গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র বাংলাদেশের একটি বেসরকারি সাহায্য সংস্থা, যেটির কর্মসূচির ভিত্তি স্বাস্থ্য সেবার উপর নির্ভরশীল।[১] স্বাধীন বাংলাদেশে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হচ্ছে প্রথম স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা হাসপাতাল। ১৯৭৭ সালে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সমন্বিত সমাজস্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা বা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ জাতীয় পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করে।[২][৩]
প্রতিষ্ঠাকাল | এপ্রিল ১৯৭২ |
---|---|
প্রতিষ্ঠাতা | ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী |
ধরন | অলাভজনক |
অবস্থান | |
এলাকাগত সেবা | বাংলাদেশ |
ওয়েবসাইট | gonoshasthayakendra |
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯৭১ সালের মার্চ মাসে ব্রিটেনে বসবাসরত এক হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি চিকিৎসক বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন গঠন করে, যার সভাপতি ছিলেন ডা. এ এইচ সায়েদুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ১৯৭১ সালের মে মাসের প্রথম দিকে বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশন এবং যুক্তরাজ্য যৌথভাবে এম এ মোবিন ও জাফরুল্লাহকে মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করার জন্য ভারতে পাঠায়। তাঁরা বাংলাদেশ অস্থায়ী সরকারের (মুজিবনগর) সহায়তায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মেলাঘরে ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করেন। এই হাসপাতালের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন সেনাবাহিনীর ডাক্তার সিতারা বেগম।
স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল ঢাকার ইস্কাটন সড়কে পুনঃস্থাপিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের এপ্রিলে গ্রামকে উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু রূপে গড়ে তোলার জন্য চল গ্রামে যাই স্লোগান ও উদ্দেশ্য নিয়ে হাসপাতালটি সাভারে স্থানান্তরিত হয়। তখন নামকরণ করা হয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।[২]
প্রকাশনা
সম্পাদনাগণস্বাস্থ্যের মুখপত্র হলো মাসিক গণস্বাস্থ্য। ১৩৮৮ বঙ্গাব্দ (১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দ) থেকে অদ্যাবধি এটি সক্রিয় আছে। বাংলা ভাষায় চিকিৎসাবিজ্ঞানের তথ্যসূত্র-সমন্বিত খবরাখবর সহ রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক আধেয় প্রকাশিত হয়ে থাকে এতে। এর বর্তমান সম্পাদনা পরিষদের সভাপতি জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও সম্পাদক বজলুর রহিম।[৪][১]
পুরস্কার ও স্বীকৃতি
সম্পাদনা১৯৭৭ সালে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সমন্বিত সমাজস্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা সর্বোচ্চ জাতীয় পুরস্কার স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার লাভ করে। এছাড়া ১৯৮৫ সালে ম্যাগসাসে পুরস্কার, ১৯৯২ সালে সুইডেন থেকে রাইট লাইভহুড পুরস্কার এবং ২০০২ সালে বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্টারন্যাশনাল হেলথ হিরো পুরস্কার লাভ করে।[২]
করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কিট উৎপাদন
সম্পাদনাগণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২০২০ সালের ১৯ মার্চ করোনাভাইরাস শনাক্ত করার কিট উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় রি-অ্যাজেন্ট আমদানির সরকারি অনুমোদন পায়।[৫] ২০২০ সালের ২৫ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার্স ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) কাছে করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিট 'জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লট' হস্তান্তর করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।[৬]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ মোরশেদ চৌধুরী, তরুণ চক্রবর্তী ফিঝু এবং সন্ধ্যা রায় (২০১২)। "গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ ক খ গ সানজিদা খান (২০১২)। "জাতীয় পুরস্কার"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ "স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের তালিকা"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ (বাংলাদেশ)। ২০২১।
- ↑ চৌধুরী, জাফরুল্লাহ (অক্টোবর ২০২০)। "প্রথম পাতা"। মাসিক গণস্বাস্থ্য।
- ↑ "কিট উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানির অনুমোদন পেয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র"। ২০২০-০৩-১৯। Archived from the original on ২০২০-০৪-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-০৯।
- ↑ "কিট হস্তান্তর করল গণস্বাস্থ্য, আসেননি সরকারের কেউ"। কালের কণ্ঠ। ২০২০-০৪-২৫। ২০২০-০৪-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-২৫।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- “গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র” - বাংলাপিডিয়ায় প্রাপ্ত নিবন্ধ।