চার্লস উইলকিন্স
স্যার চার্লস উইলকিন্স (ইংরেজি: Charles Wilkins) কেএইচ, ডিসিএল, এফআরএস (১৭৪৯ – মে ১৩, ১৮৩৬), ছিলেন একজন ইংরেজ মুদ্রাকর, প্রাচ্য ভাষাবিদ এবং কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য। তিনি বাংলা[১] এবং ফরাসি মুদ্রাক্ষরের অধুনিক আকৃতির উদ্ভাবক। পঞ্চানন কর্মকার সহযোগে,[২] ইংরেজি ভাষায় প্রথম মুদ্রাক্ষরে ভগবত গীতা অনুবাদ করেন তিনি।[৩] ১৭৮৮ সালে, উইলকিন্স রয়েল সোসাইটির সদস্য নির্বাচিত হন।[৪]
স্যার চার্লস উইলকিন্স | |
---|---|
Charles Wilkins | |
![]() চার্লস উইলকিন্স | |
জন্ম | চার্লস উইলকিন্স ১৭৪৯ |
মৃত্যু | ১৩ মে ১৮৩৬ | (বয়স ৮৬–৮৭)
জাতীয়তা | ইংল্যান্ড |
নাগরিকত্ব | ইংল্যান্ড |
পেশা | ভাষাবিদ, মুদ্রাকর |
জীবনী
সম্পাদনাচার্লস উইলকিন্স, ১৭৪৯ সালে সোমারসেটের ফ্রোম অঞ্চলে জন্ম নেন। একজন মুদ্রক হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। ১৭৭০ সালে তিনি ভারতে চলে আসেন এবং পরবর্তীতে মুদ্রক ও লেখক হিসেবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে যোগ দেন। মালদহে কর্মরত থাকাকালীনসময়ে তিনি বাংলা, সংস্কৃত এবং ফরাসি ভাষায় পারদর্শিতা অর্জন করেন।[৩] বাংলা মুদ্রণের প্রথম ছাঁদ-নকশা তৈরির ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন তিনি।[৫]১৭৭৯ সালে তিনি প্রাশ্চাত্য অধিবাসীদের ব্যবহারের জন্যে অ্যা গ্রামার অব সংস্কৃত ল্যাঙ্গুয়েজ রচনা করেন।[৬] কলকাতায় অবস্থানকালে তিনি গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হোস্টংস্-এর পৃষ্ঠপোষকতা অর্জন করেন। পরবর্তিতে স্থানীয় পণ্ডিতদের সহোযোগিতায় তিনি প্রথম ইয়োরোপিয় হিসেবে প্রাচ্য পান্ডুলিপি, উৎকীর্ণলিপি সংগ্রহ করেন এবং পাঠোদ্ধার ও অনুবাদের প্রচেষ্টা চালান। সংস্কৃত লিপির বিশদ ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে তার প্রথম সার্থক প্রয়াস ছিল ১৭৮৫ সালে দিনাজপুরে পাল বংশীয় রাজা নারায়ণপালের বাদল-স্তম্ভ লিপির পাঠোদ্ধার। পরবর্তীকালে বিহারের বারাবার পাহাড়ের গুহায় প্রাপ্ত মৌখরী লিপি তাকে গুপ্ত শাসকদের লিপির পাঠোদ্ধারে সহায়তা করে। ১৭৮৫ সালে তিনি ওয়ারেন হেস্টিংসের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং পণ্ডিত পঞ্চানন কর্মকারের সহায়তায় ইংরেজি ভাষায় প্রথম ভগবত গীতা অনুবাদ করেন। মূলত উইলকিন্স বাংলা ও ফারসি ভাষায় মুদ্রণের জন্য ছাপাখানা স্থাপনের ক্ষেত্রে পথিকৃৎ হিসেবে মুদ্রণ ও পুস্তক প্রকাশে এক বিপ্লব সাধন করতে সমর্থ হয়েছিলেন। ফলে ১৭৭৮ সালে বাংলা বর্ণমালার মুদ্রাক্ষর দ্বারা প্রথম ন্যাথানিয়েল ব্র্যাসি হ্যালহেডের অ্যা গ্রামার অব দ্য বেঙ্গল লেঙ্গুয়েজ বই মুদ্রিত হয়। হ্যালহেড উক্ত বইয়ের ভুমিকায় উইলকিন্সের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। হ্যালহেডের ভাষ্যমতে বইটি প্রকাশনায় উইলকিন্স ধাতুবিদ্যা বিশারদের নানাবিধ কাজ, যেমন নকশা খোদাইকারক, মুদ্রাক্ষর ঢালাইকর ও মুদ্রাকরের কাজের দায়িত্ব নিজেই গ্রহণ করেন।[৩][৪]
রচনা
সম্পাদনা- অ্যা গ্রামার অব সংস্কৃত ল্যাঙ্গুয়েজ(১৭৭৯)
- রাডিক্যালস অব দ্য সংস্কৃত ল্যাঙ্গুয়েজ
- রিচার্ডসন’স পার্সিয়ান-আরবিক-ইংলিশ ডিকসনারি
- কমপাইলেসনস অব জোন’স ম্যানুস্ক্রিপটস
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ হোরেস হায়ম্যান উইলসন (১৮৬৫)। ওয়াকর্স। লন্ডন: ট্রুবনার এ্যন্ড কোং।
- ↑ "Book History - Ezra Greenspan, Jonathan Rose"। Books.google.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৬-০২।
- ↑ ক খ গ সিরাজুল ইসলাম। "উইলকিন্স, স্যার চার্লস"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ০৭, ২০১৪। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ ক খ টমাস আর ট্রটমান। "উইলকিন্স, স্যার চার্লস"। অক্সফোর্ড ডিকশোনারি অব ন্যাশনাল বায়োগ্রাফি। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ০৭, ২০১৪। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] - ↑ দ্য এনুয়েল বায়োগ্রাফি এ্যন্ড ওবিটরি ফর দ্য ইয়ার ১৮১৭-১৮৩৭। লন্ডন: অ্যা স্পটিসউডস্। ১৮৩৭। পৃষ্ঠা ৬৯-৭২।
- ↑ গোলাম মঈনউদ্দিন (ডিসেম্বর ১৯৮৫)। "বাংলা বই: প্রকাশনার গোড়ার কথা"। বই। ঢাকা: বাংলা একাডেমী। পৃষ্ঠা ২৩। আইএসবিএন 9-840-72928-4।