খালসা এইড

সমাজসেবী সংস্থা

খালসা এইড একটি আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংগঠন, যা শিখ ধর্মের মূলনীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। শিখ ধর্মের মূলনীতির উপর প্রতিষ্ঠিত হলেও, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে বিশ্বব্যাপী আর্তমানবতার সেবা করে আসছে সংস্থাটি। সংস্থাটি ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে যুক্তরাজ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়।

খালসা এইড
ਖਾਲਸਾ ਏਡ
"গোটা মানবজাতিকে এক হিসেবে বিবেচনা কর" - গুরু গোবিন্দ সিং জি
প্রতিষ্ঠাকাল১৯৯৯ (1999)
প্রতিষ্ঠাতারবি সিং
প্রতিষ্ঠাস্থানস্লাফ, যুক্তরাজ্য
ধরনএনজিও
আইনি অবস্থাবৈধ ব্রিটিশ দাতব্য প্রতিষ্ঠান
আলোকপাতদুর্যোগ উপদ্রুত ও মানবিক সংকটে পড়া এলাকায় আর্তমানবতার সেবা
সদরদপ্তরস্লাফ, যুক্তরাজ্য
এলাকাগত সেবা
বিশ্বব্যাপী
সিইও
রবি সিং
আয়
এক মিলিয়ন পাউন্ড
কর্মী সংখ্যা
স্বেচ্ছাকর্মী
৫০
ওয়েবসাইটwww.khalsaaid.org

কার্যক্রম সম্পাদনা

প্রতিষ্ঠার বছরে সংস্থাটির প্রথম কাজ ছিল আলবেনিয়া-যুগোস্লাভিয়া সীমান্তে যুগোস্লাভিয়া যুদ্ধের শিকার হওয়া হাজার হাজার শরণার্থীদের খাদ্য সরবরাহ ও তাদের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা। ২০০০ সালে খালসা এইড পূর্ব ভারতের ওডিশায় ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত মানুষদের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়গুলো মেরামতে সহায়তা করে। ২০০১ সালে সংস্থাটি তুরস্কে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত ছিল।

উল্লেখ্য যে, খালসা এইডে যারা কাজ করেন, তারা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতেই কাজ করেন। এইসব স্বেচ্ছাসেবীদের হাজারো ব্যস্ততার মাঝে আর্তমানবতার সেবা করার জন্য সময় বের করতে হয়। সংস্থাটি মূলত যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী শিখদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়।

দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা সম্পাদনা

ফোকাস পাঞ্জাব সম্পাদনা

এই প্রকল্পটি ২০১০ সালে চালু হয়। ১৯৮৪ সালে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সাহায্য করা হয় এই প্রকল্পের মাধ্যমে। বর্তমানে দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৫০ পরিবারকে এই প্রকল্পের আওতায় সাহায্য করা হয়।

এছাড়ায় পাঞ্জাবের দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষদের সাহায্য করা হয় এই প্রোজেক্টের মাধ্যমে।[১]

লঙ্গর এইড সম্পাদনা

এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য, দুনিয়ার বুক থেকে ক্ষুধা শব্দটির বিলুপ্তি ঘটানো। সংস্থাটি এই প্রকল্পের মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ক্ষুধাপীড়িত জনগোষ্ঠীর মাঝে বিনামূল্যে খাদ্য সরবরাহ করে।[২]

আগের প্রকল্প সম্পাদনা

  • আলবেনিয়া (কসোভোর শরণার্থীদের মাঝে আর্তমানবতার সেবা করা)
  • তুরস্ক (ভূমিকম্প উপদ্রুত অঞ্চলে ত্রাণ সরবরাহ)
  • ওডিশা, ভারত (ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয় পুনঃনির্মাণে সহায়তা)
  • গুজরাত, ভারত (ভূমিকম্প উপদ্রুত এলাকায় ত্রাণ সরবারহ)
  • গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো (আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের দরুন সৃষ্ঠ মানবিক বিপর্যয়ে ত্রাণ সরবরাহ)
  • সোমালিয়া (পানি বিশুদ্ধিকরণ কাজে সহায়তা)
  • কাবুল, আফগানিস্তান (যুদ্ধ পরবর্তী পুনর্বাসনে সহায়তা)
  • পাকিস্তান (পুনর্বাসন ও সহায়তা)
  • ইন্দোনেশিয়া (ছোট শিশুদের জন্য আর্ট থেরাপি সেশন)
  • পাঞ্জাব, ভারত (মাদকসমস্যার সমাধানে অংশগ্রহণ)
  • পাথরঘাট, ঢাকা, বাংলাদেশ, (ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত এলাকায় ত্রাণ সাহায্য)
  • পাঞ্জাব, ভারত(বন্যাপ্লাবিত অঞ্চলে ত্রাণ সহায়তা)
  • হাইতি (পানির পাম্প সরবরাহ)
  • বসনিয়ার বন্যা (মে ২০১৪)[৩]
  • বিশাখাপট্টনম সাইক্লোন[৪]
  • অস্ট্রেলিয়ায় সাইক্লোন (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)[৫]
  • ইয়েমেন গৃহযুদ্ধ (জুলাই ২০১৫)[৬]
  • ২০১৬ সালে গ্রীসে শরণার্থী সংকটে শরণার্থীদের মাঝে ওষুধ ও খাদ্য সরবরাহ[৭]
  • ২০১৭ সালে সংস্থাটি বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে মিয়ানমারের রোহিঙ্গার শরণার্থীদের খাদ্য বস্ত্র সরবরাহ করে এবং বাসস্থান সুনিশ্চিত করে।[৮]
  • ২০১৭ এর আগস্টে সংস্থাটি অ্যাসিরীয় খ্রিষ্টানদের মাঝে যুদ্ধে বিদ্যুৎসুবিধা পুনর্প্রদান করে।[৯]
  • ২০১৮ এর জানুয়ারিতে সংস্থাটি ২০০ মেয়েশিশুকে তাদের নিজেদের পছন্দের পোশাক কিনে দেয়।[১০]
  • ২০১৮ সালে কেরালায় বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী নিয়ে আর্তমানবতার সেবা করেছিল সংস্থাটি।[১১]
  • ইন্দোশিয়ায় বন্যা ও বন্যা থেকে সৃষ্ট সুনামির দরুন সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের ত্রাণসামগ্রী প্রদান করেছিল সংস্থাটি।[১২]
  • ২০১৯ সালে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় সিপিআরএফ জওয়ানদের উপর হওয়া এক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতের বিভিন্ন স্থানে কাশ্মীরি ছাত্রদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে ও কাউকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। খালসা এইড এসব ছাত্রদের সাহায্যে এগিয়ে আসে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বসবাসকারী এসব ছাত্রদের পাঞ্জাবের মোহালির একটি গুরুদুয়ারায় জড়ো করে, তাদের মাঝে বিনামূল্যে খাদ্য সরবরাহ করে ও জম্মু কাশ্মীরে তাদের নিজেদের বাড়িতে সুনিরাপদে পাঠিয়ে দেয়।[১৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Focus Punjab"Focus Punjab (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-১১-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-১৬ 
  2. "Langar Aid | feeding humanity"langaraid.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-১৬ 
  3. "Bosnia Floods"www.khalsaaid.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-১৬ 
  4. "Vishakhapatnam Cyclone"www.khalsaaid.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-১৬ 
  5. "Australia: Cyclone Marcia"www.khalsaaid.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-১৬ 
  6. "Yemen Civil War"www.khalsaaid.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-১৬ 
  7. "Greece: Refugee Crisis"www.khalsaaid.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-১৬ 
  8. "Sikhs are rushing to the aid of Rohingya Muslims fleeing Burma"। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭। 
  9. https://www.khalsaaid.org/projects/restoring-electricity-to-assyrian-orthodox-christians
  10. https://www.khalsaaid.org/news/the-forgotten-yazidi-women-of-iraq
  11. https://www.indiatimes.com/news/india/khalsa-aid-joins-relief-operations-in-kerala-serves-food-to-stranded-and-homeless-people-351428.html
  12. "Indonesia Earthquake and Tsunami Relief"www.khalsaaid.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-১৬ 
  13. https://freepresskashmir.com/2019/02/21/khalsa-aid-for-kashmir-we-just-took-one-single-step-to-restore-faith-in-humanity/