কাতার-রাশিয়া সম্পর্ক

কাতার-রাশিয়া সম্পর্ক (রুশ: Российско-катарские отношения), কাতার এবং রাশিয়ার মাঝে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে। ১৯৮৮ সালে এই দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। তবে সে সময় রাশিয়া ছিল অখণ্ড সোভিয়েত ইউনিয়ন এর একটি অংশ। ফলে কাতার ও সোভিয়েত ইউনিয়ন এর মাঝে সম্পর্ক স্থাপিত হয়। তবে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে রাশিয়া গঠিত হওয়ার পরও এই দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক অটুট থাকে। রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে কাতারের একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে।[১] অপরদিকে কাতারের রাজধানী দোহাতে রাশিয়ার একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে।[২]

কাতার-রাশিয়া
মানচিত্র Qatar এবং Russia অবস্থান নির্দেশ করছে

কাতার

রাশিয়া

সোভিয়েত যুগে সম্পর্ক সম্পাদনা

সৌদি আরব এর মিত্র রাষ্ট্র হিসেবে, কাতার অনেকবারই সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে। তবে ১৯৮৮ সালের গ্রীষ্মে এই অবস্থানের পরিবর্তন হয়। সেই বছরের ২ আগস্ট, কাতার এবং রাশিয়া এর মাঝে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।[৩] কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার পর ১৯৮৯ সালের ১২ নভেম্বর, দোহায়, সোভিয়েত ইউনিয়ন তাদের দূতাবাস স্থাপন করে। এর ২ দিন পরই ১৯৮৯ সালের ১৪ নভেম্বর, কাতার, মস্কোতে তাদের দূতাবাস স্থাপন করে।[৪]

কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্পাদনা

১৯৯১ সালের ২৫ ডিসেম্বর, সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যায় এবং রাশিয়া সহ মোট ১৫ টি পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হয়। এর এক দিন পরই, ১৯৯১ সালের ২৬ ডিসেম্বর, কাতার সোভিয়েত ইউনিয়নের মূল অংশ হিসেবে, রাশিয়াকে স্বীকৃতি দান করে।[৫] কাতারে নিযুক্ত রাশিয়ার, রাষ্ট্রদূত হলেন, আন্দ্রে ভ্লাদিমিরোভিচ আন্দ্রেইয়েভ। ২০০৫ সালের ১৭ জুলাই রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি, ভ্লাদিমির পুতিন আন্দ্রেইয়েভকে এই পদে নিয়োগ দেন।[৬] রাশিয়ায় নিযুক্ত কাতারের রাষ্ট্রদূত হলেন, আহমেদ সাইফ আল-মিদহাদী। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কাতার সরকার, আল-মিদহাদী কে এই পদে নিয়োগ দেয়। ২০০৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আল-মিদহাদী তার বৃত্তান্তের সনদ রাশিয়ার তৎকালীন রাষ্ট্রপতি দিমিত্রি মেদভেদেভ এর নিকট জমা দেন।[৭]

রাজনৈতিক সম্পর্ক সম্পাদনা

 
রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন এবং কাতারের আমির, হামাদ বিন খলিফা আল-থানি, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

২০০৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কাতারে নির্বাসনে থাকা, জেলিমখান ইয়ান্দারাবিয়েভ আততায়ীর গুলিতে নিহত হওয়ার পর, দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক শীতল হয়ে পড়ে।[৮]

ইয়ান্দারাবিয়েভ এর ৩য় মৃত্যুবার্ষিকীতে, রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি, ভ্লাদিমির পুতিন, একটি রাষ্ট্রীয় সফরে কাতারে যান। সেখানে তাকে স্বাগত জানান, কাতারের আমির, হামাদ বিন খলিফা আল-থানি

অর্থনৈতিক সম্পর্ক সম্পাদনা

রুশ এবং কাতারের গ্যাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ইয়ামাল পেনিনসুলাতে তেল শোধনাগার তৈরির ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। এর পাশাপাশি কাতারে হালাল মাংশ রপ্তানির ব্যাপারেও রাশিয়া রাজি হয়েছে।[৯]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Embassy of the State of Qatar in the Russian Federation"কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২০০৮-০৯-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-১৯ 
  2. Посольство в Дохе (রুশ ভাষায়)। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-১৯ 
  3. "Qatar Opens Ties to Moscow At Time of Strains With U.S."দ্যা নিউইয়র্ক টাইমস। ২ আগস্ট ১৯৮৮। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-১৯ 
  4. Катар. Связи с Россией (রুশ ভাষায়)। পোলপ্রেড। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-১৯ 
  5. Российско-катарские отношения (রুশ ভাষায়)। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ১২ মার্চ ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-১৯ 
  6. "অ্যান্ড্রু ভ. আন্দ্রেভ"। রুশ দূতাবাস, কাতার। ২০০৯-০৬-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-১৯ 
  7. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" Послы иностранных государств, вручившие верительные грамоты Президенту России (রুশ ভাষায়)। প্রেসিডেন্সিয়াল প্রেস অ্যান্ড ইনফরমেশন অফিস। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৯। ২০১২-০৮-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৩-০৩ 
  8. হুইটমোর, ব্রায়ান (৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৭)। "Russia: Putin To Take His Message To The Persian Gulf"। আরইই/আরএল। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-১৯ 
  9. ব্যাকম্যান, জেসিকা (২০১০-১২-২০)। "Rival gas producers Russia, Qatar talk reindeer meat"রয়টার্স। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০১-০৮ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা