কাদম্বরী দেবী

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রাতৃবধূ

কাদম্বরী দেবী (জুলাই ৫, ১৮৫৯ – এপ্রিল ১৯, ১৮৮৪ ) ছিলেন বাঙালি নাট্যকার, সঙ্গীতস্রষ্টা, সম্পাদক এবং চিত্রশিল্পী জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী, মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুত্রবধূ এবং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বৌদি।

কাদম্বরী দেবী
কাদম্বরী দেবী
জন্ম
মাতঙ্গিনী গঙ্গোপাধ্যায়

(১৮৫৯-০৭-০৫)৫ জুলাই ১৮৫৯
মৃত্যুএপ্রিল ২১, ১৮৮৪(1884-04-21) (বয়স ২৪)
মৃত্যুর কারণমানসিক অবসাদ
জাতীয়তাভারতীয়
নাগরিকত্বভারতীয়
আদি নিবাসকলকাতা
দাম্পত্য সঙ্গীজ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর (বি. ১৮৬৮)
পিতা-মাতা
  • শ্যাম গাঙ্গুলি (পিতা)
  • ত্রৈলোক্যসুন্দরী দেবী (মাতা)
আত্মীয়ঠাকুর পরিবার

জীবনী সম্পাদনা

জুলাই ৫, ১৮৫৯ সালে কলকাতায় কাদম্বরীর জন্ম। পৈতৃক নাম মাতঙ্গিনী।[১] তিনি ছিলেন ঠাকুরবাড়ির বাজার সরকার শ্যাম গাঙ্গুলির তৃতীয় কন্যা।[২] মাত্র নয় বছর বয়সে ১৯ বছর বয়সী জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে কাদম্বরীর বিয়ে হয়।[১] বিয়ের পর জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর তার শিক্ষার বন্দোবস্ত করেছিলেন।[৩] তার পিতামহ জগন্মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন একজন গুণী সংগীত শিল্পী। তার থেকেই কাদম্বরী এবং রবীন্দ্রনাথ বাল্যকালে গান শিখেছিলেন।

সমবয়সী হওয়ার সুবাদে কাদম্বরীর সাথে রবীন্দ্রনাথের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং তিনি রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন গল্প, কবিতা, নাটক আর গান রচনায় উৎসাহ যুগিয়েছেন তার সৃষ্টিশীল মতামত প্রদানের মাধ্যমে। রবীন্দ্রনাথ এবং কাদম্বরী ছিলেন খুবই ভালো বন্ধু এবং সহপাঠী[৪] যার কারণে এই দুজনের সম্পর্ক নিয়ে সেই সময়ে সৃষ্টি হওয়া বিভিন্ন বিতর্ক এখনো বিদ্যমান রয়েছে।

মৃত্যু সম্পাদনা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিবাহের (১৮৮৩ সালের ৯ ডিসেম্বর) চার মাস পরে ১৯ এপ্রিল, ১৮৮৪ সালে কাদম্বরী দেবী আফিম খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন, এবং তার দুই দিন পর এপ্রিল ২১ তারিখে মাত্র ২৪ বছর বয়সে তিনি মারা যান।[১][২] জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবার এই আত্মহত্যার বিষয়ে নিরব ছিল।[৫]

মুলত পারিবারিক সমস্যার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে বিতর্ক রয়েছে। হিন্দু প্রথা অনুযায়ী তাকে মর্গে পাঠানো হয় নি, জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতেই বসানো হয়েছিল করোনার কোর্ট। গবেষকরা মনে করেন, স্বয়ং মহর্ষির উদ্যোগেই রিপোর্ট লোপ করা হয়, সঙ্গে লোপাট করা হয় 'সুইসাইড নোট'। ৫২ টাকা ঘুষ দিয়ে মুখ বন্ধ করা হয় সংবাদ মাধ্যমের। তাই কাদম্বরীর মৃত্যু সংবাদ তখন কোনো পত্রিকায় ছাপা হয়নি।

কাদম্বরী দেবীর মৃত্যুর পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন এবং তার স্মৃতি নিয়ে মৃত্যুর দীর্ঘদিন পরেও একাধিক কবিতা, গান ও গল্প রচনা করেছেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. আহসানুল কবির (০৯ মে ২০১৩)। "রবীন্দ্রনাথের কাদম্বরী উপাখ্যান"jugantor.com। ঢাকা: দৈনিক যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ মে ২১, ২০১৫  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  2. রোবায়েত ফেরদৌস (১২ জানুয়ারি ২০১৩)। "কাদম্বরী দেবীর সুইসাইড-নোট"news-bangla.com। ঢাকা: নিউজ-বাংলা.কম। সংগ্রহের তারিখ মে ২১, ২০১৫ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. Dastider, Shipra। "Jyotirindranath Tagore"Banglapedia। Asiatic Society of Bangladesh। ২০০৭-০৪-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-১৪ 
  4. Mallika Sengupta, Kobir Bouthan & Tamal Ghosh ,Kadambari,432 pp., (A novel),Ujjwal Sahitya Mandir, College St. Kolkata
  5. টেমপ্লেট:Kadambari

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা