চিত্তরঞ্জন সুতার
চিত্তরঞ্জন সুতার (২৩ মার্চ ১৯২৮-২৭ নভেম্বর ২০০২) বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ, পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ও বাংলাদেশের সাবেক সংসদ সদস্য।[১][২][৩]
চিত্তরঞ্জন সুতার | |
---|---|
জাতীয় সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১৯৭৩ – ১৯৭৫ | |
পূর্বসূরী | শুরু স্বাধীনতা লাভ |
উত্তরসূরী | সুধাংশু শেখর হালদার |
নির্বাচনী এলাকা | বাকেরগঞ্জ-১৪ (বিলুপ্ত) |
পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১৯৫৪ – ১৯৫৮ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ২৩ মার্চ ১৯২৮ পিরোজপুর, , বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত। (বর্তমান বাংলাদেশ) |
মৃত্যু | ২৭ নভেম্বর ২০০২ দিল্লী, ভারত |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
দাম্পত্য সঙ্গী | মঞ্জুশ্রী সেন |
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাচিত্তরঞ্জন সুতার ২৩ মার্চ ১৯২৮ সালে পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি (নেছারাবাদ) উপজেলার ব্যাসকাঠি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ললিত কুমার সুতার ও মাতা বেলোকা সুন্দরী। তিনি মঞ্জুশ্রী সেনকে বিয়ে করেন। এ দম্পতির একটি মাত্র সন্তান বাপী সুতার কলিকাতার ভবানীপুরে বসবাস করছেন। তিনি বিএম কলেজ থেকে বিএ পাস করেন।
রাজনৈতিক ও কর্মজীবন
সম্পাদনাচিত্তরঞ্জন সুতার বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আন্দোলনে শেখ মুজিবের পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৬৯ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার আগে তিনি তফসিলি জাতি ফেডারেশন/শিডিউল কাস্ট ফেডারেশন নামে একটি সংগঠন করতেন। ১৯৫৭ সালে আওয়ামী লীগ বিভক্ত হলে তিনি ন্যাপে যোগ দেন।
১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের সময় নির্দলীয় ব্যানারে পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য এবং ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।[৩] তিনি বাকশালের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও মনোনীত সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি। ১১ আগস্ট ১৯৭৫ সালে ভারতে যাওয়ার পর আর কখনও বাংলাদেশে ফিরে আসেননি।[৪][৫]
অন্যান্য কর্ম
সম্পাদনাতিনি তার জন্মস্থান বাটনাতলায় ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত "জন সম্মিলনী প্রবেশিকা বালিকা বিদ্যালয়" এর প্রতিষ্ঠাতা।
বিতর্ক
সম্পাদনা১৯৫১ সালের শেষদিকে তিনি পূর্বপাকিস্তানে প্রবেশ করেন। সাথে ছিলেন কালিদাস বৈদ্য ও নিরোধ মজুমদার। তিনি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (R&AW) এর কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালে ভবানীপুরের ২৬ নম্বর রাজেন্দ্র প্রসাদ সড়কে বাস করতেন। ভারতীয় পাসপোর্টে তার নাম ভুজঙ্গ ভূষন রায়।[৬][৭][৮]
১৯৭২ সালে চিত্তরঞ্জন সুতার ও কালিদাস বৈদ্য ইন্দিরা গান্ধির কাছে গিয়ে বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য করে নিতে চাপ দেন। তাদের বক্তব্য ছিল দ্বি-জাতিতত্ব যদি নাই থাকে সীমানা থাকবে কেন? তাদের সেই প্রচেষ্টা বাস্তবায়ন হয় নাই।[৯][১০]
তাছাড়া তিনি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলকে হিন্দু রাজ্যে পরিণত করার জন্য “স্বাধীন বঙ্গভূমি” নামে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন, এই আন্দোলনে তার নাম হচ্ছে পার্থ সামন্ত। ৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা তথা দেশ বিভাগের পর থেকে ২০০২ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত ৫৩ বছরের মধ্যে প্রায় ৩৯ বছর কাটিয়েছেন কলিকাতার ভবানীপুরের সানি ভিলা নামক বাসভবনে স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন।[১১][১২][১৩]
মৃত্যু
সম্পাদনাচিত্তরঞ্জন সুতার ২৭ নভেম্বর ২০০২ ভারতের রাজধানী দিল্লীতে মৃত্যুবরণ করেন।[১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ বিশেষ প্রতিবেদন (৪ জুন ২০১৩)। "রাজনীতির রহস্যপুরুষ চিত্তরঞ্জন সুতার"। দৈনিক ইত্তেফাক। ১৯ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মে ২০২০।
- ↑ সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (২য় খণ্ড)। ঢাকা, বাংলাদেশ: ভাস্কর প্রকাশনী।
- ↑ ক খ "১ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "পাকিস্তান সামরিক আদালতের নির্দেশ"। www.bhorerkagoj.com। ২০১৯-১১-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-১৯।
- ↑ "ধরে নাও চিরদিনের জন্যই যাচ্ছি"। মানবজমিন। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-১৯।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "বাংলাদেশে ইতিহাসচর্চার বাঁক পরিবর্তন || দেওয়ান মিনহাজ গাজী | banglatribune.com"। Bangla Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-১৯।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "কালীদাস বৈদ্যের বই এবং আমাদের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে"। DailyInqilabOnline (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-১৯।
- ↑ এম আই হোসেন। বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধঃ বহুমাত্রিক বিশ্লেষন। বাংলাদেশ।
- ↑ মাসুদুল হক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে র' এবং সিআইএ। বাংলাদেশ।
- ↑ Sayyid A. Karim। Sheikh Mujib Triumph and Tragedy (ইংরেজি ভাষায়)।
- ↑ "Bangladesh alleges 'separatist plot'" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০১-১২-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-১৯।
- ↑ Feb 4, Aloke Banerjee | TNN |; 2003; Ist, 01:45। "Hindu republic 'born' in Bangladesh | Kolkata News - Times of India"। The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-১৯।
- ↑ আবুল আসাদ। একশ বছরের রাজনীতি। বাংলাদেশ।