ফলে নক্ষত্রজগতটির স্থিতিশীলতা নষ্ট হয় এবং তারাটির পরিনাক্ষত্রিক বাসযোগ্য ক্ষেত্রের মধ্যে অবস্থিত যে কোনও গ্রহের কক্ষপথে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়।[১৭] ২০০৫ সালে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত একটি সিম্যুলেশনে অবশ্য দেখা যায় যে, তপ্ত বৃহস্পতির উপস্থিতিতেও পার্থিব গ্রহগুলো দীর্ঘ সময়কালের জন্য সুস্থির থাকতে পারে।[২৩]

২০০৬ সালে মিলান সিরকোভিক ও সহকর্মীদের গবেষণায় সময়-নির্ভর ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রের ধারণাটিকে প্রসারিত করা হয় এবং বিভিন্ন বিপর্যয়মূলক ঘটনাসহ ছায়াপথীয় গতিবিদ্যার নিরপেক্ষ ঘটনাটিকেও বিশ্লেষণ করা হয়।[১৮] এই গবেষণাপত্রে বলা হয় যে, বেশ কিছু বাসযোগ্য গ্রহ সময়ে সঙ্গে সঙ্গে আকস্মিক বিপর্যয়মূলক ঘটনার ফলে অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এই কারণে একটি সবিরাম ভারসাম্যের সৃষ্টি হলে তার মধ্যে বাসযোগ্য গ্রহগুলো অন্যত্র অপেক্ষা অধিকতর টেকসই হতে পারে।[১৮] আকাশগঙ্গার একটি খেলনা মডেলের উপর মন্টি কার্লো সিম্যুলেশনের ফলাফলের ভিত্তিতে এই দলটি মনে করে যে, বাসযোগ্য গ্রহের সংখ্যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পাওয়াই সম্ভব, যদিও তা ঠিক যথাযথ রৈখিক ধারায় হয় না।[১৮]

পরবর্তীকালের গবেষণায় অ্যানিউলাস ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রের পুরনো ধারণাটিতে অধিকতর মৌলিক সংশোধনী আনা হয়। ২০০৮ সালে নিকোস প্র্যান্টজোসের একটি গবেষণার ফলে জানা যায় যে, ছায়াপথীয় কেন্দ্র থেকে প্রায় ১০ কিলোপারসেক দূরত্বে একটি গ্রহের অতিনবতারার ফলে সৃষ্ট বন্ধ্যাত্ব এড়ানোর সম্ভাবনা সর্বাধিক। এই এলাকাতেই অন্তর্বর্তী ছায়াপথে তারাগুলোর সম্পূর্ণ ঘনত্বের অর্থ এই যে এখানে সর্বাধিক সংখ্যায় বাসযোগ্য গ্রহ পাওয়া সম্ভব।[] ২০১১ সালে এই গবেষণাপত্রের সহযোগিতায় মাইকেল গোয়ানলকের যে গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়, তাতে অতিনবতারার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া গ্রহগুলোর পুনঃপৌনিকতা পরিগণনা করা হয় ছায়াপথীয় কেন্দ্র থেকে সেগুলোর দূরত্ব, ছায়াপথীয় তল থেকে সেগুলোর উচ্চতা ও সেগুলোর বয়সের ভিত্তিতে। শেষ পর্যন্ত দেখা যায় যে বর্তমানে ছায়াপথের প্রায় ০.০৩ শতাংশ তারা জটিল জীবনের উন্মেষে সহায়ক হতে পারে। লাল দানব গ্রহগুলোর জোয়ার-সংক্রান্ত বদ্ধতার বিষয়টিকে জটিল জীবনের বিকাশের একটি প্রতিবন্ধকতা হিসেবে না ধরলে এই পরিমাণটি দাঁড়ায় ১.২ শতাংশ।[]

সমালোচনা

সম্পাদনা

নিকোস প্র্যান্টজোস ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রের ধারণাটির সমালোচনা করেছিলেন। তিনি মনে করেন, কোন মাপকাঠিতে এই ক্ষেত্র সৃষ্টি হতে পারে তার সংজ্ঞা আনুমানিকভাবে নির্ধারণ করাও অসম্ভব এবং সেই কারণে ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রের ধারণাটি প্রাণের বণ্টন সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে একটি তাত্ত্বিক যন্ত্র হিসেবেই ব্যবহার করা যেতে পারে, তার বেশি কিছু নয়।[] এই কারণে প্রান্টজোস বলেছিলেন যে, মহাকাশ ও সময়ের কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চলকে বাসযোগ্য বলে সীমায়িত করার চেয়ে সমগ্র ছায়াপথই বাসযোগ্য হতে পারে।[] সেই সঙ্গে ছায়াপথের সর্পিল বাহুতে "আরোহণকারী" তারাগুলো তাদের আদি কক্ষপথ থেকে লক্ষাধিক আলোকবর্ষ সরে যেতে পারে। এই ঘটনা কোনও নির্দিষ্ট ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রের ধারণার পরিপন্থী।[][][] ২০০৬ সালে সিরকোভিক কর্তৃক ব্যবহৃত পদ্ধতির উন্নতি ঘটিয়ে ২০১০ সালে রয়্যাল অবজার্ভেটারি এডিনবরার ডানকান ফরগ্যান একটি মন্টি কার্লো সিম্যুলেশনের আয়োজন করেন। এই পরীক্ষা থেকে আহরিত তথ্য প্র্যান্টজোস বর্ণিত সুষম সংজ্ঞাযুক্ত ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রের অনস্তিত্বকেই সমর্থন এবং আকাশগঙ্গা ছায়াপথে শতাধিক বহির্জাগতিক সভ্যতার সম্ভাবনা ইঙ্গিত করে। যদিও এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে আরও তথ্য এখনও পাওয়া বাকি রয়েছে।[২৪]

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. গোয়ানলক, এম. জি.; প্যাটন, ডি. আর.; ম্যাককনেল, এস. এম. (২০১১)। "আ মডেল অফ হ্যাবিটেবিলিটি উইথইন দ্য মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সি" [আকাশগঙ্গা ছায়াপথের মধ্যে বাসযোগ্যতার একটি মডেল]। অ্যাস্ট্রোবায়োলজি১১ (৯): ৮৫৫–৭৩। arXiv:1107.1286 ডিওআই:10.1089/ast.2010.0555পিএমআইডি 22059554বিবকোড:2011AsBio..11..855G 
  2. চোই, চার্লস কিউ. (২১ আগস্ট ২০১৫)। "জায়ান্ট গ্যালাক্সিজ মে বি বেটার ক্রেডলস ফর হ্যাবিটেবল প্ল্যানেটস" [দৈত্যাকার ছায়াপথগুলো সম্ভবত বাসযোগ্য গ্রহগুলোর পক্ষে শ্রেষ্ঠতর সূতিকাগার]। স্পেস.কম। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৫ 
  3. প্র্যান্টজোস, নিকোস (২০০৬)। "অন দ্য "গ্যালাক্টিক হ্যাবিটেবল জোন"" ["ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্র" প্রসঙ্গে]। স্পেস সায়েন্স রিভিউজ১৩৫ (১–৪): ৩১৩–২২। arXiv:astro-ph/0612316 ডিওআই:10.1007/s11214-007-9236-9বিবকোড:2008SSRv..135..313P 
  4. রোক রোজকার; ডেবাট্টিস্টা; কুইন; স্টিনসন; জেমস ওয়াডসলি (২০০৮)। "রাইডিং দ্য স্পাইরাল ওয়েভস: ইমপ্লিকেশনস অফ স্টেলার মাইগ্রেশন ফর দ্য প্রপার্টিজ অফ গ্যালাক্টিক ডিস্কস" [সর্পিল তরঙ্গে আরোহণ করে: ছায়াপথীয় চাকতিগুলোর গুণাবলি জানতে নাক্ষত্রিক অভিপ্রয়াণের প্রয়োগ]। দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল৬৮৪ (২): এল৭৯। arXiv:0808.0206 ডিওআই:10.1086/592231বিবকোড:2008ApJ...684L..79R 
  5. ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় (১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৮)। "ইমিগ্র্যান্ট সান: আওয়ার স্টার কুড বি ফার ফ্রম হোয়্যার ইট স্টার্টেড ইন মিল্কি ওয়ে" [অভিপ্রয়াণকারী সূর্য: আমাদের তারাটি সম্ভবত আকাশগঙ্গার যেখান থেকে যাত্রা শুরু করেছিল সেখান থেকে অনেক দূরে]। নিউজওয়াইজ। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ১৫, ২০০৮ 
  6. ব্যাটারসবাই, স্টিফেন (নভেম্বর ৩০, ২০১১)। "আর্থ'স ওয়াইল্ড রাইড: আওয়ার ভয়েজ থ্রু দ্য মিল্কি ওয়ে" [পৃথিবীর বেপরোয়া ভ্রমণ: আকাশগঙ্গার মধ্য দিয়ে আমাদের যাত্রা]। নিউ সায়েন্টিস্ট (২৮৪১)। 
  7. স্ট্রাগহোল্ড, হুবার্টাস (১৯৫৩)। দ্য গ্রিন অ্যান্ড রেড প্ল্যানেট: আ ফিজিওলজিক্যাল স্টাডি অফ দ্য পসিবলিটি অফ লাইফ অন মার্স [সবুজ ও লাল গ্রহ: মঙ্গল গ্রহে জীবনের সম্ভাবনার একটি শারীরবৃত্তবৈজ্ঞানিক পর্যালোচনা]। ইউনিভার্সিটি অফ নিউ মেক্সিকো প্রেস। 
  8. জেমস কাস্টিং (২০১০)। হাও টু ফাইন্ড আ হ্যাবিটেবল প্ল্যানেট [কেমন করে একটি বাসযোগ্য গ্রহ খুঁজে পাওয়া যায়]। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 127। আইএসবিএন 978-0-691-13805-3। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৩ 
  9. হুয়াং, সু-শু (এপ্রিল ১৯৬০)। "লাইফ-সাপোর্টিং রিজিয়নস ইন দ্য ভিনসিটি অফ বায়োনারি সিস্টেমস" [যুগ্ম নক্ষত্রতন্ত্রের নিকটবর্তী জীবন-সহায়ক অঞ্চলসমূহ]। পাবলিকেশনস অফ দি অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি অফ দ্য প্যাসিফিক৭২ (৪২৫): ১০৬–১১৪। ডিওআই:10.1086/127489 বিবকোড:1960PASP...72..106H 
  10. গঞ্জালেজ, গিলারমো; ব্রাউনলি, ডোনাল্ড; পিটার, ওয়ার্ড (২০০১)। "দ্য গ্যালাক্টিক হ্যাবিটেবল জোন: গ্যালাক্টিক কেমিক্যাল ইভোলিউশন" [ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্র: ছায়াপথীয় রাসায়নিক বিবর্তন]। ইকারাস১৫২ (১): ১৮৫। arXiv:astro-ph/0103165 ডিওআই:10.1006/icar.2001.6617বিবকোড:2001Icar..152..185G 
  11. ক্লার্ক, জে. এন. (১৯৮১)। "এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড গ্যালাক্টিক নিউক্লিয়ার অ্যাক্টিভিটি" [পৃথিবী-বহিঃস্থ বুদ্ধিমত্তা ও ছায়াপথীয় পারমাণবিক সক্রিয়তা]। ইকারাস৪৬ (১): ৯৪–৯৬। ডিওআই:10.1016/0019-1035(81)90078-6বিবকোড:1981Icar...46...94C 
  12. টাকার, ওয়ালেশ এইচ. (১৯৮১)। "অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল ক্রাইসিস ইন দি ইভোলিউশন অফ লাইফ ইন দ্য গ্যালাক্সি [ছায়াপথে জীবনের বিবর্তনে জ্যোতিঃপদার্থবৈজ্ঞানিক সংকটকাল]"। বিলিংহ্যাম, জন। লাইফ ইন দ্য ইউনিভার্স [মহাবিশ্বে প্রাণ]। কেমব্রিজ: দ্য এমআইটি প্রেস। পৃষ্ঠা ২৮৭–২৯৬। আইএসবিএন 9780262520621 
  13. ব্লেয়ার, এস. কে.; ম্যাগনানি, এল.; ব্র্যান্ড, জে.; ওউটারলুট, জে. জি. এ. (২০০৮)। "ফর্ম্যালডিহাইড ইন দ্য ফার আউটার গ্যালাক্সি: কনস্ট্রেইনিং দি আউটার বাউন্ডারি অফ দ্য গ্যালাক্টিক হ্যাবিটেবল জোন" [দূরবর্তী বহিঃস্থ ছায়াপথে ফর্ম্যালডিহাইড: ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রের বাহ্য সীমানা সীমায়িতকরণ]। অ্যাস্ট্রোবায়োলজি (১): ৫৯–৭৩। ডিওআই:10.1089/ast.2007.0171পিএমআইডি 18266563বিবকোড:2008AsBio...8...59B 
  14. ওয়ার্ড, পিটার; ব্রাউনলি, ডোনাল্ড (২০০৩-১২-১০)। রেয়ার আর্থ: হোয়াই কমপ্লেক্স লাইফ ইজ আনকমন ইন দ্য ইউনিভার্স [দুর্লভ পৃথিবী: কেন মহাবিশ্বে জটিল জীবন বেদস্তুর]। স্প্রিংগার। পৃষ্ঠা ১৯১–২২০। আইএসবিএন 9780387952895 
  15. গঞ্জালেজ, জি (২০০১)। "দ্য গ্যালাক্টিক হ্যাবিটেবল জোন: গ্যালাক্টিক কেমিক্যাল ইভোলিউশন" [ছায়াপথীয় বাসযোগ্য অঞ্চল: ছায়াপথীয় রাসায়নিক বিবর্তন]। ইকারাস১৫২: ১৮৫–২০০। arXiv:astro-ph/0103165 ডিওআই:10.1006/icar.2001.6617বিবকোড:2001Icar..152..185G 
  16. চার্লস এইচ. লাইনউইভার, ইয়েশে ফেনার ও ব্র্যাড কে. গিবসন (জানুয়ারি ২০০৪)। "দ্য গ্যালাক্টিক হ্যাবিটেবল জোন অ্যান্ড দি এজ ডিস্ট্রিবিউশন অফ কমপ্লেক্স লাইফ ইন দ্য মিল্কি ওয়ে" [ছায়াপথীয় বাসযোগ্য অঞ্চল ও আকাশগঙ্গা ছায়াপথে জটিল জীবনের বয়স বণ্টন]। সায়েন্স৩০৩ (৫৬৫৪): ৫৯–৬২। arXiv:astro-ph/0401024 ডিওআই:10.1126/science.1092322পিএমআইডি 14704421বিবকোড:2004Sci...303...59L 
  17. লাইনউইভার, সি. এইচ.; ফেনার, ওয়াই.; গিবসন, বি. কে. (২০০৪)। "দ্য গ্যালাক্টিক হ্যাবিটেবল জোন অ্যান্ড দি এজ ডিস্ট্রিবিউশন অফ কমপ্লেক্স লাইফ ইন দ্য মিল্কি ওয়ে" [ছায়াপথীয় বাসযোগ্য অঞ্চল ও আকাশগঙ্গা ছায়াপথে জটিল জীবনের বয়স বণ্টন]। সায়েন্সvolume=৩০৩ (৫৬৫৪): ৫৯–৬২। arXiv:astro-ph/0401024 ডিওআই:10.1126/science.1092322পিএমআইডি 14704421বিবকোড:2004Sci...303...59L 
  18. ভুকোটিক, বি.; সিরকোভিক, এম. এম. (২০০৭)। "অন দ্য টাইমস্কেল ফোর্সিং ইন অ্যাস্ট্রোবায়োলজি" [জ্যোতিঃজীববিজ্ঞানে সময়মাপকের বল প্রসঙ্গে]। সার্বিয়ান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নাল১৭৫ (১৭৫): ৪৫। arXiv:0712.1508 ডিওআই:10.2298/SAJ0775045Vবিবকোড:2007SerAJ.175...45V 
  19. কলার, জে. আই. (১৯৯৬)। "ক্লাম্পি কোল্ড ডার্ক ম্যাটার অ্যান্ড বায়োলজিক্যাল এক্সটিংশনস" [গুচ্ছাকার শীতল কৃষ্ণ বস্তু ও জৈব বিলোপ]। ফিজিক্স লেটারস বি৩৬৮ (৪): ২৬৬–২৬৯। arXiv:astro-ph/9512054 ডিওআই:10.1016/0370-2693(95)01469-1বিবকোড:1996PhLB..368..266C 
  20. মুলেন, লেসলি (মে ১৮, ২০০১)। "গ্যালাক্টিক হ্যাবিটেবল জোনস" [ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্রসমূহ]। এনএআই ফিচার্স আর্কাইভ। নাসা অ্যাস্ট্রোবায়োলজি ইনস্টিটিউট। এপ্রিল ৯, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ৯, ২০১৩ 
  21. সানডিন, এম. (২০০৬)। "দ্য গ্যালাক্টিক হ্যাবিটেবল জোন ইন বারড গ্যালাক্সিজ" [বদ্ধ ছায়াপথগুলিতে ছায়াপথীয় বাসযোগ্য ক্ষেত্র]। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ অ্যাস্ট্রোবায়োলজি (৪): ৩২৫। ডিওআই:10.1017/S1473550406003065বিবকোড:2006IJAsB...5..325S 
  22. পাভলভ, আলেকজান্ডার এ. (২০০৫)। "পাসিং থ্রু আ জায়েন্ট মলিকিউলার ক্লাউড: "স্নোবল" গ্লেসিয়েশনস প্রডিউসড বাই ইন্টারস্টেলার ডাস্ট" [একটি দৈত্যাকার আণবিক মেঘের পাশ দিয়ে যাত্রা: আন্তঃনাক্ষত্রিক ধূলি কর্তৃক উৎপন্ন "তুষারগোলক" হিমক্রিয়া]। জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটারস৩২ (৩): এল০৩৭০৫। ডিওআই:10.1029/2004GL021890 বিবকোড:2005GeoRL..32.3705P 
  23. রেমন্ড, সন এন.; কুইন, টমাস; লুনাইন, জনাথান আই. (২০০৫)। "দ্য ফরমেশন অ্যান্ড হ্যাবিটেবিলিটি অফ টেরেস্ট্রিয়াল প্ল্যানেটস ইন দ্য প্রেজেন্স অফ ক্লোজ-ইন জায়েন্ট প্ল্যানেটস" [নিকটবর্তী দানব গ্রহের উপস্থিতিতে পার্থিব গ্রহের উৎপত্তি ও বাসযোগ্যতা]। ইকারাস১৭৭ (১): ২৫৬–২৬৩। arXiv:astro-ph/0407620 ডিওআই:10.1016/j.icarus.2005.03.008বিবকোড:2005Icar..177..256R 
  24. ফরগ্যান, ডি. এইচ. (২০০৯)। "আ নিউমেরিক্যাল টেস্টবেড ফর হাইপোথেসিসেস অফ এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল লাইফ অ্যান্ড ইনটেলিজেন্স" [বহির্জাগতিক জীবন ও বুদ্ধিমত্তা-সংক্রান্ত প্রকল্পনাগুলির জন্য একটি সংখ্যাগত পরীক্ষাক্ষেত্র]। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ অ্যাস্ট্রোবায়োলজি (২): ১২১। arXiv:0810.2222 ডিওআই:10.1017/S1473550408004321বিবকোড:2009IJAsB...8..121F 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা

  উইকিমিডিয়া কমন্সে বাসযোগ্য অঞ্চল সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।