গোপনীয়তা হলো কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর নিজেকে অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন করার অধিকার, নিজের সম্পর্কে তথ্য গোপন করার অধিকার এবং প্রয়োজনে ইচ্ছামতো নিজের সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করার অধিকার। গোপনীয়তার আওতা বা বিষয়বস্তু ভিন্ন সংস্কৃতিক পরিমন্ডলে বা ব্যক্তির বিবেচনায় ভিন্ন হতে পারে।

গোপনীয়তাকে নজরদারির মাধ্যমে খর্ব করা যেতে পারে - এই ক্ষেত্রে সিসিটিভি ব্যবহার করা হয়েছে ।

একজন ব্যক্তির কাছে যখন কোন কিছু গোপনীয় হয়, এটার অর্থ হলো ওই বিষয় বা বস্তুটি তার নিকট খুবই বিশেষ এবং সংবেদনশীল। গোপনীয়তার ক্ষেত্রটি অনেক সময় আংশিকভাবে নিরাপত্তার সাথে সাংঘর্ষিক, যেখানে তথ্যের যথাযথ ব্যবহারের উপায় এবং সুরক্ষা অন্তর্ভুক্ত থাকে। গোপনীয়তা দৈহিক সতন্ত্রতায়ও রূপ নিতে পারে। সরকার, কর্পোরেশন সমূহ অথবা ব্যক্তি কর্তৃক কারো গোপনীয়তায় অযৌক্তিক আগ্রাসনের শিকার না হওয়ার অধিকার হলো বহু দেশের গোপনীয়তা আইনের একটি অংশ এবং কিছু ক্ষেত্রে, সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত।

ব্যবসায়িক জগতে, একজন ব্যক্তি কোন সুবিধার বিনিময়ে বিজ্ঞাপন সহ অন্যান্য কারণে তার ব্যক্তিগত তথ্য স্বেচ্ছায় শেয়ার করতে পারে। বিখ্যাত/জনপ্রিয়/রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের (Public figures) তথ্য জনস্বার্থের বিধি মোতাবেক ব্যবহৃত হতে পারে। স্বেচ্ছায় শেয়ার করা ব্যক্তিগত তথ্য যদি পরে অনাকাঙ্ক্ষিত চুরি বা অপব্যবহারের শিকার হয় তাহলে পরিচয় চুরির অভিযোগের সম্মুখিন হতে পারে।

বিশ্বজনীন ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ধারণাটি একটি আধুনিক চিন্তাকাঠামো যা মূলত পাশ্চাত্য সংস্কৃতি, বিশেষত ব্রিটিশ এবং উত্তর আমেরিকার সাথে সংশ্লিষ্ট এবং সাম্প্রতিক কাল পর্যন্ত কিছু সংস্কৃতিতে কার্যত অজানা ছিল। তবে, বেশিরভাগ সংস্কৃতিতে, ব্যক্তির বিশেষ ব্যক্তিগত তথ্য সমাজের সকলের সম্মুখে প্রকাশ রোধ করার অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।

গোপনীয়তার বিভিন্ন দিক

সম্পাদনা

একা থাকার অধিকার

সম্পাদনা

১৮৯০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিচারপতি স্যামুয়েল ডি ওয়ারেন এবং লুই ব্র্যান্ডেইস রাইট টু প্রাইভেসি নামে একটি নিবন্ধ লিখেছেন, যেখানে তারা "একা থাকার অধিকার" বাক্যটিকে গোপনীয়তার সংজ্ঞা হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে বলে যুক্তি দিয়েছিলেন। [] "একা থাকতে চাওয়া" এর মানে নিয়ে অনেক আলোচনা রয়েছে এবং অনেকগুলির মধ্যে একটি মতামত হলো যে, একজন ব্যক্তি যদি চায় তাহলে সে অন্য ব্যক্তির মনোযোগ থেকে নির্জনতা বেছে নেওয়ার অধিকার রাখে এবং তার ব্যক্তিগত পরিমন্ডলে যেমন-নিজের বাড়িতে তল্লাশী বা নজরদারির হাত থেকে মুক্ত থাকার অধিকার রাখে।[] যদিও এই প্রাথমিক অস্পষ্ট আইনি ধারণা গোপনীয়তাকে এমনভাবে ব্যাখ্যা করেনি যা গোপনীয়তার বিস্তৃত আইনি সুরক্ষা কাঠামো তৈরিকে সহজ করে তোলে। তবে, এটি ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারের ধারণাটিকে শক্তিশালী করে এবং সেই অধিকারগুলির উপর আলোচনার ভিত্তি সূচনা করে।[]

সীমিত তথ্য প্রদানের অধিকার

সম্পাদনা

সীমিত অ্যাক্সেস বলতে, একজন ব্যক্তিকে তার ব্যক্তিগত তথ্য অন্য ব্যক্তি বা সংস্থার নিকট প্রকাশে বাধ্য না করেই সমাজে অংশগ্রহণ করার ক্ষমতাকে বোঝায়। []

অনেক তাত্ত্বিক, কারো ব্যক্তিগত তথ্য অধিগত করার সুযোগকে সীমিত করাকে গোপনীয়তা হিসাবে কল্পনা করেছেন।[] এডউইন লরেন্স গডকিন উনিশ শতকের শেষভাগে লিখেছিলেন যে "ব্যক্তিগত জীবনের আইনি সুরক্ষার চেয়ে ভাল আর কিছু হয় না, বা, অন্য কথায়, প্রত্যেক ব্যক্তির একান্ত বিষয়াদি নিজের কাছে রাখার অধিকার, এবং নিজের কতটুকু অন্যের আলোচনার বা নজরদারির আওতায় থাকবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার।" [] [] ০৯ বছর পূর্বে উপস্থাপিত রুথ গেভিসন [] এর ধারণার [] আলোকে সিসেলা বক বলেন যে গোপনীয়তা হলো "নিজের শরীর, ব্যক্তিগত তথ্য বা মনোযোগকে অন্যের অনাকাংখিত হস্তক্ষেপ থেকে সুরক্ষা করা " [] []

তথ্যের উপর নিয়ন্ত্রণ

সম্পাদনা

কারও ব্যক্তিগত তথ্যের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখার ধারণাটি হলো "গোপনীয়তা হচ্ছে ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা সংস্থাসমূহের তাদের নিজস্ব তথ্য কখন, কীভাবে এবং কতটুকু অন্যের নিকট প্রকাশ করা হবে সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার।" [] [] চার্লস ফ্রাইড বলেছিলেন যে "গোপনীয়তা কেবল অন্যের মনে আমাদের সম্পর্কে তথ্যের অভাব নয়; বরং আমাদের নিজেদের সম্পর্কিত তথ্য নিজের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করাকে বুঝায়। তবে, বিগ ডেটার যুগে, তথ্যের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা সহজ নয়। []

গোপনীয়তার মাত্রা

সম্পাদনা

অ্যালান ওয়েস্টিন গোপনীয়তার চারটি মাত্রা বা অভিজ্ঞতা সংজ্ঞায়িত করেছেন: নির্জনতা (solitude), অন্তরঙ্গতা (intimacy), বেনাম বা নাম প্রকাশে অনিচ্ছা (anonymity) এবং গাম্ভির্যতা (reserve)। নির্জনতা অন্যদের থেকে শারীরিক ভাবে দূরে অবস্থান করা। [] অন্তরঙ্গতা হলো "দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে ঘনিষ্ঠ, ঢিলেঢালা এবং অন্তরঙ্গ সম্পর্ক" যা অন্য কোনও দল হতে বিচ্ছিন্নতার ফলে সৃষ্ট। বেনাম হলো "বিভিন্ন সময়ে অন্য সকলের থেকে নিজেকে গোপন রাখার আকাঙ্ক্ষা" সবশেষে, গাম্ভির্যতা হলো "অযাচিত অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে একটি মানসিক বাধা সৃষ্টি করা "; এই মনস্তাত্ত্বিক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ফলে অন্যেরা কারো সম্পর্কে তথ্য আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে তার আকাঙ্ক্ষাকে বিবেচনায় নেয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ করে।

গাম্ভির্যতা বা রক্ষনশীলতার ফলে সৃষ্ট মনস্তাত্ত্বিক বাধার ধারণা ছাড়াও ক্রিস্টি হিউজ আরও তিন ধরনের গোপনীয়তা বাধা চিহ্নিত করেছিলেন: কায়িক (physical), আচরণগত (behavioral) এবং আদর্শিক (normative)। দেয়াল এবং দরজার মতো কায়িক প্রতিবন্ধকগুলি অবাঞ্ছিত কারো দ্বারা তথ্য গ্রহণ (access) এবং নজরদারী থেকে রক্ষা করে।[] (কোনও ব্যক্তিকে "অ্যাক্সেস" করা মানে তার ব্যক্তিগত তথ্য অধিগত করা বোঝানো হয়েছে) আচরণগত বাধার মাধ্যমে যেমনঃ মৌখিকভাবে- কথার দ্বারা, অথবা অমৌখিকভাবে -ব্যক্তিগত দূরত্ব, শারীরিক ভাষা, পোশাক ইত্যাদি দ্বারা কোন ব্যক্তি নিজের সম্পর্কে তথ্য প্রকাশে অন্যদেরকে বাধা দিতে পারে। সর্বশেষ, আইন ও সামাজিক নিয়মের মতো আদর্শিক বাধাগুলি অন্যকে কোনও ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্য পেতে বা তার সম্পর্কে ধারণা অর্জনের চেষ্টা থেকে বিরত রাখে।

Secrecy বা তথ্য গোপন করা

সম্পাদনা

তথ্য গোপন (Secrecy) করাকে কখনো কখনো গোপনীয়তার (Privacy) একটি বিকল্প হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। রিচার্ড পোসনার বলেছিলেন যে গোপনীয়তা হলো "নিজের সম্পর্কে তথ্য গোপন করার অধিকার যা ব্যবহার করে অন্যরা তাকে বিপদে ফেলতে পারে"। [] [১০]

বিভিন্ন আইনি প্রসঙ্গে, যেখানে তথ্য গোপন করাকে প্রাইভেসি হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে উপসংহার টানা হয়েছে যে গোপনীয়তার অধিকার এমন কোনও তথ্যের জন্য প্রযোজ্য না যা ইতিমধ্যে সর্বসাধারণের কাছে প্রকাশ করা হয়েছে। [] যখন তথ্য গোপনকে প্রাইভেসি হিসাবে বিবেচনা করা হয়, তখন সাধারণত এমন বিশেষ অবস্থাকে কল্পনা করা হয় যেখানে লোকজন কিছু তথ্য গোপন রাখে এবং অন্যান্য তথ্য প্রকাশ করে। []

ব্যক্তি স্বতন্ত্রতা এবং ব্যক্তিস্বাধীনতা

সম্পাদনা

গোপনীয়তাকে (Privacy) ব্যক্তিত্বের বিকাশ এবং তা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পূর্বশর্ত হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। জেফ্রি রেইমান গোপনীয়তাকে সংজ্ঞায়িত করতে যেয়ে বলেন "গোপনীয়তা হলো একজন মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বতন্ত্রতাকে এবং তার নিজের আত্ম-নিয়ন্ত্রণের নৈতিক অধিকার কে স্বীকার করে নেয়া"।[১১] গোপনীয়তার "সামাজিক আচার" এর মাধ্যমে বা ব্যক্তির গোপনীয়তাকে সম্মান প্রদানের সামাজিক অনুশীলনের মাধ্যমে একটি সমাজ শিশুদের মাঝে এই বোধ তৈরি করে যে- নিজের দেহের উপর তার একচেটিয়াভাবে নৈতিক অধিকার রয়েছে, অন্য কথায়, নৈতিকভাবে সে তার শরীরের একচ্ছত্র মালিক এটি আসলে শরীর ও মন উভয়ের উপরই নিয়ন্ত্রণ রাখে, একটি ব্যক্তির চলাফেরা ও ক্রিয়াকলাপের উপর নিয়ন্ত্রণ এবং পরেরটি এই শারীরিক অস্তিত্বকে কে এবং কখন উপলব্ধি করবে তা নিয়ন্ত্রণ করে।

অন্যদিকে, স্ট্যানলি বেন ব্যক্তির নিজের কর্তৃত্ব খাটানোর স্বীকৃতির ভিত্তিতে- পছন্দ করতে পারার ক্ষমতাকে গোপনীয়তা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেন।[১২] ইচ্ছা অনুযায়ী কিছু করতে পারার ক্ষমতা প্রয়োগ করার জন্য গোপনীয়তা (Privacy) প্রয়োজন। প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ একজন ব্যক্তিকে "নির্ধারিত বৈশিষ্ট" এবং "সীমিত সম্ভাবনা" বিশিষ্ট চরিত্র হিসেবে নিজেকে সচেতন করে তোলে। অন্যদিকে গোপনে পর্যবেক্ষণ, এমন অবস্থায় পরিবর্তন করে যেখানে ব্যক্তি তার জ্ঞান এবং সচেতন সম্মতি ছাড়াই ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করতে পারে।

এছাড়াও, গোপনীয়তাকে এমন একটি অবস্থা হিসাবে দেখা যেতে পারে যা ব্যক্তিস্বাধীনতা নিশ্চিত করে- এই ধারণাটি ব্যক্তি স্বতন্ত্রতার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। জোসেফ কুফারের মতে, স্বনির্ধারণী ব্যক্তিস্বাধীনতা এমন একটি ধারণা যেখানে একজন ব্যক্তি নিজেকে "উদ্দেশ্যপূর্ণ, স্ব-সঙ্কল্পিত, দায়িত্বশীল প্রতিনিধি" হিসাবে বিবেচনা করেন এবং নিজের সাথে অন্যের সীমানা নিয়ন্ত্রণে (অর্থাৎ কে, কখন, কীভাবে ও কতটুকু তার সাথে মিশতে পারবে বা তার তথ্য গ্রহণ/ব্যবহার করতে পারবে) নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন থাকেন।[১৩] তদ্ব্যতীত, অন্যরা অবশ্যই ব্যক্তির গণ্ডীকে স্বীকআর করবে এবং সম্মান করবে, অন্য কথায়, তাদের অবশ্যই ব্যক্তির গোপনীয়তাকে সম্মান করতে হবে।

জিন পাইগেট এবং ভিক্টর টাস্কের মতো মনোবিজ্ঞানীদের গবেষণায় দেখা যায় যে, শিশুরা বড় হতে হতে শিখে যে কে তা্দের কাছে আসতে পারে এবং কতটুকু অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে তারা সেটা নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং এভাবে তাদের মধ্যে স্বনির্ধারণী ব্যক্তিস্বাধীনতা বিকাশ লাভ করে। [১৩] এছাড়াও, বিশেষ প্রতিষ্ঠানে বসবাসরত প্রাপ্তবয়স্ক লোকের উপর গবেষণায়, যেমন এরভিং গফমেন পরিচালিত জেলখানা এবং মানসিক হাসপাতালের মতো "total institutions" [১৪] গুলোতে গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নিয়মিতভাবে যদি কাউকে তার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বা প্রাইভেসি থেকে বঞ্চিত করা হয় তাহলে ধীরে ধীরে তার ব্যক্তিস্বাধীনতার বোধ লোপ পেতে থাকে।

আত্ম-পরিচয় এবং ব্যক্তিত্ব বিকাশ

সম্পাদনা

গোপনীয়তাকে আত্ম-পরিচয় বোধের বিকাশের একটি পূর্বশর্ত হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। গোপনীয়তায় প্রতিবন্ধকতা খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।আরউইন আল্টম্যানের মতে, এই ধরনের বাধাগুলি "নিজের গোপনীয়তার সীমানা নির্ধারণ করে দেয়" এবং এইভাবে "[আত্ম] সংজ্ঞায়িত করতে সহায়তা করে"।[১৫] এই নিয়ন্ত্রণ মূলত অন্যের সাথে সম্পর্ক পরিচালনা করার ক্ষমতা তৈরিতে সাহায্য করে। নিজের সীমার "ব্যাপ্তিযোগ্যতা" নিয়ন্ত্রণের ফলে একজন ব্যক্তি স্বত্তার গঠন এবং স্বত্তা কি তা অনুধাবন করতে পারে।

এছাড়াও, গোপনীয়তা কে এমন একটি অবস্থা হিসাবে দেখা যেতে পারে যা ব্যক্তির বিকাশকে উদ্বুদ্ধ করে, আত্মপরিচয়ের উন্নয়নে এটা অবিচ্ছেদ্য প্রক্রিয়া। হাইম্যান গ্রস পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, গোপনীয়তা ব্যতীত - নির্জনতা, বেনাম বা ছদ্মনামে প্রকাশ এবং সামাজিক ভূমিকা থেকে অস্থায়ী মুক্তি সম্ভব না এবং ব্যক্তি নির্দ্বিধায় নিজেকে প্রকাশ, আত্মসন্ধান এবং আত্মসমালোচনা করতে পারবেন না। [১৩] এই জাতীয় আত্মসন্ধান এবং আত্মসমালোচনা নিজেকে বোঝার জন্য ভূমিকা রাখে এবং আত্মপরিচয় বোধকে গঠন করে।

অন্তরঙ্গতা

সম্পাদনা

ব্যক্তিত্ব তত্ত্বটি গোপনীয়তা (privacy) কীভাবে একজনকে ব্যক্তি হয়ে উঠার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে কল্পনা করে, একইরকমভাবে, অন্তরঙ্গতা তত্ত্বটি গোপনীয়তা কীভাবে একজন মানুষকে অন্য মানুষের সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক তৈরি ও তা দৃঢ় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে তা ব্যাখ্যা করে। [] যেহেতু মানব সম্পর্কের কিছু দিক আছে যেখানে প্রত্যেকেই স্বেচ্ছায় তার কিছু ব্যক্তিগত তথ্য অন্যদের সাথে প্রকাশ (share) করে এবং কিছু তথ্য গোপন রাখে, সুতরাং গোপনীয়তা এমন একটি ব্যবস্থার ধারণা দেয় যার উপর ভিত্তি করে মানুষ একে অপরের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে। []

জেমস রেচেলস এই মতবাদকে আরো পরিণত করেছিলেন এভাবে যে, গোপনীয়তা (privacy) গুরুত্বপূর্ণ কারণ "কে আমাদের তথ্য অধিগত করতে পারবে এটা নিয়ন্ত্রণ করার সামর্থ্য এবং বিভিন্ন লোকের সাথে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক সম্পর্ক তৈরি এবং বজায় রাখার দক্ষতার মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে।" [] [১৬]

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা

সম্পাদনা

শারীরিক (physical) গোপনীয়তাকে "নিজের দৈহিক উপস্থিতির গণ্ডীর মধ্যে বা নির্জনতায় অন্যের অনধিকার প্রবেশের" প্রতিরোধ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে। [১৭] শারীরিক গোপনীয়তার অধিকারের আইনি ভিত্তির একটি উদাহরণ হলো মার্কিন সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী, যা "জনগণকে তাদের দেহ, ঘরবাড়ি, নথিপত্র এবং মালামালকে অযৌক্তিক অনুসন্ধান এবং দখলের বিরুদ্ধে সুরক্ষার অধিকার" নিশ্চিত করে। [১৮]

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের বিখ্যাত কার্পেন্টার বনাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মামলাটি তৃতীয় পক্ষ তত্বটিকে (Third Party Doctrine) মতবাদকে সীমিত করতে সহায়তা করেছিল। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সমূহ আগে সেল ফোন থেকে সেল ফোন অবস্থানের তথ্য (cell site location information- CSLI) তৃতীয় পক্ষ তত্বের অধীনে ওয়ারেন্ট ছাড়াই সংগ্রহ করতে সক্ষম হতো, যা এই রায়ে অসাংবিধানিক বলে প্রমাণিত হয়েছিল। এই রায় কে গোপনীয়তার পক্ষে সামান্য জয় হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।

শারীরিক গোপনীয়তা (Physical privacy) সংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা, আত্মমর্যাদা এবং/বা লাজুকতার জন্য হতে পারে। এর নিরাপত্তার ব্যপারে উদ্বেগও থাকতে পারে, উদাহরণস্বরূপ, কেউ অপরাধের শিকার হওয়ার বা গোপনে নজরদারির শিকার হওয়ার বিষয়ে সতর্ক হয়ে থাকে। [১৯]

সাংগঠনিক

সম্পাদনা

সরকারী সংস্থা, কর্পোরেশন, গোষ্ঠী / সমিতি এবং অন্যান্য সংস্থাগুলি তাদের কার্যক্রম বা বিভিন্ন সংবেদনশীল তথ্যাদি অন্যান্য সংস্থা বা ব্যক্তির নিকট হতে গোপন রাখতে চায় এবং এজন্য নানাবিধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। সংস্থাগুলি তাদের গোপনীয়তার জন্য আইনি সুরক্ষা চাইতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একটি সরকারী প্রশাসন কার্যনির্বাহী বিশেষাধিকারের প্রয়গ করতে পারে [২০] বা নির্দিষ্ট তথ্যকে গোপনীয় (classified) হিসেবে ঘোষণা করতে পারে, বা কোনও কর্পোরেশন গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ বিষয়ক তথ্যকে বাণিজ্য গোপনীয়তা (Trade Secrets) হিসাবে সুরক্ষিত করার চেষ্টা করতে পারে। [১৮]

ইতিহাস

সম্পাদনা

দার্শনিক আলোচনা সমূহে গোপনীয়তার ধারণার ঐতিহাসিক উৎপত্তি লক্ষ করা যায়। সবচেয়ে বিখ্যাত হলো মহামান্য এরিস্টটলের মানুষের জীবনের ভিন্ন দুইটি দিকের দর্শনঃ একটি হলো নাগরিকদের উম্মুক্ত/প্রকাশ্য দিক, যা তাদের রাজনৈতিক জীবনের সাথে জড়িত এবং অন্যটি হলো পারিবারিক ক্ষেত্র, যা পারিবারিক জীবনের সাথে জড়িত।[২১] আমেরিকাতে ১৮৯০ সালের দিকে গোপনীয়তার আইনগুলির বিকাশের পূর্ব পর্যন্ত গোপনীয়তার উপর বিশদ ও নিয়মতান্ত্রিক গ্রন্থ দেখা যায়নি।

প্রযুক্তি

সম্পাদনা
 
শিকাগোতে ১৯১২ এর রিপাবলিকান সম্মেলনে প্রতিনিধিদের জন্য ডায়াল টেলিফোন পরিষেবা দেওয়ার জন্য বিজ্ঞাপন। ডায়াল টেলিফোন পরিষেবাটির একটি প্রধান বৈশিষ্ট ছিল এটি "গোপন", যাতে কোনও কল অপারেটরের কল সংযুক্ত করার প্রয়োজন হয় না।

প্রযুক্তি যেমন উন্নত হয়েছে, গোপনীয়তা সুরক্ষিত ও লঙ্ঘিত হওয়ার উপায়ও এর সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়েছে। প্রিন্টিং প্রেস বা ইন্টারনেটের মতো কিছু প্রযুক্তির ক্ষেত্রে, তথ্য প্রচার করার বর্ধিত দক্ষতা তথ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করার নতুন নতুন পথ তৈরির সুযোগ সৃষ্টি করছে। এটা মোটামুটি ধরে নেয়া হয় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গোপনীয়তার পক্ষে প্রথম প্রকাশিত নিবন্ধটি হলো স্যামুয়েল ওয়ারেন এবং লুই ব্র্যান্ডেসের লেখা "দি রাইট টু প্রাইভেসি ",[২২], যা মূলত নতুন মুদ্রণ প্রযুক্তি বদৌলতে ক্রমবৃদ্ধিমান সংবাদপত্র এবং স্থিরচিত্র প্রকাশের প্রতিক্রিয়াইয় লেখা হয়েছিল। [২৩]

নতুন প্রযুক্তি ব্যক্তিগত তথ্যসূত্রের নতুন উপায়ও তৈরি করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটি ধারণা করা হয়েছিল যে গাঁজাচাষের বিরুদ্ধে অভিযানগুলি পরিচালনার জন্য তাপ সেন্সর এর ব্যবহার গ্রহণযোগ্য হবে। কিন্তু, ২০০১ সালে কিলো বনাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (৫৩৩ মার্কিন ২৭) মামলার রায়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে থার্মাল ইমেজিং ডিভাইসগুলি যা ওয়ারেন্ট ছাড়াই পূর্বে জানা যেত না এমন তথ্য প্রকাশ করতে পারে, সেগুলি গোপনীয়তার লঙ্ঘন করে। [২৪]

ইন্টারনেট

সম্পাদনা

আইনের অধ্যাপক এবং লেখক জেফ্রি রোজেন লিখেছেন, ইন্টারনেট গোপনীয়তা সম্পর্কে নতুন উদ্বেগ নিয়ে এসেছে যেখানে কম্পিউটার স্থায়ীভাবে সমস্ত কিছুর রেকর্ড সংরক্ষণ করতে পারে: "যেখানে আমাদের প্রতিটি অনলাইন ফটো, স্ট্যাটাস আপডেট, টুইটার পোস্ট এবং ব্লগ এন্ট্রি চিরকালের জন্য সংরক্ষণ করা যায়"।[২৫]

এটি বর্তমানে কর্মীনিয়োগের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলছে। মাইক্রোসফট জানিয়েছে যে মার্কিন নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ সমূহ এবং মানবসম্পদ পেশাদারগণ ৭৫ শতাংশ চাকরি প্রার্থী সম্পর্কে অনলাইনে খোঁজখবর করেন, বেশিরভাগ সময় সার্চ ইঞ্জিন, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটসমূহ, ফটো / ভিডিও-শেয়ারিং সাইট, ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট এবং ব্লগ এবং টুইটার এর দেয়া তথ্য ব্যবহার করে। তারা আরও জানায় যে মার্কিন নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ সমূহ ৭০ শতাংশ প্রার্থীকে ইন্টারনেটে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রত্যাখ্যান করে। এর ফলে অনেকে এখন অনলাইনে সুনাম নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি বিভিন্ন অনলাইন গোপনীয়তার সেটিংস ব্যবহার করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করছে, উভয়ই বিভিন্ন সাইট এবং নিয়োগকারীদের বিরুদ্ধে আইনি মামলা করার দিকে ধাবিত করেছে। [২৫]

ব্যক্তি সম্পর্কে অনলাইনে অনুসন্ধান করার সক্ষমতা গত এক দশকে নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন ফেসবুক, আগস্ট ২০১৫ হিসাবে, বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইট ছিল, প্রায় ১,৪৯০ মিলিয়ন সদস্য সমৃদ্ধ, যারা দৈনিক ৪.৭৫ বিলিয়ন তথ্য/বিষয় (content) আপলোড করেন। এর মধ্যে ৮৩.০৯ মিলিয়নের বেশি অ্যাকাউন্ট ভুয়া ছিল। টুইটারে ৩১৬ মিলিয়নের বেশি নিবন্ধিত ব্যবহারকারী এবং ২০ মিলিয়নেরও বেশি ভুয়া ব্যবহারকারী রয়েছে। লাইব্রেরী অফ কংগ্রেস সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে এটি ২০০৬ থেকে সকল টুইটার পোস্ট সংগ্রহ করবে এবং স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ। [২৫]

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কারো ব্রাউজিং লগ, অনুসন্ধান প্রশ্নাবলী বা ফেসবুক প্রোফাইলের বিষয়বস্তুর মতো প্রত্যক্ষভাবে পর্যবেক্ষণক্ষম আচরণ পর্যালোচনা করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রসেস করে কোনও ব্যক্তির সম্পর্কে গৌণ তথ্যাবলি যেমন, তার যৌন দৃষ্টিভঙ্গি, রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি, জাতি বর্ণ, পণ্যের ব্যবহার, মেধা এবং ব্যক্তিত্ব ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা লাভ করে প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে।[২৬]

কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, সাধারণভাবে ব্যবহৃত অনেক ইলেক্ট্রনিক কম্যুনিকেশন ডিভাইস তাদের ব্যবহারকারীর প্রতিটি পদক্ষেপ ম্যাপিং করতে পারে। সিনেটর আল ফ্রাঙ্কেন আইফোন এবং আইপ্যাডগুলি ব্যবহারকারীদের অবস্থান এনক্রিপ্ট না করা ফাইলগুলিতে রেকর্ড ও সংরক্ষণ করতে সক্ষম, এই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করেছেন,[২৭] যদিও অ্যাপল তা অস্বীকার করেছে। [২৮]

ইন্টেল কর্পোরেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাক্তন প্রধান নির্বাহী অ্যান্ড্রু গ্রোভ মে ২০০০ সালে প্রকাশিত একটি সাক্ষাত্কারে ইন্টারনেট গোপনীয়তার বিষয়ে তার ধারণা উপস্থাপন করেছিলেন:[২৯]

নতুন ইলেক্ট্রনিক যুগে গোপনীয়তা রক্ষা করা একটি বড় সমস্যা। ইন্টারনেট সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্রে এমন একটি শক্তি আছে যেটা আপনার সম্পর্কে সবকিছু জানতে চায়। এবং যখনই এটা আপনার সম্পর্কে ও আরো কোটি কোটি ব্যক্তি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যসূত্র করে তখন এটা একটা মূল্যবান সম্পদে পরিণত হয়, এবং অন্যরা এই সম্পদ ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ব্যবহার ও বিনিময়ের জন্য আগ্রহী হয়ে উঠে। এটা তখন এমন তথ্য থাকে না যাকে মানুষ তথ্য যুগ হিসেবে একসময় কল্পনা করেছিল।

যে কার্যক্রমগুলি গোপনীয়তা নষ্ট করে

সম্পাদনা

গোপনীয়তা সম্পর্কে অন্যান্য ধারণাগুলির মতো, বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়া বা ক্রিয়াকলাপ রয়েছে যা গোপনীয়তাকে বাতিল, চ্যালেঞ্জ, হ্রাস বা আক্রমণ করে। আইনজ্ঞ উইলিয়াম প্রোসার নিচের ক্রিয়াকলাপগুলির তালিকা তৈরি করেছিলেন যা গোপনীয়তা সুরক্ষা দিয়ে প্রতিকার করা যেতে পারে: [] [৩০]

  1. কোনও ব্যক্তির ব্যক্তিগত/একান্ত স্থান, নিজস্ব বিষয়াদি বা একাকীত্বেে ইচ্ছায় অনধিকার প্রবেশ []
  2. কোনও ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ্যে প্রকাশ করা যা প্রকাশিত হলে তার জন্য বিব্রতকর হতে পারে []
  3. কোন ব্যক্তির সম্পর্কে এমন তথ্যের প্রচারে উৎসাহিত করা যা জনসাধারণকে তার সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে []
  4. কারও ব্যক্তিত্বের অধিকারকে অবজ্ঞা করা এবং তাদের পছন্দকে ব্যবহার করে এমন দিকে আগ্রহী করে তোলা যা তাদের নিজস্ব নয়।[]

উপরে উল্লেখিত বিষয়াবলী এবং অন্যান্য ঐতিহাসিক ঘটনাবলির উপর ভিত্তি করে ড্যানিয়েল জে সলোভ আরও কিছু ক্রিয়াকলাপ উপস্থাপন করেছিলেন যা গোপনীয়তার জন্য ক্ষতিকারক, যেমন ইতিমধ্যে প্রকাশিত তথ্যসূত্র, তথ্য প্রক্রিয়াকরণ, তথ্য আদান প্রদান করা এবং ব্যক্তিগত তথ্য পাওয়ার জন্য কারো ব্যক্তিগত স্থানে অনধিকার প্রবেশ করা। []

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা

গোপনীয়তা বিনষ্ট করা প্রসঙ্গে ''তথ্যসূত্রের'' অর্থ হলো যে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে অর্জন করা যায় এমন সব ধরনের তথ্যসূত্র করা। [৩১] নজরদারি হলো এর একটি উদাহরণ, যখন কেউ কাউকে বা কোনও কিছু দেখা এবং রেকর্ড করা শুরু করে; এবং জিজ্ঞাসাবাদ হলো এর আরেকটি উদাহরণ, যখন কেউ অন্য ব্যক্তিকে তথ্যের উৎস হিসাবে ব্যবহার করে। [৩১]

তথ্য একত্রিত করা

সম্পাদনা

অনেক সময় এটা হতে পারে যে তথ্য প্রকাশ হলেই বা তথ্য সহজলভ্য হলেই প্রাইভেসি বা গোপনীয়তার বিঘ্ন ঘটেনা, তবে গোপনীয়তা বিনষ্ট হতে পারে যখন সেই তথ্যউপাত্ত গুলিকে সংগ্রহ করা হয় এবং একটি সেট হিসেবে একত্রিত করা হয় এবং এমন পদ্ধতিতে প্রসেস করা হয় যে সেই সমষ্টিগত তথ্য থেকে প্রাপ্ত রিপোর্ট দিয়ে প্রাইভেসির ক্ষতি হতে পারে।[] গোপনীয়তা হ্রাস করতে পারে এই ধরনের আরো কিছু কার্যাবলি নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ[]

  • তথ্য সমষ্টিগত করা, এটা হলো অনেকগুলি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত কিন্তু বিক্ষিপ্ত তথ্য কে সংগ্রহ পূর্বক সংযুক্ত করা []
  • সনাক্তকরণ, যার অর্থ তথ্যের অজ্ঞাত পরিচয় প্রক্রিয়া চালিয়ে ডেটার আইটেমগুলিসনাক্ত বিহীন তথ্যকে ভেঙ্গে অজ্ঞাতকরণের প্রক্রিয়া চালিয়ে ডেটার আইটেমগুলির সনাক্তকরণ ভাঙা হতে পারে, এইভাবে এমন লোকদের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের নাম না রাখার উদ্দেশ্যে এমন তথ্য তৈরি করা হয়েছিল []
  • নিরাপত্তাহীনতা, যেমন ডেটা সুরক্ষার অভাব, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকে যখন কোনও সংস্থার পরিবর্তে ডেটা সুরক্ষার জন্য দায়বদ্ধ বলে মনে করা হয় এমন একটি ডেটা লঙ্ঘনের শিকার হয় যা তাদের ডেটা ধারণ করে এমন লোকদের ক্ষতি করে []
  • গৌণ ব্যবহার, যা লোকেরা যখন কোনও নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে তাদের ডেটা ভাগ করে নিতে সম্মত হয় তবে ডেটা দাতাদের অবহিত সম্মতি ছাড়াই উপায়ে ব্যবহার করা হয় []
  • বর্জন হ'ল কোনও ব্যক্তিকে ডেটা পরিচালনা করার বা তার ব্যবহারে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার কোনও প্রয়াস ছাড়াই কোনও ব্যক্তির ডেটা ব্যবহার করা []

আরও দেখুন

সম্পাদনা
  • ব্যক্তিস্বাধীনতা
  • ডিজিটাল পরিচয়
  • বৈশ্বিক নজরদারি
  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিচয় চুরি
  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোপনীয়তা আইন
  • গোপনীয়তা নীতি
  • নির্জনতা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Solove 2008
  2. Godkin, E.L. (ডিসেম্বর ১৮৮০)। "Libel and its Legal Remedy": 729–39। 
  3. Oulasvirta, Antti; Suomalainen, Tiia (২০১৪)। "Transparency of Intentions Decreases Privacy Concerns in Ubiquitous Surveillance": 633–38। ডিওআই:10.1089/cyber.2013.0585পিএমআইডি 25226054 
  4. Gavison, Ruth (১৯৮০)। "Privacy and the Limits of Law": 421–71। 
  5. Bok, Sissela (১৯৮৯)। Secrets : on the ethics of concealment and revelation (Vintage Books সংস্করণ)। Vintage Books। পৃষ্ঠা 10–11। আইএসবিএন 978-0-679-72473-5 
  6. The quotation is from Alan Westin.Westin, Alan F.; Blom-Cooper, Louis (১৯৭০)। Privacy and freedom। Bodley Head। পৃষ্ঠা 7। আইএসবিএন 978-0-370-01325-1 
  7. B.H.M., Custers; Metajuridica, Instituut voor। "Predicting Data that People Refuse to Disclose; How Data Mining Predictions Challenge Informational Self-Determination"openaccess.leidenuniv.nl। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৭-১৯  Note: this reference does not contain the quote (& the quote opens without closing).
  8. Westin, Alan (১৯৬৭)। Privacy and Freedom। Atheneum। 
  9. Hughes, Kirsty (২০১২)। "A Behavioural Understanding of Privacy and Its Implications for Privacy Law"। 
  10. Posner, Richard A. (১৯৮৩)। The economics of justice (5. print সংস্করণ)। Harvard University Press। পৃষ্ঠা 271আইএসবিএন 978-0-674-23526-7 
  11. Reiman, Jeffrey (১৯৭৬)। "Privacy, Intimacy, and Personhood"। 
  12. Benn, Stanley। "Privacy, freedom, and respect for persons"। Philosophical Dimensions of Privacy: An Anthology। Cambridge University Press। 
  13. Kufer, Joseph (১৯৮৭)। "Privacy, Autonomy, and Self-Concept"। 
  14. Goffman, Erving (১৯৬৮)। Asylums: Essays on the Social Situation of Mental Patients and Other Inmates। Doubleday। 
  15. Altman, Irwin (১৯৭৫)। The Environment and Social Behavior: Privacy, Personal Space, Territory, and Crowding। Brooks/Cole Publishing Company। 
  16. Rachels, James (Summer ১৯৭৫)। "Why Privacy is Important": 323–33। জেস্টোর 2265077 
  17. H. Jeff Smith (১৪ এপ্রিল ১৯৯৪)। Managing Privacy: Information Technology and Corporate America। UNC Press Books। আইএসবিএন 9780807821473 
  18. "Fixing the Fourth Amendment with trade secret law: A response to Kyllo v. United States"Georgetown Law Journal। ২০০২। 
  19. "Security Recommendations For Stalking Victims"। Privacyrights। ১১ জানুয়ারি ২০১২। ১১ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০১৯ 
  20. "FindLaw's Writ – Amar: Executive Privilege"। Writ.corporate.findlaw.com। ২০০৪-০৪-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০১-০১ 
  21. DeCew, Judith (২০১৫-০১-০১)। Privacy (Spring 2015 সংস্করণ)। 
  22. "4 Harvard Law Review 193 (1890)"। Groups.csail.mit.edu। ১৯৯৬-০৫-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-২২ 
  23. Information Privacy, Official Reference for the Certified Information privacy Professional (CIPP), Swire, 2007}}
  24. "Privacy (Stanford Encyclopedia of Philosophy)"। plato.stanford। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০১-০১ 
  25. Jeffrey Rosen. "The Web Means the End of Forgetting" New York Times, July 19, 2010
  26. Kosinski, Michal; Stillwell, D. (২০১৩)। "Private traits and attributes are predictable from digital records of human behavior": 5802–5805। ডিওআই:10.1073/pnas.1218772110পিএমআইডি 23479631পিএমসি 3625324  
  27. Popkin, Helen A.S., "Gov't officials want answers to secret iPhone tracking" MSNBC, "Technology", April 21, 2011
  28. "Apple denies tracking iPhone users, but promises changes" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৫ জুলাই ২০১৪ তারিখে, Computerworld, 27 April 2011
  29. "What I've Learned: Andy Grove", Esquire Magazine, 1 May 2000
  30. Prosser, William (১৯৬০)। "Privacy": 389। 
  31. Solove

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা