কৃষ্ণলাল বসাক (জন্ম:১৮৬৬ — মৃত্যু:১৯৩৫) উনবিংশ শতাব্দীর কোলকাতা শহরের একজন বিখ্যাত ব্যায়ামবীর। তিনি সমসাময়িক কালে একজন সার্কাস শিল্পী হিসাবে বিশেষভাবে প্রসিদ্ধ ছিলেন। ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে দশকে তিনি একটি সর্বভারতীয় দল নিয়ে হিপোড্রোম সার্কাস প্রতিষ্ঠা করেন এবং বাংলা, ভারত এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ভ্রমণ করেন। তাকে বাংলার পাশাপাশি ভারতে সার্কাসের পথিকৃৎ [১] নামে নামকরণ করা হয়।[২] হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি ভারতে ব্রিটিশ রাজত্বের সময় একজন সুপরিচিত বণিক এবং জমিদার শোভারাম বসাক এর বংশধর ছিলেন।

কৃষ্ণলাল বসাক
জন্ম২১ এপ্রিল ১৮৬৬
কলকাতা, বেঙ্গল, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু১৯ অক্টোবর ১৯৩৫ (বয়স ৬৯ বছর)
কলকাতা, বরাহনগর
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাজিমন্যাস্ট এবং উদ্যোক্তা

কৃষ্ণলাল বসাক ১৮৬৬ [৩] খ্রিস্টাব্দে ভারতের কলিকাতা শহরের আহিরিটোলা এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন চন্দ্রনাথ বসাক এবং তাঁর মা ছিলেন বৃন্দাবন বসাকের মেয়ে। তিনি অল্প বয়সে তার মাকে হারিয়েছিলেন এবং তাঁর ঠাকুরদা এবং ঠাকুমার পরিবারে বড় হয়েছিলেন। তিনি কৈশোরেই শরীরচর্চা তথা ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীর গঠনের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। ১৮৮২ তে শোভাবাজার রাজবাড়িতে জিমন্যাস্টিকস প্রদর্শন করে তিনি প্রশংসা অর্জন করেন। তিনি জাগলিং, প্যারালাল বার, ট্র্যাপেজ, টপ স্পিনিং ইত্যাদিতে উচ্চ নৈপূন্যের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। এছাড়া শারীরিক কসরতে তার আগ্রহ জন্মে। অল্পকালের মধ্যেই তিনি সার্কাসের নানা খেলায় পারদর্শিতা অর্জন করেন।

মাত্র সতের বৎসর বয়সে তিনি সার্কাস দলে যোগ দেন। কলকাতায় আগত বিভিন্ন ইয়োরোপীয় সার্কাস দলে ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শন করে তিনি দ্রুত খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে ফরাসী দেশের রাজধানী প্যারীনগরের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে ব্যায়াম ক্রীড়া প্রদর্শন করে বিশেষ সন্মান লাভ করেন। কৃষ্ণলাল অল্প বয়সে জিমন্যাস্টিক শিখেছিলেন এবং বছরের পর বছর ধরে দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। তিনি সার্কাস পরিবেশন করে অনেক দেশ ভ্রমণ করেছিলেন। ১৯০০এর গোড়ার দিকে তিনি দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান সার্কাস নামে পরিচিত একটি নিজস্ব সার্কাস প্রতিষ্ঠা করেন যা পরে হিপোড্রোম সার্কাস তার সর্বোচ্চ সময়ে, তার সার্কাসে ২০০ এরও বেশি অভিনয়শিল্পী ছিলেন।

কৃষ্ণলাল তাঁর আত্মজীবনী লিখেছিলেন যার প্রচ্ছদ নাম বিচিত্র ভ্রমণ। এ গ্রন্থটি ১৯২১ এ প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর (কাৰ্ত্তিক মাসে) কলিকাতার উপকণ্ঠে বরাহনগরে তিনি পরলোক গমন করেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪২১ - উইকিসংকলন একটি মুক্ত পাঠাগার"bn.wikisource.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-২৩ 
  2. “জীবনা-কোষ”, দ্বারকানাথ বসু, গুরু প্রেস, কলিকাতা, ১৮৯৪, পৃ. ২০৪
  3. "সার্কাস-গিরি-কান্তার-মরু: ইতিহাসের এক ঝলক"BanglaLive (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০২-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-২৩ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা