গ্রিনিচ মান মন্দির

যুক্তরাজ্যের গ্ৰিনিচে অবস্থিত মান মন্দির

গ্রিনিচের মান মন্দির (রয়েল অবজারভেটরি) গ্রিনিচ পার্কের চূড়ার অবস্থিত। যেখানে থেকে টেমস নদী অবলোকন করা যায়। জ্যোতির্বিজ্ঞান ও দিক নির্ণয়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও স্থান। কারণ মূল মেডিট্রেরিয়ান এর মধ্য দিয়ে চলে গেছে। যার ধারাবাহিকতায় গ্রীনিচ মান সময় বলে একটি পরিভাষা যুক্ত হয়েছে।

ফ্ল্যামস্টিড হাউজ ১৮২৪ সাল
রয়েল অবজারভেটরি, ১৯০২ সালের একটি পোস্ট কার্ডে।

গ্রিনিচ মান মন্দিরের সময়কে ০০(শূন্য) ধরে অন্যান্য সময় হিসেব করতে হয় যা আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ইউনিয়ন দ্বারা নির্ধারিত। [১] গ্রিনিচের মান মন্দির (রয়েল অবজারভেটরি), ন্যাশনাল মেরিটাইম যাদুঘর, রাণীর বাড়ি ও ক্যাটি সার্ক একত্রে রয়্যাল মিউজিয়াম গ্রিনিচ নামে পরিচিত। [২]

১৬৭৫ সালে ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লস ১০ই আগস্ট গ্রিনিচের মান মন্দির (রয়েল অবজারভেটরি)'র ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। এই মন্দিরের জায়গা ক্রিস্টোফার রেন [৩] পছন্দ করেন এবং এই সময়েই এস্ট্রোনোমার রয়্যাল নামে একটি পদ সূচনা করা করা হয়, যিনি গ্রিনিচের মান মন্দির (রয়েল অবজারভেটরি)'র পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে স্থির করা হয়। মান মন্দিরটির প্রথম "এস্ট্রোনোমার রয়্যাল হিসেবে দায়িত্ব পান জন ফ্ল্যামস্টিড। ১৬৭৬ সালের গ্রীষ্ম কালে ভবনের কাজ সম্পন্ন হয়। [৪] ভবনটিকে সহসাই "ফ্ল্যামস্টিড হাউজ" নামেই ডাকা হত। বর্তমান সময়ে সায়েন্টিফিক কাজ-কর্ম গুলো অন্য জাগায় স্থান্তরিত করা হয়েছে। তাই গ্রিনিচের এই ভবনটি এখন মূলত যাদুঘর হিসেবেই বিবেচ্য হচ্ছে। স্থানটি ভ্রমণ পিপাসীদের জন্য একটি দর্শনীয় স্থান বটে। হাজার হাজার মানুষ এখানে ঘুরতে ও দেখতে আসেন। মূলত প্রত্নতাত্ত্বিক বিবেচনায় এটি আন্তর্জাতিকভাবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে।

কালক্রমসম্পাদনা

১৬৭৫ - ২২ জুন রয়েল অবজারভেটরি প্রবর্তিত হয়।

১৬৭৫ - ১০ আগস্ট কাজ শুরু হয়।

১৭১৪ - দ্রাঘিমাংশ আইন শুরু হয়।

১৭৬৭ - এস্ট্রোনোমার রয়্যাল "নেভিল মাস্কেলাইন" অবজারভেটরি থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে নটিক্যাল আলমানাক নামে প্রকাশনা শুরু করেন।

১৮১৮ - অবজারভেটরি বদলি করা হয়।

১৮৩৩ - দৈনিক সময় সংকেত শুরু হয়।

১৮৩৮ - রেফ্রেক্টিং টেলিস্কোপ বসানো হয়। [৫]

১৮৯৩ - ২৮ ইঞ্চি রেফ্রেক্টর বসানো হয়। [৬]

১৮৯৯ - নতুন ফিজিক্যাল অবজারভেটরি (দঃ ভবন) সম্পন্ন হয়।

১৯২৪ - ঘণ্টা অনুসারে সময় সংকেত (গ্রিনিচ টাইম সিগনাল) সম্প্রচার শুরু হয়।

১৯৩১ - ইয়্যাপ টেলিস্কোপ সংযুক্ত হয়।

১৯৪৮ - "এস্ট্রোনোমার রয়্যাল" অফিস হার্সমানজু'তে বদলি করা হয়।

১৯৫৭ - রয়েল অবজারভেটরি সম্পূর্ণভাবে হার্সমানজু'তে সরিয়ে নেয়া হয়। গ্রিনিচের আগের স্থাপনা পুরাতন রয়্যাল অবজারভেটরি হিসেবে চিহ্নিত হয়।

১৯৯০ - রয়্যাল গ্রিনিচ অবজারভেটরি ক্যামব্রিজে স্থানান্তর হয়।

১৯৯৮ - রয়্যাল গ্রিনিচ অবজারভেটরি নাম বাদ দিয়ে আগের নাম রয়্যাল অবজারভেটরি, গ্রিনিচ করা হয়। এবং ন্যাশনাল মেরিটাইম যাদুঘরের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

২০১১ - গ্রিনিচ যাদুঘর, রয়্যাল অবজারভেটরি গ্রিনিচ; রয়্যাল মিউজিয়ামের সাথে যুক্ত হয়।

ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পাদনা

এই স্থান ঐতিহাসিক ভাবে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ রাজা প্রথম উইলিয়ামের সময়কাল থেকে। গ্রিনিচ প্রাসাদ, যেটি বর্তমানে মেরিটাইম যাদুঘর; রাজা অষ্টম হেনরি ও তার কন্যা প্রথম মেরি'র জন্ম স্থান। প্রথম এলিজাবেথ ও ট্যুডর'রা গ্রিনিচ প্রাসাদ তাদের হান্টিং লজ হিসেবে ব্যবহার  করতেন। গ্রিনিচের এই প্রাসাদ না দুর্গটি রাজা অষ্টম হেনরির বিশেষ প্রিয় ছিলো। তার উপপত্নীদের আবাসস্থল ছিলো এটি। মূল প্রাসাদ থেকে এখানে তিনি সহজেই যাতায়াত করতে পারতেন বলে এটি তার বিশেষ প্রিয় জায়গা ছিলো।

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "List of Observatory Codes"Minor Planet Center। সংগ্রহের তারিখ ২৮ এপ্রিল ২০১৭ 
  2. Rebekah Higgitt (৬ সেপ্টেম্বর ২০১২)। "Royal Observatory Greenwich, London"BSHS Travel Guide - A Travel Guide to Scientific Sites। ৮ জুলাই ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ এপ্রিল ২০১৭ 
  3. "Greenwich and the Millennium"। ২০১৫। ২২ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  4. Robert Chambers, Book of Days
  5. "The Royal Observatory Greenwich - where east meets west: Telescope: The Sheepshanks Equatorial (1838)"www.royalobservatorygreenwich.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-৩১ 
  6. "The Royal Observatory Greenwich - where east meets west: Telescope: 28-inch Refractor (1893)"www.royalobservatorygreenwich.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-২৫