কমলা পাখুই

হেসপেরিডি পরিবারের প্রজাপতি

কমলা পাখুই[১] (বৈজ্ঞানিক নাম: Burara jaina(Moore)) এক প্রজাতির মাঝারী আকারের গাঢ় বাদামী লাল ওয়াইনের সাথে কমলা বর্নের প্রজাপতি। এরা ‘হেসপেরায়িডি’ গোত্রের[২] এবং ‘কোয়লিয়াডিনি’ উপগোত্রের সদস্য।[৩]

কমলা পাখুই
Orange Awlet
ডানা বন্ধ অবস্থায়
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণীজগৎ
পর্ব: সন্ধিপদী
শ্রেণী: পতঙ্গ
বর্গ: লেপিডোপ্টেরা
পরিবার: Hesperiidae
গণ: Burara
প্রজাতি: B. jaina
দ্বিপদী নাম
Burara jaina
(Moore, [1866])
প্রতিশব্দ
  • Ismene jaina Moore, 1866
  • Bibasis jaina (Moore, 18656)

আকার সম্পাদনা

প্রসারিত অবস্থায় কমলা পাখুই এর ডানার আকার ৬০-৭০ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।[৩]

উপপ্রজাতি সম্পাদনা

ভারতে প্রাপ্ত কমলা পাখুই এর উপপ্রজাতি হল-[৪]

  • Burara jaina jaina (Moore, [1866]) – Darjeeling Common Orange Awlet
  • Burara jaina fergusonii (de Nicéville, [1893]) – Sahyadri Common Orange Awlet

বিস্তার সম্পাদনা

এটি ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামে দেখা যায়।[৫][৬] এই প্রজাতি ভারত এর উত্তরাখন্ড থেকে অরুণাচল প্রদেশ[৭], পশ্চিমবঙ্গ, নেপাল, ভূটান এবং মায়ানমার এর বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা যায়।[৩]

বর্ণনা সম্পাদনা

প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিষদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-

স্ত্রী-পুরুষ প্রকার অনুরূপ দর্শন। ডানার উপরিতল কালচে বাদামী এবং আপাত দাগ-ছোপ হীন। শুধুমাত্র ডানার গোড়া (base) থেকে কোস্টার প্রায় মধ্যভাগ পর্যন্ত বিস্তৃত একটি সরু কমলা দাগ (streak) বর্তমান। পিছনের ডানার টার্মিনাল প্রান্তভাগ টর্নাস পর্যন্ত কমলা। টার্মেনের মধ্যভাগ থেকে টর্নাসের দিকে উক্ত কমলা অংশ ক্রমশ চওড়া হয়েছে। পিছনের ডানা গোড়ার দিকে নীলচে সবুজ আঁশে হালকা ভাবে ছাওয়া।[৮]

ডানার নিম্নতল ফ্যাকাশে বাদামী এবং শিরা বরাবর লম্বা কমলা ডোরা (streak) যুক্ত। সামনের ডানায় সেল এর বহিপ্রান্তে একটি ইষদ বেগুনি আভাযুক্ত সাদা এবং সুস্পষ্ট বড় ছোপ এবং ডিসকাল অংশে একসারি সরু লম্বাটে ফ্যাকাশে সাদা অস্পষ্ট ছোপ বক্রাকারে দৃশ্যমান। পুরুষ নপ্রকারে ডানার মধ্যভাগে অস্পস্ট কালো দাগ (brand) রয়েছে।

পিছনের ডানায় সরু লম্বা সাদা ডিসকাল দাগের সারি একটি ছোট বন্ধনীর সৃষ্টি করেছে। টার্মেন, টর্নাস এবং ডরসাম (চওড়া ভাবে) উজ্জ্বল কমলা বর্নের।

মাথা, বুক, পা এবং অ্যানাল অংশ কমলা, উদরদেশ কালো এবং ফ্যাকাশে কমলা অথবা সাদাটে কমলা ডোরাকাটা বর্নের।[৮]

আচরণ সম্পাদনা

দুর্লভ দর্শন এই প্রজাতির উড়ান অন্যান্য Awl প্রজাতির ন্যায় দ্রুতবেগ সম্পন্ন। সকালের প্রথম ভাগে, গোধূলিবেলা (dusk) এবং সন্ধ্যার সময় (late evening) গিরিখাতের পথে এবং পাহাড়ি নালা এবং ঝর্নার উপরে এদের তীরবেগে উড়ে বেড়াতে দেখা যায়। নীচু উচ্চতায় সম্পন্ন পাহাড়ী অঞ্চলের উচ্চ-বৃষ্টিপাত যুক্ত ঘন বনাঞ্চলে এদের বিচরন লক্ষ্য করা যায়।[৯] উক্ত অঞ্চল ছাড়া পাহাড়-জঙ্গলের অন্যান্য অংশে অথবা সমতল ভূমিতে এদের কখনো দেখা মেলে না। এরা ফুলের মধুপান করে এবং ভিজে মাটি, পাথরের ভিজে ছোপে অথবা দেওয়ালে বসে মাড-পাডল করে। এই প্রজাতি মথেদের মতন পাতার নিচে অবস্থান করে বিশ্রাম নেয় ডানা সম্পূর্ন মেলে। হিমালয়ে ১২০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত এদের বিচরন লক্ষ্য করা যায়।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. A Pictorial Guide Butterflies of Gorumara National Park (2013 সংস্করণ)। Department of Forests Government of West Bengal। পৃষ্ঠা 275। 
  2. Swinhoe, Charles (১৯১১–১৯১২)। Lepidoptera Indica. Vol. IX। London: Lovell Reeve and Co.। পৃষ্ঠা 231–232। 
  3. Isaac, Kehimkar (২০১৬)। BHNS Field Guides Butterflies of India। Mumbai: Bombay Natural History Society। পৃষ্ঠা 67। আইএসবিএন 9789384678012 
  4. "Burara jaina (Moore, [1866]) - Common Orange Awlet"Butterflies of India। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০২২ 
  5. Markku Savela's website on Lepidoptera. Page on genus Bibasis.
  6. Inayoshi, Yutaka। "Burara jaina jaina (Moore,[1866])"Butterflies in Indo-China 
  7. R.K., Varshney; Smetacek, Peter (২০১৫)। A Synoptic Catalogue of the Butterflies of India। New Delhi: Butterfly Research Centre, Bhimtal & Indinov Publishing, New Delhi। পৃষ্ঠা 24। আইএসবিএন 978-81-929826-4-9ডিওআই:10.13140/RG.2.1.3966.2164 
  8. Wynter-Blyth, Mark Alexander (১৯৫৭)। Butterflies of the Indian Region। Bombay, India: Bombay Natural History Society। পৃষ্ঠা 468। আইএসবিএন 978-8170192329 
  9. Isaac, Kehimkar (২০০৮)। The book of Indian Butterflies (ইংরেজি ভাষায়) (1st সংস্করণ)। নতুন দিল্লি: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা 62। আইএসবিএন 978 019569620 2