কাশিমপুর রাজবাড়ি

বাংলাদেশের রাজবাড়ি

কাশিমপুর রাজবাড়ি রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলায় অবস্থিত ঐতিহাসিক রাজবাড়ি। রাজবাড়িটি পাগলা রাজার বাড়ি নামেও পরিচিত। রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের কাশিমপুর নামক গ্রামে প্রাচীন রাজবাড়িটি অবস্থিত। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে ছোট যমুনা নদীর তীরে কাশিমপুর রাজবাড়িটি অবস্থিত।[১][২]

কাশিমপুর রাজবাড়ি
বিকল্প নামপাগলা রাজার বাড়ি
সাধারণ তথ্য
ধরনবাসস্থান
অবস্থানরাণীনগর, নওগাঁ
শহরনওগাঁ
দেশবাংলাদেশ
স্থানাঙ্ক২৪°৪৩′২১.৯″ উত্তর ৮৮°৫৫′৩০.৪″ পূর্ব / ২৪.৭২২৭৫০° উত্তর ৮৮.৯২৫১১১° পূর্ব / 24.722750; 88.925111
কারিগরী বিবরণ
পদার্থচুন, সুড়কি ও পোড়া মাটির ইট
ভূতল২ একর ১৯ শতক

ইতিহাসসম্পাদনা

রাজবাড়িটি কাশিমপুরের পাগলা রাজা নির্মাণ করেছিলেন। তিনি নাটোরের রাজার উত্তরসূরি ছিলেন। নওগাঁ এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকার শাসনকাজ পরিচালনা করার জন্যই এই রাজবাড়ি নির্মাণ করা হয়েছিল ও রাজার শাসনকাল শুরু হয়। তবে এই অঞ্চলে রাজার শাসনকাল কবে থেকে শুরু হয় সঠিকভাবে সেটা জানা যায়নি। অন্নদা প্রসন্ন লাহিড়ী বাহাদুর এই অঞ্চলের শেষ রাজা ছিলেন। তার চারজন ছেলে ও একজন মেয়ে ছিল।[৩][৪]

১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের কিছুকাল পরে, রাজবংশের প্রায় সবাই দেশত্যাগ করে ভারতে চলে যান। তবে ছোট রাজা শক্তি প্রসন্ন লাহিড়ী ও তার পরিবার ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের আগ পর্যন্ত এই রাজবাড়িতে বসবাস করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার জন্য তারাও রাজত্ব এবং রাজবাড়ি ছেড়ে ভারতে চলে যান।[২][৫][৬]

স্থাপত্যসম্পাদনা

রাজবাড়িটি প্রায় ২ একর ১৯ শতক এলাকা জুড়ে অবস্থিত। রাজবাড়ির মূল ভবনের মাঝখানে চারটি গম্বুজ বিশিষ্ট একটি দুর্গা মন্দির ছিল। রাজবাড়ি প্রাঙ্গণে শিব, রাধাকৃষ্ণ ও গোপাল মন্দির ছিল। চুন, সুড়কি ও পোড়ামাটির ইট দিয়ে মন্দিরগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। রাধাকৃষ্ণ মন্দিরটি অন্যান্য মন্দিরগুলোর চেয়ে বেশি উচ্চতা বিশিষ্ট ছিল। দুর্গা মন্দিরের একপাশে রাজার বৈঠকখানা ছিল। মূল ভবনের পাশে একটি হাওয়াখানা ছিল। পুকুরপাড় ও নদীর ধারে কাঁচের ঘরের তৈরি একটি বালিকা বিদ্যালয় ছিল।[২][৭]

বর্তমানে রাজবাড়ির কিছু অংশ কাশিমপুর ইউনিয়নের ভূমি অফিস হিশেবে ব্যবহার করা হয়। মন্দিরগুলোতে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ বসবাস ও পূজাঅর্চনা করেছেন।[৩] রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী কাশিমপুর রাজবাড়ি ও তার কারুকার্যগুলো ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।[৮][৯][১০][১১]

আরও দেখুনসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "রাণীনগর উপজেলার দর্শনীয় স্থান"জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২০২০-০৬-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১০ 
  2. "কাশিমপুর রাজবাড়ি ধ্বংসের মুখে"বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১০ 
  3. আব্দুর রউফ রিপন। "শত বছরের ইতিহাস মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে | ভিন্ন চোখে"ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১০ 
  4. "রাণীনগর কাশিমপুর রাজবাড়ী ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে, সংস্কার প্রয়োজন"bdnewshour24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১০ 
  5. সংবাদদাতা, নওগাঁ জেলা। "শত বছরের ইতিহাস মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রাণীনগরের কাশিমপুর রাজবাড়ি"দৈনিক ইনকিলাব। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১০ 
  6. "রাণীনগরের কাশিমপুর রাজবাড়ি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে"দৈনিক সংগ্রাম। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১০ 
  7. "নওগাঁর কাশিমপুর রাজবাড়ি দাঁড়িয়ে আছে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে কালের সাক্ষী হয়ে"Silkcity News। ২০২০-০২-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১০ 
  8. "ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নওগাঁর ঐতিহ্যবাহী কাশিমপুর রাজবাড়ি"ঢাকা ট্রিবিউন(বাংলা)। ২০২০-০২-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১০ 
  9. "নওগাঁর রাণীনগরে ধ্বংসের মুখে কাশিমপুর রাজবাড়ি"www.deltatimes24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১০ 
  10. "রাণীনগরের কাশিমপুর রাজবাড়ীর শেষ অংশটুকুও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে"দৈনিক জনতা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১০ 
  11. "কাশিমপুর রাজবাড়ির শেষ অংশটুকুও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে"উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১০