ক্যালরিমিটার

তাপমাত্রা পরিমাপের যন্ত্রপাতি

যে যন্ত্রের সাহায্যে তাপ পরিমাপ করা হয়, তাকে ক্যালরিমিটার বলা হয়। বিজ্ঞানী রেনো একটি উন্নত ক্যালরিমিটার উদ্ভাবন করেন যাকে রেনোর ক্যালরিমিটার বলা হয়। এর তিনটি প্রধান অংশ থাকে- ক্যালরিমিটার, গেট ও বাষ্প উত্তাপক।[১]

বিশ্বের প্রথম আইস-ক্যালোরিমিটার, যা ১৭৮২-৮৩ সালের শীতকালে বিভিন্ন রাসায়নিক পরিবর্তনে বিকশিত তাপ নির্ধারণের জন্য অঁতোয়ান লাভোয়াজিয়ে এবং পিয়ের সিমোঁ লাপ্লাস দ্বারা ব্যবহৃত হয়েছিল; গণনা যা জোসেফ ব্ল্যাকের সুপ্ত তাপের পূর্ব আবিষ্কারের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছিল। এই পরীক্ষাগুলি তাপরসায়নের ভিত্তি চিহ্নিত করে।

ক্যালরিমিটারের বিভিন্ন অংশ সম্পাদনা

নিম্নোক্ত অংশগুলো নিয়ে ক্যালরিমিটার গঠিত:

ক্যালরিমিটার সম্পাদনা

এ যন্ত্রের প্রধান অংশ হচ্ছে একটি চোঙাকৃতির পাত্র, যাকে ক্যালরিমিটার বলে। সাধারণত পাত্রটি তামার তৈরি হয়। একটি বড় কাঠের বক্সে অপরিবাহী বস্তুর ওপর এটি বসানো হয়। ক্যালরিমিটারে একই পদার্থের তৈরি একটি নাড়ানি বা আলোড়ক থাকে। স্ট্যান্ডের সাহয্যে একটি থার্মোমিটার ঝুলানো হয় যার সাহায্যে ক্যালরিমিটারে রাখা তরলের তাপমাত্রা মাপা হয়। ক্যালরিমিটারের ঢাকনির মধ্যে থার্মোমিটার ও আলোড়ক প্রবেশ করানোর জন্য একটি ছিদ্র থাকে। ক্যালরিমিটারকে চারদিক বন্ধ একটি প্রকোষ্ঠে রাখা হয়।[১]

গেট সম্পাদনা

ক্যালরিমিটার এবং বাষ্প উত্তাপক এর মাঝে একটি গেট থাকে। এটি ক্যালরিমিটার ও বাষ্প উত্তাপক এর মাঝে দেয়াল হিসাবে কাজ করে। প্রয়োজনমত গেটটিকে উপরে তুলে ক্যালরিমিটারকে বাষ্প উত্তাপকের নিচে আনা হয়।[১]

বাষ্প উত্তাপক সম্পাদনা

বাষ্প উত্তাপকের সাহায্যে কোন ক্ষুদ্র বস্তুকে বাষ্পের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শ ছাড়াই উত্তপ্ত করা যায়। বাষ্প উত্তাপকে একই অক্ষবিশিষ্ট দুটি তামার ফাপা চোঙ থাকে। চোঙ দুটির মধ্যবর্তী বায়ুপূর্ণ স্থানের দুমুখ বন্ধ এবং চোঙের উপরের দিকে একটি আগম নল ও নিচের দিকে একটি নির্গম নল লাগানো আছে। রাবার নল দিয়ে আগম নলটি একটি বয়লারের সাথে যুক্ত করা হয়। বয়লার থেকে বাষ্প আগম নল চোঙ দুটির মধ্যবর্তী স্থানে প্রবেশ করে এবং নির্গম নল দিয়ে বের হয়ে যায়। নলটির উপরের মুখ কর্ক দিয়ে বন্ধ করা থাকে এবং নিচের মুখে একটি ঢাকনি থাকে যা ইচ্ছামত সরানো যায়। কর্কের মধ্যে একটি ছিদ্র দিয়ে সুতার সাহায্যে কঠিন বস্তুটিকে ঝুলিয়ে রাখা হয় এবং অন্য একটি ছিদ্র দিয়ে থার্মোমিটারকে প্রবেশ করানো হয়। ফলে বস্তুটি বাষ্পের সংস্পর্শে না এসেও পরোক্ষভাবে উত্তপ্ত হয়।[১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান, বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা থেকে প্রকাশিত; অধ্যায়-১০; পৃষ্ঠা-১৫১। সংগ্রহের তারিখ: ২৩ মার্চ ২০১২ খ্রিস্টাব্দ।