চীন–বতসোয়ানা সম্পর্ক
চীন–বতসোয়ানা সম্পর্ক হল চীন এবং বতসোয়ানা রাষ্ট্রদ্বয়ের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। ১৯৭৫ সালের ৬ই জানুয়ারি এ দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১০ সালে দুই দেশের সম্পর্কের ৩৫তম বার্ষিকীতে বতসোয়ানায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লিউ হুয়ানজিং এ সম্পর্কে "শক্তিশালী" এবং "দ্রুত বর্ধনশীল" হিসেবে আখ্যায়িত করেন।[১] বতসোয়ানা ওয়ান চায়না পলিসি মেনে চলে, যার অর্থ হল বতসোয়ানার সাথে তাইওয়ানের কোনো সম্পর্ক থাকবে না। চীনের সিচুয়ান প্রদেশে সংঘটিত ভূমিকম্পে বতসোয়ানা সরকার চীনকে এক মিলিয়ন পুলা দান করে।[১] গ্যাবর্নে অবস্থিত দূতাবাসের মাধ্যমে বতসোয়ানায় চীন এবং বেইজিংয়ের দূতাবাসের মাধ্যমে চীনে বতসোয়ানা নিজেদের প্রতিনিধিত্ব করছে।
বতসোয়ানা |
চীন |
---|
অর্থনৈতিক উন্নয়ন
সম্পাদনা১৯৮০ সালের শুরু দিকে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক খাতে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটে। ২০০৮ সালে বতসোয়ানা এবং চীনের মধ্যে সর্বমোট বাণিজ্যের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় ৩৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে। ২০০৮ সালে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা থাকা সত্ত্বেও ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর — এ দশ মাসের মধ্যে মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৯৩ মিলিয়ন ডলার।[১] ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চীনের কর্মকর্তারা বতসোয়ানাকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরো বেশি জোরালো করার আহ্বান জানান, বিশেষ করে বতসোয়ানার হীরাশিল্প সংশ্লিষ্ট খাতে। এর অন্যতম কারণ ছিল চীনে ক্রমশ হীরার চাহিদার বৃদ্ধি, আর অন্যান্য অর্থনৈতিক দেশে এর চাহিদা কমে আসা।[২]
চীনা উন্নয়নমূলক অর্থ বরাদ্দ
সম্পাদনা২০০০ সালের প্রথম ফোরাম অন চায়না আফ্রিক কোঅপারেশন প্রতিষ্ঠার পর থেকে চীনা সরকার বতসোয়ানার অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এ খাতে প্রায় ১২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে।[৩] তার মধ্যে মাত্র ৫২ মিলিয়ন ডলার অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিসটেন্সের ওইসিডি-ডিএসি খাতে পড়ে। এক্সিম ব্যাংক অব চায়না বতসোয়ানাকে বাকি অর্থ বরাদ্দ দিয়ে লেথলহ্যাকেং-কাং সড়কনির্মাণ প্রকল্প সম্পন্ন করে।[৪]
বতসোয়ানায় নির্মাণ প্রকল্প
সম্পাদনাঅর্থনৈতিক সম্প্রসারণের সহযোগিতার উদ্দেশ্যে পিআর চায়না বতসোয়ানা জুড়েই বেশকিছু নির্মাণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ২০১০ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এই প্রকল্পের সংখ্যা ছিল ২৮। প্রকল্পের মধ্যে রেলপথ এবং সড়ক, স্বাস্থ্য উন্নয়ন এবং অল্প খরচে বসতবাড়ি নির্মাণও অন্তর্ভুক্ত ছিল।[১]
সাংস্কৃতিক সম্পর্ক
সম্পাদনাবতসোয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠায় চীন সাহায্য করেছিল। ইনস্টিটিউটটি ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চালু হয়।[৫] ইনস্টিটিউটটি চীনের সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং ভাষাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থাপন করে। চীনে গমনেচ্ছুক বতসোয়ানার নাগরিকদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ২০০৫ সালে বতসোয়ানা থেকে প্রায় ৪০০ জন পর্যটক চীনে গিয়েছিল। ২০০৮ সালে এ সংখ্যাটি দাঁড়ায় ১৪০০-তে।[১]
বিতর্ক
সম্পাদনাদক্ষিণ চীন সাগরে চীনের দাবি সংক্রান্ত বিষয়ে চীন এবং বতসোয়ানার মধ্যকার সম্পর্কে টানাপোড়েন ঘটে। "চীনের শক্তিশালী সামরিক বাহিনী এবং অর্থনীতি"র কারণে তারা অন্যদের অধিকার হস্তক্ষেপ করে এবং নিজেদের অধিকার দাবি করে এমন এক বিবৃতি দেয় বতসোয়ানা। বতসোয়ানায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ঝেং ঝুকিয়াং বিবৃতিটির বিষয়ে চীনকে জানায়। এরপরের দিন ঝেং এবং বতসোয়ানার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেলোনোমি ভেনসন মতই সাক্ষাৎ করেন। কূটনৈতিকভাবে মতামত প্রকাশ না করে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়ায় চীনের আপত্তির কথা জানায় ঝেং। ভেনসন নিজেদের অবস্থানের দৃঢ়তা প্রকাশ করে এবং এ বিবৃতি প্রত্যাহার করবে না বলে জানায়। এর পরপরই গ্যাবর্নের দূতাবাসটি বন্ধ করে দেয় চীন।[৬]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "Memories and blessings of China-Botswana relations"। ৬ জানুয়ারি ২০১০। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মে ২০২০।
- ↑ "China moves to rescue Botswana's diamond industry"।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Austin Strange, Bradley C. Parks, Michael J. Tierney, Andreas Fuchs, Axel Dreher, and Vijaya Ramachandran. 2013. China’s Development Finance to Africa: A Media-Based Approach to Data Collection. CGD Working Paper 323. Washington DC: Center for Global Development. http://aiddatachina.org/projects?utf8=%E2%9C%93&search=&active_string%5B%5D=Active&country_name%5B%5D=Botswana&scope_names%5B%5D=Official+Finance[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Austin Strange, Bradley C. Parks, Michael J. Tierney, Andreas Fuchs, Axel Dreher, and Vijaya Ramachandran. 2013. China’s Development Finance to Africa: A Media-Based Approach to Data Collection. CGD Working Paper 323. Washington DC: Center for Global Development. http://aiddatachina.org/projects/119 আর্কাইভইজে আর্কাইভকৃত ২০ জুন ২০১৩ তারিখে
- ↑ Austin Strange, Bradley C. Parks, Michael J. Tierney, Andreas Fuchs, Axel Dreher, and Vijaya Ramachandran. 2013. China’s Development Finance to Africa: A Media-Based Approach to Data Collection. CGD Working Paper 323. Washington DC: Center for Global Development. http://aiddatachina.org/projects/46 আর্কাইভইজে আর্কাইভকৃত ২০ জুন ২০১৩ তারিখে
- ↑ "CHINESE EMBASSY CLOSES SHOP FOLLOWING BOTSWANA, CHINA STANDOFF"। সানডে স্ট্যান্ডার্ড। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০১৬।