চিলেখাগড়া
চিলেখাগড়া (বৈজ্ঞানিক নাম: Papilio agestor(Gray))[১] এক প্রজাতির মাঝারী-বড় আকারের প্রজাপতি, যার শরীর ও ডানা মূখ্যত লালচে বাদামী এবং আকাশি ডোরার প্রজাপতি। এরা ‘প্যাপিলিওনিডি’ পরিবারের এবং 'প্যাপিলিওনিনি' উপগোত্রের সদস্য।[২]
চিলেখাগড়া Tawny Mime | |
---|---|
ডানা বন্ধ অবস্থায় | |
ডানা খোলা অবস্থায় | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | Arthropoda |
শ্রেণী: | Insecta |
বর্গ: | Lepidoptera |
পরিবার: | Papilionidae |
গণ: | Papilio |
প্রজাতি: | P. agestor |
দ্বিপদী নাম | |
Papilio agestor | |
প্রতিশব্দ | |
|
আকার
সম্পাদনাচিলেখাগড়া এর প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৮৩-১২০ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।[৩]
উপপ্রজাতি
সম্পাদনাভারতে প্রাপ্ত চিলেখাগড়া এর উপপ্রজাতি হল- [৪]
- Papilio agestor agestor Gray, 1831 – Nepalese Tawny Mime
- Papilio agestor govindra Moore, 1864 – West Himalayan Tawny Mime
বিস্তার
সম্পাদনাএই প্রজাতি ভারত এর জন্মু কাশ্মীর থেকে অরুণাচল প্রদেশ[৫] পর্যন্ত, নেপাল, ভুটান এবং মায়ানমার এর বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা যায়।[৬]
বর্ণনা
সম্পাদনাপ্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিষদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-
লেজহীন এই সোয়ালোটেল প্রজাপতি প্রজাতির স্ত্রী-পুরুশ উভয় প্রকারই ছিটমউল এবং কুশ (প্রজাপতি)র নকল করে। সামনের ডানার উপরিতলে ফ্যাকাশে ধূসর সাদা দাগ-ছোপ বন্ধনীগুলি, শিরার বিন্যাস এবং কালো প্রান্তদেশ ছিটমউলএর সাথে ভীষন সামঞ্জস্যপূর্ন, তবে ছিটমউলএর ফ্যাকাশে কাঁচতুল্য দাগ-ছোপ চিলেখাগড়ায় অনুপস্থিত।
সামনের ডানার উপরিপৃষ্ঠ সেল এ আড়াআড়িভাবে একটি কালো দাগ রয়েছে শীর্ষভাগ এর কাছে। পিছনের ডানার উপরিভাগ বাদামী এবং ধূসর সাদা দাগ-ছোপযুক্ত, তবে সাবটার্মিনাল অংশে ছোপের বদলে অর্ধচন্দ্রাকৃতি দাগ বর্তমান।[৭]
সামনের ডানার নিম্নপৃষ্ঠ উপরিপৃষ্ঠেরই অনুরূপ, তবে শীর্সভাগ ফ্যাকাশে বাদামী, কালো নয়। পিছনের ডানার নিম্নতল উপরিতলেরই অনুরূপ, তবে ডিসকাল অংশে ডানার মূল রঙ কালচে বাদামী, পোস্ট-ডিসকাল ছোপগুলি অপরিস্ফুট এবং সাবটার্মিনাল ছোপের ছোট সারিটিতে ছোপগুলি অর্ধচন্দ্রাকৃতি।[৭]
আচরণ
সম্পাদনাএই প্রজাতির উড়ান ধীর। রৌদ্রালোকে ওক্ গাছের জঙ্গলে ফাঁকা জায়গায় অথবা জঙ্গলস্থ উন্মিক্ত ঘাসজমিতে এদের ধীর, অলস ভাবে উড়ে বেড়াতে দেখা যায়। জঙ্গলে উড়ে বেড়ানোর সময় এরা ভূমি থেকে ১০-১২ ফুট (৩ মিটার প্রায়) উচ্চতায় অবস্থান করে এবং দীর্ঘ সময় ধরে একই অঞ্চলে বিচরন করে। ঊড়ার সময় এরা প্রায় প্রত্যেক মুহূর্তে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য মাটিতে অথবা পাথরে অবস্থান করে, পরক্ষনেই তীরের বেগে ছিটকে যায় অন্য প্রজাপতিকে আক্রমন করার লক্ষ্যে। এরা ফুলে বসে না। এই প্রজাতির স্ত্রী প্রকারকে প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে; কালে-ভদ্রে কখনো চোখে পড়ে। পাহাড়ে-জঙ্গলে নদী অথবা ঝর্নার কিনারে, নদীখাতে বালির মধ্যে এবং ভিজে আর্দ্র পাথরে এদের সর্বদাই অবস্থান করতে দেখা যায়। হিমালয়ে এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের পাহাড়গুলিতে ১২০০-২৫৯০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত বসন্তের মাসগুলিতে (মার্চ এবং এপ্রিল) এদের সক্রিয় বিচরন লক্ষ্য করা যায়।[৬]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ A Pictorial Guide Butterflies of Gorumara National Park (2013 সংস্করণ)। Department of Forests Government of West Bengal। পৃষ্ঠা ১৬।
- ↑ Isaac, Kehimkar (২০১৬)। BHNS Field Guides Butterflies of India। Mumbai: Bombay Natural History Society। পৃষ্ঠা 158। আইএসবিএন 9789384678012।
- ↑ দাশগুপ্ত, যুধাজিৎ (২০০৬)। পশ্চিমবঙ্গের প্রজাপ্রতি (১ম সংস্করণ সংস্করণ)। কলকাতা: আনন্দ। পৃষ্ঠা ৪৭। আইএসবিএন 81-7756-558-3।
- ↑ "Papilio agestor Gray, 1831 - Tawny Mime"। Butterflies of India। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০২২।
- ↑ R.K., Varshney; Smetacek, Peter (২০১৫)। A Synoptic Catalogue of the Butterflies of India। New Delhi: Butterfly Research Centre, Bhimtal & Indinov Publishing, New Delhi। পৃষ্ঠা 4। আইএসবিএন 978-81-929826-4-9। ডিওআই:10.13140/RG.2.1.3966.2164।
- ↑ ক খ Isaac, Kehimkar (২০০৮)। The book of Indian Butterflies (1st সংস্করণ)। New Delhi: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 124। আইএসবিএন 978 019569620 2।
- ↑ ক খ Wynter-Blyth, Mark Alexander (১৯৫৭)। Butterflies of the Indian Region। Bombay, India: Bombay Natural History Society। পৃষ্ঠা 379। আইএসবিএন 978-8170192329।