গণনায়ক হল বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সতীনাথ ভাদুড়ীর প্রথম ছোটোগল্প-সংকলন। ১৯৪৮ সালে কলকাতার বেঙ্গল পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত এই সংকলনের অন্তর্গত গল্পগুলি হল: "গণনায়ক", "বন্যা", "আন্টাবাংলা", "পঙ্কতিলক" ও "ভূত"।[১][২][৩]

গণনায়ক
লেখকসতীনাথ ভাদুড়ী
দেশভারত
ভাষাবাংলা
ধরনছোটোগল্প-সংকলন
প্রকাশকবেঙ্গল পাবলিশার্স, কলকাতা
প্রকাশনার তারিখ
১৯৪৮
মিডিয়া ধরনছাপা (শক্তমলাট)

"গণনায়ক" গল্পে দেশভাগ-উত্তরকালে সাধারণ হিন্দু-মুসলমানকে ঠকিয়ে মুনীমজীর মতো ভণ্ড দেশভক্তের অর্থবান হয়ে ওঠার কাহিনি পাওয়া যায়। কমিশনের রায় বেরনোর আগেই ভারতপাকিস্তানের পতাকা বিক্রি করে; তারপর দুই দেশের মধ্যে অঞ্চল বাঁটোয়ারা হয়ে গেলে দুই সম্প্রদায়ের থেকে পতাকা ফিরিয়ে নিয়ে আবার অন্যত্র বিক্রি করবার ফন্দী আঁটে।[৪] "বন্যা" গল্পে দেখা যায় ব্রাহ্মণ নৌখে ঝা ও নিম্নবর্ণীয় সুমৃৎ তিয়রের পরিবারকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় কীভাবে সামাজিক মর্যাদা ও জাতপাতের সংকীর্ণতা মুছে একত্রিত করেছিল; আবার কুশী নদীর জল নেমে গেলে পুরনো কলহ আবার জেগে উঠল।[৪] "আণ্টাবাংলা" গল্পে এক ওঁরাও পরিবারের করুণ পরিণতি বর্ণিত হয়েছে।[৫] পূর্ণিয়ার নীলকর বংশধরদের অত্যাচার ও খ্রিস্টান ওঁরাওদের দাসজীবনের এক ঐতিহাসিক চিত্র এই গল্পে পাওয়া যায়।[৪] আবার "ভূত" গল্পে রয়েছে সুরজকুমারীর বিবাহকে কেন্দ্র করে বিহারের গ্রাম্য ও শহুরে কায়স্থ সমাজের দ্বন্দ্ব। তবে এই গল্পের মূল দ্বন্দ্বটি শেষপর্যন্ত হিন্দু ও মুসলমানের সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্বের দিকে নির্দেশিত।[৪]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "গ্রন্থপঞ্জি", ভারতীয় সাহিত্যকার পুস্তকমালা: সতীনাথ ভাদুড়ী, স্বস্তি মণ্ডল, সাহিত্য অকাদেমি, নতুন দিল্লি, ২০০২ সংস্করণ, পৃ. ৭৭-৮০
  2. কালের প্রতিমা: বাংলা উপন্যাসের পঁচাত্তর বছর (১৯২৩-১৯৯৭), অরুণকুমার মুখোপাধ্যায়, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ২০১৯ সংস্করণ, পৃ. ১৪৪
  3. সংসদ বাংলা সাহিত্যসঙ্গী, সংকলন ও সম্পাদনা: শিশিরকুমার দাশ, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, ২০০৩ সংস্করণ, পৃ. ৯০
  4. বাংলা সাহিত্য পরিচয় ও সাহিত্যটীকা: প্রাচীন-মধ্য-আধুনিক যুগ, ড. পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তুলসী প্রকাশনী, কলকাতা, ২০০৮ সংস্করণ, পৃ. ৫৭৫-৭৬
  5. "বাংলা ছোটগল্পে ব্রাত্যজীবন", সোহরাব হোসেন, প্রবন্ধ সঞ্চয়ন, সম্পাদনা: ড. সত্যবতী গিরি ও ড. সমরেশ মজুমদার, রত্নাবলী, কলকাতা, ২০০৬ সংস্করণ, পৃ. ১২২৯-১২৩০