ক্যারোলিন মওয়াথার মৃত্যু

কেনিয়ার মানবাধিকার কর্মী

ক্যারোলিন মাওয়াথা ওচিয়েং ছিলেন একজন ৩৭ বছর বয়সী কেনিয়ার মানবাধিকার কর্মী। তিনি ডান্ডোরা সম্প্রদায় কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন (এই কেন্দ্রটি ডানডোরায় পুলিশ হত্যার ঘটনা তদন্ত করেছিল এবং নথি তৈরি করেছিল)। ২০১৯ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারি তারিখে, তিনি নিখোঁজ হয়ে যান।[১] ১২ই ফেব্রুয়ারি নাইরোবি শহরের মর্গে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল। সেখানে এই মৃতদেহটি একটি অন্য নামে নিবন্ধিত ছিল। পুলিশ রিপোর্টে প্রমাণিত হয় যে তিনি ৭ই ফেব্রুয়ারি মারা গেছেন।[২][৩] ময়নাতদন্ত পরীক্ষায় জানা যায় যে তিনি রক্তক্ষরণ জনিত কারণে মারা গেছেন। বিপদজনক গর্ভপাতের ফলে তাঁর জরায়ুর পিছনের অংশ ফেটে রক্তপাত হয়েছিল। একটি পুরুষ ভ্রূণের অবশিষ্টাংশ তখনও তাঁর গর্ভে ছিল, যেটির একটি হাত ছিলনা।[৪]

ক্যারোলিন মওয়াথা

মৃত্যু সম্পাদনা

তাঁর বাবা এবং স্বামী সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে তাঁরা পুলিশের বিবৃতি বিশ্বাস করেন না, কারণ তাঁরা জানতেন না যে ক্যারোলিন সন্তান সম্ভবা ছিলেন।[৫] দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের প্যাট্রিক গাথারা উল্লেখ করেছেন যে, সন্দেহের যথেষ্ট কারণ ছিল, কারণ পুলিশ অতীতে অনেকবার মানবাধিকার রক্ষকদের হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।[৬] একটি দ্বিতীয়, স্বাধীন ময়নাতদন্ত মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করেছিল।[৭] কেনিয়ার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছিল: "যদি মওয়াথা রাষ্ট্রের হাতে নিহত না হয়ে থাকেন, তাহলে তাঁকে এমন একটি ব্যবস্থা দ্বারা হত্যা করা হয়েছিল যা নিরাপদ গর্ভপাত পরিষেবা প্রদানে ব্যর্থতার জন্য অপরিণত গর্ভপাত ক্লিনিকগুলির অস্তিত্বের অনুমতি দেয়।"[৮]

মৃত্যুর পরের ঘটনা সম্পাদনা

২১শে ফেব্রুয়ারি উহুরু পার্কের ফ্রিডম কর্নারে ক্যারোলিনের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান বিচারপতি উইলি মুতুঙ্গা, রাজনীতিবিদ মার্থা কারুয়া এবং নাইরোবি মহিলা প্রতিনিধি এসথার পাসারিস উপস্থিত ছিলেন।[৮] ক্যাথলিক গির্জা গর্ভপাতের বিরোধী ছিল বলে গির্জার পক্ষ থেকে রিকুয়েম পরিষেবা (মৃতের আত্মার উদ্দেশ্যে গির্জায় প্রচলিত বিধিবদ্ধ উপাসনা) প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।[৯] ২৩শে ফেব্রুয়ারি সিয়ায়া কাউন্টির অ্যাসেম্বো বে অঞ্চলে, ক্যারোলিনের পরিবারের বাড়ির কাছে, তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছিল।[১০] তিনি তাঁর দুই সন্তান ও স্বামীকে রেখে গেছেন।[৮]

গর্ভপাতের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদি মায়ের জীবনের ঝুঁকি না থাকে, তাহলে কেনিয়ায় গর্ভপাত অবৈধ[৭] যে ক্লিনিকে পদ্ধতিটি সম্পাদিত হয়েছিল তাদের সেটি চালানোর অনুমতিপত্র ছিল না।[৩]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Kenyans mourn rights activist Caroline Mwatha"Africanews। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  2. Maina, Kamore (১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)। "Body of missing Dandora activist Caroline Mwatha found at City Mortuary"The Star, Kenya। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  3. Githae, Wanjohi; Merab, Elizabeth (১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)। "Mwatha's death: Clinic not registered"Daily Nation। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  4. Mutanu, Bernardine (১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)। "This is what killed Caroline Mwatha — pathologist"Daily Nation। ১৯ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  5. Ouko, Gordon; Kimani, Trizza (১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)। "Claims of Caroline's failed abortion 'hollow, not true'"The Star, Kenya। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  6. Gathara, Patrick (১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)। "Opinion | What the unspeakable tragedy of Caroline Mwatha reveals about Kenya"The Washington Post। ২৪ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৯ 
  7. Oneko, Sella; Daball, Melanie Cura (১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)। "Autopsy finds Kenyan activist died during abortion attempt"Deutsche Welle। ৩ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০১৯ 
  8. Kahongeh, James (২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)। "Caroline Mwatha to be buried today"Daily Nation। ২২ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  9. Nyawira, Lyndsay (২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)। "Anti-abortion: Catholic Church declines to hold requiem Mass for Caroline Mwatha"The Star, Kenya। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯hold requiem Mass 
  10. "Caroline Mwatha tribute concert happening in Dandora"Nairobi News। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯