কুন্নিক্কাল অজিতা (জন্ম: ১৯৫০) হলেন প্রাক্তন ভারতীয় নকশাল, যিনি ১৯৬০-এর দশকে কেরালায় নকশাল আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন, উক্ত সময় এই দলটি থলসেরীপুলপাল্লি থানায় সশস্ত্র অভিযান চালিয়ে দুই জন পুলিশকে হত্যা করেছিল। অজিতা পরবর্তীকালে গ্রেপ্তার হন, তাঁর বিচার হয় এবং তাঁকে নয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।[১]

কে. অজিতা
জন্ম১৯৫০ (বয়স ৭৩–৭৪)
পেশাসমাজকর্মী
দাম্পত্য সঙ্গীইয়াকুব
সন্তানক্লিন্ট, গার্গি
পিতা-মাতাকুন্নিক্কাল নারায়ণন
মন্দাকিনী

কারাগারের সাজা শেষে অজিতা সশস্ত্র সংগ্রাম আন্দোলন থেকে সরে এসেছিলেন এবং বর্তমানে তিনি একজন মানবাধিকার কর্মী এবং সমাজ সংস্কারক হিসাবে কেরালার সামাজিক পরিবেশে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন। ১৯৯৩ সালে তিনি অন্বেষী মহিলা পরামর্শ কেন্দ্র (যেটি একটি বেসরকারি সংগঠন) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যা এখন কেরল স্ত্রী বেদী (কেরল মহিলাদের ফোরাম)-এর একটি অংশ, এটি নারীর অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করে থাকে।[২] একই সাথে এটি নারীর ক্ষমতায়নের জাতীয় মিশনের সাথে সমন্বয় করে।।[৩]

অজিতা তাঁর প্রাক্তন সহকর্মী ইয়াকুবের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন এবং এই দম্পতির ক্লিন্ট নামে একটি ছেলে এবং গার্গি নামে একটি কন্যা রয়েছে।[৪] তিনি একজন নাস্তিক ব্যক্তি।

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

কে. অজিতা ১৯৫০ সালের এপ্রিল মাসে ভারতের কেরলের কালিকটে কুনিক্কাল নারায়ণন ও মন্দাকিনীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবা মা উভয়ই নকশাল আন্দোলনের সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। কালিকটের একটি স্কুল থেকে তিনি স্কুল জীবনের পড়াশোনা সম্পন্ন করেছেন। অজিতা কলেজে উঠার সাথে সাথে সমাজের প্রতি হতাশ হয়ে পড়েন এবং নকশাল আন্দোলনের সাথে জড়িত হতে শুরু করেন। তিনি প্রাক ডিগ্রি কোর্স করার সময় কলেজ ছেড়ে চলে যান এবং নকশাল আন্দোলনে সক্রিয় হয়ে উঠেন।[৪]

সামাজিক কর্মজীবন সম্পাদনা

কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে অজিতা একটি সাধারণ জীবন শুরু করার চেষ্টা করেছিলেন। অতঃপর তিনি ইয়াকুবের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন; তাঁদের দুটি সন্তান রয়েছে। তবে, সাধারণ জীবনে ফেরার চেষ্টা একটি স্বল্পস্থায়ী প্রচেষ্টা ছিল। ১৯৮৮ সালে মুম্বইয়ের মহিলা সংগঠনগুলোর একটি সম্মেলন তাঁকে সামাজিক সক্রিয়তায় ফেরাতে প্রভাবিত করেছিল এবং তিনি কালিকট (কালিকট) ভিত্তিক 'বোধন' (সচেতনতা) নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।[৪]

এই সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে চলতে পারেনি, তবে অজিতা ১৯৯৩ সালে অন্বেষী মহিলা পরামর্শ কেন্দ্র (সংক্ষেপে অন্বেষী) নামে আরও একটি সংস্থা গঠন করেছিলেন। তিনি কেরালায় বহু সংবেদনশীল মানবাধিকার মামলায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছিলেন।[৫][৬]

আইসক্রিম পার্লার সেক্স কেলেঙ্কারী (১৯৯৭) মামলা অনুযায়ী, কালিকটের একটি স্থানীয় আইসক্রিম পার্লারে নাবালিকা মেয়েদের যৌন শোষণ করা হয়েছিল, পরে জানা যায় যে আইসক্রিম ব্যবসায়ীরাও এই যৌন শোষণের সাথে জড়িত ছিল। পাঁচটি নাবালিকা মেয়ে অজিতার কাছে এসে সাহায্য চেয়েছিল। পরবর্তীতে অন্বেষীর নেতৃত্বে একটি ব্যক্তিগত তদন্ত হয়েছিল এবং পুলিশে এই বিষয়টি সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য পায়। তাদের অভিযোগ, নগরীর রেলপথগুলোতে পাওয়া দুই কিশোরীর মৃতদেহের সাথে এই মামলার দৃঢ়ভাবে যোগাযোগ রয়েছে। তৎকালীন কেরালার শিল্পমন্ত্রী পি. কে. কুনালিকুট্টির নাম এবং ভারতীয় ইউনিয়ন মুসলিম লীগের (আইইউএমএল) নেতা, সিপিএম নেতা টিপি দাশান এবং কিছু কাস্টম কর্মকর্তার মতো অনেক পরিচিত নাম আসামির তালিকায় স্থান পেয়েছিল।[৭]

বিচার চলাকালীন ভুক্তভোগী পাঁচজনের মধ্যে দুই জনই তাদের বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেয়। ২০০৫ সালে কেরালা হাইকোর্ট, এই আবেদনটি খারিজ করে এবং ২০০৬ সালে ভারতের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় প্রমাণের অভাব উল্লেখ করে মামলাটি খারিজ করে দেয়।[৭]

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সম্পাদনা

২০১৬ সালে, তিনি অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের বিরুদ্ধে একটি বিতর্কে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে সমর্থন করেছিলেন।[৮]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Article FrontLine"। ১৭ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০২০ 
  2. "Anweshi"anweshi.org। ৩০ জুন ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০২০ 
  3. "Anweshi"anweshi.org। ১৪ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০২০ 
  4. "Rediff On The NeT : The Rediff Interview: Ajitha"www.rediff.com 
  5. "Anweshi Archives - FeministsIndia"FeministsIndia। ২৫ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুন ২০১৪ 
  6. "India Samachar - News from India - NRI News - Hindi, English Samachar"www.samachar.com। ১৪ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুন ২০১৪ 
  7. "Anweshi Archives - FeministsIndia"FeministsIndia 
  8. Aravind। "Anti National slogans at Amnesty international meet"। ২২ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০২০