কমিনে
কমিনে (ইংরেজি: Scoundrels) ২০০৯ সালের একটি ভারতীয় হিন্দি মারপিট ধর্মী চলচ্চিত্র।[৪][৫] বিশাল ভরদ্বাজ পরিচালিত এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন শহিদ কাপুর, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এবং অমল গুপ্তে। কমিনে ছবিটি মুম্বই আন্ডারওয়ার্ল্ড এর পটভূমিকায় দুই যমজের মধ্যের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে অনুসরণ করা হয়েছে যাদের মধ্যে এক জন আধো উচ্চারণে কথা বলে (লিস্প) এবং অপর জন তোতলা।
কমিনে | |
---|---|
মূল শিরোনাম | कमीने |
পরিচালক | বিশাল ভরদ্বাজ |
প্রযোজক | রনি স্ক্রুওয়ালা |
চিত্রনাট্যকার |
|
কাহিনিকার | বিশাল ভরদ্বাজ |
শ্রেষ্ঠাংশে | শহিদ কাপুর প্রিয়াঙ্কা চোপড়া অমল গুপ্তে |
সুরকার | বিশাল ভরদ্বাজ |
চিত্রগ্রাহক | তাসাদুক হুসেন |
সম্পাদক | মেঘনা মনচাঁন্দা সেন এই. শ্রীকর প্রসাদ |
প্রযোজনা কোম্পানি | ইউটিভি মোশন পিকচারস ভিবি পিকচারস |
পরিবেশক | ইউটিভি মোশন পিকচারস |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১৩৪ মিনিট[১] |
দেশ | ভারত |
ভাষা | হিন্দি |
নির্মাণব্যয় | ₹৩৫০ মিলিয়ন (ইউএস$ ৪.২৮ মিলিয়ন)[২] |
আয় | ₹৭১০ মিলিয়ন (ইউএস$ ৮.৬৮ মিলিয়ন)[৩] |
ভরদ্বাজের সহচিত্রনাট্যকার ছিলেন সাবরিনা ধাওয়ান, অভিষেক চৌবে এবং সুপ্রতিক সেন। ভারদ্বাজ কেনিয়ান লেখক ক্যাজেটান বয় এর কাছ থেকে মূল স্ক্রিপ্টটি মার্কিন$৪,০০০ মূল্যে কিনেছিলেন। উগান্ডায় স্ক্রিপ্ট রাইটিং ওয়ার্কশপে তিনি তাঁর পরামর্শদাতা ছিলেন। কমিনে ১৪ ই আগস্ট ২০০৯ এ মুক্তি পেয়েছিল এবং বিশ্বব্যাপী বক্স-অফিসে সাফল্য অর্জন করে উপার্জন করেছিল ₹৭১০ মিলিয়ন (ইউএস$ ৮.৬৮ মিলিয়ন)। ছবিটির নির্মাণ ব্যয় ছিল ₹৩৫০ মিলিয়ন (ইউএস$ ৪.২৮ মিলিয়ন)। ফিল্মের সাউন্ডট্র্যাক অ্যালবামটিও বাণিজ্যিক সাফল্যে পেয়েছিল এবং "ধন তে নান" গানটি বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে তালিকায় শীর্ষ স্থান পেয়েছিল।
কমিনে সমালোচকদের কাছ থেকে উচ্চ প্রশংসা লাভ কর। বেশ কয়েকজন সমালোচক এবং মিডিয়া প্রকাশনা তাঁদের "বছরের সেরা চলচ্চিত্র" এর তালিকায় একে প্রথম নম্বরে রেখেছিলেন। ভারত জুড়ে ছবিটি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকটি পুরস্কার এবং মনোনয়ন পেয়েছিল। ৫৫ তম ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস এ দশটি নমিনেশন পেয়েছিল যার মধ্যে ছিল সেরা চলচ্চিত্রের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, সেরা পরিচালক, সেরা অভিনেতা, সেরা অভিনেত্রী, এবং সেরা সহঅভিনেতা সহ সেরা স্পেশাল এফেক্টস এর পুরস্কার। ৫৭ তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এ কমিনে লাভ করে দুটি পুরস্কার — সেরা অডিওগ্রাফি র জন্য সুবাস সাহু এবং সম্পাদনার জন্য বিশেষ জুরি অ্যাওয়ার্ড পান এ. শ্রীকর প্রসাদ।
পটভূমি
সম্পাদনাচার্লি এবং গুড্ডু যমজ এবং তারা বড় হয়েছে মুম্বাই শহরে। চার্লির বোল আধোআধো (লিস্প) এবং গুড্ডু তোতলা। গুড্ডুর প্রতি সে শত্রুভাবাপন্ন। চার্লি রেসকোর্সে একজন বুকমেকার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে শর্টকাট পথ ধরতে গিয়ে রেস গড়াপেটা র সঙ্গে যুক্ত তিনজন অপরাধী ভাইয়ের হয়ে কাজ করতে থাকে। সে কনিষ্ঠ ভাই মিখাইলের কাছাকাছি আসে। একটি গড়াপেটা ঘোড়দৌড় চলাকালে এক জকি চার্লিকে ₹ ১,০০,০০০ (ইউএস$ ১,২২২.৩৩) প্রতারণা করায় তার সমস্ত সঞ্চয় শেষ হয়ে যায়। প্রতিশোধ নিতে চার্লি জকিটিকে একটি বড় বাজারের হোটেলে আবিষ্কার করে।
একই হোটেলে পুলিশ লোবো এবং লেলে তিনজন মাদক ব্যবসায়ীকে হত্যা করে এবং কোকেনযুক্ত একটি গিটার-কেস সংগ্রহ করে। চার্লি এবং তার লোকেরা জকির হোটেল ঘর আক্রমণ করে এবং তার সমস্ত সম্পত্তি নিয়ে যায়। তাড়া খেয়ে তারা হোটেলের গাড়ি পার্কের দিকে যায়। সেখানে লোবো এবং লেলে তাদের ভ্যানে গিটারের কেসটি রেখেছে। চার্লি এবং তার লোকেরা জকির লোকদের হাত থেকে বাঁচার জন্য সেই ভ্যানটি দখল করে এবং বুঝতে পারে যে তারা একটি পুলিশের গাড়ি চুরি করেছে। চার্লি বিক্রি করার জন্য চুরি করা কোকেইনও আবিষ্কার করে। পুলিশকর্মীরা ফিরে এসে আবিষ্কার করে যে কোকেন বেপাত্তা। তখন তারা চার্লিকে খুঁজতে বেরোয়।
এদিকে গুড্ডুর প্রেমিকা সুইটি রাজনীতিবিদ সুনীল ভোপের বোন। সুইটি প্রকাশ করে তার গর্ভে গুড্ডুর সন্তান এবং সে গুড্ডুকে বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করে। তারা সেই রাতেই বিয়ে করে। ভোপ তার বোনের ক্রিয়াকলাপ শুনে তার লোকেদেরকে দিয়ে তাদের ধরতে পাঠায়। ভোপের লোকেরা গুড্ডুর বিবাহ আসরে অনাহূতভাবে প্রবেশ করে তাকে মারধর করে এবং বুঝতে পারে যে সে উত্তর প্রদেশ থেকে আগত ব্যক্তি। এটি ভোপকে ক্ষুব্ধ করে। ভোপ তার লোকদের গুড্ডুকে হত্যা করার এবং সুইটিকে তার বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়ার আদেশ দেয় যাতে সে তার জন্য বিয়ের ব্যবস্থা করতে পারে। সুইটি তার ভাইয়ের লোকদের সাথে লড়াই করে গুড্ডুর সাথে পালিয়ে যায়।
চার্লি মিখাইলকে কোকেন সম্পর্কে জানালে সে আনন্দিত হয়। চার্লি যখন কেসটি পুনরুদ্ধার করতে ফিরে আসে ভোপ এবং তার লোকেরা ভ্যানের ভিতরে অপেক্ষা করছিল। ভোপের লোকেদের এক জন গুড্ডুকে চার্লির যমজ হিসাবে চিনে ফেলে। তখন ভোপ দাবি করে যে চার্লি গুড্ডুর অবস্থান প্রকাশ করুক। তাদের কথোপকথনে বাধা দিতে গিয়ে মিখাইল ভোপের হাতে মারা যায়।
বিমানবন্দরের পথে গুড্ডু বুঝতে পারে সুইটি তার তোতলামি নকল করেছে। একটি পেট্রোল স্টেশনে তারা লোবো এবং লেলে জুটির নজরে পড়ে। গুড্ডুকে চার্লি ব'লে ভুল করে তারা তাকে গ্রেপ্তার করে। গুড্ডুর মোবাইল ফোন বেজে উঠার আগ পর্যন্ত তারা গড্ডুকে বিশ্বাস করতে অস্বীকার করে যে সে চার্লির যমজ ভাই; প্রকাশ পায় যে ফোনকারী ছিল ভোপ। পুলিশকর্মীরা গুড্ডু এবং সুইটিকে ভোপের বাড়িতে নিয়ে যায়। যেখানে ভোপ প্রকাশ করে যে এক স্থানীয় নির্মাতা তাকে তার ছেলের সাথে সুইটির বিয়ে দেওয়ার জন্য তাকে ₹ ৫০ মিলিয়ন (ইউএস$ ৬,১১,১৬৫) দেবে। ভোপের সাথে গুড্ডু দর কষাকষি করে — যদি সে ভোপের জন্য কোকেন ভরা গিটারের কেসটি পুনরুদ্ধার করে তবে সে সুইটিকে পাবে। ভোপ চার্লির বাড়ি থেকে গিটারের কেসটি পুনরুদ্ধার করতে গুড্ডুর সাথে তার অনুচরদের পাঠায়।
পুলিশরা চার্লিকে আক্রমণ করে। সে বুঝতে পারে পুলিশ সদস্যরা তাকে চিনতে সমস্যায় পড়েছে। চার্লি পুলিশ সদস্যদের ঠকিয়ে তাদের জিম্মায় রেখে গিটারের কেসের বিনিময় করতে তাশির সাথে আলোচনায় রফা হয় ₹ ১ মিলিয়ন (ইউএস$ ১২,২২৩.৩)। চার্লি তাশির কাছে বিশদ সরবরাহ করতে পুলিশ সদস্যদের পাঠায় এবং কোকেন উদ্ধার করতে তারা বাড়িতে ফিরে আসে। চার্লির বাড়িতে গুড্ডু ভোপের লোকদের সাথে উপস্থিত হয়। ভোপের গুড্ডু কে মেরে ফেলার পরিকল্পনার কথা শুনে সুইটি তার বাড়ির সদস্যদের গুলি করে। গুড্ডু কেসটি খুঁজে পেলে চার্লির সাথে মারামারি লেগে যায়। তবে সে গুড্ডুকে যেতে দেয়। গুড্ডু কোকেন নিয়ে পুলিশের কাছে নিয়ে যায় যে তাতে বাগ লাগিয়ে দেওয়া হয়। গুড্ডু ভোপের বাড়িতে যখন পৌঁছোয় তখনই চার্লিকে জিম্মায় নিয়ে তাশি ও তার গ্যাংয়ের লোকেরা সেখানে পৌঁছোয়। ভোপ এবং তাশি ড্রাগ ব্যবসার জন্য আলোচনা করে। চার্লি গিটারের কেসটি ছিনিয়ে নিয়ে গুড্ডু এবং সুইটিকে মুক্তি না দিলে তা ধ্বংস করার হুমকি দেয়। পুলিশ পৌঁছে গেলে সেই সুযোগে প্রেমিক যুগল পালিয়ে যায়। এলোপাথাড়ি গুলি বিনিময়ে কোকেন ধ্বংস হয়ে যায়। চার্লির আধিকারিকরা মিখাইলের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে আসে কিন্তু ভোপ, তাশি এবং তার সঙ্গীদের হাতে তারা নিহত হয়। চার্লি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়।
সুইটি গুড্ডুর যমজ সন্তানের জন্ম দেয় এবং চার্লি রেসকোর্সে একটি বুকমেকিং কাউন্টার খোলে। চার্লির সাথে তার এক সময়ের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন সোফিয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Kaminey (15)"। British Board of Film Classification। ১৫ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০১৩।
- ↑ Indo-Asian News Service (১০ আগস্ট ২০০৯)। "Preview: Kaminey"। Hindustan Times। ২০ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ আগস্ট ২০১৩।
- ↑ "Lifetime Worldwide"। Box Office India। ২১ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০১০।
- ↑ "Kaminey (2009) – Vishal Bhardwaj"। AllMovie।
- ↑ "I want to do all kinds of films as an actor: Shahid"। The Siasat Daily। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯।
While Kaminey was an intense action film, Dil Bole Hadippa is a fun film.