গ্যারি কুপার

মার্কিন অভিনেতা

গ্যারি কুপার (ইংরেজি: Gary Cooper; জন্ম: ফ্রাঙ্ক জেমস কুপার; ৭ই মে ১৯০১ - ১৩ই মে ১৯৬১) ছিলেন একজন মার্কিন অভিনেতা। তিনি তার স্বাভাবিক ও নির্ভেজাল অভিনয়শৈলি ও পর্দায় অভিনয়ের জন্য প্রসিদ্ধ। ৩৬ বছরের কর্মজীবনে তিনি ৮৪টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় ভূমিকায় অভিনয় করেন। নির্বাক চলচ্চিত্র যুগের শেষ সময় থেকে ধ্রুপদী হলিউডের স্বর্ণযুগের শেষ পর্যন্ত তিনি অন্যতম চলচ্চিত্র তারকা ছিলেন। তার পর্দা ব্যক্তিত্ব নারী-পুরুষ নির্বেশেষে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল এবং তিনি প্রায় সকলে ধরনের চলচ্চিত্রেই কাজ করেছেন। কুপারের চলচ্চিত্রে তার চরিত্রে তার নিজের ব্যক্তিত্ব প্রদর্শনের ক্ষমতা তাকে পর্দায় স্বাভাবিক ও নির্ভেজাল অভিনয় করতে সাহায্য করে। তার কর্মজীবনে তিনি এমন এক পর্দা ব্যক্তিত্ব ধরে রেখেছিলেন যা একজন আদর্শ মার্কিন বীরকে দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করে।

গ্যারি কুপার
Gary Cooper
১৯৩৬ সালে গ্যারি কুপার
জন্ম
ফ্রাঙ্ক জেমস কুপার

(১৯০১-০৫-০৭)৭ মে ১৯০১
মৃত্যু১৩ মে ১৯৬১(1961-05-13) (বয়স ৬০)
লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
সমাধিস্যাক্রেড হার্টস সিমেট্রি, সাউদাম্পটন, নিউ ইয়র্ক
অন্যান্য নামকুপ
মাতৃশিক্ষায়তনগ্রিনেল কলেজ
পেশাঅভিনেতা
কর্মজীবন১৯২৫–৬১
রাজনৈতিক দলরিপাবলিকান
দাম্পত্য সঙ্গীভেরোনিকা বালফ (বি. ১৯৩৩)
সন্তান
ওয়েবসাইটgarycooper.com
স্বাক্ষর

কুপার একজন চলচ্চিত্রের অতিরিক্ত শিল্পী ও স্টান্ট হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন, কিন্তু অচিরেই তিনি অভিনয়ে যোগ দেন। তার প্রারম্ভিক নির্বাক চলচ্চিত্রগুলোতে পশ্চিমা বীর হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভের পর কুপার ১৯২৯ সালে তার প্রথম সবাক চলচ্চিত্র দ্য ভার্জিনিয়ান-এ চলচ্চিত্র তারকা ভূমিকায় কাজ করেন। ১৯৩০-এর দশকের শুরুতে তার বীরধর্মী ভাবমূর্তির পাশাপাশি তিনি রোমাঞ্চকর ও নাট্যধর্মী চলচ্চিত্র - আ ফেয়ারওয়েল টু আর্মস (১৯৩২) ও দ্য লাইভস অব আ বেঙ্গল ল্যান্সার (১৯৩৫)। তার কর্মজীবনের সর্বোচ্চ শিখরে তিনি চলচ্চিত্রে নতুন ধরনের বীর রূপে আবির্ভুত হন। এসময়ে তিনি মিস্টার ডিডস গোজ টু টাউন (১৯৩৬), মিট জন ডো (১৯৪১), সার্জেন্ট ইয়র্ক (১৯৪১), দ্য প্রাইড অব দ্য ইয়াঙ্কিজ (১৯৪২) এবং ফর হুম দ্য বেল টলস (১৯৪৩) চলচ্চিত্রে তাকে আমজনতার রক্ষক হিসেবে দেখা যায়।

যুদ্ধ পরবর্তী বছরগুলোতে তিনি আরও অভিজ্ঞ চরিত্রে অভিনয় করেন, যার মধ্যে রয়েছে দ্য ফাউন্টেনহেড (১৯৪৯) ও হাই নুন (১৯৫২)। তার শেষ সময়ের চলচ্চিত্রগুলোতে তিনি সহিংসতাহীন চরিত্রে কাজ করেন, যেগুলো হল ফ্রেন্ডলি পারসুয়েশন (১৯৫৬) ও ম্যান অব দ্য ওয়েস্ট (১৯৫৮)।

১৯৩৩ সালে কুপার ভেরোনিকা বালফকে বিয়ে করেন। তাদের এক কন্যা ছিল। কুপার অভিনেত্রী প্যাট্রিসিয়া নিলের সাথে প্রণয়সম্পর্কে জড়ালে ও কুপার-বালফ দম্পতির তিন বছর আলাদা থাকার কারণে তাদের এই বৈবাহিক সম্পর্কে বিঘ্ন ঘটে। কুপার সার্জেন্ট ইয়র্কহাই নুন চলচ্চিত্রে তার কাজের জন্য দুবার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ১৯৬১ সালে তার কর্মজীবনের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি একাডেমি সম্মানসূচক পুরস্কার লাভ করেন। তিনি টানা ২৩ বছর সেরা ১০ চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বের একজন ছিলেন এবং ১৮ বছর সেরা আয়কারী তারকা ছিলেন। আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট তাদের ধ্রুপদী হলিউড চলচ্চিত্র শিল্পের সেরা ২৫ পুরুষ তারকা তালিকায় তাকে ১১তম স্থানে রেখেছে।

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

 
Cooper dressed as a cowboy, 1903

ফ্রাঙ্ক জেমস কুপার ১৯০১ সালের ৭ই মে মন্টানা অঙ্গরাজ্যের হেলেনায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা চার্লস হেনরি কুপার (১৮৬৫-১৯৪৬) এবং মাতা অ্যালিস (প্রদত্ত নাম: ব্রাজিয়ার, ১৮৭৩-১৯৬৭)।[১] তার পিতা বেডফোর্ডশায়ারের হৌটন রেজিস[২] থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। তিনি একজন আইনজীবী ও খামার মালিক ছিলেন এবং পরে মন্টানা সুপ্রিম আদালতের বিচারক হন।[৩] তার মা কেন্টের গিলিংহাম থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং মন্টানায় এসে চার্লসের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।[৪] ১৯০৬ সালে চার্লস মিজুরি নদীর পাশে হেলেনার নিকটবর্তী শহর ক্রেইগে প্রায় ৫০ মাইল দীর্ঘ ৬০০ একর সেভেন-বার-নাইন[৫][৬] গবাদিপশু খামার ক্রয় করেন।[৭] ফ্রাঙ্ক ও তার বড় ভাই আর্থার সেখানে তার গ্রীষ্ম কাটাতেন এবং ঘোড়া চালানো, শিকার ও মাছ ধরা শিখেন।[৮][৯] কুপার হেলেনায় সেন্ট্রাল গ্রেড স্কুলে পড়াশুনা করেন।[১০]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. মেয়ার্স ১৯৯৮, পৃ. ১, ৪ – ৫, ১৯৮, ২৫৯।
  2. মেয়ার্স ১৯৯৮, পৃ. ১।
  3. আর্ক ১৯৭৯, পৃ. ১৭–১৮।
  4. মেয়ার্স ১৯৯৮, পৃ. ৪–৫.
  5. আর্ক ১৯৭৮, পৃ. ১৮।
  6. সুইন্ডেল ১৯৮০, পৃ. ১০।
  7. মেয়ার্স ১৯৯৮, পৃ. ৭–৮।
  8. মেয়ার্স ১৯৯৮, পৃ. ৮।
  9. সুইন্ডেল ১৯৮০, পৃ. ২৫।
  10. মেয়ার্স ১৯৯৮, পৃ. ৬।

গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা