গাজনার বিল
গাজনার বিল বা বিল গাজনা পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার বৃহত্তম বিল। বিলটি ১৬ টি ছোট-বড় বিলের সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে। এটি সুজানগর উপজেলার প্রায় মাঝখানে অবস্থিত। পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অর্থনৈতিক উন্নয়ন অনেকাংশ এই বিলের উপর নির্ভর করে। সুজানগর উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নের সাথেই বিলটি সংযুক্ত রয়েছে। গাজনার বিলের পানির প্রধান উৎস যমুনা নদী, পদ্মা নদী ও চলন বিল।[১] গাজনার বিল ও পদ্মা নদীর সংযোগ কেন্দ্র হিসেবে রয়েছে "বাদাই সুইচ গেইট" নামে একটি সুইচ গেইট রয়েছে। সুইচ গেইটটি বাঁধেরহাট-সুজানগর সড়কের (মুজিব বাঁধ বলে পরিচিত) সাগরকান্দি গ্রামে বাদাই নদের উপরে অবস্থিত।[২]
গাজনার বিল | |
---|---|
অবস্থান | সুজানগর |
স্থানাঙ্ক | ২৩°৩৩′ উত্তর ৮৯°১৬′ পূর্ব / ২৩.৫৫° উত্তর ৮৯.২৬° পূর্ব |
ধরন | বৃহৎ বিল |
প্রাথমিক অন্তর্প্রবাহ | সুজানগর উপজেলার ১০ টি ইউনিয়ন |
অববাহিকার দেশসমূহ | বাংলাদেশ |
সর্বাধিক দৈর্ঘ্য | ১২ বর্গমাইল
বা ৩১০০ হেক্টর বা ৩১ বর্গকিলোমিটার |
গড় গভীরতা | ১০-২০ ফুট |
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পাবনা জেলাকে বন্যামুক্ত ও গাজনার বিলের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করতে বেড়ার নগরবাড়িতে ১৫৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘মুজিব বাঁধ’ নির্মাণ করা হয়।[১]
২০১০ সালে বিলের ঐতিহ্য ফেরাতে ৪১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।[৩] এই প্রকল্পের আওতায় সারা বছর বিলে পানি ধরে রাখতে ছোট ছোট সংযোগ খাল তৈরি করা হয়।[৪]
বিস্তৃতি
সম্পাদনাসুজানগর উপজেলার আত্রাই ও পদ্মা নদীর সংযোগে সৃষ্ট এ বিল গাজনা (গ-হস্তী বলেও পরিচিত) উপজেলার সবগুলো ইউনিয়ন জুড়ে বিস্তৃত। বিলের পূর্ব পাশে রানীনগর ইউনিয়ন, পশ্চিম পাশে মানিকহাট ইউনিয়নের বোনকোলা, উলাট, খয়রান সহ কিছু গ্রাম স্পর্শ করেছে। গাজনার বিলের এক পাশে রয়েছে বোনকোলা গ্রাম, এক পাশে রয়েছে হাটখালি ইউনিয়ন, এক পাশে রয়েছে চরগোবিন্দপুর ও আরেক পাশে খয়রান-গাবগাছি। এই চারটি স্থানের মাঝেই গাজনার বিল অবস্থিত।[৫]
আয়তন
সম্পাদনাগাজনার বিলের আয়তন প্রায় ১২ বর্গ মাইল বা ৩১০০ হেক্টর বা ৩১ বর্গকিলোমিটার।[৬] তবে এই বিলের সব মিলিয়ে পানি না আসা অংশসহকারে আবাদি জমির পরিমান প্রায় ১০,০০০ হেক্টর। এইসব জমিতে পাট, পিঁঁয়াজ ও বিভিন্ন জাতের ধান ও মাছের চাষ প্রভৃতি উৎপাদন হয়ে থাকে।[৭][৮] এই বিলের ৯,০০০ হেক্টর জমিতে পিয়াজ উৎপন্ন হয়ে থাকে।
পর্যটন কেন্দ্র
সম্পাদনাএই বিলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে প্রতি বছর বহু পর্যটক ভ্রমণ করে থাকে। গাজনার বিলের মধ্যে খয়রান ব্রিজ নামক স্থানে বহু মানুষের সমাগম ঘটে থাকে।[৯][১০] বিশেষ করে ঈদ ও বিশেষ ছুটির দিনে এখানে পর্যটকের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "কচুরিপানায় ভরা গাজনা বিল"। Jugantor (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২৭।
- ↑ "পাবনার গাজনার বিল ভাসছে বন্যায়"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-০৮।
- ↑ Superadmin। "গাজনার বিলের ক্যানালেও পানি নেই"। www.dailykaratoa.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২৭।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "প্রাণ ফেরেনি পাবনার গাজনার বিলে"। SAMAKAL (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৪-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২৭।
- ↑ "কচুরিপানায় ছেয়ে গেছে গাজনার বিল, দূষিত হচ্ছে পানি"। NTV Online (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-১০-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২৭।
- ↑ "পাবনার গাজনার বিলে হঠাৎ বন্যায় কৃষকের সর্বনাশ"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-০৮।
- ↑ "শুকিয়ে যাওয়া গাজনার বিলে পেঁয়াজ চাষ"। দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২৭।
- ↑ "গাজনার বিলে মাছের পরিবর্তে ধান চাষ!"। দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২৭।
- ↑ "সুজানগরে গাজনার বিলে পর্যটকদের ভিড়"। দৈনিক ইত্তেফাক। ২০২১-০৮-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২৭।
- ↑ "খয়রান ব্রিজ, পাবনা"। সরকারি বাতায়ন। ২৭ এপ্রিল ২০২২।