কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারী
কোভিড-১৯-এর বৈশ্বিক মহামারী বলতে করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯ (কোভিড-১৯)-এর বিশ্বব্যাপী প্রাদুর্ভাব ও দ্রুত বিস্তারের চলমান ঘটনাটিকে নির্দেশ করা হয়েছে। এই রোগটি একটি বিশেষ ভাইরাসের কারণে সংঘটিত হয়, যার নাম গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রীয় রোগলক্ষণসমষ্টি সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাস ২ (সার্স-কোভি-২ ভাইরাস)।[৫] রোগটির প্রাদুর্ভাব প্রথমে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে চীনের হুপেই প্রদেশের উহান নগরীতে চিহ্নিত করা হয়। চীনা প্রশাসন প্রথমে উহান নগরী ও পরবর্তীতে উহানকে পরিবেষ্টনকারী হুপেই প্রদেশের অন্যান্য নগরীতে জরুরি অবরুদ্ধকরণ জারি করলেও রোগটির বিস্তার বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়, এবং এটি দ্রুত চীনের অন্যত্র এবং পরবর্তীতে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রোগটিকে ২০২০ সালের ১১ই মার্চ তারিখে একটি বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।[৬] সার্স-কোভি-২ ভাইরাসের একাধিক প্রকারণের উদ্ভব হয়েছে এবং বিশ্বের বহুসংখ্যক দেশে এই প্রকারণগুলি আধিপত্য বিস্তার করেছে; এদের মধ্যে আলফা, বিটা ও ডেলটা প্রকারণগুলির প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। ২০২১ সালের ২৬শে অক্টোবর পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের সর্বত্র ২৪ কোটি ৪৭ লক্ষেরও অধিক ব্যক্তি করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯-এ আক্রান্ত হওয়া ও তাদের মধ্যে প্রায় ৪৯ লক্ষ ব্যক্তির মৃত্যু হওয়ার ঘটনা নিশ্চিত করা হয়েছে, ফলে এটি মানব ইতিহাসের সবচেয়ে মরণঘাতী একটি বৈশ্বিক মহামারীতে পরিণত হয়েছে।
কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারী | |
---|---|
রোগ | করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯ (কোভিড-১৯) |
ভাইরাসের প্রজাতি | গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রীয় রোগলক্ষণসমষ্টি সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাস ২ (SARS-CoV-2) |
প্রথম সংক্রমণের ঘটনা | ১লা ডিসেম্বর ২০১৯[১][২](৪ বছর, ১১ মাস ও ১ সপ্তাহ) |
উৎপত্তি | উহান নগরী, হুপেই প্রদেশ, চীন[৩] |
নিশ্চিত আক্রান্ত | ৬১,২৫,২৬,৯৪৮[৪] |
মৃত্যু | ৬৫,২৮,১০৫[৪] |
অঞ্চল | ১৯০[৪] |
ব্যক্তিভেদে করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯-এর লক্ষণ-উপসর্গগুলি ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। কোনও কোনও ব্যক্তি কোনও লক্ষণ-উপসর্গই অনুভব করে না, আবার অন্য কোনও কোনও ব্যক্তির জন্য এগুলি মারাত্মক রূপ ধারণ করে। বৃদ্ধ রোগী ও বয়স নির্বিশেষে যেসব রোগী অন্য এক বা একাধিক দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতায় ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রে রোগটির গুরুতর আকার ধারণ করার সম্ভাবনা বেশি। করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯-এ আক্রান্ত ব্যক্তি কাশি বা হাঁচি দেওয়ার ফলে বাতাসে নিক্ষিপ্ত বহু লক্ষ অতিক্ষুদ্র শ্লেষ্মাকণা বাতাসে ভাসতে শুরু করলে নিকটবর্তী অপর কোনও ব্যক্তি সেই ভাইরাসযুক্ত বাতাস শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করলে তার দেহেও ভাইরাসটি সংক্রমিত হতে পারে।[৭][৮][৯][১০] সাধারণ শ্বাস-প্রশ্বাসের কারণেও অত্যন্ত স্বল্প পরিমাণ ভাইরাস কণা বাতাসে ভাসতে পারে। এছাড়া ভাইরাস কণা টেবিলে বা অন্য কোনও পৃষ্ঠে হাঁচি-কাশির মাধ্যমে কিংবা ভাইরাসযুক্ত হাত দিয়ে স্পর্শের মাধ্যমে পৃষ্ঠের উপাদানভেদে কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক দিন লেগে থাকতে পারে, যেই পৃষ্ঠ আরেকজন ব্যক্তি স্পর্শ করে তারপরে নাকে, মুখে বা চোখে হাত দিলে ঐ ব্যক্তির শ্লৈষ্মিক ঝিল্লির মধ্য দিয়ে ভাইরাস দেহে প্রবেশ করতে পারে, তবে এভাবে সংবহনের ঘটনা বিরল।[৯] সাধারণত নিকটবর্তী ব্যক্তিদের কাছেই ভাইরাসটি ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি, তবে ভবন বা কক্ষের অভ্যন্তরে এবং নিম্নমানের বায়ুচলাচল ব্যবস্থাবিশিষ্ট স্থানে ভাইরাসটি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী দূরে ছড়ানোর ঝুঁকি থাকে।
একবার সংক্রমিত হবার পরে প্রায় ২০ দিন ভাইরাসটির এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির দেহে সংবাহিত হবার সম্ভাবনা থাকে। যখন কোনও রোগটির লক্ষণ-উপসর্গ প্রকাশ করা আরম্ভ করে, তখনই রোগীটি সবচেয়ে বেশি সংক্রামক থাকেন, তবে লক্ষণ-উপসর্গ দেখা দেবার আগেও রোগটি সংবাহিত হওয়া সম্ভব।[১১] ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হবার সময় থেকে লক্ষণ-উপসর্গ প্রকাশ পাবার গড় সময় সাধারণত পাঁচ দিন, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দুই থেকে ১৪ দিন বা তারও বেশি সময় লাগতে পারে।[১০][১২] ব্যাধিটির সাধারণ লক্ষণ-উপসর্গগুলি হল জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট।[১০][১২] ব্যাধিটি জটিল রূপ ধারণ করলে প্রথমে ফুসফুস প্রদাহ (নিউমোনিয়া) হতে পারে এবং আরও গুরুতর রূপ ধারণ করলে তীব্র শ্বাসকষ্টমূলক রোগলক্ষণসমষ্টি প্রকাশ পেতে পারে, যাতে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। আপাতদৃষ্টিতে সেরে ওঠার পরেও কোনও কোনও রোগী কোভিড-১৯ পরবর্তী দীর্ঘকাল ধরে রক্তসংবহনজনিত স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে (হৃদরোগ, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, ইত্যাদি) থাকতে পারেন।
২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত রোগটির চিকিৎসার জন্য কোনও ভাইরাস-নিরোধক ঔষধ কর্তৃপক্ষের সমর্থন বা অনুমোদন লাভ করেনি। হাসপাতালে রোগটির গুরুতর পর্যায়ের চিকিৎসাতে মূলত উপসর্গসমূহের উপশম করা হয় এবং সহায়ক চিকিৎসা প্রদান করা হয়, যাতে রোগী নিজে থেকেই ধীরে ধীরে সেরে উঠতে পারে। ২০২০ সালের দ্বিতীয়ার্ধে বিভিন্ন দেশে বেশ কিছু টিকা উদ্ভাবিত হয় এবং ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম চলমান আছে। টিকা নেবার পাশাপাশি রোগটি প্রতিরোধের জন্য সার্বজনিক স্থানগুলিতে নাকে-মুখ আবরণকারী ডাক্তারি মুখোশ বা স্বাস্থ্য মুখোশ পরিধান করা, অন্য ব্যক্তিদের সাথে সামাজিক তথা দৈহিক দূরত্ব বজায় রাখা, ভবনগুলির অভ্যন্তরে উন্নত বায়ুচলাচল ও বায়ু পরিস্রাবক ব্যবস্থা ব্যবহার করা, হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় শিষ্টাচার মেনে চলা, হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করা, পৃষ্ঠতল সংক্রমণ নিবারণ করা, রোগীকে পর্যবেক্ষণে রাখা এবং সম্ভাব্য সংক্রমিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আত্ম-পৃথকীকরণ (সঙ্গনিরোধ) করার পরামর্শ দেওয়া হয়।[৯][১০][১৩] বিশ্বব্যাপী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষগুলি রোগটির বিস্তার প্রতিরোধের প্রচেষ্টায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, সঙ্গনিরোধ (কোয়ারেন্টিন), অবরুদ্ধকরণ (লকডাউন), সান্ধ্য আইন (কারফিউ) জারি, অনুষ্ঠান পিছিয়ে দেওয়া বা বাতিল করা এবং বিভিন্ন ব্যবসাবাণিজ্য ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা, বাধ্যতামূলক কোভিড-১৯ রোগনির্ণয় পরীক্ষার বিধিবিধান, সংক্রামক ব্যক্তি অনুসন্ধান, ইত্যাদি পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করেছে। বিমানবন্দর ও রেলস্টেশনগুলিতে উপসর্গ ও দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি পরীক্ষার ব্যবস্থা,[১৪] ব্যাপকভাবে আক্রান্ত অঞ্চলে ভ্রমণের ব্যাপারে সতর্কতামূলক বার্তা, ইত্যাদি পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়েছে।[১৫][১৬][১৭][১৮][১৯] বিশ্বের প্রায় ১১৫টি দেশে বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে জাতীয় কিংবা স্থানীয় পর্যায়ে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, ফলে প্রায় ১২০ কোটি ছাত্রছাত্রীর জীবনে এর প্রভাব পড়েছে।[২০]
এই বৈশ্বিক মহামারীর কারণে সারা বিশ্বের আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়েছে।[২১] বহু ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বা রহিত করা হয়েছে।[২২] অনেক দেশে দ্রব্যের (যেমন খাদ্য বা ঔষধ) জোগানের স্বল্পতার ব্যাপারে ব্যাপক ভীতি থেকে আতঙ্কগ্রস্ত মানুষের কেনাকাটার আধিক্যের সৃষ্টি হয়েছে।[২৩][২৪] ভাইরাসটিকে নিয়ে ভুল বা মিথ্যা তথ্য ও ষড়যন্ত্রমূলক তত্ত্ব আন্তর্জাল বা ইন্টারনেটে, বিশেষত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলিতে ছড়িয়ে পড়েছে।[২৫][২৬] এছাড়া চীন, পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে জাতিবিদ্বেষ ও বিদেশীভীতি বৃদ্ধি পেয়েছে।[২৭] কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসায় উন্নত ও অনুন্নত দেশগুলির মধ্যে বৈষম্য এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষার্থে গৃহীত বিধিনিষেধ ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার মধ্যে দ্বন্দ্ব পরিলক্ষিত হয়েছে।
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে কর্তৃপক্ষের দ্বারা গৃহীত জরুরি পদক্ষেপ ও ব্যবস্থাসমূহ
যেহেতু ২০২১ সালের আগে করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯-এর কোনও টিকা সুলভ হবার সম্ভাবনা কম,[২৯] সেহেতু এই রোগের বৈশ্বিক মহামারী আয়ত্তে রাখার একটি অন্যতম চাবিকাঠি হলো মহামারীর শীর্ষ (অর্থাৎ এক দিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণের সংখ্যা) কমিয়ে আনা, যাকে "মহামারী বক্ররেখার সমতলকরণ" নাম দেওয়া হয়েছে; এজন্য নতুন সংক্রমণের হার হ্রাস করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।[৩০] ভাইরাস সংক্রমণের হার কমাতে পারলে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলির ধারণক্ষমতার উপর মাত্রাতিরিক্ত চাপের ঝুঁকি হ্রাস করা যায়, ফলে বর্তমান রোগীদের উন্নততর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যায়, মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার অভাবজনিত কারণে মৃত্যু হ্রাস বা রোধ করা যায়, এবং এর পাশাপাশি টিকা বা নিরাময়ী ঔষধ উদ্ভাবনের আগ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় যাবৎ ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা আয়ত্তে রাখা যায়।[৩০] এ জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি, পরীক্ষণ, অন্তরণ, সঙ্গনিরোধ এবং অবরুদ্ধকরণের মতো পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা হয়ে থাকে।
বক্ররেখা সমতলকরণের পাশাপাশি সমান্তরালভাবে আরেকটি প্রচেষ্টার প্রয়োজন হয়, যাকে "সরলরেখার উত্তোলন" নাম দেওয়া হয়েছে। এর অর্থ হল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করা।[৩২] এ জন্য চিকিৎসা সরঞ্জাম-সামগ্রী ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মচারীর সংখ্যা বৃদ্ধি, দূর-চিকিৎসা প্রদান, গৃহসেবা, এবং জনসাধারণকে স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদান অন্তর্ভুক্ত।
পরীক্ষণ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে করোনাভাইরাস মহামারীর বিস্তার রোধের সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা হল সংক্রামিত ব্যক্তিদের দ্রুত শনাক্ত করা ও সম্প্রদায় থেকে তাদেরকে অন্তরিত (বিচ্ছিন্ন) করা। এ কারণে যতদ্রুত সম্ভব একটি ব্যাপক ও নিবিড় পরীক্ষণ কর্মসূচি সম্পাদন করা অত্যাবশ্যক। এজন্য পরীক্ষণ সরঞ্জাম উৎপাদনকারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলিকে উৎপাদনের পরিমাণ বহুগুণে বাড়াতে হবে যেন বিশ্বের সিংহভাগ দেশে ঐসব সরঞ্জামের যে তীব্র ঘাটতি আছে, তা পূরণ করা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আদহানোম গেব্রিয়েসুস বলেন যে "সকল দেশের প্রতি আমরা একটিমাত্র সরল বার্তা জ্ঞাপন করছি - পরীক্ষা করুন, পরীক্ষা করুন, পরীক্ষা করুন।" তাঁর মতে "সকল দেশের সকল সন্দেহজনক [করোনাভাইরাসঘটিত] রোগ সংক্রমণ-ঘটনা পরীক্ষা করার সামর্থ্য থাকা উচিত। চোখে পট্টি বেঁধে অন্ধের মতো এই রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা সম্ভব নয়।" পরীক্ষণ ছাড়া সংক্রমিত ব্যক্তিদেরকে অন্তরণ বা বিচ্ছিন্নকরণ করা এবং এর সাহায্যে সংক্রমণের শৃঙ্খল ভঙ্গ করা সম্ভব নয়। পরীক্ষণ, শনাক্তকরণ ও অন্তরণ ব্যবস্থার মাধ্যমে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাস মহামারীর বিস্তার রোধে সফলতার দেখা পাওয়া গেছে।[৩৩]
তবে অনেক দেশেই সীমিতভাবে কেবলমাত্র সন্দেহজনক ক্ষেত্রে বিদেশফেরত, বৃদ্ধ বা রোগগ্রস্ত ব্যক্তিদের পরীক্ষণ করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে এবং যেসব ব্যক্তিদের মৃদু উপসর্গ আছে বা কোনই উপসর্গ নেই, তাদেরকে পরীক্ষণে অংশগ্রহণ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এর একটি কারণ হল বেশিরভাগ দেশেই ব্যাপক সংখ্যায় পরীক্ষণ করার সামর্থ্য অর্জন করেনি। দক্ষিণ কোরিয়া এক্ষেত্রে একটি ব্যতিক্রম, কেননা তারা বর্তমান করোনাভাইরাস মহামারীর অনেক আগে থেকেই বেশ কয়েক বছর ধরে সাবধানতাবশত পরীক্ষণ সরঞ্জাম উৎপাদন ও গুদামজাত করে রেখেছিল (এর আগে সেখানে মার্স নামের ভাইরাসের আক্রমণ হয়েছিল বলে)।
অন্তরণ (আইসোলেশন)
যেসমস্ত ব্যক্তির দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে, তাদেরকে কোনও হাসপাতালে বা স্থাস্থ্যকেন্দ্রের বিশেষ বিভাগে আলাদা বা অন্তরণ (আইসোলেশন) করে রাখা হয়, যাতে তারা সম্প্রদায়ের মধ্যে ভাইরাস ছড়াতে না পারে। অন্তরণ সম্পূর্ণ সফল হতে হলে কোনও সম্প্রদায়ের সবাইকে জোর করে সম্ভব হলে একাধিকবার পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হয়। যদি ব্যক্তিদের উপরে স্বেচ্ছায় পরীক্ষা জন্য এগিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়, তাহলে অন্তরণ পদক্ষেপটি সাধারণত সফল হয় না। ইতালির ভেনেতো অঞ্চলের কিছু ছোট শহরে (কয়েক হাজার বাসিন্দাবিশিষ্ট) অন্তরণ পদক্ষেপটি সফল হয়েছে।
সঙ্গনিরোধ (কোয়ারেন্টিন)
যেসমস্ত ব্যক্তির দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পরীক্ষা করা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি, কিন্তু যাদের মধ্যে করোনাভাইরাস ব্যাধির একাধিক উপসর্গ পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে, তাদেরকে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে বিশেষ ভবনে বা নিজ বাসভবনে সঙ্গনিরোধ (কোয়ারেন্টিন) অবস্থায় থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এখানে স্মরণীয় যে, দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি স্বল্প খরচে ও দ্রুত পরীক্ষা করার ব্যবস্থা বিশ্বের সিংহভাগ দেশেই এখনও সুলভ নয়। এছাড়া নিরব বাহকদের কাছ থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি বলে কেবল বিদেশফেরত বা করোনা-আক্রান্ত এলাকায় ভ্রমণজনিত কারণে ঝুঁকিপূর্ণ করোনাভাইরাসবাহী ব্যক্তির স্বেচ্ছায় বা আরোপিত সঙ্গনিরোধের ব্যবস্থা এককভাবে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে আদৌ যথেষ্ট কার্যকর কি না, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে।
অবরুদ্ধকরণ (লকডাউন)
যখন অন্তরণ ও সঙ্গনিরোধের ব্যবস্থাগুলি ব্যর্থ হয়, তখন সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চল বা সমগ্র দেশের উপর অবরুদ্ধকরণ (লকডাউন) ব্যবস্থা জারি ও বলবৎ করতে পারে। এক্ষেত্রে লোকদের বাসগৃহ থেকে বের হওয়া, পরিবহন ব্যবহার করা, কর্মস্থলে গমন করা, জনসমাগম হয় এমন স্থলে গমন করা, অত্যাবশ্যক নয় এমন সমস্ত কর্মকাণ্ড নির্বাহ করা, ইত্যাদির উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। বিশ্বের অনেক দেশে যেমন, চীন, ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন, ইত্যাদিতে সমগ্র দেশজুড়ে বা নির্দিষ্ট অঞ্চলে অবরুদ্ধকরণের পদক্ষেপটি কার্যকর করা হয়েছে, তবে ততদিনে ঐসব দেশের বহু হাজার লোকের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রামিত হয়ে গিয়েছিল এবং অবরুদ্ধকরণের আগেই কয়েক শত রোগীর মৃত্যু হয়েছিল।
উপসর্গহীন নিরব সংক্রমণ-বাহক অনুসন্ধান
মর্যাদাবাহী নেচার ও সায়েন্সসহ আরও কিছু গবেষণা সাময়িকীতে প্রকাশিত নির্ভরযোগ্য গবেষণার ফলাফলে দেখা গিয়েছে যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের একটি বিরাট অংশ (ক্ষেত্রভেদে প্রায় ৬০% বা তারও বেশি) কোনও উপসর্গই প্রকাশ করে না, এবং নিরবে ও নিজের অজান্তে রোগটি ছড়াতে থাকে। যেমন চীনে পরীক্ষা দ্বারা নিশ্চিত হওয়া করোনাভাইরাসবাহী প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ব্যক্তিই কোনও উপসর্গ প্রকাশ করেনি।[৩৫] এছাড়া ইতালির ভেনেতো অঞ্চলের ভো শহরের সমস্ত অধিবাসীদের পরীক্ষা করে যে ৩% সংক্রমণের ঘটনা নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিল, তাদের সিংহভাগই ছিল উপসর্গহীন নিরব বাহক।[৩৬] এই সব নিরব সংক্রমণ-বাহকেরা প্রতিনিয়ত নিজের অজান্তেই করোনাভাইরাস তাদের সম্প্রদায়ে ছড়িয়ে দিচ্ছেন, যা কিনা করোনাভাইরাস বিস্তারের অন্যতম প্রধান একটি নিয়ামক। এই তত্ত্বের স্বপক্ষে বিশ্বখ্যাত মর্যাদাবাহী সায়েন্স গবেষণা সাময়িকীতে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়েছে যে, চীনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে যে সংক্রমণের ঘটনাগুলি হয়েছিল, তাদের ৮৬%-ই উপসর্গের অনুপস্থিতির কারণে নথিভুক্ত করা হয়নি। অথচ বিজ্ঞানীদের পরিসংখ্যানিক মডেলে বেরিয়ে এসেছে যে এই উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গের নথি-বহির্ভূত ব্যক্তিরাই চীনের ৭৯% সংক্রমণের ঘটনার জন্য দায়ী।[৩৭] যেসব ব্যক্তি উপসর্গহীন কিংবা বহুদিন যাবৎ ধীরে ধীরে মৃদু উপসর্গ প্রকাশ করেন, তাদের ঊর্ধ্ব শ্বাসপথে অর্থাৎ নাকে, মুখে ও গলায় অসংখ্য ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে, এবং তারা খুব সহজেই অনিয়মিতভাবে ও কম সংখ্যায় হলেও হাঁচি-কাশি দিয়ে এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে নিজের অজান্তে আশেপাশে ভাইরাস ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এই গুরুতর ব্যাপারটি সরকার ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্তৃপক্ষের গুরুত্বের সাথে নেওয়া উচিত। গণমাধ্যমগুলিতে এই নিরব সংক্রমণ-বাহকদের ভূমিকা গুরুত্বের সাথে অবিরতভাবে প্রচার করা উচিত। প্রথমত বাইরের সমাজ ও গৃহের যেকোনও ব্যক্তির সাথে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করা উচিত। দ্বিতীয়ত সংক্রমণ-বাহক অনুসন্ধান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যতদ্রুত সম্ভব সম্ভাব্য উপসর্গহীন সংক্রমণ-বাহকদের খুঁজে বের করে তাদের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পরীক্ষণের পর নিশ্চিত হলে সেই উপসর্গহীন ব্যক্তিকে সমাজ থেকে ২ থেকে ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত অন্তরিত বা বিচ্ছিন্ন করে রাখা --- এগুলি নিরব সংক্রমণ-বাহকদের প্রতিহত করার একটি উপায়।[৩৮] কিছু কিছু ব্রিটিশ চিকিৎসকের মতে যদি কোনও উপসর্গহীন ব্যক্তির একাধিক দিন যাবৎ ঘ্রাণ ও স্বাদের ক্ষমতা হ্রাস পায় বা একেবারে লোপ পায়, তাহলে তার দেহে অজান্তে করোনাভাইরাস উপস্থিত থাকতে পারে এবং সম্ভবত ৩০% বা তারও বেশি উপসর্গহীন ব্যক্তি এরূপ ঘ্রাণশক্তি লোপ জাতীয় উপসর্গ প্রকাশ করতে পারে।[৩৯][৪০]
টিকাদান
২০২০ সালের শেষভাগে এসে একাধিক টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং অন্যান্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষসমূহের অনুমোদন লাভ করে। টিকা গ্রহণ করলে গুরুতর করোনাভাইরাস রোগ হওয়া এবং তা থেকে মৃত্যুর সম্ভাবনা বহুলাংশে হ্রাস পায় এবং ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়াও আংশিক রোধ হয়। ২০২১ সালে এসে অত্যন্ত সংক্রামক ডেলটা প্রকারণটির ক্ষেত্রেও টিকাগুলির গুরুতর রোগের বিরুদ্ধে অনাক্রম্যতা প্রদায়ক ক্ষমতা হ্রাস পায়নি, তবে এগুলির সংবহন তথা ছড়িয়ে পড়া রোধ করার ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয় (ব্যক্তি পর্যায়ে)
সমগ্র দেশব্যাপী সমস্ত জনগণকে পরীক্ষণের সুযোগসুবিধার অনুপস্থিতিতে জনসচেতনতা, অন্তরণ, সঙ্গনিরোধ এমনকি অবরুদ্ধকরণের পরেও উপসর্গহীন (Asymptomatic) ভাইরাসবাহক ব্যক্তিদের কারণে নিরবে বহু সংখ্যক সংক্রমণ হবার ভয়াবহ ঝুঁকি থেকে যায়। তাই ব্যাপক ও দ্রুত করোনাভাইরাস পরীক্ষণের ব্যবস্থা অলভ্য থাকলে উপসর্গ বা লক্ষণের প্রকাশ না পেলেও সবাইকে ঘরে বসে অবরুদ্ধ অবস্থাতে এবং সীমিত চলাচল ও সামাজিক আন্তঃক্রিয়া সম্পাদনের সময়েও সমাজের প্রতিটি মানুষের সাথে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করা, নাকে-মুখে-চোখে হাত না দেওয়া, ঘরবাড়ি পরিষ্কার করে জীবাণুমুক্ত করা, ইত্যাদি পদ্ধতিগুলি অত্যন্ত সাবধানতার সাথে মেনে চলতে হবে।
সমাজের সাধারণ ব্যক্তি পর্যায়ে করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯ (কোভিড-১৯) তথা করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়গুলি নিচে তুলে ধরা হল। করোনাভাইরাস মানুষ-থেকে-মানুষে প্রধানত দুই প্রক্রিয়াতে ছড়াতে পারে। সংক্রমণের প্রথম প্রক্রিয়াটি দুই ধাপে ঘটে। প্রথম ধাপ: করোনাভাইরাস-সংক্রমিত ব্যক্তি ঘরের বাইরে গিয়ে মুখ না ঢেকে হাঁচি-কাশি দিলে করোনাভাইরাস তার আশেপাশের (১-২ মিটার পরিধির মধ্যে) বাতাসে কয়েক ঘণ্টা ভাসমান থাকতে পারে। দ্বিতীয় ধাপ: সেই করোনাভাইরাস কণাযুক্ত বাতাসে শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করলে অন্য ব্যক্তিদের ফুসফুসেও শ্বাসনালি দিয়ে করোনাভাইরাস প্রবেশ করতে পারে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় প্রক্রিয়াটিও কয়েক ধাপে ঘটে। প্রথম ধাপ: করোনাভাইরাস-সংক্রমিত ব্যক্তি যদি কাশি শিষ্টাচার না মানেন, তাহলে তার হাতে বা ব্যবহৃত বস্তুতে করোনাভাইরাস লেগে থাকবে। দ্বিতীয় ধাপ: এখন যদি উক্ত ব্যক্তি তার পরিবেশের কোথাও যেকোনও বস্তুর পৃষ্ঠতলে সেই করোনাভাইরাসযুক্ত হাত দিয়ে স্পর্শ করেন, তাহলে সেই পৃষ্ঠতলে করোনাভাইরাস পরবর্তী একাধিক দিন লেগে থাকতে পারে। তৃতীয় ধাপ: এখন যদি অন্য কোনও ব্যক্তি সেই করোনাভাইরাসযুক্ত পৃষ্ঠ হাত দিয়ে স্পর্শ করে, তাহলে ঐ নতুন ব্যক্তির হাতে করোনাভাইরাস লেগে যাবে। চতুর্থ ধাপ : হাতে লাগলেই করোনাভাইরাস দেহের ভেতরে বা ফুসফুসে সংক্রমিত হতে পারে না, তাই এখন নতুন ব্যক্তিটি যদি তার সদ্য-করোনাভাইরাসযুক্ত হাতটি দিয়ে নাকে, মুখে বা চোখে স্পর্শ করে, কেবল তখনই করোনাভাইরাস ঐসব এলাকার উন্মুক্ত শ্লেষ্মাঝিল্লী দিয়ে দেহের ভিতরে প্রবেশ করবে ও প্রথমে গলায় ও পরে ফুসফুসে বংশবিস্তার করা শুরু করবে। এজন্য উপরে লিখিত করোনাভাইরাস ছড়ানোর দুইটি প্রক্রিয়ার শুরুতেই এবং কিংবা ছড়ানোর প্রতিটি অন্তর্বতী ধাপেই যদি করোনাভাইরাসকে প্রতিহত করা যায়, তাহলে সফলভাবে এই ভাইরাস ও রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে করণীয় আচরণের ব্যাপারে নিচের পরামর্শগুলি অবশ্যপাঠ্য।
স্বাস্থ্য-মুখোশ পরিধান
করোনাভাইরাস বায়ুবাহিত শ্লেষ্মাবিন্দুর মাধ্যমে ছড়ায় বলে নাক-মুখ ঢেকে রাখা স্বাস্থ্য-মুখোশ (মাস্ক) পরিধান করলে এর সংবহন প্রতিরোধ করা সম্ভব।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা
করোনাভাইরাস কোনও লক্ষণ-উপসর্গ ছাড়াই দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে যেকোনও ব্যক্তির দেহে তার অজান্তেই বিদ্যমান থাকতে পারে। এরকম করোনাভাইরাস বহনকারী ব্যক্তি যদি কোনও কারণে হাঁচি বা কাশি দেন, তাহলে তার আশেপাশের বাতাসে ৩ থেকে ৬ ফুট দূরত্বের মধ্যে করোনাভাইরাসবাহী জলীয় কণা বাতাসে ভাসতে শুরু করে এবং ঐ পরিধির মধ্যে অবস্থিত অন্য যেকোনও ব্যক্তির দেহে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে। এ কারণে জনসমাগম বেশি আছে, এরকম এলাকা অতি-আবশ্যক প্রয়োজন না হলে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে যাতে বাতাসে ভাসমান সম্ভাব্য করোনাভাইরাস কণা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ না করতে পারে।
হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্তকরণ
পরিবেশে অবস্থিত বিভিন্ন বস্তুতে করোনাভাইরাস লেগে থাকতে পারে, তাই এগুলি কেউ হাত দিয়ে স্পর্শ করলে তার হাতেও করোনাভাইরাস লেগে যেতে পারে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে করোনাভাইরাস কাঠ, প্লাস্টিক বা ধাতুর তৈরী বস্তুর পৃষ্ঠে গড়ে চার থেকে পাঁচ দিন লেগে থাকতে পারে। মানুষকে জীবনযাপনের প্রয়োজনে এগুলিকে প্রতিনিয়তই হাত দিয়ে স্পর্শ করতে হয়। তাই এগুলি স্পর্শ করার পরে হাত ভাল করে ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করা অত্যন্ত জরুরী। নিম্নলিখিত হাত স্পর্শ করার ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রগুলির ব্যাপারে বিশেষ নজর দিতে হবে।
- অন্য কোনও ব্যক্তির ব্যক্তিগত বস্তু যা হাত দিয়ে ঘনঘন স্পর্শ করা হয়, যেমন মোবাইল ফোন (মুঠোফোন), ল্যাপটপ, ইত্যাদি নিজ হাত দিয়ে স্পর্শ করা।
- বহুসংখ্যক ব্যক্তি স্পর্শ করে এমন যন্ত্র, যেমন এটিএম যন্ত্র (নগদ টাকা প্রদানকারী যন্ত্র) ও অন্য কোনও যন্ত্রের (যেমন দোকানের বা অন্য কোনও স্থানের ল্যাপটপ, কম্পিউটারের মনিটর) বোতাম, চাবি, কিবোর্ড ও হাতল হাত দিয়ে স্পর্শ করা।
- নিজ বাসগৃহের বাইরের যেকোনও আসবাবপত্র (চেয়ার, টেবিল, ইত্যাদি) হাত দিয়ে স্পর্শ করা।
- নিজ বাসগৃহের বাইরের যেকোনও কামরা বা যানবাহনের দরজার হাতল হাত দিয়ে স্পর্শ করা।
- কাগজের টাকা, ব্যাংকের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড, ইত্যাদি এবং এগুলি যেখানে রাখা হয়, যেমন ওয়ালেট বা পার্স ইত্যাদির অভ্যন্তরভাগ হাত দিয়ে স্পর্শ করা।
- রেস্তোরাঁ বা অন্য যেকোনও খাবার বিক্রয়কারী দোকানের থালা-বাসন-বাটি-পাত্র বা বোতল-গেলাস হাত দিয়ে স্পর্শ করা। এইসব তৈজসপত্র বহু ব্যক্তি স্পর্শ করেন এবং এগুলিকে সবসময় সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে কি না, তা সম্পূর্ণ নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়।
- ঘরের বাইরে যেকোনও স্থানের হাত মোছার তোয়ালে বা রুমাল যা একাধিক ব্যক্তি স্পর্শ করে, সেগুলিকে হাত দিয়ে স্পর্শ করা।
- ঘরের বাইরে রাস্তায় বা অন্যত্র কারও সাথে করমর্দন করা (হাত মেলানো) বা কোলাকুলি করা বা ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা।
উপর্যুক্ত ক্ষেত্রগুলিতে হাত দিয়ে স্পর্শের পরে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং যত ঘনঘন সম্ভব হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। নিম্নলিখিত হাত ধোয়ার পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে:[৪১]
- প্রথমে হাত কল থেকে পড়ন্ত পরিষ্কার পানিতে ভাল করে ভিজিয়ে নিতে হবে।[৪১] গরম বা ঠাণ্ডা পানিতে কোনও পার্থক্য হয় না।[৪২] বালতি বা পাত্রে রাখা পানিতে হাত না ভেজানো ভাল, কারণ সেটি পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত না-ও হতে পারে।[৪২]
- এর পর হাতে বিশেষ জীবাণুমুক্তকারক সাবান (সম্ভব না হলে সাধারণ সাবান) যথেষ্ট পরিমাণে প্রয়োগ করতে হবে ও ফেনা তুলে পুরো হাত ঘষতে হবে।[৪১] সাবান জীবাণুকে হাত থেকে বের করে নিয়ে আসে।
- হাতের প্রতিটি আঙুলে যেন সাবান লাগে, তা নিশ্চিত করতে হবে, এজন্য এক হাতের আঙুলের ফাঁকে আরেক হাতের আঙুল ঢুকিয়ে ঘষে কচলাতে হবে।[৪১]
- দুই হাতের বুড়ো আঙুল ও কবজিও সাবান দিয়ে ঘষা নিশ্চিত করতে হবে।[৪৩]
- এক হাতের তালুর সাথে আরেক হাতুর তালু ঘষতে হবে এবং এক হাতের তালু দিয়ে আরেক হাতের পিঠও সম্পূর্ণ ঘষতে হবে।[৪১]
- প্রতিটি নখের নিচেও ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে।[৪১]
- ঘড়ি, আংটি বা অন্য যেকোন হাতে পরিধেয় বস্তু খুলে সেগুলির নিচে অবস্থিত পৃষ্ঠও পরিষ্কার করতে হবে।
- কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে, সম্ভব হলে ৩০ সেকেন্ড বা তার বেশি সময় ধরে ফেনা তুলে ভাল করে হাত ঘষতে হবে।[৪১] যত বেশীক্ষণ ধরে হাত ঘষবেন, হাত তত বেশি জীবাণুমুক্ত হবে।[৪২]
- পাত্রে রাখা স্থির পানিতে নয়, বরং পড়ন্ত পরিষ্কার পানির ধারাতে হাত রেখে ভাল করে হাত ধুয়ে সম্পূর্ণ সাবানমুক্ত করতে হবে।[৪১] বেসিনে, গামলা, বালতি বা পাত্রে রাখা পানিতে হাত সাবানমুক্ত করলে হাতে পুনরায় জীবাণু সংক্রমিত হতে পারে।[৪২]
- হাত ধোয়ার পরে তোয়ালে কিংবা রুমাল নয়, বরং একবার ব্যবহার্য কাগজের রুমাল দিয়ে সম্পূর্ণরূপে হাত শুকিয়ে নিতে হবে, কেননা গবেষণায় দেখা গেছে যে ভেজা হাতে জীবাণু ১০০ গুণ বেশি বংশবিস্তার করে।[৪৪] ভেজা হাতে খুব সহজেই জীবাণু পুনঃসংক্রমিত হতে পারে।[৪২] একাধিক ব্যক্তির ব্যবহৃত তোয়ালে দিয়ে হাত শুকানো যাবে না, এবং একই তোয়ালে দিয়ে বারবার হাত শুকানো যাবে না, তাই একবার-ব্যবহার্য কাগজের রুমাল ব্যতীত অন্য যেকোনও ধরনের তোয়ালে বা রুমাল ব্যবহার করা উচিত নয়।
- হাত শুকানোর কাগজের রুমালটি দিয়ে ধরেই পানির কল বন্ধ করতে হবে এবং শৌচাগারের দরজার হাতল খুলতে হবে। পানির কল ও শৌচাগারের দরজার হাতলে ভাইরাস লেগে থাকতে পারে।এরপর কাগজের রুমালটি ঢাকনাযুক্ত বর্জ্যপাত্রে ফেলে দিতে হবে।
- যেহেতু দিনে বহুবার হাত ধুতে হবে, তাই ত্বকের জন্য কোমল সাবান ব্যবহার করা শ্রেয়। বেশি করে সাবান লাগানোর কারণে ত্বক শুষ্ক হয়ে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে এবং এর ফলে ত্বকে অপেক্ষাকৃত সহজে জীবাণুর সংক্রমণ হতে পারে।[৪৩]
- সাবান-পানির ব্যবস্থা না থাকলে কমপক্ষে ৬০% অ্যালকোহলযুক্ত বিশেষ হাত জীবাণুমুক্তকারক দ্রবণ (হ্যান্ড স্যানিটাইজার) দিয়ে হাত কচলে ধুতে হবে। এক্ষেত্রেও কমপক্ষে যথেষ্ট পরিমাণ দ্রবণ হাতে প্রয়োগ করে ৩০ সেকেন্ড ধরে হাতের তালু, পিঠ, আঙুল, আঙুলের ফাঁক, আঙুলের মাথা, নখের তলা, সবকিছু ভাল করে ভিজিয়ে ঘষতে হবে, যতক্ষণ না সবটুকু দ্রবণ না শুকায়।[৪৫] তবে সুযোগ পেলেই নোংরা হাত সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে নেওয়া সবচেয়ে বেশি উত্তম।
- যদি হাত-জীবাণুমুক্তকারক দ্রবণ ও সাবান উভয়েই লভ্য না থাকে বা সরবরাহ কম থাকে, কিংবা এগুলি যদি ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে না থাকে, তাহলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ছাই, বালি বা কাদামাটি ও পানি দিয়ে একই পদ্ধতিতে ঘষে ঘষে হাত ধোয়া একটি ভালো বিকল্প।[৪৬] গবেষণায় দেখা গেছে যে ছাই বা কাদামাটি দিয়ে হাত ধোয়া ও সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার জীবাণুমুক্তকরণ ক্ষমতার মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই।[৪৭]
কখন হাত ধুতে হবে, তা জানার জন্য নিচের নির্দেশনাগুলি মনে রাখা জরুরি:
- নাক ঝাড়ার পরে, কাশি বা হাঁচি দেবার পরে হাত ধোবেন।
- যেকোনও জনসমাগমস্থল যার মধ্যে গণপরিবহন, বাজার কিংবা উপাসনাকেন্দ্র অন্তর্ভুক্ত, সেগুলিতে পরিদর্শন করার পরেই হাত ধোবেন।
- বাসা থেকে কর্মস্থলে পৌঁছাবার পর হাত ধোবেন।
- কর্মস্থল থেকে বাসায় পৌঁছাবার পর হাত ধোবেন।
- ঘরের বাইরের যেকোনও বস্তুর পৃষ্ঠতল হাত দিয়ে স্পর্শ করার পরে হাত ধোবেন। (উপরে হাত স্পর্শ করার ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রগুলি দেখুন)
- যেকোনও রোগীর সেবা করার আগে, সেবা করার সময়ে বা তার পরে হাত ধোবেন।
- খাবার আগে ও পরে হাত ধোবেন।
- শৌচকার্য করার পরে হাত ধোবেন।
- বর্জ্যপদার্থ ধরার পরে হাত ধোবেন।
- পোষা প্রাণী বা অন্য যে কোনও প্রাণীকে স্পর্শ করার পরে হাত ধোবেন।
- বাচ্চাদের ডায়পার (বিশেষ জাঙ্গিয়া) ধরার পরে বা বাচ্চাদের শৌচকার্যে সাহায্য করার পরে হাত ধোবেন।
- হাত যদি দেখতে নোংরা মনে হয়, তাহলে সাথে সাথে হাত ধোবেন।
- হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেন এক রোগী থেকে আরেক রোগী বা অন্য যেকোনও ব্যক্তির দেহে যেন করোনাভাইরাস সংক্রমিত হতে না পারে, সেজন্য সেখানে কর্মরত সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীকে নিম্নের ৫টি মুহূর্তে অবশ্যই হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে : রোগীকে স্পর্শ করার আগে, পরিষ্কারকরণ বা জীবাণুমুক্তকরণ পদ্ধতি প্রয়োগের আগে, রোগীর দেহজ রস বা তরল গায়ে লাগার সম্ভাবনা থাকলে ঠিক তার পরপর, রোগীকে স্পর্শ করার পর এবং রোগীর আশেপাশের পরিবেশ স্পর্শ করার পর।
- হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করার সুব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ:
- রেস্তোরাঁ, চা ও কফিঘর, দোকানপাট, বাজার, বিপণিবিতান, শপিং মল, ইত্যাদি সমস্ত স্থানে হাঁচি-কাশিতে মুখ ঢাকার জন্য ও ভেজা হাত শুকানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে কাগজের রুমাল বা টিস্যু পেপারের ব্যবস্থা করতে হবে। হাত জীবাণুমুক্তকারক দ্রবণ (হ্যান্ড স্যানিটাইজারের) এবং/কিংবা সাবান-পানিতে হাত ধোবার ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যবহারের পর কাগজের রুমাল ফেলে দেবার জন্য (খোলা নয়, বরং) ঢাকনাযুক্ত বর্জ্যপাত্র বা বিনের ব্যবস্থা করতে হবে।
- সম্ভব হলে ঘরের বাইরে যাতায়াত বা ভ্রমণের সময় সর্বদা হাত জীবাণুমুক্তকারকের বোতল ও কাগজের রুমাল (টিস্যু পেপার) সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে হবে।
নাক, মুখ ও চোখ হাত দিয়ে স্পর্শ না করা
করোনাভাইরাস কেবলমাত্র নাক, মুখ, চোখের উন্মুক্ত শ্লেষ্মাঝিল্লী দিয়ে দেহে প্রবেশ করতে পারে। পরিবেশে উপস্থিত করোনাভাইরাস স্পর্শের মাধ্যমে হাতে লেগে থাকতে পারে। তাই আধোয়া জীবাণুযুক্ত হাতে কখনোই নাক, মুখ, চোখ স্পর্শ করা যাবে না। যদি একান্তই নাকে মুখে চোখে হাত দিতে হয়, তাহলে অবশ্যই হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করে তা করতে হবে, কিংবা কাগজের রুমাল ব্যবহার করে নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ করতে হবে। এজন্য সবসময় হাতের কাছে সাবান-পানি বা অ্যালোকোহলভিত্তিক হস্ত জীবাণুমুক্তকারক কিংবা কাগজের রুমালের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিয়মটি মেনে চলা অনেকের জন্য কঠিন হতে পারে। নাক, মুখ ও চোখে হাত দেওয়া খুবই সাধারণ ও স্বাভাবিক একটি ঘটনা এবং বহুদিনের অভ্যাসের বশে প্রায় সবাই কারণে-অকারণে এ কাজটি করে থাকে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে মানুষ ঘণ্টায় ২০ বারেরও বেশি মুখের বিভিন্ন অংশে হাত দিয়ে স্পর্শ করে। কিন্তু নিজদেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে হলে এই অভ্যাসের ব্যাপারে অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। অনেকে মানসিক চাপের কারণে, গভীর চিন্তা করার সময়, অন্য কোনও অজ্ঞাত মানসিক কারণে কিংবা চুলকানির জন্য নাকে, মুখে, চোখে হাত দিয়ে থাকেন। তাই প্রথমে প্রতিটি ব্যক্তিকে নিজেকে বেশ কিছু সময় ধরে নিয়মিত আত্ম-পর্যবেক্ষণ করে দেখতে হবে কোন্ কোন্ সময়ে বা কারণে সে নিজের নাক, চোখ বা মুখে হাত দিচ্ছে। কারণগুলি চিহ্নিত করার পর এবং এগুলি সম্বন্ধে সচেতন হবার পরে একে একে এগুলিকে দূর করার চেষ্টা করতে হবে এবং নাকে,মুখে, চোখে হাত দেয়ার মাত্রা যথাসর্বোচ্চ সম্ভব কমিয়ে আনতে হবে।
পরিবেশ পরিষ্কার করে করোনাভাইরাস মুক্তকরণ
- গৃহ ও কার্যালয়ে যেসব বস্তু অনেক বহিরাগত মানুষ হাত দিয়ে স্পর্শ করে, যেমন দরজার হাতল, কম্পিউটারের কিবোর্ড ও মনিটরের পর্দা, ল্যাপটপ কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, বা অন্য কোনও বহুল ব্যবহৃত আসবাব, ইত্যাদি নিয়মিতভাবে কিছু সময় পরপর জীবাণুনিরোধক স্প্রে বা দ্রবণ দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
- বাইরে থেকে আসার পর পরিধেয় পোশাক ও অন্যান্য বহুল ব্যবহৃত কাপড় যেমন-বিছানার চাদর, ইত্যাদি নিয়মিত ধুতে হবে।
করোনাভাইরাস-বহনকারী সম্ভাব্য ব্যক্তিদের সম্পর্কে করণীয়
- যে ব্যক্তির জ্বর, সর্দি, কাশি ও হাঁচি হচ্ছে, তার থেকে ন্যূনতম ৩ থেকে ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, যাতে বাতাসে ভাসমান ভাইরাস কণা শ্বাসগ্রহণের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ না করে।
- রাস্তায় ও যত্রতত্র থুতু ফেলা যাবে না, কেননা থুতু থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে।
- হাঁচি-কাশি দেওয়া ব্যক্তিকে অবশ্যই কাশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় অস্থায়ী কাগজের রুমাল বা টিস্যুপেপার দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হবে এবং সেই কাগজের রুমাল সাথে সাথে বর্জ্যে ফেলে দিতে হবে। খালি হাত দিয়ে কাশি-হাঁচি ঢাকা যাবে না, কেন না এর ফলে হাতে জীবাণু লেগে যায় (হাত দিয়ে হাঁচি-কাশি ঢাকলে সাথে সাথে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে)। কাগজের রুমাল না থাকলে কনুইয়ের ভাঁজে বা কাপড়ের হাতার উপরের অংশে মুখ ঢেকে হাঁচি-কাশি দিতে হবে।
- পরিচিত কারও করোনাভাইরাসের লক্ষণ-উপসর্গ দেখা গেলে সাথে সাথে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা জরুরী ফোনে যোগাযোগ করতে হবে যাতে তাকে দ্রুত পরীক্ষা করা যায় এবং প্রয়োজনে সঙ্গনিরোধ (কোয়ারেন্টাইন) করে রাখা যায়।
বিবিধ
- রাস্তায় বা অন্যত্র অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রস্তুতকৃত ও পরিবেশনকৃত খাবার খাওয়া পরিহার করতে হবে, কারণে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রস্তুতকৃত ও অস্বাস্থ্যকর থালা-বাসন-বাটি-পাত্র বা গেলাসে পরিবেশনকৃত খাবার ও পানীয়ের মাধ্যমেও ভাইরাস ছড়াতে পারে।
- রাস্তায় চলাফেরার পথের ধারে উপস্থিত উন্মুক্ত বর্জ্য কিংবা হাসপাতাল ও অন্যত্র উপস্থিত চিকিৎসা বর্জ্যের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে।
- হাসপাতালে ও অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদেরকে অবশ্যই বিশেষ চিকিৎসা মুখোশ ও হাতমোজা পরিধান করতে হবে, যাতে ভাইরাস এক রোগী থেকে আরেক রোগীতে না ছড়ায়।
উদ্ভব ও ইতিহাস
২০১৯ সালের শেষের দিকে উহান নগরীর হুয়ানান সামুদ্রিক খাদ্যের পাইকারি বাজারের দোকানদারদের মধ্যে প্রথম ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটে বলে ধারণা করা হয়।[৪৮][৪৯] বাজারটিতে সামুদ্রিক খাদ্যদ্রব্যের পাশাপাশি জীবন্ত বাদুড়, সাপ ও অন্যান্য বন্যপ্রাণী ও তাদের সদ্য জবাইকৃত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি হত। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় যে হয়ত কোনও প্রাণীদেহ হতে করোনাভাইরাসটি বিবর্তিত হয়ে আরেকটি মধ্যবর্তী পোষক প্রাণীর মাধ্যমে মানবদেহে সংক্রমিত হয়েছে। চীনা সরকারি নথির বরাতে পাওয়া অন্য এক সূত্রমতে প্রথম আক্রান্ত ব্যক্তি ছিলেন ৫৫ বছর বয়স্ক ব্যক্তি যিনি ১৭ নভেম্বর, ২০১৯ সালে আক্রান্ত হন।[৫০] পরের মাসের মধ্যে হুপেই প্রদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্তর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যায়। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে উহানে অজানা কারণে আক্রান্ত নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলে[৫১] পরের মাসের শুরুতেই এ সংক্রান্ত তদন্ত শুরু হয়।[৫২] চীনা বিজ্ঞানীরা ২০২০ সালের ৭ই জানুয়ারি তারিখে এটিকে একটি নতুন ধরনের করোনাভাইরাস হিসেবে ঘোষণা দেন এবং এর বংশাণুসমগ্র বা জিনোমের তথ্যগুলি বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীদের কাছে ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের কাছে বিতরণ করেন।
প্রথমদিকে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি সাড়ে সাতদিনে দ্বিগুণ হতে যেত।[৫৩] জানুয়ারি, ২০২০ এর শুরু এবং মাঝামাঝি দিকে ভাইরাস অন্যান্য চীনা প্রদেশেও পৌঁছে যায়। চীনা নববর্ষের কারণে এবং উহান চলাচলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান হওয়ায় চীনের গুরুত্বপূর্ণ সকল স্থানে এ ভাইরাস পৌঁছে যায়।[৫৪] ২০ জানুয়ারি একদিনে চীন ১৪০ নতুন আক্রান্তের ঘটনা রেকর্ড করে। এর মধ্যে একজন বেইজিংয়ের এবং অপরজন শেনঝেন প্রদেশের।[৫৫] ২০ জানুয়ারির মধ্যে প্রায় ৬,১৭৪ জন নতুন আক্রান্তের ঘটনা রেকর্ড হয় বলে জানা যায়।[৫৬]
৩০ জানুয়ারি ডব্লিউএইচও এই প্রাদুর্ভাবকে আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য উদ্বেগজনক জরুরী অবস্থা ঘোষণা করে।[৫৭] ২৪ ফেব্রুয়ারি এর পরিচালক টেড্রোস আধানম সতর্ক করেন এই বলে, এই ভাইরাস চীনের বাইরে আশঙ্কাজনকভাবে ক্রমবৃদ্ধিমান সংখ্যার কারণে বৈশ্বিক মহামারীতে পরিণত হতে পারে।[৫৮]
১১ মার্চ ডব্লিউএইচও এই প্রাদুর্ভাব বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সম্প্রদায়ে সঞ্চালন ঘটায় বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে ঘোষণা করে।[৬] ১৩ মার্চ ডব্লিউএইচও ইউরোপকে এই ভাইরাসের নতুন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করে। কারণ ইউরোপে চীন বাদে বিশ্বের অন্যান্য স্থানের চেয়ে অনেক বেশি আশঙ্কাজনক হারে এই রোগ ছড়ায়।[৫৯] ১৬ মার্চ ২০২০ তারিখে চীনের মূল ভূখণ্ড বাদে সারা বিশ্বে আক্রান্তর সংখ্যা চীনকে ছাড়িয়ে যায়।[৬০] ১৯ মার্চ ২০২০ -এর হিসাব অনুযায়ী[হালনাগাদ], ২৪১,০০০ জন আক্রান্তের ঘটনা বিশ্বজুড়ে নথিবদ্ধ হয়েছে।; ৯,৯০০০ এরও বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে; এবং ৮৮,০০০ জন সুস্থ হয়েছে।[৬১]
করোনাভাইরাস একই ধরনের অনেকগুলি ভাইরাসের একটি বৃহৎ পরিবার যা প্রাণী ও মানুষে সংক্রমিত হতে পারে। ২১শ শতকের আগ পর্যন্ত করোনাভাইরাসগুলি মানুষের দেহে সাধারণ সর্দি-কাশি ব্যতীত অন্য কোনও উপসর্গ বা রোগব্যাধি সৃষ্টি করত না। কিন্তু ২১শ শতকে এসে এ পর্যন্ত ৩টি নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের উদ্ভব হয়েছে (সার্স, মার্স ও উহান করোনাভাইরাস) যেগুলি মানব সম্প্রদায়ে ব্যাপক অঞ্চল জুড়ে প্রাণঘাতী আকার ধারণ করার ঝুঁকি বহন করে।[৬২]
উহান করোনাভাইরাসটির বংশাণুসমগ্রের অনুক্রম (জিনোম সিকোয়েন্স) ও সার্স করোনাভাইরাসের বংশাণুসমগ্রের অনুক্রমের মধ্যে প্রায় ৭০% মিল পাওয়া গেছে। এর আগে ২০০২ সালেও চীনদেশেই একই ধরনের জীবন্ত প্রাণী বিক্রির বাজার থেকে ("গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রীয় রোগলক্ষণসমষ্টি সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাস"; "Severe Acute Respiratory Syndrome-related Coronavirus", সংক্ষেপে SARS‐CoV) সার্স করোনাভাইরাসের সংক্রমণ, প্রাদুর্ভাব ও বিশ্বব্যাপী বিস্তার ঘটেছিল। বিশ্বের ৩০টি দেশে সার্স ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে, এতে ৮৪৩৭ জন ব্যক্তি নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত হয় এবং ৮১৩ জনের মৃত্যু হয়।[৬৩] এর ১০ বছর পরে ২০১২ সালে মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব থেকে মার্স (মধ্যপ্রাচ্যীয় শ্বাসযন্ত্রীয় রোগলক্ষণসমষ্টি সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাস; "Middle Eastern Respiratory Syndrome-related Coronavirus", সংক্ষেপে MERS‐CoV) নামের আরেকটি বিপজ্জনক প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস উট থেকে মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়েছিল। ভাইরাসটি ২৭টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে, এতে ২৪৯৪ জন নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত হয় এবং এদের মধ্যে ৮৫৮ জনের মৃত্যু হয়।[৬৩]
অবস্থান | মামলা | মৃত্যু |
---|---|---|
বিশ্ব | ২৫৩,৩৯১,৩২৪ | ৫,১০৮,০০৮ |
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | ৪৭,৮৩৪,৮১০ | ৭৮২,৯৩৩ |
ইউরোপীয় ইউনিয়ন | ৩৯,২৬৯,১৮৫ | ৭৮৭,৭৭২ |
ভারত | ৩৪,৪২৬,০৩৬ | ৪৬৩,২৪৫ |
ব্রাজিল | ২১,৯৪০,৯৫০ | ৬১০,৯৩৫ |
যুক্তরাজ্য | ৯,৪৮৭,৩০২ | ১৪২,৬৭৮ |
রাশিয়া | ৯,০৩১,৮৫১ | ২৫৪,১৬৭ |
তুরস্ক | ৮,৩৬৩,৯৫৯ | ৭৩,১২৭ |
ফ্রান্স | ||
ইরান | ||
আর্জেন্টিনা | ||
স্পেন | ||
কলম্বিয়া | ||
ইতালি | ৪,৮৪৩,৯৫৭ | ১৩২,৬৮৬ |
জার্মানি | ||
ইন্দোনেশিয়া | ||
মেক্সিকো | ||
পোল্যান্ড | ||
দক্ষিণ আফ্রিকা | ||
ইউক্রেন | ||
ফিলিপাইন | ||
মালয়েশিয়া | ||
পেরু | ||
নেদারল্যান্ডস | ||
ইরাক | ||
থাইল্যান্ড | ||
চেক প্রজাতন্ত্র | ||
জাপান | ||
কানাডা | ||
চিলি | ||
বাংলাদেশ | ১,৫৭২,১২৭ | ২৭,৯১২ |
রোমানিয়া | ||
ইসরায়েল | ||
বেলজিয়াম | ||
পাকিস্তান | ১,২৭৯,৩৭৩ | ২৮,৫৯৫ |
সুইডেন | ||
পর্তুগাল | ||
সার্বিয়া | ||
কাজাখস্তান | ||
মরক্কো | ||
কিউবা | ||
ভিয়েতনাম | ||
সুইজারল্যান্ড | ||
জর্ডান | ||
হাঙ্গেরি | ||
নেপাল | ||
অস্ট্রিয়া | ||
সংযুক্ত আরব আমিরাত | ||
তিউনিসিয়া | ||
গ্রিস | ||
জর্জিয়া (দ্ব্যর্থতা নিরসন) | ||
লেবানন | ||
গুয়াতেমালা | ||
বেলারুশ | ||
বুলগেরিয়া | ||
কোস্টা রিকা | ||
সৌদি আরব | ||
শ্রীলঙ্কা | ||
ইকুয়েডর | ||
আজারবাইজান | ||
বলিভিয়া | ||
মিয়ানমার | ||
পানামা | ||
প্যারাগুয়ে | ||
ফিলিস্তিন | ||
শ্লোভাকিয়া | ||
ক্রোয়েশিয়া | ||
প্রজাতন্ত্রী আয়ারল্যান্ড | ||
কুয়েত | ||
ভেনিজুয়েলা | ||
উরুগুয়ে | ||
লিথুয়ানিয়া | ||
ডেনমার্ক | ||
ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র | ||
হন্ডুরাস | ||
ইথিওপিয়া | ||
লিবিয়া | ||
দক্ষিণ কোরিয়া | ||
মঙ্গোলিয়া | ||
মলদোভা | ||
মিশর | ||
শ্লোভেনিয়া | ||
ওমান | ||
আর্মেনিয়া | ||
বাহরিন | ||
কেনিয়া | ||
বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা | ||
কাতার | ||
নাইজেরিয়া | ||
জাম্বিয়া | ||
আলজেরিয়া | ||
নরওয়ে | ||
উত্তর ম্যাসেডোনিয়া | ||
ল্যাটভিয়া | ||
বতসোয়ানা | ||
উজবেকিস্তান | ||
কিরঘিজস্তান | ||
আলবানিয়া | ||
এস্তোনিয়া | ||
সিঙ্গাপুর | ||
কসোভো | ||
আফগানিস্তান | ||
অস্ট্রেলিয়া | ||
ফিনল্যান্ড | ||
মোজাম্বিক | ||
মন্টেনিগ্রো | ||
জিম্বাবোয়ে | ||
ঘানা | ||
নামিবিয়া | ||
উগান্ডা | ||
সাইপ্রাসের | ||
কম্বোডিয়া | ||
এল সালভাদর | ||
ক্যামেরুন | ||
রুয়ান্ডা | ||
চীন | ||
জামাইকা | ||
মালদ্বীপ | ||
লুক্সেমবুর্গ | ||
সেনেগাল | ||
অ্যাঙ্গোলা | ||
মালাউই | ||
আইভরি কোস্ট | ||
কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র | ||
ত্রিনিদাদ ও টোবাগো | ||
ফিজি | ||
সুরিনাম | ||
ইস্তেনী | ||
মাদাগাস্কার | ||
সিরিয়া | ||
সুদান | ||
কেপ ভার্দে | ||
মাল্টা | ||
মৌরিতানিয়া | ||
গায়ানা | ||
গ্যাবন | ||
লাওস | ||
গিনি | ||
পাপুয়া নিউ গিনি | ||
তানজানিয়া | ||
টোগো | ||
বেলিজ | ||
বেরিন | ||
হাইতি | ||
বাহামা | ||
সেশেলস | ||
লেসোথো | ||
সোমালিয়া | ||
বুরুন্ডি | ||
পূর্ব তিমুর | ||
তাজিকিস্তান | ||
মরিশাস | ||
কঙ্গো প্রজাতন্ত্র | ||
তাইওয়ান | ||
নিকারাগুয়া | ||
মালি | ||
অ্যান্ডোরা | ||
বুরকিনা ফাসো | ||
বার্বাডোস | ||
জিবুতি | ||
নিরক্ষীয় গিনি | ||
আইসল্যান্ড | ||
সেন্ট লুসিয়া | ||
হংকং | ||
দক্ষিণ সুদান | ||
ব্রুনেই | ||
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র | ||
গাম্বিয়া | ||
ইয়েমেন | ||
ইরিত্রিয়া | ||
সিয়েরা লিওন | ||
নাইজার | ||
গিনি-বিসাউ | ||
লাইবেরিয়া | ||
গ্রেনাডা | ||
নিউজিল্যান্ড | ||
সান মারিনো | ||
চাদ | ||
সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রেনাডাইনস | ||
ডোমিনিকা | ||
কোমোরোস | ||
অ্যান্টিগুয়া এবং বারবুডা | ||
সাও টোম এবং প্রিন্সিপ | ||
লিচেনস্টাইন | ||
মোনাকো | ||
সেন্ট কিটস এবং নেভিস | ||
ভুটান | ||
ভ্যাটিকান সিটি | ||
সলোমন দ্বীপপুঞ্জ | ||
প্যালেস | ||
ভানুয়াটু | ||
মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ | ||
সামোয়া | ||
কিরিবাটি | ||
মাইক্রোনেসিয়ার ফেডারেটেড স্টেটস |
রেখাচিত্র
-
১৯ মার্চ ২০২০ অনুযায়ী প্রতি ১০ লক্ষ জনে কোভিড -১৯ এর মোট নিশ্চিতকৃত ঘটনা[৬৬]
-
COVID-১৯ এর কারণে মোট নিশ্চিত মৃত্যু, প্রতি দশ লক্ষ লোক 20 March 2020[৬৭]
-
মোট নিশ্চিত ঘটনার বৃদ্ধি
-
প্রতিবেদনের তারিখ অনুসারে COVID-19 এর মহামারী বক্ররেখা
-
চীন এবং বিশ্বের বাকী দেশে (আরওডাব্লু) নিশ্চিত হওয়া ঘটনা এবং মৃত্যুর ক্রমবদ্র্ধিষ্ণু ঘটনাগুলির আধা লগ প্লট[৬৮][৬৯]
-
(চীন-পরবর্তী) কিছু দেশগুলির ঘটনার উচ্চ বৃদ্ধির হারের সাথে তাত্পর্যপূর্ণ বৃদ্ধির হারের ভিত্তিতে দ্বিগুণ সময় এবং তিন দিনের অনুমান সহ সেমি-লগ প্লট
শনাক্তকরণ, উপসর্গ ও নিরাময়
পলিমারেজ শৃঙ্খল বিক্রিয়া পরীক্ষার (পিসিআর টেস্ট) মাধ্যমে উপর্যুক্ত বাজারের সাথে সরাসরি জড়িত অনেক ব্যক্তির দেহে এবং বাজারের সাথে জড়িত নয়, এমন ব্যক্তিদের দেহেও ভাইরাসটির সংক্রমণ হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ হতে পারে, এমন প্রমাণও পাওয়া গেছে।[৭১] তবে এই নতুন ভাইরাসটি সার্স ভাইরাসের সমপর্যায়ের মারাত্মক কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়।[৭২][৭৩][৭৪][৭৫]
এই ভাইরাসের সংক্রমণে জ্বর (৮৩%-৯৩% রোগীর ক্ষেত্রে), শুকনো কাশি (৭৬%-৮২% রোগীর ক্ষেত্রে), অবসাদ বা পেশীতে ব্যথা (১১%-৪৪% রোগীর ক্ষেত্রে), এবং পরবর্তীতে শ্বাসকষ্ট ও শ্বাসনালির রোগ (যেমন- ক্লোমনালীর প্রদাহ তথা ব্রঙ্কাইটিস এবং নিউমোনিয়া) হয়।[৭৬] কদাচিৎ মাথাব্যথা, তলপেটে ব্যথা, উদরাময় (ডায়রিয়া) বা কফসহ কাশি হতে পারে। রোগীদের রক্ত পরীক্ষা করে দেখা গেছে এই ভাইরাসের কারণে তাদের শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা হ্রাস পায়। এছাড়া যকৃৎ ও বৃক্কের (কিডনি) ক্ষতি হয়। সাধারণত এক সপ্তাহের আগ পর্যন্ত উপসর্গগুলি ডাক্তার দেখানোর মত জটিল রূপ ধারণ করে না। কিন্তু ২য় সপ্তাহে এসে ব্যক্তিভেদে অবস্থার দ্রুত ও গুরুতর অবনতি ঘটতে পারে। যেমন ফুসফুসের ক্ষতিবৃদ্ধির সাথে সাথে ধমনীর রক্তে অক্সিজেনের স্বল্পতা (হাইপক্সেমিয়া) দেখা দেয় এবং রোগীকে অক্সিজেন চিকিৎসা দিতে হয়। এছাড়া তীব্র শ্বাসকষ্টমূলক রোগলক্ষণসমষ্টি (অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রোম) পরিলক্ষিত হয়। ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ রোগীকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (intensive care unit বা ICU) রেখে যান্ত্রিকভাবে শ্বাসগ্রহণ করাতে হয় এবং কখনও কখনও কৃত্রিম ফুসফুসের ভেতরে রক্ত পরিচালনার মাধ্যমে রক্তে অক্সিজেন যোগ করতে হয়। এছাড়া ফুসফুসের ব্যাপক ক্ষতি হবার কারণে ব্যাকটেরিয়াঘটিত ২য় একটি নিউমোনিয়া হবার বড় সম্ভাবনা থাকে এবং নিবিড় পরিচর্যাধীন রোগীদের ১০% ক্ষেত্রে এটি হয়।[৬২]
ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের আক্রমণের মত উপসর্গ হলেও ফ্লুয়ের ঔষধে কোনও কাজ হয় না। এ পর্যন্ত রোগটির জন্য কোনও ঔষধ বা টিকা উদ্ভাবিত হয়নি। হাসপাতালে নিবিড় চিকিৎসা ছাড়া রোগ থেকে সেরে ওঠার উপায় নেই। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আগে থেকেই কম, তাদের নিউমোনিয়া হয়ে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সাধারণত বৃদ্ধদের মধ্যে ভাইরাসটির ক্ষতিকর প্রভাব বেশি দেখা গেছে। ইনলফ্লুয়েঞ্জাতে সংক্রমণ-পরবর্তী মৃত্যুর হার (যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ০.১%) করোনাভাইরাসের মৃত্যুর হার অপেক্ষা কম (৩-৪%)।[৭৬]
বিস্তারের উপায়
উহান করোনাভাইরাসটি অপেক্ষাকৃত বড় আকারের; এর আকার প্রায় ১২৫ ন্যানোমিটার (অর্থাৎ ১ মিটারের প্রায় ১ কোটি ভাগের এক ভাগ)। আকারে বড় বলে এটি বাতাসে কয়েক ঘণ্টার বেশি ভাসন্ত অবস্থায় থাকতে পারে না এবং কয়েক ফুটের বেশি দূরত্বে গমন করতে পারে না। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মতো এটিও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংস্পর্শের মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তিতে ছড়াতে পারে। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শের সময় মুখের হাঁচি, কাশি, লালা বা থুতু থেকে সরাসরি ভাইরাসটি এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তিতে সংক্রামিত হতে পারে। অন্যদিকে জনসাধারণ্য স্থানে কোনও আক্রান্ত ব্যক্তি হাঁচি-কাশি দিলে বা ভাইরাসযুক্ত হাত দিয়ে ধরলে কাছাকাছি পৃষ্ঠতলে যেমন দরজার হাতলে, খাটের খুঁটিতে বা মুঠোফোনে ভাইরাস লেগে থাকতে পারে এবং সেখান থেকে পরোক্ষভাবে আরেকজন ব্যক্তির কাছে সেটি ছড়াতে পারে।[৬২]
এছাড়া উহান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার সময়ে যেমন ক্লোমনালীবীক্ষণ বা শ্বাসনালির চিকিৎসার সময়ে বাতাসে দেহ থেকে নিঃসৃত ভাইরাসবাহী তরলের বাতাসে ভাসমান কণাগুলি একাধিক চিকিৎসাকর্মীকে সংক্রামিত করতে পারে এবং সাবধানতা অবলম্বন না করলে হাসপাতালের সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। হাত পরিষ্কার রাখলে এবং বিশেষ পোশাক বা গাউন, হাতমোজা, মুখোশ ও চশমা পরিধান করলে বাতাসে ভাইরাসবাহী ভাসমান কণার বিস্তার কমানো সম্ভব। ভাইরাসটির সংক্রমণ ও লক্ষণ প্রকাশের অন্তর্বর্তী কাল (ইনকিউবেশন পিরিয়ড) এখনও নিশ্চিতভাবে জানা না গেলেও সংক্রমণের মোটামুটি ১ থেকে ১৪ দিনের মধ্যেই রোগের উপসর্গ দেখা যাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।[৬২]
ঝুঁকি
২০২০ সালের ২৩শে জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উহান করোনাভাইরাসের বিস্তারকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি জরুরী অবস্থা হিসেবে ঘোষণা দেবার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেয়।[৭৮][৭৯] তবে তারা বলে যে তাদের জরুরী অবস্থা সমিতি প্রয়োজন হলে এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে পুনরায় খতিয়ে দেখতে পারে। এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভাইরাসটির ব্যাপক বিস্তারের সম্ভাবনার ব্যাপারে সতর্ক করেছিল। সে সময় চীনা নববর্ষ উপলক্ষে চীনের পর্যটকদের গমনাগমনের শীর্ষ মৌসুমের কারণে ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে দুশ্চিন্তা ছিল।
প্রতিক্রিয়া
২০১৯ সালের ৩১শে ডিসেম্বর তারিখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে প্রথম ভাইরাসটির সংক্রমণের কথা অবহিত করা হয়। ২৭শে জানুয়ারি ২০২০ তারিখ পর্যন্ত চীনে প্রায় ৪৫১৫ ব্যক্তির দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৯৭৬ জনের অবস্থা গুরুতর।[৮০] ভাইরাসের কারণে ২০২০ সালের ৯ই জানুয়ারি প্রথম ব্যক্তিটি মারা যায়। ২৭-শে জানুয়ারি ২০২০ তারিখ পর্যন্ত ভাইরাসটির কারণে চীনে ১০১ জন ব্যক্তি মারা যায়।
ভাইরাসের বিস্তার রোধের উদ্দেশ্যে চীনের বহু শহরে নববর্ষ উৎসব বাতিল করে দেওয়া হয়, উৎসব-উদ্দীপনামূলক জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয় এবং পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় বেড়াবার স্থানগুলিও জনসাধারণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। চীনা সরকারের নির্দেশে উহান শহরে ও হুপেই প্রদেশের আরও ১৭টি শহরে অন্তর্গামী ও বহির্গামী সমস্ত গণপরিবহন সেবা স্থগিত করা হয়েছে। ফলে প্রায় ৫ কোটি চীনা অধিবাসী (উহান শহরের ১ কোটি ১০ লক্ষ অধিবাসীসহ) নিজ শহরে প্রায় অবরুদ্ধ জীবনযাপন করছে। উহানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে।
দেশ অনুযায়ী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব
২১শে মার্চ ২০২০ তারিখ পর্যন্ত সারা বিশ্বে ১১ হাজারের কিছু বেশি লোকের করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯-এর কারণে মৃত্যু হয়েছে। এর ১ সপ্তাহ আগে মৃতের সংখ্যা ছিল প্রায় ৫ হাজার ৪০০ জন। অর্থাৎ বিশ্বে গড়ে করোনাভাইরাসের কারণে প্রতি ৭ দিনে মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে।[৮১]
মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ হবার সময় দেশভেদে ভিন্ন। সাধারণত বিস্তারের শুরুর দিকে ২-৩ দিন পরপর মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়। পরবর্তীতে বিস্তার প্রতিরোধমূলক কর্মসূচী পালন করার ফলে মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ হবার সময় বাড়তে থাকে। যেমন চীনে মার্চের শেষ দিকে মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ হবার সময় ছিল ৩৫ দিন।[৮১]
চিত্রশালা
- কোভিড-১৯ প্রতিরোধে বিভিন্ন দেশের পদক্ষেপ
-
চীনের গিনতান এলাকার বাসিন্দাদের জন্য সরকারের ইস্যুকৃত অনুমতিপত্র। প্রতি ২ দিন পরপর, শুধুমাত্র পরিবারের ১জন সদস্য জরুরী কেনাকাটার প্রয়োজনে বের হতে পারতেন
-
এলাকা লকডাউনের সময় উহানের বাসিন্দাদেরকে খাবার ও অন্যান্য দৈনন্দিন দ্রব্যাদি বেড়ার অপরপাশ থেকে নিতে হত
-
ইউরোপের বোলগোনাতে, 'মানবতার দেয়াল'। "যারা পারবেন, দান করবেন; যারা অক্ষম, তারা নেবেন।"
-
কোভিড-১৯ মহামারীর সময় সেবা প্রদানের জন্য মস্কোতে স্থাপিত একটি কলসেন্টার
-
তাইওয়ান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে, শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপের চেকপয়েন্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কর্মী ব্যতীত কাউকে ক্যাম্পাস এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়া হয়না।
-
মহারাষ্ট্রের বিজ্ঞান আশ্রমে, শিক্ষার্থীরা ফেস শিল্ড উৎপাদন করছেন
-
ফ্রান্সের দোকানসমূহ (সুপারশপ) তাদের কর্মী ও ক্রেতাদেরকে সংক্রমনমুক্ত রাখতে দরকারী ব্যবস্থাসমমূহ (হ্যান্ড স্যানিটাইজার) এবং কাউন্টারে প্লাস্টিক/কাঁচের শিল্ড স্থাপন করেছে
-
যুক্তরাজ্যের কিছু দোকান, অতি চাহিদাসম্পন্ন দ্রব্যাদি কেনা, প্রত্যেক ক্রেতার জন্য সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে
-
নিউইয়র্ক রাজ্যের একটি দোকানে, ক্রেতাদেরকে নূন্যতম ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখার স্মরণসূচক বার্তা রাখা হয়েছে
-
পোল্যান্ডের একটি বাজারে (শপিং সেন্টার) স্বয়ংক্রিয় হ্যান্ড স্যানিটাইজার স্থাপন করা হয়েছে যাতে ক্রেতারা হাত জীবাণুমুক্ত করে নিতে পারে
-
উত্তর কোরিয়ার একটি লিফটে হাত জীবাণুমুক্ত রাখার জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার (হাত পরিষ্কারক) রাখা হয়েছে
-
ব্যাংককের একটি হাসপাতালে 'সামাজিক দূরত্ব' চর্চা করা হচ্ছে। আসনগুলোতে এমনভাবে চিহ্ন বসিয়ে দেয়া হয়েছে যাতে জনগণ দূরত্ব বজায় রেখে বসতে উদ্ভুদ্ধ হয়
-
মস্কোর পাতালরেলের আসনসমূহে 'শারিরীক দূরত্ব' মানতে উদ্ভুদ্ধ করার জন্য চিহ্ন বসিয়ে দেয়া হয়েছে
-
নরওয়ের বাসসমূহে, চালক ও যাত্রীদের মধ্যে দূরত্ব রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে
-
ব্রাজিলে সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর্মীরা গণপরিবহণ (বাস) জীবাণুমুক্ত করছেন
-
সুরক্ষা পোশাক পরে তেহরান পাতালরেল জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে
-
সুইডেনের একটি হাসপাতালের সামনে, সম্ভাব্য কোভিড-১৯ লক্ষনধারী ব্যক্তিদের জন্য অপেক্ষার নির্দেশসূচক বার্তা বসানো হয়েছে।
-
সুইডেনের একটি হাসপাতালের সামনে, সেনাবাহিনী অস্থায়ী ICU তৈরী করে দিয়েছে
-
কোরিয়ায় একটি হাসপাতালের সামনে কোভিড-১৯ ড্রাইভ থ্রু (গাড়িতেই পরীক্ষা) টেষ্ট সেন্টার
-
বোওলিং গ্রিন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে কোভিড-১৯ ড্রাইভ থ্রু (গাড়িতেই পরীক্ষা) এর স্থান
-
নিউইয়র্ক রাজ্যে একটি অস্থায়ী পরীক্ষা স্থানের (মোবাইল টেষ্টিং সেন্টার) সামনে পরীক্ষার্থীদের নথিবদ্ধ করা হচ্ছে
-
নিউইয়র্ক রাজ্যে একটি ড্রাইভ থ্রু (গাড়িতেই পরীক্ষা) এর স্থান
-
ইতালী'তে একটি বাজারের (সুপারমার্কেট) সামনে ক্রেতারা সামাজিক দূরত্ব মেনে লাইনে দাঁড়িয়েছেন
-
জাপানের একটি কিন্ডারগার্ডেন স্কুলে শিশুরা ফেসমাস্ক পরে আছে
আরও পড়ুন
- Zhou, Fei; Yu, Ting; Du, Ronghui; Fan, Guohui; Liu, Ying; Liu, Zhibo; Xiang, Jie; Wang, Yeming; Song, Bin (2020-03)। "Clinical course and risk factors for mortality of adult inpatients with COVID-19 in Wuhan, China: a retrospective cohort study"। The Lancet। 395 (10229): 1054–1062। আইএসএসএন 0140-6736। ডিওআই:10.1016/s0140-6736(20)30566-3। পিএমআইডি 32171076
|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। পিএমসি PMC7270627|pmc=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:|তারিখ=
(সাহায্য)
আরও দেখুন
- অপরাধের উপর কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব
- কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর প্রভাব
- বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারী
- ভারতে কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারী
- সার্স-কোভ-২ - করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯ (কোভিড-১৯) সৃষ্টিকারী ভাইরাসের বর্ণনা
- করোনাভাইরাসের রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষা
- এশিয়ায় কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারী
- কর্মস্থলে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা
- অনাক্রম্যতা ছাড়পত্র
তথ্যসূত্র
- ↑ 柳叶刀披露首例新冠肺炎患者发病日期,较官方通报早7天। ২৭ জানুয়ারি ২০২০। ৩০ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০২০।
- ↑ 《柳叶刀》刊文详解武汉肺炎 最初41案例即有人传人迹象। ২৬ জানুয়ারি ২০২০। ৩০ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০২০।
- ↑ "2019 Novel Coronavirus (2019-nCoV) Situation Summary"। Centers for Disease Control and Prevention। ৩০ জানুয়ারি ২০২০। ২৬ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০২০।
- ↑ ক খ গ "COVID-19 Dashboard by the Center for Systems Science and Engineering (CSSE) at Johns Hopkins University (JHU)"। ArcGIS। Johns Hopkins University। সংগ্রহের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- ↑ "Coronavirus disease (COVID-19) – World Health Organization"। www.who.int (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ ক খ "WHO Director-General's opening remarks at the media briefing on COVID-19 - 11 March 2020"। www.who.int (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "Getting your workplace ready for COVID-19" (পিডিএফ)। World Health Organization। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ "Questions and answers on COVID-19"। European Centre for Disease Prevention and Control (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ ক খ গ "Coronavirus disease (COVID-19)"। www.who.int (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ ক খ গ ঘ "Symptoms of Novel Coronavirus (2019-nCoV)"। US Centers for Disease Control and Prevention। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ "Coronavirus Disease 2019 (COVID-19)"। Centers for Disease Control and Prevention। ১৬ মার্চ ২০২০।
- ↑ ক খ Rothan, Hussin A.; Byrareddy, Siddappa N. (২০২০-০৫-০১)। "The epidemiology and pathogenesis of coronavirus disease (COVID-19) outbreak"। Journal of Autoimmunity (ইংরেজি ভাষায়)। 109: 102433। আইএসএসএন 0896-8411। ডিওআই:10.1016/j.jaut.2020.102433। পিএমআইডি 32113704
|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। পিএমসি PMC7127067|pmc=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। - ↑ "Coronavirus Disease 2019 (COVID-19)"। US Centers for Disease Control and Prevention। ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০২০।
- ↑ "Coronavirus Update: Masks And Temperature Checks In Hong Kong"। Nevada Public Radio (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৬-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ CDC (২০২০-০২-১১)। "COVID-19 and Your Health"। Centers for Disease Control and Prevention (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ Gilbertson, Jayme Deerwester and Dawn। "Coronavirus: US says 'do not travel' to Wuhan, China, as airlines issue waivers, add safeguards"। USA TODAY (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০১-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "In U.S. and Germany, Community Transmission Is Now Suspected"। The New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০২-২৬। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ Huang, Chaolin; Wang, Yeming; Li, Xingwang; Ren, Lili; Zhao, Jianping; Hu, Yi; Zhang, Li; Fan, Guohui; Xu, Jiuyang (2020-02)। "Clinical features of patients infected with 2019 novel coronavirus in Wuhan, China"। The Lancet। 395 (10223): 497–506। আইএসএসএন 0140-6736। ডিওআই:10.1016/s0140-6736(20)30183-5। পিএমআইডি 31986264। পিএমসি PMC7159299
|pmc=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "Daily summary | Coronavirus in the UK"। coronavirus.data.gov.uk (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ https://plus.google.com/+UNESCO (২০২০-০৩-০৪)। "Education: From disruption to recovery"। UNESCO (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ Board, The Editorial (২০২০-০২-২৯)। "Opinion | Here Comes the Coronavirus Pandemic"। The New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ Times, The New York (২০২১-০১-২১)। "A List of What's Been Canceled Because of the Coronavirus"। The New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ Scipioni, Jade (২০২০-০৩-১৮)। "Why there will soon be tons of toilet paper, and what food may be scarce, according to supply chain experts"। CNBC (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "The Coronavirus Outbreak Could Disrupt the U.S. Drug Supply"। Council on Foreign Relations (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "As the coronavirus spreads, one study predicts that even the best-case scenario is 15 million dead and a $2.4 trillion hit to global GDP"। news.yahoo.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ Clamp, Rachel। "Coronavirus and the Black Death: spread of misinformation and xenophobia shows we haven't learned from our past"। The Conversation (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ Weston, Liz। "Stop panic-buying toilet paper: How to stock up smart, emergency or not"। MarketWatch (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ Wiles, Siouxsie (২০২০-০৩-০৯)। "The three phases of Covid-19 – and how we can make it manageable"। The Spinoff। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ Grenfell R, Drew T (১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০)। "Here's Why It's Taking So Long to Develop a Vaccine for the New Coronavirus"। Science Alert। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ ক খ Anderson, Roy M; Heesterbeek, Hans; Klinkenberg, Don; Hollingsworth, T Déirdre (২০২০)। "How will country-based mitigation measures influence the course of the COVID-19 epidemic?"। The Lancet। 395 (10228): 931–934। আইএসএসএন 0140-6736। ডিওআই:10.1016/s0140-6736(20)30567-5। পিএমআইডি 32164834
|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। পিএমসি PMC7158572|pmc=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)।A key issue for epidemiologists is helping policy makers decide the main objectives of mitigation—e.g., minimising morbidity and associated mortality, avoiding an epidemic peak that overwhelms health-care services, keeping the effects on the economy within manageable levels, and flattening the epidemic curve to wait for vaccine development and manufacture on scale and antiviral drug therapies.
- ↑ "করোনাভাইরাস: বাংলাদেশে কোয়ারেন্টিন না মানলে ঘরে তালাবন্ধ করে রাখার নির্দেশ"। বিবিসি বাংলা। ২০২০-০৩-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-০৭।
- ↑ Barclay, Eliza (২০২০-০৪-০৭)। "Chart: The US doesn't just need to flatten the curve. It needs to "raise the line.""। Vox (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২০ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মার্চ ২০২০।
- ↑ "করোনাভাইরাস: সামাজিক দূরত্ব কেন ও কীভাবে বজায় রাখবেন?"। বিবিসি বাংলা। ২০২০-০৩-২৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-১৪।
- ↑ "A third of virus cases may be 'silent carriers', classified data suggests"। South China Morning Post (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৩-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "The hard lessons of Italy's devastating coronavirus outbreak"। RFI (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৩-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ Li, Ruiyun; Pei, Sen; Chen, Bin; Song, Yimeng; Zhang, Tao; Yang, Wan; Shaman, Jeffrey (২০২০-০৫-০১)। "Substantial undocumented infection facilitates the rapid dissemination of novel coronavirus (SARS-CoV-2)"। Science। 368 (6490): 489–493। ডিওআই:10.1126/science.abb3221। পিএমআইডি 32179701
|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। পিএমসি PMC7164387|pmc=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। - ↑ "'Silent Spreaders' Speed Coronavirus Transmission"। NPR.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "Losing sense of smell may be a hidden symptom of coronavirus, doctors warn"। Washington Post (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0190-8286। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ News, C. B. S.। "U.K. doctors believe they have a way to detect 'silent spreaders' of COVID-19"। KMOV.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-১০-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ "When and How to Wash Your Hands | Handwashing | CDC"। www.cdc.gov (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৬-১০। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "Show Me the Science - How to Wash Your Hands | Handwashing | CDC"। www.cdc.gov (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-১২-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ ক খ Wilkinson, Judith M., and Leslie A. Treas.Fundamentals of nursing. 2nd ed. Philadelphia: F.A. Davis Co., 2011. Print
- ↑ D. R. Patrick,; G. Findon; T. E. Miller (১৯৯৭), "Residual moisture determines the level of touch-contact-associated bacterial transfer following hand washing.", Epidemiology and Infection, 3 (119): 319-325
- ↑ Gold, Nina A.; Mirza, Taaha M.; Avva, Usha (২০২১)। Alcohol Sanitizer। Treasure Island (FL): StatPearls Publishing। পিএমআইডি 30020626।
- ↑ "WHO | How can personal hygiene be maintained in difficult circumstances?"। WHO। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ Hoque BA; ও অন্যান্য (১৯৯১), "A comparison of local handwashing agents in Bangladesh", Journal of Tropical Medicine and Hygiene (94): 61-64
- ↑ Novel Coronavirus Pneumonia Emergency Response Epidemiology Team। "[The epidemiological characteristics of an outbreak of 2019 novel coronavirus diseases (COVID-19) in China]"। www.yiigle.com। পৃষ্ঠা 145–151। ডিওআই:10.3760/cma.j.issn.0254-6450.2020.02.003। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "Wuhan seafood market may not be source of novel virus spreading globally"। www.science.org (ইংরেজি ভাষায়)। ডিওআই:10.1126/science.abb0611। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "China's first confirmed Covid-19 case traced back to November 17"। South China Morning Post (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৩-১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "WHO Western Pacific | World Health Organization"। www.who.int (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "China pneumonia outbreak: Mystery virus probed in Wuhan"। BBC News (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০১-০৩। ২০২০-০১-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ Li, Qun; Guan, Xuhua; Wu, Peng; Wang, Xiaoye; Zhou, Lei; Tong, Yeqing; Ren, Ruiqi; Leung, Kathy S. M.; Lau, Eric H. Y. (২০২০-০১-২৯)। "Early Transmission Dynamics in Wuhan, China, of Novel Coronavirus–Infected Pneumonia"। New England Journal of Medicine (ইংরেজি ভাষায়)। ডিওআই:10.1056/NEJMoa2001316। পিএমআইডি 31995857। পিএমসি PMC7121484
|pmc=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। - ↑ WHO–China Joint Mission (১৬–২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০)। "Report of the WHO-China Joint Mission on Coronavirus Disease 2019 (COVID-19)" (পিডিএফ)। World Health Organization। সংগ্রহের তারিখ ৮ মার্চ ২০২০।
- ↑ "China confirms sharp rise in cases of SARS-like virus across the country"। France 24 (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০১-২০। ২০২০-০১-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ Team, The Novel Coronavirus Pneumonia Emergency Response Epidemiology (২০২০-০২-০১)। "The Epidemiological Characteristics of an Outbreak of 2019 Novel Coronavirus Diseases (COVID-19) — China, 2020"। China CDC Weekly (ইংরেজি ভাষায়)। 2 (8): 113–122। আইএসএসএন 2096-7071। ডিওআই:10.46234/ccdcw2020.032।
- ↑ "Statement on the second meeting of the International Health Regulations (2005) Emergency Committee regarding the outbreak of novel coronavirus (2019-nCoV)"। www.who.int (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০১-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "WHO Head Warns of 'Potential Pandemic' after Initially Praising China's Response to Coronavirus"। National Review (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০২-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "Coronavirus: Europe now epicentre of the pandemic, says WHO"। BBC News (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৩-১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ CNN, Helen Regan। "More coronavirus cases outside mainland China than inside"। CNN। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "COVID Live Update: 243,867,520 Cases and 4,955,908 Deaths from the Coronavirus - Worldometer"। www.worldometers.info (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ ক খ গ ঘ Sparrow, Annie। "How China's Coronavirus Is Spreading—and How to Stop It"। Foreign Policy (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ ক খ "China battles coronavirus outbreak: All the latest updates"। www.aljazeera.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ Ritchie, Hannah; Mathieu, Edouard; Rodés-Guirao, Lucas; Appel, Cameron; Giattino, Charlie; Ortiz-Ospina, Esteban; Hasell, Joe; Macdonald, Bobbie; Beltekian, Diana (২০২০-০৩-০৫)। "Coronavirus Pandemic (COVID-19)"। Our World in Data।
- ↑ বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯- এর সর্বশেষ তথ্য, হাল-নাগাদ সময় : Nov 13, 2021 06:53:56 PM
- ↑ News, B. N. O. (২০২০-০৪-০১)। "Tracking coronavirus: Map, data and timeline"। BNO News (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "Total confirmed deaths due to COVID-19 per million people"। Our World in Data। সংগ্রহের তারিখ ২০ মার্চ ২০২০।
- ↑ ক খ গ 疫情通报 [Outbreak notification]। NHC.gov.cn (চীনা ভাষায়)। National Health Commission of the People's Republic of China। ২৬ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ News, B. N. O. (২০২০-০৪-০১)। "Tracking coronavirus: Map, data and timeline"। BNO News (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ ক খ "Tracking coronavirus: Map, data and timeline"। BNO News। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ Jan 22, Lisa Schnirring | News Editor | CIDRAP News |; 2020। "WHO decision on nCoV emergency delayed as cases spike"। CIDRAP (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ Hui, David S.; I Azhar, Esam; Madani, Tariq A.; Ntoumi, Francine; Kock, Richard; Dar, Osman; Ippolito, Giuseppe; Mchugh, Timothy D.; Memish, Ziad A. (2020-02)। "The continuing 2019-nCoV epidemic threat of novel coronaviruses to global health — The latest 2019 novel coronavirus outbreak in Wuhan, China"। International Journal of Infectious Diseases। 91: 264–266। আইএসএসএন 1201-9712। ডিওআই:10.1016/j.ijid.2020.01.009। পিএমআইডি 31953166। পিএমসি PMC7128332
|pmc=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "Undiagnosed pneumonia – China (HU) (01): wildlife sales, market closed, RFI Archive Number: 20200102.6866757"। Pro-MED-mail। International Society for Infectious Diseases। ২২ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০২০।
- ↑ Cohen, Jon; Normile, Dennis (১৭ জানুয়ারি ২০২০)। "New SARS-like virus in China triggers alarm"। Science। 367 (6475): 234–235। আইএসএসএন 0036-8075। ডিওআই:10.1126/science.367.6475.234। পিএমআইডি 31949058। ১৭ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০২০।
- ↑ Parry, Jane (২০ জানুয়ারি ২০২০)। "China coronavirus: cases surge as official admits human to human transmission" । British Medical Journal। 368। আইএসএসএন 1756-1833। ডিওআই:10.1136/bmj.m236।
- ↑ ক খ Rettner, Rachael (২০২০-০৫-১৪)। "How does the new coronavirus compare with the flu?"। livescience.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "Covid-19: Uttarakhand gets first swab collection booth"। Hindustan Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৪-১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ Jan 23, Lisa Schnirring | News Editor | CIDRAP News |; 2020। "WHO holds off on nCoV emergency declaration as cases soar"। CIDRAP (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "Statement on the meeting of the International Health Regulations (2005) Emergency Committee regarding the outbreak of novel coronavirus 2019 (n-CoV) on 23 January 2020"। www.who.int (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "New coronavirus death toll jumps to 106 as China announces 25 more fatalities - National | Globalnews.ca"। Global News (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ ক খ Ritchie, Hannah; Mathieu, Edouard; Rodés-Guirao, Lucas; Appel, Cameron; Giattino, Charlie; Ortiz-Ospina, Esteban; Hasell, Joe; Macdonald, Bobbie; Beltekian, Diana (২০২০-০৩-০৫)। "Coronavirus Pandemic (COVID-19)"। Our World in Data।
বহিঃসংযোগ
সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা
- করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট
- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা: কোভিড -১৯ (প্রশ্ন এবং উত্তর) (ইংরেজি) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক
- কোভিড -১৯(ইংরেজি)(প্রশ্ন এবং উত্তর) (ইংরেজি) ইউরোপীয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল কর্তৃক
- কোভিড -১৯[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] (ইংরেজি) চায়না ন্যাশনাল হেলথ কমিশন কর্তৃক
- কোভিড -১৯ (ইংরেজি) (প্রশ্ন এবং উত্তর ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৪ জুন ২০২১ তারিখে) (ইংরেজি) সিঙ্গাপুর মিনিস্ট্রি অব হেলথ কর্তৃক
- কোভিড -১৯ (ইংরেজি)
(প্রশ্ন এবং উত্তর) (ইংরেজি) সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি)
- করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯ (ইংরেজি)
(প্রশ্ন এবং উত্তর) (ইংরেজি) ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথ কর্তৃক
- আমেরিকায় ভিয়েতনাম যুদ্ধের চেয়েও বেশি লোক মারা গেল করোনায় ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ জুন ২০২০ তারিখে
- করোনা মহামারী ও লকডাউন, স্যানিটাইজার মাস্ক এবং সামাজিক দূরত্ব
উপাত্ত ও মানচিত্র
- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক করোনাভাইরাস রোগ (কোভিড -২০১৯)-এর পরিস্থিতি প্রতিবেদন (দেশ অনুযায়ী নিশ্চিত সংক্রামণের অফিসিয়াল সংখ্যা) (ইংরেজি)
- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর দেশ অনুসারে সংক্রামণের মানচিত্র (ইংরেজি)
- করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক সংক্রামণ (ইংরেজি) এবং ঐতিহাসিক তথ্য (ইংরেজি) জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক
- কোভিড-১৯ এর সাম্প্রতিক সংবাদ ও তথ্যসম্ভার (ইংরেজি) The BMJ কর্তৃক
- কোভিড-১৯ তথ্য কেন্দ্র (ইংরেজি) by The Lancet কর্তৃক
- করোনাভাইরাস তথ্যসম্ভার (ইংরেজি) Cell Press কর্তৃক
- করোনাভাইরাস পর্যবেক্ষণ (ইংরেজি) জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় এর তথ্যের ভিত্তিতে
- Google Scholar list of Covid-19 research resources (ইংরেজি), এটি একইসাথে আবার এসব সংস্থার গবেষণাকেন্দ্রগুলোর সাথেও যুক্ত সিডিসি, NEJM, JAMA, The Lancet, Cell, The BMJ, Elsevier, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, নেচার পত্রিকা, Wiley, কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস, এবং medRxiv
- বৈশ্বিক ভ্রমণ বাঁধানিষেধ (ইংরেজি) ডব্লিউএফপি এর তথ্যের ভিত্তিতে