গভঃ মডেল গার্লস হাই স্কুল

মডেল স্কুল

গভঃ মডেল গার্লস হাই স্কুল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের অন্যতম একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

গভঃ মডেল গার্লস হাই স্কুল
গভঃ মডেল গার্লস হাই স্কুলের প্রধান ফটক
ঠিকানা
শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বর,

হালদার পাড়া, কোর্ট রোড

,
৩৪০০

তথ্য
বিদ্যালয়ের ধরনসরকারি
নীতিবাক্যজ্ঞানই শক্তি
প্রতিষ্ঠাকাল১৯৩৬ ইং
প্রতিষ্ঠাতাজমিদার বাবু কমলারঞ্জন রায়
অবস্থাসক্রিয়
বিদ্যালয় বোর্ডকুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড
বিদ্যালয় জেলাব্রাহ্মণবাড়িয়া
কর্তৃপক্ষবাংলাদেশ সরকার
বিভাগউচ্চ বিদ্যালয়
নিয়ন্ত্রকমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড
সেশনডিসেম্বর-জানুয়ারি
বিদ্যালয় কোড১০৩২২৫
প্রধান শিক্ষককাজী শহিদুল ইসলাম (২০২৩ - বর্তমান)
অনুষদমানবিক, বিজ্ঞান, বাণিজ্য
শিক্ষকমণ্ডলী৩০
কর্মচারী
শ্রেণী১ম-১০ম
লিঙ্গনারী
বয়সসীমা৬-২০
শিক্ষার্থীর সংখ্যা১৩০০+
ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত৬০:১
শিক্ষা ব্যবস্থাসরাসরি
ভাষাবাংলা
সময়সূচির ধরনসকাল - বিকাল
সময়সূচি১০:০০ ঘটিকা হতে ০৪:০০ ঘটিকা
শ্রেণীকক্ষ৩০+
শিক্ষায়তন১.২৫ একর
ক্যাম্পাসের ধরনশহুরে
হাউস
রং৮৭
ডাকনামমডেল স্কুল, জিএমজিএইচএস
ওয়েবসাইটhttp://www.gmghschool.edu.bd

ইতিহাস সম্পাদনা

তিতাস নদী বিধৌত সমভূমি ও সংস্কৃতির লীলাভূমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাংলাদেশের একটি প্রথম শ্রেণীর জেলা শহর। পূর্বে ইহা মহকুমা শহর ছিল। ১৯৮৪ সালে জেলা শহরে উন্নিত করা হয়। এই জেলাটি ভারত উপমহাদেশের শিল্প, সাহিত্য, সঙ্গীত এবং সংস্কৃতির পীঠস্থান রূপে সুপরিচিত।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ঐতিহ্য, ইতিহাস ও বৈচিত্রে ভরপুর। আজকের ব্রাহ্মণবাড়িয়া (জেলা) পূর্ণাঙ্গরূপ লাভ করে ইংরেজ রাজত্বকালে। ১৭৯০ সালে কুমিল্লা জেলা গঠিত হয়। ১৮৬০ সালে গঠিত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা। মহকুমা সদর গঠিত হওয়ার পর সদর মহকুমা অফিস নাসির নগর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে স্থানান্তর করা হয়। ১৮৬০ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা গঠিত হওয়ার পর মহকুমাকে ৬টি থানায় বিভক্ত করা হয়। থানাগুলো হলঃ (১) ব্রাহ্মণবাড়িয়া (২) সরাইল (৩) নাসিরনগর (৪) কসবা (৫) নবীনগর ও (৬) বাঞ্ছারামপুর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা প্রথম শ্রেণীর মহকুমা অথচ শহরে কোনো বালিকা বিদ্যালয় না থাকায় নারী শিক্ষার ভীষণ অসুবিধা প্রতীয়মান হচ্ছিল।

শিক্ষা জাতীর মেরূদন্ড। শিক্ষা ছাড়া কোন জাতির সর্বাঙ্গীণ উন্নতি অসম্ভব। আর এ জাতির অর্ধেক হচ্ছে নারী। সুতরাং নারী শিক্ষার প্রসার না ঘটলে অর্ধেক জাতিরই উন্নতি ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা সুনিশ্চিত; একথা উপলব্ধি করেছিলেন তৎকালীন কয়েকজন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি।

যাঁদের উৎসাহ ও আনুপ্রেরণায় ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে তদানীন্তন সরাইল এস্টেটের স্বনামধন্য জমিদার বাবু কমলারঞ্জন রায় তার মাতা সরোজনী দেবীর নামানুসারে “রাণী সরোজনী বালিকা বিদ্যালয়” নামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করেন।

বর্তমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের দক্ষিণাংশে যেখানে পুরুষ রোগীদের ওয়ার্ড আছে, সেখানে প্রথম এই বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। প্রথমে এই বিদ্যালয়টি মাত্র কয়েকজন ছাত্রী নিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়রূপে আত্মপ্রকাশ করে।

পরবর্তীকালে ছাত্রী সংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকায় এবং শহরের নারী শিক্ষা উৎসাহী ব্যক্তিগণের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়টি “রাণী সরোজনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে” পরিণত করা হয়।

দক্ষ শিক্ষক/ শিক্ষিকাগণের পরিচালনায় বিদ্যালয়টি একটি আদর্শ বিদ্যালয়ে পরিণত হয়। দ্রুতগতিতে ছাত্রীবৃদ্ধির দরুন স্থানাভাব দেখা দেয়। ইহাতে ছাত্রীদের ভীষণ অসুবিধা হওয়ায় তদানীন্তন মহকুমা প্রশাসক জনাব মুনীর হোসেন সি, এস, পি, সাহেব এই বালিকা বিদ্যালয় স্থানান্তরের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন করেন এবং বিদ্যালয়টিকে একটি আধুনিক আদর্শ বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করেন।

বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আরো সহযোগিতা করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খান বাহাদুর জনাব শহীদুল হক সাহেব, জনাব আজিজুর রহমান মোল্লা, জনাব গাজী মিয়া সহ শহরের বহু ধনাঢ্য ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি।

গভঃ মডেল গার্লস হাইস্কুল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মধ্যস্থলে হালদার পাড়ায় এক মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৪ সালের ১০ ই অক্টোবরতিনি এই বিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৫৫ সালের ১৬ ই ফেব্রুয়ারি মহকুমা প্রশাসক জনাব এন, এম, খাঁন সি, এস, পি, সাহেব বিদ্যালয়টি উদ্বোধন করেন ও “আদর্শ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়” নাম পরিবর্তন করে “মডেল গার্লস হাই স্কুল” নামকরণ করেন।

অতঃপর ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়ের কৃতিছাত্রী বেগম রওশন এরশাদ বর্তমান বিরোধী দলীয় নেত্রী এর বিশেষ সহযোগিতায় বিদ্যালয়টি সরকারিকরণকরা হয় এবং নাম রাখা হয় “গভঃ মডেল গার্লস হাই স্কুল”।[১]

অবকাঠামো সম্পাদনা

তিতাস নদী বিধৌত ঐতিহ্যবাহী গভঃ মডেল গার্লস হাই স্কুলের নির্মাণ কৌশল অত্যন্ত বৈচিত্র্যপূর্ণ। স্মৃতিবিজড়িত বিদ্যালটির উত্তর-পশ্চিমে সেমিপাকা বিশাল স্কুল ভবন, পূর্ব দিকে রয়েছে তিনতলা একাডেমিক ভবন। বিদ্যালয়ের বিশেষ আকর্ষণ হলো অফিস কক্ষের সামনে বিচিত্র বর্ণের বাহারি ফুলের সমাহারপূর্ণ মনোমুগ্ধকর ফুলের বাগান। বিদ্যালয়ের মধ্যস্থলে অবস্থিত বিরাট হলরুম। এই হলরুমের মঞ্চে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। হলরুমের পিছনে রয়েছে বিশাল মাঠ যাতে জেলার অধিকাংশ খেলাধুলা এ মাঠেই অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সব মিলিয়ে বিদ্যালয়টির পরিবেশ হয়ে উঠেছে নয়নাভিরাম ও মনোমুগ্ধকর।

উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী সম্পাদনা

প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই বিদ্যালয়টি অত্যন্ত সুনামের সাথে লেখা পড়ার পাশপাশি সহপাঠক্রমিক কার্যাবলীতে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে এসেছে। এই বিদ্যালয় থেকে বহু জ্ঞানী-গুণী ছাত্রী বের হয়ে গেছে এবং তারা স্ব স্ব ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছে। এর মধ্যে অন্যতম বর্তমান বিরোধী দলের নেত্রী রওশন এরশাদ, অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম সহ আরও অনেকে।

অবস্থান সম্পাদনা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রাণকেন্দ্রে মনোরম পরিবেশে পুরাতন কোর্ট বিল্ডিংয়ের পশ্চিম পার্শ্বে ০৫ নং ওয়ার্ড এর হালদার পাড়ায় বিদ্যালয়টি অবস্থিত।[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা