ক্রিয়াপদ (সংস্কৃত ব্যাকরণ)

সংস্কৃত ভাষায় ক্রিয়াপদগুলোর মূল হলো ধাতু।কাল, পুরুষ, ক্রিয়ার ভাব, বচন, বাচ্য ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে ধাতুগুলো বিভিন্ন ক্রিয়াপদের সৃষ্টি করে। মধ্যম পুরুষে সম্ভ্রমাত্মক (আপনি, আপনাদের) বোঝাতে সাধারণত ক্রিয়াপদ নাম পুরুষের মতো হ

সাধারণ ধারণা সম্পাদনা

অধিকাংশ ভাষার মতোই সংস্কৃতে কাল ও পুরুষভেদে ক্রিয়াপদ ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করে। সংস্কৃতে বচন তিন ধরনের[১]।১)একবচন ২)দ্বিবচন ৩)বহুবচন। উভয়জাতীয় কোনো কিছু বোঝাতে ক্রিয়াপদ বচনের দ্বিবচনের বিশেষ নিয়মে গঠিত হয়।

ধাতু সম্পাদনা

সংস্কৃত ভাষায় ধাতুকে প্রধানত দুইভাগে ভাগ করা হয়। একটি "পরস্মৈপদী"(যেমন:√সেব্ ধাতু) অপরটি "আত্মনেপদী"(যেমন:√পঠ্ ধাতু)। কিছু ক্ষেত্রে একই ধাতু পরস্মৈপদীও হতে পারে আবার আত্মনেপদীও হতে পারে।

বর্তমান কাল সম্পাদনা

সাধারণত সংস্কৃত ভাষার বর্তমান কাল নাম পুরুষ বোঝাতে একবচনে "তি",দ্বিবচনে "তঃ" ও বহুবচনে "অন্তি" ক্রিয়াবিভক্তি যুক্ত হয়। মধ্যম পুরুষে একবচনে "সি", দ্বিবচনে "থঃ" ও বহুবচনে "থ" ক্রিয়াবিভক্তি যুক্ত হয়। উত্তম পুরুষ বোঝাতে একবচনে "আমি", দ্বিবচনে "আবঃ" ও বহুবচনে "আমঃ" যোগ হয়।

√ভূ-ধাতু (হওয়া) √পঠ্-ধাতু (পড়া)
একবচন দ্বিবচন বহুবচন একবচন দ্বিবচন বহুবচন
উত্তম পুরুষ ভবামি (হই) ভবাবঃ (দুজন হই) ভবামঃ (আমরা হই) পঠামি (পড়ি) পঠাবঃ (দুজন পড়ি) পঠামঃ (আমরা পড়ি)
মধ্যম পুরুষ ভবসি (হও) ভবথঃ (দুজন হও) ভবথ (তোমরা হও) পঠসি (পড়) পঠথঃ (দুজন পড়) পঠথ (তোমরা পড়)
নাম পুরুষ ভবতি (হয়) ভবতঃ (দুজন হয়) ভবন্তি (তারা হয়) পঠতি (পড়ে) পঠতঃ (দুজন পড়ে) পঠন্তি (তারা পড়ে)

এভাবে √লিখ্(লেখা অর্থে)[২],√চল্(চলা অর্থে)[৩],√পচ্(রান্না অর্থে)[৪] ইত্যাদি ধাতুর সঙ্গেও ক্রিয়াবিভক্তি যোগ করে অনুরূপভাবে ক্রিয়াপদ গঠন সম্ভব। তবে অনেক ক্ষেত্রেই এই ক্রিয়াবিভক্তিগুলো ছাড়াও অতিরিক্ত স্বর বা ব্যঞ্জনধ্বনির আবির্ভাব হয় বা কোনো স্বর বা ব্যঞ্জনধ্বনি পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে। যেমন:√কৃ ধাতু থেকে "করোমি" (করি)। এখানে "আমি" না হয়ে "ওমি" হয়েছে।

অনুজ্ঞাসূচক ক্রিয়াপদও বর্তমান কালের অংশ রূপে পরিগণিত হয়।

√পঠ্-ধাতু (পড়া) √কৃ-ধাতু (করা)
একবচন দ্বিবচন বহুবচন একবচন দ্বিবচন বহুবচন
উত্তম পুরুষ পঠানি পঠাব পঠাম করবাণি করবাব করবাম
মধ্যম পুরুষ পঠ পঠতম্ পঠত কুরু কুরুতম কুরুত
নাম পুরুষ পঠতু পঠতাম পঠন্তু করোতু কুরুতাম কুর্বন্তু

ক্রিয়াপদ গঠন করলেও ণ-ত্ব বিধান ও ষ-ত্ব বিধান প্রযোজ্য হবে। যেমন:ধাতু হলো √সিচ্ কিন্তু এর সঙ্গে যদি "অভি" উপসর্গ যোগ হয় তাহলে অনুজ্ঞাসূচক ক্রিয়াপদ হবে "অভিষিঞ্চতু"(নাম পুরুষে একবচন)। এখানে "√সিচ্" এর "স" হবে "ষ"। আবার উপরে উল্লিখিত "করবাণি" ণ-ত্ব বিধান অনুযায়ী "ণ" হয়েছে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Sanskrit verbs"। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ 
  2. ব্যবহারিক বাংলা অভিধান। ঢাকা: বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ১০৫৬। 
  3. ব্যবহারিক বাংলা অভিধান। ঢাকা: বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ৪০৩। 
  4. ব্যবহারিক বাংলা অভিধান। ঢাকা: বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ৭০৯।