চ্যারিং ক্রস রেলওয়ে স্টেশন

যুক্তরাজ্যের রেলওয়ে স্টেশন

চ্যারিং ক্রস রেলওয়ে স্টেশন (লন্ডন চ্যারিং ক্রস নামেও পরিচিত)[৪] হল সিটি অব ওয়েস্টমিনস্টারের স্ট্র্যান্ড ও হাঙ্গারফোর্ড সেতুর মধ্যবর্তী কেন্দ্রীয় লন্ডন রেলওয়ে টার্মিনাস। এটি অ্যাশফোর্ড হয়ে ডোভার পর্যন্ত বিস্তৃত দক্ষিণ পূর্ব প্রধান রেলপথের টার্মিনাস। সমস্ত ট্রেন সাউথইস্টার্ন দ্বারা পরিচালিত হয়, যা দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডন ও কেন্টে বেশিরভাগ যাত্রী ও আঞ্চলিক পরিষেবা প্রদান করে। এটি চ্যারিং ক্রস আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশনের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে ও এম্ব্যাঙ্কমেন্ট আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশনের নিকটবর্তী।

চ্যারিং ক্রস জাতীয় রেল
লন্ডন চ্যারিং ক্রস
টেমস নদী অতিক্রমকারী অভিগমন ট্র্যাক
চ্যারিং ক্রস মধ্য লন্ডন-এ অবস্থিত
চ্যারিং ক্রস
চ্যারিং ক্রস
মধ্য লন্ডনে চ্যারিং ক্রসের অবস্থান
অবস্থানচ্যারিং ক্রস
স্থানীয় কর্তৃপক্ষসিটি অব ওয়েস্টমিনিস্টার
পরিচালনা করেনেটওয়ার্ক রেল
স্টেশন কোডসিএসএক্স
ডিএফটি শ্রেণি
প্ল্যাটফর্মের সংখ্যা
প্রবেশযোগ্যহ্যাঁ[১]
ভাড়া অঞ্চল
ওএসটিচ্যারিং ক্রস আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন London Underground
এম্ব্যাঙ্কমেন্ট London Underground
এম্ব্যাঙ্কমেন্ট জেটি London River Services[২]
সাইকেল পার্কিংনা
টয়লেট সুবিধাদিহ্যাঁ
জাতীয় রেলে বার্ষিক প্রবেশ এবং প্রস্থান
২০১৫-১৬হ্রাস ২৮.৯৯৮[ক] মিলিয়ন[৩]
– পরিবর্তন হ্রাস ০.৮২৮ মিলিয়ন[৩]
২০১৬-১৭বৃদ্ধি ২৯.৫৬০ মিলিয়ন[৩]
– পরিবর্তন বৃদ্ধি ৩.০০৩ মিলিয়ন[৩]
২০১৭-১৮হ্রাস ২৮.৩৪৫ মিলিয়ন[৩]
– পরিবর্তন হ্রাস ০.৮৩৩ মিলিয়ন[৩]
২০১৮–১৯বৃদ্ধি ৩০.২৩৬ মিলিয়ন[৩]
– পরিবর্তন হ্রাস ০.৫৭৮ মিলিয়ন[৩]
২০১৯–২০হ্রাস ২৯.১৩৮ million[৩]
– পরিবর্তন  হ্রাস ০.৫৫৯ মিলিয়ন[৩]
রেলওয়ে সংস্থাগুলি
রেলওয়ে সংস্থাসাউথ ইস্টার্ন রেলওয়ে
প্রাক-গোষ্ঠীকরণসাউথ ইস্টার্ন অ্যান্ড চ্যাথাম রেলওয়ে
পরবর্তী-গোষ্ঠীকরণসাউথ ইস্টার্ন রেলওয়ে
প্রধান দিনগুলো
১১ জানুয়ারি ১৮৬৪ (11 January 1864)খোলা হয়
অন্যান্য তথ্য
বহিঃসংযোগ
ডব্লিউজিএস৮৪৫১°৩০′২৯″ উত্তর ০°০৭′৩০″ পশ্চিম / ৫১.৫০৮° উত্তর ০.১২৫° পশ্চিম / 51.508; -0.125

স্টেশনটি মূলত ১৮৬৪ সালে সাউথ ইস্টার্ন রেলওয়ে দ্বারা চালু করা হয়েছিল। স্টেশনটির নামটি নিকটবর্তী রোড জংশন চ্যারিং ক্রস-এর থেকে নেওয়া হয়েছে, এই রোড জংশনটি "লন্ডনের কেন্দ্র", শহর থেকে কোন স্থানের দূরত্ব উক্ত স্থানটি থেকে পরিমাপ করা হয়। ১৯তম শতকের মধ্যে স্টেশনটি নৌকা ট্রেনের মাধ্যমে মহাদেশীয় ট্র্যাফিকের জন্য প্রধান লন্ডন টার্মিনাস হয়ে ওঠে এবং বেশ কয়েকটি মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক পরিষেবা প্রদান করে। এটি ১৯০৫ সালে একটি প্রকৌশল দুর্ঘটনার দ্বারা খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং ব্যাপকভাবে পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল, পরবর্তীকালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় সামরিক ও সরকারি যানবাহনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মিটিং পয়েন্ট বা সাক্ষাৎ স্থল হয়ে ওঠে। এই সময়ের মধ্যে, কিছু রাজনীতিবিদদের দ্বারা চ্যারিং ক্রস স্টেশনটিকে পুরানো হিসাবে দেখা হয়েছিল এবং হাঙ্গারফোর্ড ব্রিজটিকে একটি সড়ক সেতু বা সড়ক/রেল সংমিশ্রণের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করার প্রস্তাব করা হয়েছিল, শুধুমাত্র সড়ক প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে স্টেশনটি টেমস নদীর দক্ষিণ তীরে সরানো হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় স্টেশনে বেশ কয়েকবার বোমাবর্ষণ করা হয়েছিল, এবং পরে পুনর্নির্মাণ করার মাধ্যমে ১৯৫১ সালে পুনরায় চালু করা হয়েছিল। ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে, স্টেশন কমপ্লেক্সটি টেরি ফারেল কর্তৃক নতুনভাবে নকশা করা হয়েছিল এবং একটি আধুনিক অফিস ব্লকের জন্য পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল, যা এখন এম্ব্যাঙ্কমেন্ট প্লেস হিসাবে পরিচিত।

ইতিহাস সম্পাদনা

 
চ্যারিং ক্রস থেকে আসা ট্রেনগুলি হাঙ্গারফোর্ড সেতু ধরে টেমস নদী পার হয়।

স্টেশনটি সাউথ ইস্টার্ন রেলওয়ের (এসইআর) লন্ডন টার্মিনাস হিসাবে পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তারা ব্রিকলেয়ার্স আর্মস থেকে হাঙ্গারফোর্ড ব্রিজের দিকে রেলপথটি প্রসারিত করতে চেয়েছিল, কিন্তু ১৮৪৬ সালে পেশ করা একটি বিল ব্যর্থ হয়েছিল। তারা ১৮৫৭ সালে পার্লামেন্টে প্রস্তাব করেছিল, যে তারা লন্ডন ব্রিজ থেকে পশ্চিমে একটি রেলপথ নির্মাণের জন্য লন্ডন, ব্রাইটন অ্যান্ড সাউথ কোস্ট রেলওয়ের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর আগে ভিক্টোরিয়াকে ব্যবহার করার আশায় ওয়েস্ট এন্ডে একটি রেল টার্মিনাস নির্মাণ করবে।[৫]

বছরের শেষের দিকে, এসইআর-এর সচিব স্যামুয়েল স্মাইলস সম্ভাব্য রুটগুলির সন্ধান করেছিলেন এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যে সেরা অবস্থানটি হবে দ্য স্ট্র্যান্ড সংলগ্ন প্রাক্তন হাঙ্গারফোর্ড মার্কেটের স্থানটি, এবং রেলপথটি সরাসরি ওয়াটারলুর সাথে সংযুক্ত করা উচিত, যা লন্ডন অ্যান্ড সাউথ ওয়েস্টার্ন রেলওয়ে পরিষেবাগুলির সঙ্গে একটি সংযোগ অনুমতি প্রদান করে।[৫]

লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ড সম্পাদনা

স্টেশনটি দুটি লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন দ্বারা পরিবেশিত হয়, উভয়ই প্রধান রেলপথ টার্মিনালের থেকে পায়ে-হাঁটা দূরত্বের মধ্যে এবং দুই প্রান্তে অবস্থিত। স্টেশন দুটি হল চ্যারিং ক্রস (উত্তরে) ও এম্ব্যাঙ্কমেন্ট (দক্ষিণে)। উভয় স্টেশনে একটি অয়েস্টার আউট অব স্টেশন ইন্টারচেঞ্জ রয়েছে, যা যাত্রীদের লাইন বা রেলপথ পরিবর্তন করার অনুমতি দেয়, যদিও উক্ত ক্ষেত্রে এখনও একক যাত্রা সাবে ভাড়া গ্রহণ করা হয়।

দুর্ঘটনা ও ঘটনা সম্পাদনা

ওয়াটারলু জংশনে ১৯১৩ সালের ২৫শে অক্টোবর ঘন কুয়াশায় দুটি ট্রেনের মধ্যেকার সংঘর্ষে তিনজনের মৃত্যু হয়। ২ নং প্ল্যাটফর্মের কাছে ১৯২৫ সালের ৩১ই জুলাই একটি ছোটখাটো পাশ-পাশি সংঘর্ষ হয়েছিল।[৬]

চ্যারিং ক্রস স্টেশনের ক্লোকরুমে ১৯২৭ সালের মে মাসে একটি ট্রাঙ্ক পাওয়া গিয়েছিল, যাতে মিনি অ্যালিস বোনাতির শরীরের পাঁচটি বিচ্ছিন্ন অংশ ছিল। পরবর্তীতে তাকে জন রবিনসন দ্বারা রচেস্টার রোতে হত্যা করা হয়েছে বলে চিহ্নিত করা হয়, যিনি হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত হন।[৭][৮]

সাংস্কৃতিক উল্লেখ সম্পাদনা

এ কোনভার্সেশন উইথ অস্কার ওয়াইল্ড (বাংলা: অস্কার ওয়াইল্ডের সাথে কথোপকথন) মূর্তিটি স্টেশনের সরাসরি বিপরীতে অবস্থিত। এটি ১৯৯৮ সালে তৈরি করা হয়েছিল এবং মানুষের স্মৃতিস্তম্ভে রাখতে ও অস্কার ওয়াইল্ডের সাথে ভার্চুয়াল কথোপকথনের জন্য নকশা করা হয়েছিল।[৯]

শার্লক হোমসের অসংখ্য গল্পে চ্যারিং ক্রস উল্লেখ করা হয়েছে। দ্য অ্যাডভেঞ্চার অব দ্য অ্যাবে গ্র্যাঞ্জ গল্পে হোমস ও ওয়াটসন স্টেশন থেকে কেন্টের কাল্পনিক অ্যাবে গ্র্যাঞ্জের দিকে একটি ট্রেন ধরেন, আবার তারা দ্য অ্যাডভেঞ্চার অব দ্য গোল্ডেন পিন্স-নেজ গল্পে স্টেশন থেকে চ্যাথাম যান।[১০]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

টীকা

  1. 5.689 million of this decrease was due to methodological changes. Without this change, the figure would have been 34.678 million.

উদ্ধৃতি

  1. টেমপ্লেট:Citation step free south east rail
  2. টেমপ্লেট:Citation London station interchange June 2020
  3. "Estimates of station usage"রেল স্ট্যাটিসটিক্সঅফিস অব রেল রেগুলেশন  অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন: কিছু পদ্ধতি বছরে পরিবর্তিত হতে পারে।
  4. "Station facilities for London Charing Cross"National Rail Enquiries। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০২১ 
  5. Jackson 1984, পৃ. 243।
  6. Jackson 1984, পৃ. 266।
  7. Jackson 1984, পৃ. 260।
  8. "Charing Cross Trunk Mystery: Man Under Arrest" The Times (44589)। ২৪ মে ১৯২৭। পৃষ্ঠা 16। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০২১ 
  9. "London's Top Ten Baffling Statues"Time Out London। ৩ নভেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০২১ 
  10. Christopher, John (২০১২)। The London of Sherlock HolmesAmberley Publishing। পৃষ্ঠা 23–24। আইএসবিএন 978-1-445-61568-4 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা